মসজিদ কমিটির স্বৈরাচারী বন্ধে মসজিদ ব্যবস্থাপনা নীতিমালা প্রস্তুত করা হয়েছে ব‌লে জা‌নি‌য়ে‌ছেন ধর্ম উপদেষ্টা ড. আ ফ ম খালিদ হোসেন।

শনিবার (৯ আগস্ট) রাজধানীর সেগুনবাগিচায় বিএমএ মিলনায়তনে শানে সাহাবা জাতীয় খতিব ফাউন্ডেশন আয়োজিত জাতীয় কনফারেন্সে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন।

উপ‌দেষ্টা ব‌লেন, “শিগগিরই মসজিদ ব্যবস্থাপনা নীতিমালা চূড়ান্ত করে সংশ্লিষ্ট সবার সঙ্গে বসে গেজেট প্রকাশ করা হবে। বায়তুল মোকাররম মসজিদের সৌন্দর্য বর্ধনে সরকার ১৯০ কোটি টাকা বরাদ্দ দেওয়া হচ্ছে। মসজিদের মূল কাঠামো ঠিক রেখে ভেতরে সাজানো হবে।”

অন‌্যদি‌কে, একই‌দি‌ন রাজধানীর বারিধারায় আল মানাহিল ওয়েলফেয়ার ফাউন্ডেশন বাংলাদেশের আয়োজনে সংস্থাটির অফিসে অসহায় ও এতিম ছাত্র-ছাত্রীদের ভরণপোষণের চেক বিতরণ অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে ধর্ম উপদেষ্টা বলেছেন, “ইসলাম, হিন্দু, বৌদ্ধ, খ্রিস্টানসহ সব ধর্মেই দান, সাহায্য ও সহানুভূতির কথা বলা হয়েছে। প্রতিটি ধর্মে মানবসেবাকে পবিত্র কর্তব্য হিসেবে অভিহিত করা হয়েছে। এর মাধ্যমে মানুষের মধ্যে নৈতিকতা, ধৈর্য, সহানুভূতি, এবং আত্মত্যাগের মতো গুণাবলিকে জাগ্রত করে।এটি মানুষকে প্রকৃত অর্থে মানুষ হতে সহায়তা করে।”

মানবসেবার গুরুত্ব তুলে ধরে ড.

খালিদ বলেন, “এটি সমাজে সহানুভূতির বিকাশ ও সামাজিক বন্ধনকে মজবুত করে। মানুষ যখন পরস্পরের পাশে দাঁড়ায় তখন সমাজে একতা ও ভ্রাতৃত্ববোধ বৃদ্ধি পায়। এতে সামাজিক স্থিতিশীলতা ও ভারসাম্য বজায় থাকে।”

তিনি আরো বলেন, “মানবসেবার মাধ্যম যে মানসিক প্রশান্তি পাওয়া যায়, যেটা অর্থ বা খ্যাতি দিয়েও অর্জন করা যায় না।”

আল মানাহিল ফাউন্ডেশনের কর্মকাণ্ড সম্পর্কে উপদেষ্টা বলেন, “এ সংস্থাটি বহুদিন ধরে মানব সেবামূলক কার্যক্রম পরিচালনা করে আসছে। অসহায় ও এতিমদের প্রতিপালন, মসজিদ-মাদ্রাসা স্থাপন, বিশুদ্ধ পানি সরবরাহ, গৃহহীন ব্যক্তিদের জন্য ঘর নির্মাণ, বানভাসি মানুষের সহায়তাসহ নানা ধরনের সেবাধর্মী  কার্যক্রম এই সংগঠনটি করে থাকে।”

এ সংস্থা আগামীতেও মানব সেবামূলক কার্যক্রম অব্যাহত রাখবেন বলে তিনি আশাবাদ ব্যক্ত করেন।

পরে উপদেষ্টা সারা দেশের ৮১টি মাদ্রাসা ও এতিমখানার প্রতিনিধিদের হাতে তিন কোটি ৭০ লাখ ২৮ হাজার টাকার চেক তুলে দেন।

উল্লেখ্য, অসহায় ও এতিম শিক্ষার্থীদের ভরণপোষণের জন্য যুক্তরাজ্যভিত্তিক স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন ইমদাদুল মুসলিমিনের অর্থায়নে এই আর্থিক সহায়তা প্রদান করা হয়।

ফাউন্ডেশনের চেয়ারম্যান হেলাল উদ্দিন বিন জমির উদ্দিনের সভাপতিত্বে এ অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথির বক্তৃতা করেন এনজিও বিষয়ক ব্যুরোর পরিচালক (প্রকল্প-১) মো. আনোয়ার হোসেন। এতে অন্যান্যের মধ্যে ইসলামিক ফাউন্ডেশন বোর্ড অব গভর্নরসের গভর্নর  ও বাংলাদেশ কওমি মাদ্রাসা শিক্ষা বোর্ড বেফাকুল মাদারিসিল আরাবিয়ার (বেফাক) এর মহাসচিব মাহফুজুল হক ও সৌদি আরবের আন্তর্জাতিক ইসলামী বেসরকারি সংস্থা রাবেতা আল আলম আল ইসলামীর প্রতিনিধি হাসান আকিল উপস্থিত ছিলেন।

এর আগে উপদেষ্টা রাজধানীর সেগুনবাগিচায় বিএমএ মিলনায়তনে শানে সাহাবা জাতীয় খতিব ফাউন্ডেশন আয়োজিত জাতীয় কনফারেন্সে প্রধান অতিথির বক্তৃতা করেন।

ঢাকা/নঈমুদ্দীন/এসবি 

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর উপদ ষ ট ও এত ম মসজ দ ইসল ম

এছাড়াও পড়ুন:

চাঁদকে রক্ষা করতে গ্রহাণুকে আক্রমণের পরিকল্পনা করছেন বিজ্ঞানীরা

২০৩২ সালে একটি গ্রহাণু চাঁদে আঘাত হানতে পারে বলে বিজ্ঞানীরা আশঙ্কা করছেন। এর ফলে সৃষ্ট ধ্বংসাবশেষ পৃথিবীর কৃত্রিম উপগ্রহ বা স্যাটেলাইটের জন্য হুমকি হয়ে দাঁড়াতে পারে। এই পরিস্থিতি মোকাবিলায় বিজ্ঞানীরা গ্রহাণুটিকে প্রতিহত করার গতানুগতিক পরিকল্পনার পরিবর্তে ভিন্ন পদক্ষেপের কথা ভাবছেন। গ্রহাণুকে আক্রমণের চিন্তা করা হচ্ছে।

২০২৪ ওয়াইআর-৪ নামের গ্রহাণুটি প্রাথমিকভাবে পৃথিবীর জন্য হুমকি হিসেবে আলোচিত হয়। বিজ্ঞানীরা মনে করছেন, চাঁদে আঘাত হানতে পারে বলে গ্রহাণুটি। প্রায় ৬০ মিটার প্রশস্ত এই গ্রহাণু পৃথিবীর জন্য তুলনামূলকভাবে কম ঝুঁকিপূর্ণ হলেও চাঁদে আঘাত করবে। এর ফলে আমাদের গ্রহের জন্য বড় ধরনের সংকট তৈরি হতে পারে।

বিশেষজ্ঞরা অনুমান করছেন যে চাঁদে যদি এই গ্রহাণু আঘাত হানে, তাহলে মহাকাশে প্রচুর পরিমাণে ধ্বংসাবশেষ ছড়িয়ে পড়বে। এতে পৃথিবীর কক্ষপথে থাকা স্যাটেলাইট ও আন্তর্জাতিক মহাকাশ স্টেশন (আইএসএস) হুমকির মুখে পড়বে। আঘাতের ফলে পৃথিবী থেকে দর্শনীয় উল্কাবৃষ্টি দেখা যাবে। তখন উল্কাপিণ্ডের ঝুঁকি তৈরি করবে স্যাটেলাইটের ওপর। নাসার গডার্ড স্পেস ফ্লাইট সেন্টারের ব্রেন্ট বারবির নেতৃত্বে একটি দল এই বিপদ কমানোর জন্য বিভিন্ন সম্ভাবনা বিশ্লেষণ করেছে। গবেষণার ফলাফল একটি প্রি-প্রিন্ট পেপারে প্রকাশিত হয়েছে।

অনেক বিশেষজ্ঞ বলছেন, গ্রহাণুটির গতিপথ পরিবর্তন করতে বড় কোনো বস্তু দিয়ে এটির পাশে আঘাত করা উচিত। নাসার মিশন ডার্ট বা ডাবল অ্যাস্টেরয়েড রিডাইরেকশন টেস্টের মতো করে আঘাত করা যায়। ওই মিশনে নাসা ইচ্ছাকৃতভাবে একটি মহাকাশযানকে ডিমরফস গ্রহাণুতে আঘাত করেছিল। তখন ডিমরফসের কক্ষপথ পরিবর্তিত হয়েছিল।

বিজ্ঞানী ব্রেন্ট বারবির দল মনে করে ২০২৪ ওয়াইআর-৪ গ্রহাণুর জন্য বিষয়টা জটিল। গতিপথ পরিবর্তনের জন্য যথেষ্ট সময় হয়তো নেই। গতিপথ পরিবর্তন করার চেষ্টা করলে উল্টো তা পৃথিবীর দিকে চলে আসার ঝুঁকি তৈরি হতে পারে। এই গ্রহাণুটির ভর বা গঠন সম্পর্কে কোনো নিশ্চিত তথ্য নেই বলে এমন সংকট তৈরি হচ্ছে।

সময় ও তথ্যের সীমাবদ্ধতা বিবেচনা করে বিজ্ঞানীরা গতিপথ পরিবর্তনের পরিবর্তে এটিকে ধ্বংস করার কথা ভাবছেন। সাইকি বা ওসিরিস-এপেক্সের মতো মিশনকে পুনর্বিবেচনা করে ২০২৮ সালে পৃথিবী ও চাঁদের কাছ দিয়ে যাওয়ার সময় এই গ্রহাণু থেকে গুরুত্বপূর্ণ তথ্য সংগ্রহের প্রস্তাব দিয়েছেন তাঁরা। গবেষকেরা গ্রহাণুটিকে পারমাণবিক বিস্ফোরকের কোনো ডিভাইস দিয়ে উড়িয়ে দেওয়ার জন্য একটি কাইনেটিক ডিসরাপশন মিশনের প্রস্তাব দিয়েছেন। একটি প্রতিবেদন অনুযায়ী, বিজ্ঞানীরা গ্রহাণুটিতে দুটি ১০০ কিলোটনের পারমাণবিক ডিভাইস পাঠানোর প্রস্তাব করেছেন। ডিভাইসটি এমন এক বিস্ফোরণ ঘটাবে, যা ১৯৪৫ সালে হিরোশিমা ও নাগাসাকিতে ফেলা পারমাণবিক বোমার চেয়ে প্রায় পাঁচ থেকে আট গুণ বেশি শক্তিশালী হবে। গ্রহাণুকে আক্রমণের বিষয়ের গবেষণাটি জার্নাল অফ দ্য অ্যাস্ট্রোনটিক্যাল সায়েন্সেসে জমা দেওয়া হয়েছে।

সূত্র: এনডিটিভি

সম্পর্কিত নিবন্ধ