সোনারগাঁ উপজেলায় প্রকল্প বাস্তবায়নের নামে সরকারি অর্থ তছরূপের অভিযোগ উঠেছে। নামে বেনামে প্রকল্প তৈরি করে অতিরিক্ত বিল ভাউচার এমনকি কখনো কখনো কাজ না করেই চলছে হরিলুট।  

সম্প্রতি উপজেলা অডিটরিয়ামের সংস্কার কাজে বাজারমূল্য থেকে কয়েকগুণ বেশি দামে কাজের বিল পাস করানোর তথ্য পাওয়া গেছে। এমনকি কার্যাদেশ পাওয়া ঠিকাদারকে ছাড়াই উপজেলা নির্বাহী অফিসার ফারজানা ইসলামের নির্দেশে উপজেলা প্রকৌশলী নিজ তত্বাবধানে কাজ সম্পন্ন করারও অভিযোগ পাওয়া গেছে। এতে কাজের স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা নিয়ে প্রশ্ন দেখা দিয়েছে।

স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তরের (এলজিইডি) ২০২৪–২৫ অর্থবছরের (স্কিম কোড ৩৬.

৭০৪.২৫.১০২.১২) প্রকল্পের আওতায় মঞ্চের দেয়াল ও ব্যাক ওয়ালে প্যানেলিং, মঞ্চের সিলিং জিপসাম বোর্ডে, ভিআইপি চেয়ার, ছোফা, লোহার ফ্রেমের চেয়ার, খঊউ স্ট্রিপ লাইট, সাউন্ডস সিস্টেমসহ অন্যান্য কাজের ব্যয়ের হিসাব ধরা হয়েছে বাস্তবতার চেয়ে বহুগুণ বেশি।  

অনুসন্ধানে জানা যায়, অডিটোরিয়ামের অভ্যন্তরীণ সাজসজ্জা ও সংস্কার কাজে ব্যবহারের জন্য ২০০ টি ভিজিটর চেয়ারের মূল্য ধরা হয়েছে ১০ লক্ষ ৫৫ হাজার ২৪৪ টাকা। যেখানে ১টা চেয়ারের মূল্য পরছে ৫,২৭৬.২২ টাকা। ৫ টি সোফার মূল্য ধরা হয়েছে ২,৫৭,৬৭৫/- টাকা, যেখানে ১টি সোফার মূল্য পরে ৫১,৫৩৫/- টাকা। মালামালে বাজার দর থেকে কয়েক গুন বেশি ব্যয় ধরা হয়েছে।

যা ২০১৯ সালের রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্রের জন্য আবাসিক এলাকা নির্মাণে বালিশ ক্রয়ে যে ব্যয় করা হয়েছিল তার চেয়ে কম নয়। এই অভিযোগ ও অভিযোগের ভিত্তিতে দুদকের অভিযান করা হলে ঘটে যাওয়া ঘটনাগুলো দেশে রূপপুর বালিশ কেলেঙ্কারি নামে আরেকটা ঘটনা পরিচিতি লাভ করতে পারে।

স্থানীয় ঠিকাদার ও বাজার সংশ্লিষ্টদের দাবি, বাজারে এসব উপকরণের প্রকৃত দাম নথিতে উল্লেখিত অঙ্কের চেয়ে উল্লেখযোগ্যভাবে কম। এমনকি উচ্চমানের উপকরণ ব্যবহার করলেও নির্ধারিত খরচের সাথে বাস্তব দামের বিশাল ফারাক রয়েছে বলে তারা অভিযোগ করেছেন। উল্লেখিত দাম বর্তমান বাজারের সাথে সামঞ্জস্যপূর্ণ নয় বলেও দাবি সংস্লিষ্টদের।

তারা আরও দাবি করেন, উপজেলা নির্বাহী অফিসার ফারজানা রহমান টেন্ডারবাজি করেন। ঠিকাদারদের কাজ নিয়ে নিজেই লোক দিয়ে কাজ করান। ফলে উপজেলা নির্বাহী অফিসার ফারজানা রহমানের সরকারি বাসভবন, সরকারি কোয়াটার, পুকুরের সাইড ও শিশুদের খেলার যায়গা সংস্কারেও অর্থ লোপাটের বিষয় আছে। সঠিক তদন্তে তা বেরিয়ে আসবে। এছাড়াও অনেক প্রকল্পের কাজ না করেই অর্থ লোপাটের ঘটনায় সংবাদ মাধ্যমে খবর হয়েছে।

স্থানীয়দের অভিযোগ, এই ধরনের অতিরিক্ত মূল্য ধরা হলে সরকারি অর্থ অপচয়ের ঝুঁকি থাকে এবং সঠিক তদারকি না হলে অর্থ লোপাটের সম্ভাবনাও থাকে।  

এ বিষয়ে এ কাজের ঠিকাদার মারদ ট্রেডার্স এর কর্ণধার ফারুক আহমাদ বলেন, ত্রিশ লাখ টাকার এই কাজ আমি ১০% লেস এর পর ২৭ লাখ টাকায় সোনারগাঁ অডিটোরিয়াম সংস্কারের কাজ সম্পূর্ণ শেষ করে উপজেলা ইঞ্জিনিয়ার আলমগির স্যারকে বুজিয়ে দিয়েছি।

তারপর উপজেলা নির্বাহী অফিসার ফারজানা ইসলাম আমার বিল পাস করেন। এখানে অতিরিক্ত বিল ভাউচার বা কাজ ঠিক-বেঠিক বিষয়টা আপনি সাংবাদিক দেখে কি করবেন? যারা দেখার তারা দেখেই আমার বিল পাস করছে।

এ বিষয়ে জানতে উপজেলা ইঞ্জিনিয়ার আলমগির হোসাইন এর সাথে যোগাযোগ করলে তিনি কোন মন্তব্য করতে রাজি নয়। 

সোনারগাঁ উপজেলা নির্বাহী অফিসার ফারজানা ইসলামের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, সোনারগাঁ অডিটোরিয়াম সংস্কারে কোন প্রকার দূর্নীতি হয়নি। এ কাজের বিল পাস দিয়েছি আমি।

কাজেই আমি এ কাজের খোঁজখবর করেই দিয়েছি। আমি আপনাদের সহযোগীতা করতে পারব না।  আপনারা আপনাদের মতো অনুসন্ধান করেন।
 

উৎস: Narayanganj Times

কীওয়ার্ড: স ন রগ ও ন র য়ণগঞ জ অর থ ল প ট র প রকল প স ন রগ সরক র উপজ ল

এছাড়াও পড়ুন:

আধুনিক টিভির যত আধুনিক সুবিধা

টেলিভিশনকে বাংলায় বলা হয় ‘দূরদর্শন’। মাত্র কয়েক বছর আগেও এটি সত্যিই ছিল দূরদর্শনের মাধ্যম—দূরের কোনো ঘটনা চোখের সামনে এনে দেওয়ার একটি যন্ত্র। কিন্তু সময়ের সঙ্গে বদলে গেছে টিভির সংজ্ঞা, উদ্দেশ্য ও ব্যবহার। প্রযুক্তির দ্রুত অগ্রগতিতে আজকাল টিভি হয়ে উঠেছে একটি ‘স্মার্ট হাব’, যেখানে সিনেমা দেখা, গেম খেলা, ভিডিও কল করা, এমনকি বাড়ির অন্যান্য স্মার্ট ডিভাইসও নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব। আধুনিক টিভিগুলোর সুবিধা কেবল ছবি বা সাউন্ডে সীমাবদ্ধ নয়, বরং এগুলো এখন ব্যবহারকারীদের এনে দিয়েছে একসঙ্গে বিনোদন, সংযোগ, যোগাযোগ ও নিয়ন্ত্রণের নতুন এক এক্সপেরিয়েন্স।

স্মার্ট অপারেটিং সিস্টেম

বর্তমান প্রজন্মের টিভিগুলো শুধু নাটক কিংবা সিনেমা দেখার একটি স্ক্রিন নয়, বরং একটি সম্পূর্ণ স্মার্ট ডিভাইস। স্মার্ট টিভিতে অপারেটিং সিস্টেম (ওএস) হিসেবে টাইজেন, অ্যান্ড্রয়েড টিভি, রোকু টিভি এবং ওয়েবওএস ইত্যাদি ব্যবহৃত হয়। এই সিস্টেমগুলোর মাধ্যমেই বর্তমান যুগের টিভিগুলো হয়ে উঠছে আধুনিক থেকে আধুনিকতর। ব্যবহারকারীরা এখন চাইলেই স্মার্ট টিভিগুলোতে নেটফ্লিক্স, ইউটিউব, স্পটিফাই, অ্যামাজন প্রাইম কিংবা যেকোনো ওটিটি প্ল্যাটফর্মও সরাসরি উপভোগ করতে পারেন।

আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হলো ‘অ্যাপ স্টোর ইন্টিগ্রেশন’। টিভিতেই এখন মোবাইলের মতো অ্যাপ ডাউনলোড করে ব্যবহার করা যায়। ওয়েদার অ্যাপ, গেমস, নিউজ—এমনকি ভিডিও কনফারেন্সিং অ্যাপও ব্যবহার করা যায় টিভির বড় স্ক্রিনে।

ভয়েস কন্ট্রোল: কথা বলেই নিয়ন্ত্রণ

রিমোট খোঁজার ঝামেলা এখন যেন অতীত। আগে টিভির সবকিছু রিমোট দ্বারা পরিচালিত হলেও এখনকার আধুনিক টিভিগুলোতে আছে ভয়েস কন্ট্রোল—যেখানে ব্যবহারকারীর ভয়েস দ্বারাই টিভি নিয়ন্ত্রণ করা যায়। এই প্রযুক্তি বিক্সবি, গুগল অ্যাসিস্ট্যান্ট, অ্যালেক্সার মতো ভয়েস অ্যাসিস্ট্যান্টের মাধ্যমে কাজ করে। এর পাশাপাশি কিছু হাই-এন্ড মডেলে রয়েছে জেসচার কন্ট্রোল—যেখানে হাত নাড়লেই টিভি রেসপন্স করে। টিভি চালু-বন্ধ করা, চ্যানেল পরিবর্তন—এমনকি ভলিউম বাড়ানো-কমানোর মতো কাজও করা যায় হাতের ইশারায়। এ ক্ষেত্রে গ্যালাক্সি ওয়াচের কথা বলা যায়। এটি হাতের নড়াচড়াকে শনাক্ত করে এসব কমান্ড কার্যকর করে।

মাল্টি-ডিভাইস কানেকটিভিটি: এক স্ক্রিনে সব সংযোগ

বর্তমানে টিভি শুধু সম্প্রচার মাধ্যম নয়; এটি হয়ে উঠেছে একটি সেন্ট্রাল কন্ট্রোল ইউনিট। মোবাইল ফোন, স্পিকার, ল্যাপটপ, গেমিং কনসোল—সব ডিভাইস এখন টিভির সঙ্গে সহজেই সংযুক্ত করা যায়।

বেশির ভাগ স্মার্ট টিভিতে রয়েছে ওয়াই-ফাই, ব্লুটুথ, এইচডিএমআই এআরসি, এয়ার প্লে, মিরাকাস্টসহ বিভিন্ন সুবিধা। ফলে ব্যবহারকারী চাইলে নিজের ফোনের ছবি, ভিডিও বা প্রেজেন্টেশন মুহূর্তেই বড় স্ক্রিনে শেয়ার করতে পারেন। সেই সঙ্গে আধুনিক টিভিগুলোতে রয়েছে গেমারদের জন্য এইচডিএমআই ২.১ পোর্ট এবং কম ইনপুট ল্যাগযুক্ত ডিসপ্লে, যা গেমিং এক্সপেরিয়েন্সকে করে তোলে আরও স্মুথ।

আধুনিক টিভিগুলো ব্যবহারকারীদের এনে দিয়েছে একসঙ্গে বিনোদন, সংযোগ, যোগাযোগ ও নিয়ন্ত্রণের নতুন এক এক্সপেরিয়েন্স

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • জামিনের পর মামলা নিয়ে মেহজাবীনের বিবৃতি
  • আধুনিক টিভির যত আধুনিক সুবিধা
  • যুক্তরাষ্ট্রে দুই কিশোরের মৃত্যু: পেশি ক্ষয়রোগে থেরাপি ব্যবহারে গুরুতর সতর্কতা