বাংলাদেশ ইসলামী আন্দোলন ও জামায়াতে ইসলামীর কড়া সমালোচনা করেছেন বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব শহীদ উদ্দীন চৌধুরী এ্যানি। আজ সোমবার দুপুরে লক্ষ্মীপুর জেলা আউটডোর স্টেডিয়াম মাঠে সদর পূর্ব বিএনপির প্রতিনিধি সম্মেলনে অংশ নিয়ে বক্তব্যে এ সমালোচনা করেন।

বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব এ্যানি বলেন, ‘চরমোনাই পীর জাতীয় বেইমান ও ভণ্ড। স্বৈরাচার শেখ হাসিনা পতনে কোনো ভূমিকা ছিল না ইসলামী আন্দোলনের। বিগত ১৭ বছরের ফাসিস্টবিরোধী কোনো আন্দোলনে ইসলামী আন্দোলন, হাতপাখা বা চরমোনাই পীরের কোনো ভূমিকা ছিল না। বরং স্বৈরাচার শেখ হাসিনার সঙ্গে তাঁদের সখ্য ছিল। বর্তমানে নির্বাচন নিয়ে নানা ষড়যন্ত্রে লিপ্ত রয়েছে দলটি। নির্বাচন বিঘ্নিত করতে নানা চক্রান্ত করা হচ্ছে। ইসলামের নামে তারা চক্রান্ত করছে। ষড়যন্ত্র করছে। সবাই ঐক্যবদ্ধভাবে এই জাতীয় বেইমানদের চিহ্নিত করে রাখতে হবে। কোনো ষড়যন্ত্রই কাজে আসবে না। ঐক্যবদ্ধভাবে তা মোকাবিলা করা হবে।’

জামায়াতে ইসলামীর সমালোচনা করে এ্যানি বলেন, ‘পিআর পদ্ধতি নিয়ে জামায়াতে ইসলামীর ভূমিকা এবং তারা ’৮৬ ও ’৯৬ সালে বিভিন্নভাবে শুধু আমাদের অসহযোগিতা করে নাই, পুরো জাতিকে অসহযোগিতা করেছে। হাসিনাকে টিকিয়ে রাখার স্বার্থে তাদের সঙ্গে থেকে জাতীয় বেইমান হিসেবে, আত্মস্বীকৃত বেইমান হিসেবে তারা বাংলাদেশে প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল।’

বিএনপির নেতা-কর্মীদের উদ্দেশে এ্যানি আরও বলেন, ‘কেউ দলের নাম ভাঙিয়ে চাঁদাবাজি, টেন্ডারবাজিসহ নানা অপরাধ কর্মকাণ্ড করবেন; সেটা দল মেনে নেবে না। সেটা হতে দেওয়া হবে না। যাঁরা এসব অপকর্মের সঙ্গে জড়িত হবেন, তাঁদের বিরুদ্ধে সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেওয়া হবে। ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের যে ৩১ দফা রয়েছে, সেটা বাস্তবায়নে কাজ করছে বিএনপি। ফ্যাসিস্ট হাসিনার অত্যাচার, নির্যাতন, গুম, খুন ও হামলা-মামলার শিকার হয়েছেন বিএনপির অঙ্গসংগঠনের হাজার হাজার নেতা-কর্মী। এরপরও আন্দোলন–সংগ্রাম বন্ধ করতে পারেনি।’

শহীদ উদ্দীন চৌধুরী এ্যানি বলেন, ‘সামনে আমাদের টার্গেট জাতীয় নির্বাচন। বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান পরামর্শ দিয়েছেন, আমাদের ঐক্যবদ্ধভাবে টিমওয়ার্কের মাধ্যমে প্রত্যেক ঘরে ঘরে যেতে হবে। প্রজন্মের কাছে পৌঁছাতে হবে। সবার কাছে গিয়ে খালেদা জিয়া ও তারেক রহমানের সালাম জানিয়ে ভোট চাইতে হবে।’

লক্ষ্মীপুর সদর উপজেলা পূর্ব বিএনপির সভাপতি মাইন উদ্দিন চৌধুরীর সভাপতিত্বে প্রতিনিধি সম্মেলনের সঞ্চালনার দায়িত্বে ছিলেন সাধারণ সম্পাদক মোখলেছুর রহমান ও যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক শাহ মো.

এমরান।

প্রতিনিধি সম্মেলনে প্রধান অতিথি ছিলেন বিএনপির চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য ইসমাইল জবি উল্লাহ। বিশেষ অতিথি ছিলেন লক্ষ্মীপুর-২ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য আবুল খায়ের ভূঁইয়া, কেন্দ্রীয় বিএনপি নেতা আশরাফ উদ্দিন, হারুনুর রশিদ, জেলা বিএনপির সদস্য সচিব সাহাব উদ্দিন প্রমুখ।

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: ন ব এনপ র ইসল ম র ন ত কর উদ দ ন রহম ন

এছাড়াও পড়ুন:

আগামী নির্বাচন ও বাংলাদেশকে নিয়ে গভীর ষড়যন্ত্র চলছে: আবদুল্লাহ মুহাম্মদ তাহের

আসন্ন ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন ও বাংলাদেশকে নিয়ে গভীর ষড়যন্ত্র চলছে বলে মন্তব্য করেছেন জামায়াতে ইসলামীর নায়েবে আমির সৈয়দ আবদুল্লাহ মুহাম্মদ তাহের।

আজ শুক্রবার সন্ধ্যায় কুমিল্লার চৌদ্দগ্রাম উপজেলার শ্রীপুর ইউনিয়ন জামায়াতের আয়োজনে চৌমুহনী বাজার মুজিবুল হক উচ্চবিদ্যালয় মাঠে নির্বাচনী জনসভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে আবদুল্লাহ মুহাম্মদ তাহের এ কথা বলেন। আবদুল্লাহ মুহাম্মদ তাহের কুমিল্লা-১১ (চৌদ্দগ্রাম) আসনের সাবেক সংসদ সদস্য।

আবদুল্লাহ মুহাম্মদ তাহের বলেন, ‘পত্রিকায় দেখলাম, নিরাপত্তা উপদেষ্টা ভারতে গিয়েছেন। সেখানে কী আলোচনা হয়েছে—সংবাদ সম্মেলন করে সরকারকে তা জাতির কাছে পরিষ্কার করতে হবে। জীবন দিয়ে, রক্ত দিয়ে ভারতের আধিপত্যবাদকে বাংলার মানুষ এই দেশ থেকে তাড়িয়েছে। ভারতের আধিপত্যবাদ ও বশ্যতা বাংলার মানুষ আর কখনোই গ্রহণ করবে না। এই অন্তর্বর্তী সরকার যদি ভারতের অন্যায় কোনো আবদারে এবং অন্যায় সিদ্ধান্তের প্রতি নতি স্বীকার করতে চায়, তাহলে আপনাদের পরিণতিও শুভ হবে না। জনগণ আপনাদের ক্ষমা করবে না।’

অন্তর্বর্তী সরকার বিএনপির ফাঁদে পা দিয়েছে উল্লেখ করে জামায়াতের নায়েবে আমির বলেন, ‘একটি দল সংস্কার চাচ্ছে না। তারা পুরোনো বস্তাপচা নিয়মে নির্বাচন করতে পাঁয়তারা করছে। অন্তর্বর্তী সরকারও ওই দলের ফাঁদে পা দিয়েছে। সরকারের সিদ্ধান্তে জনগণের ইচ্ছার প্রতিফলন ঘটেনি। যদি সংস্কার না হয়, শহীদের রক্তের সঙ্গে বেইমানি করা হবে। সে জন্য আমরা গণভোটের কথা বলেছি। সরকার গণভোট দেবে বলেছে, কিন্তু প্যাঁচ লাগিয়ে দিয়েছে। সেটা হচ্ছে, গণভোট ও জাতীয় নির্বাচন একসঙ্গে হবে। তাদের বুঝতে হবে, এই দুটো নির্বাচন এক জিনিস নয়। কিন্তু ওই দলটি আলাদা গণভোট চায় না। কারণ, ডাকসু, চাকসু, জাকসু ও রাকসুর নির্বাচনের ফলাফল। জনগণ সংস্কারের পক্ষে। জাতীয় নির্বাচনের আগে যদি গণভোট হয়, তাহলে শতকরা ৮০ ভাগ লোক আমাদের পক্ষে রায় দেবে বলে আমি বিশ্বাস করি।’

চৌদ্দগ্রামের শ্রীপুর ইউনিয়ন জামায়াতের আমির মাওলানা আবদুল হাকিমের সভাপতিত্বে জনসভায় প্রধান বক্তা ছিলেন জামায়াতের কেন্দ্রীয় সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল মাওলানা আবদুল হালিম। বিশেষ অতিথি কুমিল্লা দক্ষিণ জেলা জামায়াতের আমির মুহাম্মদ শাহজাহান। আরও উপস্থিত ছিলেন জামায়াতের ঢাকা মহানগরী উত্তরের কর্মপরিষদ সদস্য শাহাব উদ্দিন, চৌদ্দগ্রাম উপজেলা জামায়াতের আমির মাহফুজুর রহমান, সেক্রেটারি বেলাল হোসাইন, চৌদ্দগ্রাম পৌর আমির মাওলানা মু. ইব্রাহীম, ছাত্রশিবিরের কেন্দ্রীয় মাদ্রাসাবিষয়ক সম্পাদক আলাউদ্দিন, কুমিল্লা জেলা শ্রমিক কল্যাণ ফেডারেশনের সেক্রেটারি খায়রুল ইসলাম প্রমুখ।

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • নির্বাচন ঘিরে নানা ধরনের ষড়যন্ত্র চলছে: খন্দকার মোশাররফ
  • ধানের শীষের বিজয় নিশ্চিত জেনে একটি দল ষড়যন্ত্র শুরু করেছে: দুলু
  • রাজনীতিতে ফ্যাসিবাদ প্রত্যাবর্তনের ষড়যন্ত্র নস্যাত করে দিতে হবে
  • আগামী নির্বাচন ও বাংলাদেশকে নিয়ে গভীর ষড়যন্ত্র চলছে: আবদুল্লাহ মুহাম্মদ তাহের