ইসলামী আন্দোলন ও জামায়াতের কড়া সমালোচনায় বিএনপির এ্যানি
Published: 22nd, September 2025 GMT
বাংলাদেশ ইসলামী আন্দোলন ও জামায়াতে ইসলামীর কড়া সমালোচনা করেছেন বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব শহীদ উদ্দীন চৌধুরী এ্যানি। আজ সোমবার দুপুরে লক্ষ্মীপুর জেলা আউটডোর স্টেডিয়াম মাঠে সদর পূর্ব বিএনপির প্রতিনিধি সম্মেলনে অংশ নিয়ে বক্তব্যে এ সমালোচনা করেন।
বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব এ্যানি বলেন, ‘চরমোনাই পীর জাতীয় বেইমান ও ভণ্ড। স্বৈরাচার শেখ হাসিনা পতনে কোনো ভূমিকা ছিল না ইসলামী আন্দোলনের। বিগত ১৭ বছরের ফাসিস্টবিরোধী কোনো আন্দোলনে ইসলামী আন্দোলন, হাতপাখা বা চরমোনাই পীরের কোনো ভূমিকা ছিল না। বরং স্বৈরাচার শেখ হাসিনার সঙ্গে তাঁদের সখ্য ছিল। বর্তমানে নির্বাচন নিয়ে নানা ষড়যন্ত্রে লিপ্ত রয়েছে দলটি। নির্বাচন বিঘ্নিত করতে নানা চক্রান্ত করা হচ্ছে। ইসলামের নামে তারা চক্রান্ত করছে। ষড়যন্ত্র করছে। সবাই ঐক্যবদ্ধভাবে এই জাতীয় বেইমানদের চিহ্নিত করে রাখতে হবে। কোনো ষড়যন্ত্রই কাজে আসবে না। ঐক্যবদ্ধভাবে তা মোকাবিলা করা হবে।’
জামায়াতে ইসলামীর সমালোচনা করে এ্যানি বলেন, ‘পিআর পদ্ধতি নিয়ে জামায়াতে ইসলামীর ভূমিকা এবং তারা ’৮৬ ও ’৯৬ সালে বিভিন্নভাবে শুধু আমাদের অসহযোগিতা করে নাই, পুরো জাতিকে অসহযোগিতা করেছে। হাসিনাকে টিকিয়ে রাখার স্বার্থে তাদের সঙ্গে থেকে জাতীয় বেইমান হিসেবে, আত্মস্বীকৃত বেইমান হিসেবে তারা বাংলাদেশে প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল।’
বিএনপির নেতা-কর্মীদের উদ্দেশে এ্যানি আরও বলেন, ‘কেউ দলের নাম ভাঙিয়ে চাঁদাবাজি, টেন্ডারবাজিসহ নানা অপরাধ কর্মকাণ্ড করবেন; সেটা দল মেনে নেবে না। সেটা হতে দেওয়া হবে না। যাঁরা এসব অপকর্মের সঙ্গে জড়িত হবেন, তাঁদের বিরুদ্ধে সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেওয়া হবে। ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের যে ৩১ দফা রয়েছে, সেটা বাস্তবায়নে কাজ করছে বিএনপি। ফ্যাসিস্ট হাসিনার অত্যাচার, নির্যাতন, গুম, খুন ও হামলা-মামলার শিকার হয়েছেন বিএনপির অঙ্গসংগঠনের হাজার হাজার নেতা-কর্মী। এরপরও আন্দোলন–সংগ্রাম বন্ধ করতে পারেনি।’
শহীদ উদ্দীন চৌধুরী এ্যানি বলেন, ‘সামনে আমাদের টার্গেট জাতীয় নির্বাচন। বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান পরামর্শ দিয়েছেন, আমাদের ঐক্যবদ্ধভাবে টিমওয়ার্কের মাধ্যমে প্রত্যেক ঘরে ঘরে যেতে হবে। প্রজন্মের কাছে পৌঁছাতে হবে। সবার কাছে গিয়ে খালেদা জিয়া ও তারেক রহমানের সালাম জানিয়ে ভোট চাইতে হবে।’
লক্ষ্মীপুর সদর উপজেলা পূর্ব বিএনপির সভাপতি মাইন উদ্দিন চৌধুরীর সভাপতিত্বে প্রতিনিধি সম্মেলনের সঞ্চালনার দায়িত্বে ছিলেন সাধারণ সম্পাদক মোখলেছুর রহমান ও যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক শাহ মো.
প্রতিনিধি সম্মেলনে প্রধান অতিথি ছিলেন বিএনপির চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য ইসমাইল জবি উল্লাহ। বিশেষ অতিথি ছিলেন লক্ষ্মীপুর-২ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য আবুল খায়ের ভূঁইয়া, কেন্দ্রীয় বিএনপি নেতা আশরাফ উদ্দিন, হারুনুর রশিদ, জেলা বিএনপির সদস্য সচিব সাহাব উদ্দিন প্রমুখ।
উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: ন ব এনপ র ইসল ম র ন ত কর উদ দ ন রহম ন
এছাড়াও পড়ুন:
পোষ্য কোটা ফেরানোর প্রতিবাদে কাফনের কাপড় জড়িয়ে আমরণ অনশনে এক শিক্ষার্থী
রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে স্নাতক (সম্মান) প্রথম বর্ষের ভর্তি পরীক্ষায় শিক্ষক-কর্মকর্তা-কর্মচারীদের সন্তানদের জন্য পোষ্য কোটা পুনর্বহালের সিদ্ধান্তের প্রতিবাদে এক শিক্ষার্থী আমরণ অনশনে বসেছেন। আজ শুক্রবার বিকেল সাড়ে পাঁচটার দিকে তিনি মাথা ও শরীরে কাফনের কাপড় জড়িয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসন ভবনের সামনে এ কর্মসূচি শুরু করেন।
ওই শিক্ষার্থীর নাম আসাদুল ইসলাম। তিনি বিশ্ববিদ্যালয়ের সংস্কৃত বিভাগের ২০২০-২১ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী। অনশনের সময় তাঁর পেছনে রাখা ব্যানারে লেখা ছিল—‘রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে পোষ্য কোটা নামক বিষফোঁড়া পুনর্বহাল রাখার প্রতিবাদে আমরণ অনশন ধর্মঘট’।
আসাদুল ইসলাম প্রথম আলোকে বলেন, ‘পোষ্য কোটা নামক বিষফোঁড়া মাথাচাড়া দিয়ে উঠেছে। এটাকে নির্মূল করার জন্যই আমার এ কর্মসূচি। জুলাই আন্দোলনে যে কোটার বিরুদ্ধে এত রক্তপাত, এত মৃত্যু, স্বৈরশাসকের পতন হলো, সেই কোটা আবার ফিরেছে। আমি কোটার পক্ষে নই। যদি কোটা দেওয়া হয়, সেটা কৃষক-শ্রমিক-মজুরের সন্তানদের দেওয়া হোক। এই কোটা বাতিলের সিদ্ধান্ত না হওয়া পর্যন্ত আমার অনশন চলবে। আমি কোনো খাবার-পানি খাব না। এখন পর্যন্ত প্রশাসনের কেউ আসেনি। রাতে এখানেই অবস্থান করব।’
গতকাল বৃহস্পতিবার প্রথম বর্ষের ভর্তি পরীক্ষায় শিক্ষক-কর্মকর্তা-কর্মচারীদের সন্তানদের জন্য ১০টি শর্তে পোষ্য কোটা ফিরিয়ে আনার সিদ্ধান্ত হয়। উপাচার্যের দায়িত্বে থাকা সহ-উপাচার্য (প্রশাসন) মোহাম্মদ মাঈন উদ্দীনের সভাপতিত্বে সিনেট ভবনে অনুষ্ঠিত ভর্তি উপকমিটির সভায় এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। পরে রাত আটটার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের জনসংযোগ দপ্তরের পাঠানো সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বিষয়টি জানানো হয়। খবর পেয়ে শিক্ষার্থীরা বৃহস্পতিবার সন্ধ্যা থেকেই প্রতিবাদ শুরু করেন। পরে বিভিন্ন রাজনৈতিক সংগঠনের নেতা-কর্মীরা তাঁদের সঙ্গে একাত্মতা প্রকাশ করেন। রাত সাড়ে ১১টা পর্যন্ত ক্যাম্পাসে বিক্ষোভ চলে। আজ শুক্রবার জুমার নামাজের পরও বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ হয়।
সমাবেশে শিক্ষার্থীরা বলেন, পোষ্য কোটা একটি মীমাংসিত ইস্যু। এটি অন্যায্য ও অযৌক্তিক একটি কোটা। তাঁরা প্রয়োজনে রক্ত দেবেন, তবু ক্যাম্পাসে এ কোটা ফিরতে দেবেন না। তাঁদের অভিযোগ, দীর্ঘ ৩৫ বছর পর রাকসু নির্বাচন ঘিরে যখন ক্যাম্পাসে উৎসবমুখর পরিবেশ তৈরি হয়েছে, তখন এ সিদ্ধান্ত শিক্ষক-শিক্ষার্থীর মধ্যে বিভেদ সৃষ্টির ষড়যন্ত্র। এই ষড়যন্ত্র কোনোভাবেই বাস্তবায়ন করতে দেওয়া হবে না বলে তাঁরা জানান।
কোটা পুনর্বহালের বিষয়ে শুক্রবার দুপুরে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য সালেহ্ হাসান নকীব সাংবাদিকদের বলেন, শিক্ষক-কর্মকর্তা-কর্মচারীদের ঘোষিত ২১ সেপ্টেম্বরের রাকসু নির্বাচনে শাটডাউন কর্মসূচির প্রভাব পড়ার শঙ্কা ছিল। এ জন্য একাডেমিক কাউন্সিলের ভর্তি উপকমিটি এক সভায় এ সিদ্ধান্ত নিয়েছে। তবে শিক্ষার্থীরা যা চান, সেটাই হবে। কারণ, তাঁরা শান্তিপূর্ণ একটি বিশ্ববিদ্যালয় চান।