চাকসু নির্বাচন তিন দিন পেছাল, নতুন তারিখ ১৫ অক্টোবর
Published: 23rd, September 2025 GMT
চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (চাকসু) ও হল সংসদ নির্বাচনের তারিখ তিন দিন পিছিয়েছে। আগামী ১৫ অক্টোবর এ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। ১২ অক্টোবর থেকে ১৮ অক্টোবর পর্যন্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের সকল পরীক্ষা স্থগিত থাকবে। আর ১৪, ১৫ ও ১৬ সেপ্টেম্বর ক্লাস বন্ধ থাকবে।
আজ মঙ্গলবার বিকেলে চারটায় বিশ্ববিদ্যালয়ের চাকসু ভবনের দ্বিতীয় তলায় এক সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানায় চাকসু নির্বাচন কমিশন। সংবাদ সম্মেলনে কমিশনের সদস্যসচিব এ কে এম আরিফুল হক সিদ্দিকী বলেন, ‘দুপুর দুইটায় নির্বাচন কমিশনারের সদস্যদের বৈঠক ছিল। এ বৈঠকে নতুন প্রক্টর হোসেন শহীদ সরওয়ার্দী ও সহকারী প্রক্টর ইসমত আরা হক শপথ নেন। এ বৈঠকে তারিখ পেছানোর সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
আরও পড়ুনসেই ‘ভাতের হোটেলে’ এখন ভোটের উত্তাপ৬ ঘণ্টা আগেএর আগে গতকাল নির্বাচন কমিশনের সঙ্গে প্রার্থীদের মতবিনিময় সভা হয়েছিল। এতে প্রার্থীরা প্রচারণার সময় বাড়িয়ে নির্বাচনের তারিখ পরিবর্তনের দাবি করেছিলেন। এর প্রেক্ষিতেই নির্বাচনের তারিখ পরিবর্তন করা হয়েছে বলে জানিয়েছে নির্বাচন কমিশনের সদস্যসচিব এ কে এম আরিফুল হক সিদ্দিকী।
গত ২৮ আগস্ট চাকসু নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা করেছিল নির্বাচন কমিশন। ঘোষণা অনুযায়ী নির্বাচন হওয়ার কথা ছিল ১২ অক্টোবর। তবে তা পেছানো হয়েছে। নির্বাচনে অংশ নিতে ইতিমধ্যে ৯৩১জন মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছেন। এর মধ্যে চাকসুতে ২৬ পদের বিপরীতে ৪২৯জন আর হল সংসদে ১৯৬টি পদের বিপরীতে ৪৮১ জন মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছেন।
আরও পড়ুননির্বাচনে স্বতন্ত্র প্রার্থী হলেন ৩৮৫ শিক্ষার্থী ২১ ঘণ্টা আগেনির্বাচন কমিশনের ঘোষিত সূচি অনুযায়ী, গতকাল চাকসুর মনোনয়নপত্র যাচাই-বাছাইয়ের পর প্রার্থীদের প্রাথমিক তালিকা প্রকাশ হয়েছে । আগামীকাল পর্যন্ত প্রার্থিতা প্রত্যাহারের সুযোগ থাকছে। আগামী বৃহস্পতিবার প্রার্থীদের চূড়ান্ত তালিকা প্রকাশিত হবে। আগামী ১৫ অক্টোবর সকাল ৯টা থেকে বিকেল ৪টা পর্যন্ত ভোট গ্রহণ অনুষ্ঠিত হবে। ভোট শেষে গণনা শুরু হবে।
.উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
হল সংসদে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় জিতছেন ২১ নারী
চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের হল সংসদ নির্বাচনে ২২ জন প্রার্থী বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হতে চলছেন। তাঁদের মধ্যে ২১ জনই নারী। প্রার্থী কম থাকায় ছাত্রী হলে নির্বাচন কম প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ হচ্ছে বলে অভিমত শিক্ষার্থীদের।
বিশ্ববিদ্যালয় সূত্রে জানা গেছে, নারী শিক্ষার্থীদের জন্য বিশ্ববিদ্যালয়ের পাঁচটি হল রয়েছে। প্রতিটি হল সংসদে ১৪টি করে মোট পদের সংখ্যা ৭০। এসব পদে ১২৫ জন মনোনয়নপত্র নিয়েছেন। এর মধ্যে ২১টি পদে কেবল একজন করে শিক্ষার্থী মনোনয়নপত্র নিয়েছেন। প্রতিদ্বন্দ্বী না থাকায় ভোটাভুটি ছাড়াই তাঁরা নির্বাচিত হতে চলছেন।
ছাত্রদের হল রয়েছে ৯টি। এসব হল সংসদেও ১৪টি করে মোট ১২৬টি পদ রয়েছে। এসব পদে ৩৫৬ জন প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। এর মধ্যে শাহজালাল হলের রিডিং রুম, ডাইনিং ও হল লাইব্রেরি সম্পাদক পদে কেবল একজন প্রার্থী হয়েছেন। মোহাম্মদ তানভীর হাসান নামের ওই প্রার্থী বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হতে চলছেন।
একাডেমিক চাপ ও পারিবারিক কারণও অনেক শিক্ষার্থী প্রার্থী না হওয়ার অন্যতম কারণ। এসব চাপে আমি নিজেও তেমন আগ্রহী ছিলাম না। পরে আমার পরিবার থেকে সমর্থন পাওয়ার কারণে আমি দাঁড়িয়েছি।—পারমিতা চাকমা, ভিপি প্রার্থী, নওয়াব ফয়জুন্নেছা হলবিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হতে চলা নারীর সংখ্যা সবচেয়ে বেশি নওয়াব ফয়জুন্নেছা হলে। এই হলে সহসভাপতি (ভিপি) পদসহ ১১টি পদেই প্রার্থী রয়েছেন একজন করে। কেবল ৩টি পদে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। শামসুন নাহার হলেও সাতটি পদে একজন করে শিক্ষার্থী মনোনয়নপত্র সংগ্রহ করায় তাঁরা বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হতে চলছেন। তাঁরা দপ্তর সম্পাদক, রিডিং রুম সম্পাদক, সমাজসেবা সম্পাদক, যোগাযোগ ও আবাসন সম্পাদক এবং নির্বাহী সদস্যের তিনটি পদে প্রার্থী হয়েছেন। প্রীতিলতা হলে খেলাধুলা ও ক্রীড়া সম্পাদক এবং বিজ্ঞান-তথ্যপ্রযুক্তি সম্পাদক পদে একক প্রার্থী হওয়ায় দুজন নারী জয়ী হতে চলছেন। এ ছাড়া খেলাধুলা ও ক্রীড়া সম্পাদক পদে বিজয় ২৪ হলেও কেবল একজন নারী মনোনয়নপত্র নিয়েছেন।
নওয়াব ফয়জুন্নেছা হল সংসদের সহসভাপতি (ভিপি) পদে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় জয়ী হতে চলছেন পারমিতা চাকমা। ‘হৃদ্যতার বন্ধন’ নামে একটি প্যানেলের হয়ে প্রার্থী হয়েছেন তিনি। জানতে চাইলে প্রথম আলোকে তিনি বলেন, ‘শুরুতে মনে হয়েছিল আরও কেউ দাঁড়াবে। তবে শিক্ষার্থীরা আমার ওপর ভরসা রেখে কেউ প্রতিদ্বন্দ্বী হয়নি।’ হলে অন্যান্য পদেও একই অবস্থার বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি আরও বলেন, ‘একাডেমিক চাপ ও পারিবারিক কারণও অনেক শিক্ষার্থী প্রার্থী না হওয়ার অন্যতম কারণ। এসব চাপে আমি নিজেও তেমন আগ্রহী ছিলাম না। পরে আমার পরিবার থেকে সমর্থন পাওয়ার কারণে আমি দাঁড়িয়েছি।’
বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হতে চলা নারীর সংখ্যা সবচেয়ে বেশি নওয়াব ফয়জুন্নেছা হলে। এই হলে সহসভাপতি (ভিপি) পদসহ ১১টি পদেই প্রার্থী রয়েছেন একজন করে। কেবল ৩টি পদে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। শামসুন নাহার হলেও সাতটি পদে একজন করে শিক্ষার্থী মনোনয়নপত্র সংগ্রহ করায় তাঁরা বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হতে চলছেন।নির্বাচন কমিশনার এ কে এম আরিফুল হক সিদ্দিকী বলেন, চূড়ান্ত প্রার্থী তালিকা এখনো প্রস্তুত হয়নি। এখনো প্রার্থিতা প্রত্যাহারের সময় আছে। প্রার্থী তালিকা চূড়ান্ত হওয়ার পর যেসব পদে একক প্রার্থী রয়েছেন, তাঁরা বিজয়ী বলে গণ্য হবেন।
হল সংসদে প্রার্থী কম হলেও চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যায় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (চাকসু) নির্বাচনের শীর্ষ তিনটি পদে তীব্র প্রতিদ্বন্দ্বিতা লক্ষ করা গেছে। প্রার্থী তালিকা অনুযায়ী, সহসভাপতি (ভিপি) পদে ২৩ জন, সাধারণ সম্পাদক (জিএস) পদে ২১ জন এবং সহসাধারণ সম্পাদক (এজিএস) পদে ২২ জন প্রার্থী রয়েছেন। তিন পদে মোট প্রার্থীর সংখ্যা ৪৬। কেন্দ্রীয় সংসদ নির্বাচনে মনোনয়ন ফরম জমা দিয়েছিলেন ৪২৯ জন, যার মধ্যে ১৯ জন প্রার্থীর মনোনয়ন বাতিল করা হয়েছে। চাকসুর ভোট গ্রহণ হবে আগামী ১২ অক্টোবর।