যৌথ পরিবারে বড় হওয়া অনেকের জন্য একটি অনন্য অভিজ্ঞতা। পরিবারের বড় ভাই বা বোন হিসেবে ভাইবোন ও চাচাতো বা মামাতো ভাইবোনদের দিকে নজর রাখার দায়িত্ব প্রায়ই আমাদের ওপর এসে পড়ে।

বিশেষ করে যখন তারা কিশোর বয়সে থাকে, তখন তাদের জীবনযাত্রা টিভি, সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম বা অন্যান্য বিনোদনের মধ্যে ডুবে থাকে। এই সময়ে তাদের ইসলামের পথে আনার দায়িত্ব পালন করা চ্যালেঞ্জিং হতে পারে।

তবে ধৈর্য, ভালোবাসা ও সঠিক পন্থা অবলম্বন করলে তাদের ইসলাম পালনে আগ্রহী করা সম্ভব। নিম্নে কিছু ব্যবহারিক উপায় তুলে ধরা হলো, যা কিশোর বয়সী ভাইবোনদের ইসলামের পথে উৎসাহিত করতে সহায়ক হবে।

তুমি নিশ্চয়ই যাকে ইচ্ছা হেদায়াত দিতে পারো না; বরং আল্লাহ যাকে ইচ্ছা হেদায়াত দেন। তিনিই ভালো জানেন, কে সৎ পথ অবলম্বন করবে।সুরা কাসাস, আয়াত: ৫৬অবিরাম দোয়া করা

প্রকৃত হেদায়াত একমাত্র আল্লাহর পক্ষ থেকে আসে। তাই ভাইবোনদের ইসলামের পথে আনার জন্য নিয়মিত দোয়া করা অত্যন্ত জরুরি।

পবিত্র কোরআনে আল্লাহ বলেন, ‘তুমি নিশ্চয়ই যাকে ইচ্ছা হেদায়াত দিতে পারো না; বরং আল্লাহ যাকে ইচ্ছা হেদায়াত দেন। তিনিই ভালো জানেন, কে সৎ পথ অবলম্বন করবে।’ (সুরা কাসাস, আয়াত: ৫৬)

নিজ ও ভাইবোনদের জন্য ও নিজের প্রচেষ্টা কবুল হওয়ার জন্য আল্লাহর কাছে অবিরাম দোয়া করতে হবে। দোয়া হলো এমন একটি ইবাদত, যা কখনো বৃথা যায় না। রাসুল (সা.

) বলেন, ‘দোয়া হলো ইবাদতের মূল।’ (সুনানে তিরমিজি, হাদিস: ২,৯৬৯)

ধীরে ও নরমভাবে শুরু করা

কিশোর বয়সীরা স্বভাবতঃ কিছুটা বিদ্রোহী হতে পারে। তাই তাদের ইসলামের প্রতি আকৃষ্ট করতে হলে ধৈর্যের সঙ্গে নরমভাবে আহ্বান করতে হবে। অতিরিক্ত চাপ প্রয়োগ করলে তারা দূরে সরে যেতে পারে। রাসুল (সা.) বলেন,‘তোমরা মানুষের জন্য সহজ করো, কঠিন করো না; সুসংবাদ দাও, ঘৃণা সৃষ্টি করো না।’ (সহিহ বুখারি, হাদিস: ৬৯)

উদাহরণস্বরূপ, তাদের সঙ্গে ইসলামের সৌন্দর্য নিয়ে হালকা আলোচনা শুরু করা যেতে পারে। তাদের পছন্দের বিষয়ের সঙ্গে ইসলামের সম্পর্ক তুলে ধরলে তারা আগ্রহী হতে পারে।

আরও পড়ুনমহানবী (সা.) কীভাবে ভুল সংশোধন করতেন১৮ জুন ২০২৫নিজের জীবন দিয়ে উদাহরণ স্থাপন

বড় ভাই বা বোন হিসেবে আপনি তাদের জন্য একজন রোলমডেল। আপনার নামাজ, কোরআন তিলাওয়াত, দোয়া ও সৎ আচরণ তাদের সামনে প্রকাশ্যে পালন করলে তাদের মনে ইতিবাচক প্রভাব পড়বে। কোরআনে বলা হয়েছে, ‘নিশ্চয়ই তোমাদের জন্য রাসুলের মধ্যে রয়েছে উত্তম আদর্শ।’ (সুরা আহজাব, আয়াত: ২১)

যখন তারা দেখবে, আপনি নিয়মিত নামাজ পড়ছেন, পবিত্র কোরআন তিলাওয়াত করছেন এবং সৎ কাজে সময় দিচ্ছেন, তখন তাদের মধ্যে স্বাভাবিকভাবেই অনুকরণের আগ্রহ জন্মাবে।

বড় ভাই বা বোন হিসেবে আপনি তাদের জন্য একজন রোলমডেল। আপনার নামাজ, কোরআন তিলাওয়াত, দোয়া ও সৎ আচরণ তাদের সামনে প্রকাশ্যে পালন করলে তাদের মনে ইতিবাচক প্রভাব পড়বে।নামাজের প্রতি উৎসাহিত করা

নামাজ ইসলামের মূল স্তম্ভ। তাই নামাজের সময় তাদের নরমভাবে ডেকে বলা যেতে পারে, ‘চলো, একসঙ্গে নামাজ পড়ি।’ প্রথমে তারা আগ্রহ না দেখালেও ধৈর্য ধরে বারবার আহ্বান করতে হবে।

রাসুল (সা.) বলেন, ‘সাত বছর বয়সে তোমরা সন্তানদের নামাজের আদেশ দাও, আর ১০ বছর বয়সে না পড়লে শাসন করো।’ (সুনানে আবু দাউদ, হাদিস: ৪৯৫)

নামাজের গুরুত্ব ও সৌন্দর্য নিয়ে ধীরে ধীরে আলোচনা করা যেতে পারে। উদাহরণস্বরূপ, নামাজ কীভাবে মানসিক শান্তি দেয় বা জীবনকে সুশৃঙ্খল করে, তা তাদের বোঝানো যেতে পারে।

মসজিদ ও ইসলামি কার্যক্রমে যুক্ত করা

স্থানীয় মসজিদে কিশোরদের জন্য কোনো শিক্ষামূলক বা সামাজিক কার্যক্রম থাকলে তাদের সেখানে যেতে উৎসাহিত করা যেতে পারে। এটি তাদের টিভি বা সোশ্যাল মিডিয়া থেকে দূরে রাখতে সাহায্য করবে এবং ভালো সঙ্গের মাধ্যমে ইসলামের প্রতি আগ্রহ বাড়বে।

কোরআনে বলা হয়েছে, ‘তুমি ধৈর্যধারণ করো তাদের সঙ্গে, যারা সকাল–সন্ধ্যায় তাদের প্রতিপালকের সন্তুষ্টি কামনা করে আহ্বান জানায়।’ (সুরা কাহফ, আয়াত: ২৮)

মসজিদের কার্যক্রমে অংশগ্রহণ তাদের মধ্যে সম্প্রদায়ের অনুভূতি জাগিয়ে তুলবে এবং ইসলামের প্রতি তাদের দৃষ্টিভঙ্গি ইতিবাচক হবে।

পারিবারিক কার্যক্রমের আয়োজন

যদি মসজিদের কার্যক্রমে তারা আগ্রহ না দেখায়, তবে পরিবারের সবাইকে নিয়ে এমন কোনো জায়গায় যাওয়া যেতে পারে, যা তারা পছন্দ করে।

উদাহরণস্বরূপ, পার্কে বেড়াতে যাওয়া, পিকনিকের আয়োজন বা একসঙ্গে খেলাধুলা। এতে টিভি বা সোশ্যাল মিডিয়া থেকে তাদের মনোযোগ সরানো সহজ হবে এবং পরিবারের সঙ্গে সময় কাটানোর মাধ্যমে ধর্মীয় আলোচনার পরিবেশ তৈরি হবে।

আরও পড়ুনশিশুদের প্রতি মহানবী (সা.)–এর বৈষম্যহীন ভালোবাসা১১ সেপ্টেম্বর ২০২৫তাদের আগ্রহের সঙ্গে ইসলামের সম্পর্ক স্থাপন

কিশোররা প্রায়ই তাদের পছন্দের বিষয়ে উৎসাহী থাকে, যেমন খেলাধুলা, গল্পের বই, বিজ্ঞান বা প্রযুক্তি। তাদের আগ্রহের বিষয়গুলোর সঙ্গে ইসলামের সম্পর্ক তৈরি করে দিলে তারা সহজেই আকৃষ্ট হবে।

উদাহরণস্বরূপ, যদি তারা বিজ্ঞান পছন্দ করে, তবে পবিত্র কোরআনে বিজ্ঞানের সঙ্গে সম্পর্কিত আয়াতগুলো নিয়ে আলোচনা করা যেতে পারে। পবিত্র কোরআনে বলা হয়েছে, ‘তিনি সূর্য ও চাঁদকে নিয়ন্ত্রণ করেন; প্রতিটি নির্দিষ্ট সময়ের জন্য তার কক্ষপথে সঞ্চালিত হয়।’ (সুরা রাদ, আয়াত: ২)

এ ধরনের আলোচনা তাদের মনে ইসলামের প্রতি কৌতূহল জাগাতে পারে।

কিশোররা প্রায়ই তাদের পছন্দের বিষয়ে উৎসাহী থাকে, যেমন খেলাধুলা, গল্পের বই, বিজ্ঞান বা প্রযুক্তি। তাদের আগ্রহের বিষয়গুলোর সঙ্গে ইসলামের সম্পর্ক তৈরি করে দিলে তারা সহজেই আকৃষ্ট হবে।ধৈর্য ও ভালোবাসার গুরুত্ব

ইসলামের পথে কাউকে আনতে ধৈর্য ও ভালোবাসা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। আপনার প্রচেষ্টা হয়তো তাৎক্ষণিক ফল দেবে না, কিন্তু আল্লাহ আপনার নিয়ত দেখেন এবং তার প্রতিদান দেবেন।

পবিত্র কোরআনে বলা হয়েছে, ‘আর যে আল্লাহকে ভয় করে, আল্লাহ তার জন্য পথ বের করে দেবেন এবং তাকে এমন জায়গা থেকে রিজিক দেবেন, যা সে কল্পনাও করে না।’ (সুরা তালাক, আয়াত: ২–৩)

কিশোর বয়সী ভাইবোনদের ইসলামের পথে আনার জন্য ধৈর্য, ভালোবাসা ও সঠিক পন্থা অত্যন্ত জরুরি। নিজের আচরণের মাধ্যমে উদাহরণ স্থাপন, নরমভাবে আহ্বান, নামাজ ও ইসলামি কার্যক্রমে যুক্ত করা এবং তাদের আগ্রহের সঙ্গে ইসলামের সম্পর্ক স্থাপনের মাধ্যমে তাদের মনে ইসলামের প্রতি আকর্ষণ তৈরি করা সম্ভব।

সর্বোপরি, আল্লাহর কাছে অবিরাম দোয়া করতে হবে। আল্লাহ আমাদের সব প্রচেষ্টা কবুল করুন এবং আমাদের পরিবারকে ইসলামের পথে একত্র করুন। আমিন।

[email protected]

মারদিয়া মমতাজ: শিক্ষক, গবেষক ও প্রকৌশলী

আরও পড়ুনসন্তান প্রতিপালনে মহানবী (সা.)-এর ১০টি নির্দেশনা২০ আগস্ট ২০২৫

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: দ র ইসল ম র পথ দ র ইসল ম র প ইসল ম র স দ র জন য ত দ র মন আল ল হ আহ ব ন পর ব র পছন দ আপন র উৎস হ মসজ দ

এছাড়াও পড়ুন:

কিশোরদের ইসলাম অনুশীলনে আগ্রহী করার উপায়

যৌথ পরিবারে বড় হওয়া অনেকের জন্য একটি অনন্য অভিজ্ঞতা। পরিবারের বড় ভাই বা বোন হিসেবে ভাইবোন ও চাচাতো বা মামাতো ভাইবোনদের দিকে নজর রাখার দায়িত্ব প্রায়ই আমাদের ওপর এসে পড়ে।

বিশেষ করে যখন তারা কিশোর বয়সে থাকে, তখন তাদের জীবনযাত্রা টিভি, সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম বা অন্যান্য বিনোদনের মধ্যে ডুবে থাকে। এই সময়ে তাদের ইসলামের পথে আনার দায়িত্ব পালন করা চ্যালেঞ্জিং হতে পারে।

তবে ধৈর্য, ভালোবাসা ও সঠিক পন্থা অবলম্বন করলে তাদের ইসলাম পালনে আগ্রহী করা সম্ভব। নিম্নে কিছু ব্যবহারিক উপায় তুলে ধরা হলো, যা কিশোর বয়সী ভাইবোনদের ইসলামের পথে উৎসাহিত করতে সহায়ক হবে।

তুমি নিশ্চয়ই যাকে ইচ্ছা হেদায়াত দিতে পারো না; বরং আল্লাহ যাকে ইচ্ছা হেদায়াত দেন। তিনিই ভালো জানেন, কে সৎ পথ অবলম্বন করবে।সুরা কাসাস, আয়াত: ৫৬অবিরাম দোয়া করা

প্রকৃত হেদায়াত একমাত্র আল্লাহর পক্ষ থেকে আসে। তাই ভাইবোনদের ইসলামের পথে আনার জন্য নিয়মিত দোয়া করা অত্যন্ত জরুরি।

পবিত্র কোরআনে আল্লাহ বলেন, ‘তুমি নিশ্চয়ই যাকে ইচ্ছা হেদায়াত দিতে পারো না; বরং আল্লাহ যাকে ইচ্ছা হেদায়াত দেন। তিনিই ভালো জানেন, কে সৎ পথ অবলম্বন করবে।’ (সুরা কাসাস, আয়াত: ৫৬)

নিজ ও ভাইবোনদের জন্য ও নিজের প্রচেষ্টা কবুল হওয়ার জন্য আল্লাহর কাছে অবিরাম দোয়া করতে হবে। দোয়া হলো এমন একটি ইবাদত, যা কখনো বৃথা যায় না। রাসুল (সা.) বলেন, ‘দোয়া হলো ইবাদতের মূল।’ (সুনানে তিরমিজি, হাদিস: ২,৯৬৯)

ধীরে ও নরমভাবে শুরু করা

কিশোর বয়সীরা স্বভাবতঃ কিছুটা বিদ্রোহী হতে পারে। তাই তাদের ইসলামের প্রতি আকৃষ্ট করতে হলে ধৈর্যের সঙ্গে নরমভাবে আহ্বান করতে হবে। অতিরিক্ত চাপ প্রয়োগ করলে তারা দূরে সরে যেতে পারে। রাসুল (সা.) বলেন,‘তোমরা মানুষের জন্য সহজ করো, কঠিন করো না; সুসংবাদ দাও, ঘৃণা সৃষ্টি করো না।’ (সহিহ বুখারি, হাদিস: ৬৯)

উদাহরণস্বরূপ, তাদের সঙ্গে ইসলামের সৌন্দর্য নিয়ে হালকা আলোচনা শুরু করা যেতে পারে। তাদের পছন্দের বিষয়ের সঙ্গে ইসলামের সম্পর্ক তুলে ধরলে তারা আগ্রহী হতে পারে।

আরও পড়ুনমহানবী (সা.) কীভাবে ভুল সংশোধন করতেন১৮ জুন ২০২৫নিজের জীবন দিয়ে উদাহরণ স্থাপন

বড় ভাই বা বোন হিসেবে আপনি তাদের জন্য একজন রোলমডেল। আপনার নামাজ, কোরআন তিলাওয়াত, দোয়া ও সৎ আচরণ তাদের সামনে প্রকাশ্যে পালন করলে তাদের মনে ইতিবাচক প্রভাব পড়বে। কোরআনে বলা হয়েছে, ‘নিশ্চয়ই তোমাদের জন্য রাসুলের মধ্যে রয়েছে উত্তম আদর্শ।’ (সুরা আহজাব, আয়াত: ২১)

যখন তারা দেখবে, আপনি নিয়মিত নামাজ পড়ছেন, পবিত্র কোরআন তিলাওয়াত করছেন এবং সৎ কাজে সময় দিচ্ছেন, তখন তাদের মধ্যে স্বাভাবিকভাবেই অনুকরণের আগ্রহ জন্মাবে।

বড় ভাই বা বোন হিসেবে আপনি তাদের জন্য একজন রোলমডেল। আপনার নামাজ, কোরআন তিলাওয়াত, দোয়া ও সৎ আচরণ তাদের সামনে প্রকাশ্যে পালন করলে তাদের মনে ইতিবাচক প্রভাব পড়বে।নামাজের প্রতি উৎসাহিত করা

নামাজ ইসলামের মূল স্তম্ভ। তাই নামাজের সময় তাদের নরমভাবে ডেকে বলা যেতে পারে, ‘চলো, একসঙ্গে নামাজ পড়ি।’ প্রথমে তারা আগ্রহ না দেখালেও ধৈর্য ধরে বারবার আহ্বান করতে হবে।

রাসুল (সা.) বলেন, ‘সাত বছর বয়সে তোমরা সন্তানদের নামাজের আদেশ দাও, আর ১০ বছর বয়সে না পড়লে শাসন করো।’ (সুনানে আবু দাউদ, হাদিস: ৪৯৫)

নামাজের গুরুত্ব ও সৌন্দর্য নিয়ে ধীরে ধীরে আলোচনা করা যেতে পারে। উদাহরণস্বরূপ, নামাজ কীভাবে মানসিক শান্তি দেয় বা জীবনকে সুশৃঙ্খল করে, তা তাদের বোঝানো যেতে পারে।

মসজিদ ও ইসলামি কার্যক্রমে যুক্ত করা

স্থানীয় মসজিদে কিশোরদের জন্য কোনো শিক্ষামূলক বা সামাজিক কার্যক্রম থাকলে তাদের সেখানে যেতে উৎসাহিত করা যেতে পারে। এটি তাদের টিভি বা সোশ্যাল মিডিয়া থেকে দূরে রাখতে সাহায্য করবে এবং ভালো সঙ্গের মাধ্যমে ইসলামের প্রতি আগ্রহ বাড়বে।

কোরআনে বলা হয়েছে, ‘তুমি ধৈর্যধারণ করো তাদের সঙ্গে, যারা সকাল–সন্ধ্যায় তাদের প্রতিপালকের সন্তুষ্টি কামনা করে আহ্বান জানায়।’ (সুরা কাহফ, আয়াত: ২৮)

মসজিদের কার্যক্রমে অংশগ্রহণ তাদের মধ্যে সম্প্রদায়ের অনুভূতি জাগিয়ে তুলবে এবং ইসলামের প্রতি তাদের দৃষ্টিভঙ্গি ইতিবাচক হবে।

পারিবারিক কার্যক্রমের আয়োজন

যদি মসজিদের কার্যক্রমে তারা আগ্রহ না দেখায়, তবে পরিবারের সবাইকে নিয়ে এমন কোনো জায়গায় যাওয়া যেতে পারে, যা তারা পছন্দ করে।

উদাহরণস্বরূপ, পার্কে বেড়াতে যাওয়া, পিকনিকের আয়োজন বা একসঙ্গে খেলাধুলা। এতে টিভি বা সোশ্যাল মিডিয়া থেকে তাদের মনোযোগ সরানো সহজ হবে এবং পরিবারের সঙ্গে সময় কাটানোর মাধ্যমে ধর্মীয় আলোচনার পরিবেশ তৈরি হবে।

আরও পড়ুনশিশুদের প্রতি মহানবী (সা.)–এর বৈষম্যহীন ভালোবাসা১১ সেপ্টেম্বর ২০২৫তাদের আগ্রহের সঙ্গে ইসলামের সম্পর্ক স্থাপন

কিশোররা প্রায়ই তাদের পছন্দের বিষয়ে উৎসাহী থাকে, যেমন খেলাধুলা, গল্পের বই, বিজ্ঞান বা প্রযুক্তি। তাদের আগ্রহের বিষয়গুলোর সঙ্গে ইসলামের সম্পর্ক তৈরি করে দিলে তারা সহজেই আকৃষ্ট হবে।

উদাহরণস্বরূপ, যদি তারা বিজ্ঞান পছন্দ করে, তবে পবিত্র কোরআনে বিজ্ঞানের সঙ্গে সম্পর্কিত আয়াতগুলো নিয়ে আলোচনা করা যেতে পারে। পবিত্র কোরআনে বলা হয়েছে, ‘তিনি সূর্য ও চাঁদকে নিয়ন্ত্রণ করেন; প্রতিটি নির্দিষ্ট সময়ের জন্য তার কক্ষপথে সঞ্চালিত হয়।’ (সুরা রাদ, আয়াত: ২)

এ ধরনের আলোচনা তাদের মনে ইসলামের প্রতি কৌতূহল জাগাতে পারে।

কিশোররা প্রায়ই তাদের পছন্দের বিষয়ে উৎসাহী থাকে, যেমন খেলাধুলা, গল্পের বই, বিজ্ঞান বা প্রযুক্তি। তাদের আগ্রহের বিষয়গুলোর সঙ্গে ইসলামের সম্পর্ক তৈরি করে দিলে তারা সহজেই আকৃষ্ট হবে।ধৈর্য ও ভালোবাসার গুরুত্ব

ইসলামের পথে কাউকে আনতে ধৈর্য ও ভালোবাসা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। আপনার প্রচেষ্টা হয়তো তাৎক্ষণিক ফল দেবে না, কিন্তু আল্লাহ আপনার নিয়ত দেখেন এবং তার প্রতিদান দেবেন।

পবিত্র কোরআনে বলা হয়েছে, ‘আর যে আল্লাহকে ভয় করে, আল্লাহ তার জন্য পথ বের করে দেবেন এবং তাকে এমন জায়গা থেকে রিজিক দেবেন, যা সে কল্পনাও করে না।’ (সুরা তালাক, আয়াত: ২–৩)

কিশোর বয়সী ভাইবোনদের ইসলামের পথে আনার জন্য ধৈর্য, ভালোবাসা ও সঠিক পন্থা অত্যন্ত জরুরি। নিজের আচরণের মাধ্যমে উদাহরণ স্থাপন, নরমভাবে আহ্বান, নামাজ ও ইসলামি কার্যক্রমে যুক্ত করা এবং তাদের আগ্রহের সঙ্গে ইসলামের সম্পর্ক স্থাপনের মাধ্যমে তাদের মনে ইসলামের প্রতি আকর্ষণ তৈরি করা সম্ভব।

সর্বোপরি, আল্লাহর কাছে অবিরাম দোয়া করতে হবে। আল্লাহ আমাদের সব প্রচেষ্টা কবুল করুন এবং আমাদের পরিবারকে ইসলামের পথে একত্র করুন। আমিন।

[email protected]

মারদিয়া মমতাজ: শিক্ষক, গবেষক ও প্রকৌশলী

আরও পড়ুনসন্তান প্রতিপালনে মহানবী (সা.)-এর ১০টি নির্দেশনা২০ আগস্ট ২০২৫

সম্পর্কিত নিবন্ধ