যখন আমি শিশু ছিলাম, তখন আফগানরা বিদেশে তাঁদের আত্মীয়স্বজনের সঙ্গে ফোনে কথা বলার জন্য পাকিস্তান যেতে বাধ্য হতেন। আজ আমরা আবার এক ভয়ংকর পরিস্থিতির মুখোমুখি হচ্ছি। আমাদের হয়তো কেবল ইন্টারনেট ব্যবহার করার জন্য প্রতিবেশী কোনো দেশে যেতে হবে।

গত সপ্তাহে কাবুল, কান্দাহার, হেলমান্দ, বলখসহ কয়েকটি প্রদেশে ফাইবার অপটিক ইন্টারনেট পরিষেবা বন্ধ করা হয়েছে। এ পদক্ষেপ সমগ্র দেশে ছড়িয়ে পড়তে পারে। যদি তালেবান নেতৃত্ব তাঁদের নীতি পুনর্বিবেচনা না করেন, আফগানিস্তান বিশ্বের সঙ্গে সংযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে যেতে পারে।

শিগগিরই আপনি হয়তো আমার লেখা এবং লাখ লাখ আফগান নাগরিকের গল্প পড়তেও পারবেন না। কারণ, আমরা ইন্টারনেট ব্যবহার করতে পারব না। পুরো দেশে একটি নিঃশব্দ পরিবেশ বিরাজ করবে।

আরও পড়ুনতালেবানের ভেতরে বিদ্রোহের শঙ্কা, সংকটে আফগানিস্তান?২৮ ফেব্রুয়ারি ২০২৫

বলখ প্রদেশে ফাইবার অপটিক ইন্টারনেট বন্ধ হওয়ার পর বলখের প্রাদেশিক সরকারের মুখপাত্র হাজি জায়েদ এক্সে বলেছেন, যাতে ‘অশ্লীলতা’ রোধ করা যায়, সে জন্য এ নিষেধাজ্ঞা সরাসরি তালেবান নেতা হাইবাতুল্লাহ আখুন্দজাদার নির্দেশে দেওয়া হয়েছে। তবে অনেকেই তাঁর পোস্টের প্রতি নেতিবাচক প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন। তাঁরা বলেছেন, এই নীতি প্রয়োগের আগে একটি উপযুক্ত বিকল্প নিশ্চিত করা উচিত ছিল।

যদি দেশের সব জায়গায় ইন্টারনেট–সংযোগ বন্ধ হয়ে যায়, তা আফগান নাগরিকদের জীবনকে অনেকভাবে প্রভাবিত করবে। ব্যবসায়িক কার্যক্রম ও ব্যাংকিং ব্যবস্থা বিঘ্নিত হবে। অনলাইন শিক্ষা ও বৃত্তির সুযোগ হারিয়ে যাবে।

অনেক জাতীয় ও আন্তর্জাতিক প্রতিষ্ঠান, এনজিও, ই-গভর্নমেন্ট পরিষেবা বড় চ্যালেঞ্জের মুখে পড়বে এবং অনলাইনে কাজ করা মানুষদের কাজও হাতছাড়া হবে। বিশ্বের সঙ্গে যোগাযোগও বন্ধ হয়ে যাবে।

আমার পরিবারও এ পরিস্থিতিতে ভোগান্তির মুখে পড়বে। কয়েক বছর ধরে বেকারত্বের সঙ্গে লড়াই করার কারণে আমি ইন্টারনেটে বিভিন্ন উপার্জনের সুযোগ খুঁজে পেয়েছি। এর মধ্যে একটি হলো ইউটিউব চ্যানেল চালু করে দেশের সুন্দর স্থানগুলো দেখানো। আরও গুরুত্বপূর্ণ, ভালো ইন্টারনেট–সংযোগ না থাকলে আমরা বিদেশে থাকা সেসব পরিবারের সঙ্গে যোগাযোগ রাখতেও সমস্যায় পড়তাম, যাদের সঙ্গে আমরা ফি বছর দেখা করার আশা করি না।

কাবুলের রাস্তায়। আফগানিস্তান.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: আফগ ন স ত ন

এছাড়াও পড়ুন:

হার্ট অ্যাটাকের এই লক্ষণগুলো এড়িয়ে যাবেন না

হার্টে পর্যাপ্ত রক্ত সরবরাহ ব্যহত হলে এর কার্যক্রম  সঠিকভাবে পরিচালিত হয় না। হার্টে রক্ত সরবরাহকারী রক্তনালী যদি কোনো কারণে বন্ধ হয়ে যায় তাহলে হার্টে রক্ত পৌঁছাতে পারে না। হার্টের মাংসপেশি অক্সিজেনশূন্য হয়ে পড়ে। হার্ট অ্যাটাকের বেশ কিছু উপসর্গ রয়েছে, যেগুলো কোনো একটি উপসর্গ তীব্র আকারে দেখা দিলে রোগীর মৃত্যুর ঝুঁকিও রয়েছে। ব্যক্তিভেদে হার্ট অ্যাটাকের উপসর্গগুলো আলাদা হতে পারে। সাধারণ উপসর্গগুলো জেনে নিন।

বুকের মাঝ বরাবর ব্যথা
হার্ট অ্যাটাকের একটি লক্ষণ হলো বুকের মাঝ বরাবর ব্যথা অনুভূত হওয়া।  আক্রান্ত ব্যক্তির মনে হতে পারে বুকের মধ্যে কেউ ছুরি চালাচ্ছে বা বুকের মধ্যে হাতি পাড়া দিচ্ছে এবং বুকের হাড় ভেঙ্গে যাচ্ছে। বুকে তীব্র ব্যথার সাথে সাথে যদি চরম অস্বস্তিবোধ থাকে তাহলে দেরি না করে চিকিৎসকের শরণাপন্ন হতে হবে।

আরো পড়ুন:

বাস্তবে নেই, কাগজে-কলমেই আছে নাচোলের ৩ উপস্বাস্থ্য কেন্দ্র

শরীরচর্চার পরে গরম নাকি ঠান্ডা পানিতে গোসল করা ভালো

হাত ও ঘাড় ব্যথা

হার্টে পর্যাপ্ত রক্ত সরবরাহে বাঁধা তৈরি হয়ে  বাম হাত ও ঘাড়ের দিকে ছড়িয়ে পড়বে। যাকে বলা হয় ‘ব্যথাটা রেডিয়েট’ করা। ব্রিটিশ হার্ট ফাউন্ডেশনের অধ্যাপক ডেভিড নিউবি বলেন, ‘‘যদি ব্যক্তির বাম হাতে ব্যথা নিচের দিকে নামতে থাকে এবং সেই সাথে গলায় চেপে ধরা ভাব থাকে তাহলে সেটি হার্টের সমস্যার লক্ষণ।’’

পেটে তীব্র ব্যথা
আক্রান্ত ব্যক্তির বুকের প্রচণ্ড ব্যথা অনুভব করতে পারেন।  এই ব্যথাকে অনেকে গ্যাস্ট্রিকের ব্যথা মনে করতে পারেন। সেক্ষেত্রে হার্ট অ্যাটাকের ব্যথা গ্যাস্ট্রিকের ব্যথার চেয়ে তীব্র হয়ে থাকে। ব্যথার সঙ্গে প্রচণ্ড জ্বালাপোড়াও থাকবে।

কাশি ও শ্বাসকষ্ট
হার্ট অ্যাটাকের গুরুত্বর উপসর্গ হলো কাশি ও শ্বাসকষ্ট। হার্ট ফেইলর হলে ফুসফুসে পানি আসে। এর কারণে রোগীর শ্বাসকষ্ট শুরু হয়। এই অবস্থা দেখা দিলে হার্ট আস্তে আস্তে দুর্বল হয়ে পড়ে, ঠিকমতো কাজ করতে পারে না। তখন সারা দেহে পানি এসে পড়ে।

অতিরিক্ত ঘাম
আক্রান্ত ব্যক্তির শরীর অস্থির হয়ে পড়ে, বুকে ব্যথা হয়, তাই তখন অস্বাভাবিক বা প্রচণ্ড রকমের ঘাম হয়। তখন বুকে ব্যথার সাথে সাথে ঘাম শুরু হয়, অস্থির লাগে।

অজ্ঞান হয়ে যাওয়া
হার্ট অ্যাটাক হলে বুকের ব্যথা অনেক সময় এতটা তীব্র হতে পারে যে, এতে আক্রান্ত রোগী অজ্ঞান হয়ে যেতে পারেন। 

বমি বমি ভাব ও বমি
যুক্তরাষ্ট্রের সেন্টার ফর ডিজিস কন্ট্রোল এন্ড প্রিভেনশন-সিডিসি'র তথ্য,‘‘ আক্রান্ত রোগী কোনো কারণ ছাড়াই বমি শুরু করতে পারেন। এবং কারণ ছাড়াই ক্লান্ত হতে পারেন, এর সঙ্গে বুকে ব্যথা দেখা দিলে দ্রুত চিকিৎসকের কাছে নিতে হবে।’’

সূত্র: বিবিসি

ঢাকা/লিপি

সম্পর্কিত নিবন্ধ