দক্ষিণ চীনে আঘাত হেনেছে সুপার টাইফুন রাগাসা
Published: 24th, September 2025 GMT
চলতি বছরে বিশ্বের সবচেয়ে শক্তিশালী গ্রীষ্মমন্ডলীয় ঘূর্ণিঝড় ‘সুপার টাইফুন রাগাসা’ দক্ষিণ চীনে আঘাত হেনেছে।
তাইওয়ানে ১৫ জনের মৃত্যুর পর এবং হংকংয়ে তীব্র বাতাস ও ভারী বৃষ্টিপাতের পর, টাইফুন রাগাসা দক্ষিণ চীনের গুয়াংডং প্রদেশের ইয়াংজিয়াং শহরে আঘাত হেনেছে। বুধবার চীনের জাতীয় আবহাওয়া কেন্দ্র এ তথ্য জানিয়েছে।
তাইওয়ানের পূর্বাঞ্চলীয় হুয়ালিয়েন জেলায় একটি হ্রদ প্লাবিত হয়ে এবং একটি শহরে পানির তোড়ে ১৭ জন নিখোঁজ রয়েছেন বলে বুধবার দমকল বিভাগ জানিয়েছে।
চীনের সমুদ্র কর্তৃপক্ষ চলতি বছর প্রথমবারের মতো সর্বোচ্চ লাল তরঙ্গ সতর্কতা জারি করেছে। গুয়াংডং প্রদেশের কিছু অংশে ২ দশমিক ৮ মিটার (৯ ফুট) পর্যন্ত জলোচ্ছ্বাসের ঢেউয়ের পূর্বাভাস দেওয়া হয়েছে।
গত সপ্তাহে পশ্চিম প্রশান্ত মহাসাগরে টাইফুন রাগাসা তৈরি হয়েছিল। উষ্ণ সমুদ্র এবং অনুকূল বায়ুমণ্ডলীয় পরিস্থিতির কারণে, গ্রীষ্মমন্ডলীয় ঘূর্ণিঝড়টি দ্রুত তীব্র হয়ে সোমবার পঞ্চম শ্রেণির সুপার টাইফুনে পরিণত হয়েছে, যার বাতাসের গতিবেগ ২৬০ কিলোমিটার ছাড়িয়ে গেছে।
বর্তমানে এটি দুর্বল হয়ে তৃতীয় শ্রেণির ঘূর্ণিঝড়ে পরিণত হয়েছে। তবে এটি এখনো গাছ এবং বিদ্যুতের লাইন ভেঙে ফেলতে, জানালা ভেঙে ফেলতে এবং ভবনগুলোর ক্ষতি করতে সক্ষম।
ঢাকা/শাহেদ
.উৎস: Risingbd
এছাড়াও পড়ুন:
সাবেক মন্ত্রী সাইফুজ্জামানের চেকে তোলা টাকা থেকে ৮৩ লাখ উদ্ধার
বিদেশে পলাতক সাবেক ভূমিমন্ত্রী সাইফুজ্জামান চৌধুরী জাবেদের নামে ইস্যু করা ১১টি চেক ব্যবহার করে চারটি ব্যাংক থেকে তুলে নেওয়া ১ কোটি ৭৬ লাখ টাকার মধ্যে ৮৩ লাখ ৭৬ হাজার টাকা জব্দ করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। আজ বুধবার বিকেলে নগরের কালুরঘাট এলাকায় সাইফুজ্জামানের মালিকানাধীন প্রতিষ্ঠান আরামিট পিএলসি কার্যালয়ের ড্রয়ার ও ভল্ট থেকে এই টাকা জব্দ করা হয়। এর আগে দুদক আরামিটের সহকারী মহাব্যবস্থাপক (এজিএম) জাহাঙ্গীর আলমকে আটক করে। তিনিই ব্যাংক থেকে ১ কোটি ৭৬ লাখ টাকা তুলেছিলেন সম্প্রতি। দুদক বলছে, টাকাগুলো নগদ করে হুন্ডির মাধ্যমে বিদেশে পাচারের জন্য রাখা হয়েছিল।
দুদকের আইনজীবী মোকাররম হোসেন প্রথম আলোকে বলেন, সাইফুজ্জামান চৌধুরীর সই করা চেকগুলোর আসল কপিসহ (মুড়ি) জাহাঙ্গীর আলমকে আটক করা হয়েছে। তাঁর বিরুদ্ধে প্রতিষ্ঠানের মালিকের অনুপস্থিতিতে অনুমতি ছাড়া টাকা উত্তোলনের অভিযোগ আনা হয়েছে। পরে তাঁর কাছ থেকে পাওয়া তথ্যের ভিত্তিতে বিকেলে ব্যাংক থেকে তোলা ১ কোটি ৭৬ লাখ টাকার মধ্যে ৮৩ লাখ ৭৬ হাজার টাকা জব্দ করেছে দুদক।
দুদকের উপপরিচালক মশিউর রহমান ঘটনাস্থলে সাংবাদিকদের বলেন, আটক জাহাঙ্গীর টাকাগুলোর বিষয়ে কোনো সদুত্তর দেননি। টাকাগুলো নগদ করে বিভিন্ন জনের মাধ্যমে বিদেশে পাচার করে আসছেন। আসামিকে রিমান্ডে নিয়ে বিস্তারিত জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে।
দুদক সূত্র জানায়, গত এক সপ্তাহের মধ্যে ইসলামী ব্যাংকের কয়েকটি শাখা থেকে ১ কোটি টাকা, জনতা ব্যাংক থেকে ৩০ লাখ, সোনালী ব্যাংক থেকে ৩৬ লাখ এবং মেঘনা ব্যাংক থেকে ১০ লাখ টাকা তোলা হয়। এর আগে অর্থ পাচার মামলায় দুদকের হাতে গ্রেপ্তার আরামিটের দুই কর্মকর্তার আইনি লড়াইয়ের খরচ বহনের জন্য এ টাকা তোলা হয়েছে বলে দাবি করেছেন জাহাঙ্গীর আলম। ওই দুই কর্মকর্তা হলেন আরামিট পিএলসির দুই এজিএম মো. আবদুল আজিজ ও উৎপল পাল। ১৭ সেপ্টেম্বর অর্থ পাচারের মামলায় তাঁদের গ্রেপ্তার করা হয়েছিল। তবে দুদক মনে করছে, নতুন করে ১ কোটি ৭৬ লাখ টাকা উত্তোলনের সঙ্গেও আত্মসাৎ বা পাচারের যোগসূত্র রয়েছে।
গত ২৪ জুলাই সাইফুজ্জামান, তাঁর পরিবারের কয়েকজন সদস্য ও প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে ২৫ কোটি টাকা বিদেশে পাচারের অভিযোগে মামলা করে দুদক। দুদকের উপপরিচালক মো. মশিউর রহমান বাদী হয়ে চট্টগ্রাম জেলা কার্যালয়ে এই মামলা করেন। মামলায় জাবেদ, তাঁর স্ত্রী রুকমীলা জামান, ভাই-বোন এবং প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তা-কর্মচারীসহ ৩১ জনকে আসামি করা হয়। গ্রেপ্তার আবদুল আজিজ মামলার এজাহারভুক্ত আসামি। তদন্তে অপরাধের প্রমাণ পাওয়ার পর কর্মকর্তা উৎপল পালের নামও অন্তর্ভুক্ত করা হয়।
১৭ সেপ্টেম্বর গ্রেপ্তার হওয়া সাইফুজ্জামানের প্রতিষ্ঠানের দুই কর্মকর্তা মো. আবদুল আজিজ এবং উৎপল পাল দুদকের কাছে অর্থ পাচারের বিষয়টি স্বীকার করেন। তাঁরা জানান, সাইফুজ্জামানের নির্দেশে যুক্তরাজ্যসহ বিভিন্ন দেশে ২৫ কোটি টাকা পাচার করা হয়েছে।
আরও পড়ুনসাবেক মন্ত্রী সাইফুজ্জামানের চেক দিয়ে ১ কোটি ৭৬ লাখ টাকা উত্তোলন, প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তা আটক৪ ঘণ্টা আগেতদন্তে জানা গেছে, সাইফুজ্জামানের মালিকানাধীন ইউসিবিএল ব্যাংক থেকে ২৫ কোটি টাকা ঋণ মঞ্জুর হওয়ার পর সেই টাকা একই ব্যাংকের চারটি নামসর্বস্ব প্রতিষ্ঠানের হিসাব নম্বরে স্থানান্তর করা হয়। পরে এসব টাকা বিদেশে পাচার করা হয়। দুদক বলছে, জালিয়াতি ও আত্মসাতের এই ঘটনা ঘটে ২০১৯-২০ সালে। তখন জাবেদ ভূমিমন্ত্রী ছিলেন।
গত বছরের ৭ অক্টোবর আদালত জাবেদ ও তাঁর স্ত্রীকে দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞা দেন। এরপরও তাঁরা বিদেশে পালিয়ে যান। দুদকের তথ্য অনুযায়ী, জাবেদের নয়টি দেশে বিপুল সম্পদ রয়েছে। এর মধ্যে যুক্তরাজ্যে ৩৪৩টি, দুবাইতে ২২৮টি, যুক্তরাষ্ট্রে ১০টি বাড়ি রয়েছে। এ ছাড়া থাইল্যান্ড, মালয়েশিয়া, ভারত, ভিয়েতনাম, কম্বোডিয়ায় একাধিক সম্পদ রয়েছে।
দুদকের কর্মকর্তাদের মতে, দেশের ভেতর থেকে ব্যাংকের টাকা আত্মসাৎ করে বিদেশে পাচার করেছেন জাবেদ ও তাঁর পরিবার। এভাবে বহু দেশে বিপুল সম্পদের মালিক হয়েছেন তাঁরা।