নাসা গ্রুপের পোশাক শ্রমিকদের বিক্ষোভ, জলকামান দিয়ে সরাল পুলিশ
Published: 24th, September 2025 GMT
ঢাকার সাভার উপজেলার আশুলিয়ায় বকেয়া বেতন পরিশোধ ও বন্ধ পোশাক কারখানা চালু করার দাবিতে সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ করেছেন নাসা গ্রুপের শ্রমিকেরা। পরে পুলিশ জলকামান দিয়ে পানি ছিটিয়ে তাদের সড়ক থেকে সরিয়ে দেয়।
আজ বুধবার (২৪ সেপ্টেম্বর) সকাল সাড়ে ১০টার দিকে নিশ্চিন্তপুর এলাকায় নাসা গ্রুপের পোশাক কারখানা সংলগ্ন বাইপাইল থেকে আবদুল্লাহপুর সড়কে এ বিক্ষোভ হয়। সকাল সাড়ে ৭টার দিকে শ্রমিকেরা একই সড়কে অবস্থান নিলে পুলিশ তাদের বুঝিয়ে সড়কের পাশে সরিয়ে দেয়।
আরো পড়ুন:
চট্টগ্রামে বকেয়া বেতনের দাবিতে সড়কে বিক্ষোভ
চাঁপাইনবাবগঞ্জ-ঢাকা রুটে বাস চলাচল বন্ধ
শ্রমিকেরা জানান, গত আগস্ট মাসের বেতন চলতি মাসের ৭ তারিখে দেওয়ার কথা ছিল। কিন্তু বেতন দিতে ব্যর্থ হয় কর্তৃপক্ষ। পরে ৯ সেপ্টেম্বর শ্রমিকদের জানানো হয়, ২২ তারিখে বেতন পরিশোধ করা হবে। তবে কারখানার ফটকে ২৫ তারিখে বেতন দেওয়ার নতুন নোটিশ টানানো হয়। ১৩ সেপ্টেম্বর রাতে ফটকে নতুন নোটিশে জানানো হয়, ২২ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত কারখানা বন্ধ থাকবে। ওই রাতেই শ্রমিকেরা কারখানার সামনে গিয়ে বিক্ষোভ করলে পুলিশ তাদের বুঝিয়ে সরিয়ে দেয়।
গত শনিবার (২০ সেপ্টেম্বর) নতুন নোটিশে কারখানা আরো তিন দিন বন্ধ রাখার ঘোষণা দেয় কর্তৃপক্ষ। মঙ্গলবার (২৩ সেপ্টেম্বর) শ্রমিকেরা জানতে পারেন, প্রতিষ্ঠানটি অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে।
কারখানা বন্ধ ঘোষণার পর আজ বুধবার (২৪ সেপ্টেম্বর) সকাল সাড়ে ৭টার দিকে শ্রমিকেরা বকেয়া বেতনের দাবিতে কারখানা সংলগ্ন আবদুল্লাহপুর–বাইপাইল সড়কে অবস্থান নেয়। পরে পুলিশ তাদের বুঝিয়ে সড়ক ছাড়তে রাজি করায়। তবে সকাল সাড়ে ১০টার দিকে শ্রমিকেরা আবারো সড়ক অবরোধ করলে পুলিশ ব্যর্থ হয়ে একপর্যায়ে জলকামান দিয়ে পানি ছিটিয়ে তাদের সরিয়ে দেয়।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক নাসা গ্রুপের এক শ্রমিক বলেন, ‘‘বকেয়া বেতন পরিশোধের তারিখ বারবার পিছিয়েছে কর্তৃপক্ষ। শেষ পর্যন্ত কারখানা অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ ঘোষণা করলে আমরা ক্ষুব্ধ হয়ে সড়কে নামি। তখন পুলিশ পানি ছিটিয়ে ও লাঠিপেটা করে। এতে কয়েকজন শ্রমিক আহত হয়েছেন।’’
আশুলিয়া শিল্পাঞ্চল পুলিশ-১–এর পুলিশ সুপার (এসপি) মোহাম্মদ মোমিনুল ইসলাম ভূঁইয়া বলেন, ‘‘শ্রমিকেরা সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ শুরু করলে তাদের বুঝিয়ে সড়ক থেকে সরানোর চেষ্টা করা হলেও তারা সড়কেই অবস্থান নেয়। একপর্যায়ে জলকামান দিয়ে পানি ছিটিয়ে তাদের সড়ক থেকে সরিয়ে দেওয়া হয়।’’
ঢাকা/সাব্বির/বকুল
.উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর ভ বন র প শ ক জলক ম ন দ য় স প ট ম বর
এছাড়াও পড়ুন:
চালককে চেতনানাশক খাইয়ে অটোরিকশা ছিনতাই করেন তাঁরা
প্রথমে যাত্রী সেজে ভাড়া নিতেন সিএনজিচালিত অটোরিকশা। পথে কৌশলে চালককে চেতনানাশক খাওয়াতেন। একপর্যায়ে চালক অচেতন হয়ে পড়লে অটোরিকশা ছিনতাই করে পালিয়ে যেতেন চক্রের সদস্যরা। দীর্ঘদিন ধরে চক্রটি এভাবে সিএনজিচালিত অটোরিকশা ছিনতাই করে আসছে। এই চক্রের ৯ সদস্যকে গ্রেপ্তার করেছে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি)। ঢাকা ও মুন্সিগঞ্জে অভিযান চালিয়ে তাঁদের গ্রেপ্তার করা হয়।
আজ শনিবার ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়। গ্রেপ্তার ব্যক্তিরা হলেন মো. করিম মিয়া (৪৩), মো. মান্নান খান (৬৬), মনসুর ওরফে মোশারফ (৪৩), মজিবর (৫৪), জসিম (৩৭), মনির (৪৫), মো. জামাল হোসেন (৬৬), তৌহিদুল ইসলাম রবিন (২৬) ও ইউনুস (৫০)। তাঁদের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে।
ডিবির বরাত দিয়ে সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, গত ১ অক্টোবর ভোর সাড়ে চারটার দিকে মোহাম্মদপুরের আল্লাহ করিম বাসস্ট্যান্ডে চা খাচ্ছিলেন সিএনজিচালিত অটোরিকশার চালক মো. শাহজালাল। এ সময় ৩০০ টাকায় কেরানীগঞ্জের আটিবাজারে যাওয়ার কথা বলে তাঁর অটোরিকশাটি ভাড়া করেন অপরিচিত এক যাত্রী। একপর্যায়ে ওই যাত্রী কৌশলে অটোরিকশাচালকের চায়ের মধ্যে চেতনানাশক মিশিয়ে দেন।
চা খাওয়া শেষে ওই যাত্রীকে নিয়ে আটিবাজারের উদ্দেশে রওনা করার কিছুক্ষণের মধ্যে প্রচণ্ড ঘুম অনুভব করেন অটোরিকশার চালক। তখন বছিলা মেট্রো হাউজিং গেটের কাছে গাড়ি থামাতেই চালক শাহজালাল অচেতন হয়ে পড়েন। চক্রটি তাঁকে রাস্তায় ফেলে অটোরিকশা, তাঁর মুঠোফোন ও মানিব্যাগে থাকা ৩ হাজার ৫৫০ টাকা নিয়ে পালিয়ে যায়।
সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে আরও বলা হয়, পরে চক্রটি চালকের মুঠোফোন থেকে অটোরিকশার মালিক জয়কে ফোনে ৬০ হাজার টাকা দাবি করে। তাদের দেওয়া বিকাশ নম্বরে জয় ৬০ হাজার টাকা পাঠান। এরপর একই তারিখে রাত ১০টার দিকে চক্রটি জয়কে আবার ফোন দিয়ে অটোরিকশাটি রায়েরবাজার বুদ্ধিজীবী কবরস্থানের সামনে রাস্তার ওপর রাখা আছে বলে জানায়। পরে জয় গিয়ে সেখান থেকে অটোরিকশাটি নিয়ে আসেন। এ ঘটনায় ৬ নভেম্বর মোহাম্মদপুর থানায় নিয়মিত মামলা হয়।
ডিবির বরাত দিয়ে আরও বলা হয়, ডিবি তেজগাঁও বিভাগের একটি দল ঘটনাস্থলের আশপাশের সিসিটিভি ক্যামেরার ফুটেজ বিশ্লেষণে তথ্যপ্রযুক্তির সহায়তায় এ ঘটনায় জড়িত ব্যক্তিদের শনাক্ত করে। গতকাল শুক্রবার দুপুর ১২টার দিকে রাজধানীর ধোলাইপাড় এলাকায় অভিযান চালিয়ে করিম মিয়া, মান্নান খান, মনসুর ওরফে মোশারফ, মজিবর, জসিম ও মনিরকে গ্রেপ্তার করা হয়।
পরে গ্রেপ্তার ব্যক্তিদের দেওয়া তথ্য অনুযায়ী একই দিন বেলা পৌনে একটার দিকে মুন্সিগঞ্জের সিরাজদিখান থানা এলাকায় অভিযান চালিয়ে চক্রের মূল হোতা মো. জামাল হোসেন, তৌহিদুল ইসলাম ও ইউনুসকে গ্রেপ্তার করা হয়। গ্রেপ্তারের সময় তাঁদের কাছ থেকে দুটি সিএনজিচালিত অটোরিকশা, ১ হাজার ৯০০ পিস চেতনানাশক ট্যাবলেট ও এক লাখ টাকা উদ্ধার করা হয়।
ডিবি সূত্র আরও জানায়, এই চক্র দীর্ঘদিন ধরে যাত্রীবেশে সিএনজিচালিত অটোরিকশা ভাড়া করে চালকদের চেতনানাশক ট্যাবলেট খাইয়ে অটোরিকশা ছিনতাই করে আসছে। চক্রের অন্য সদস্যদের গ্রেপ্তারে অভিযান অব্যাহত আছে।