নখের রং বদল কি কোনো রোগের লক্ষণ
Published: 26th, September 2025 GMT
ছবি: প্রথম আলো
.উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে ছাত্রীদের যৌন হয়রানির অভিযোগ
লক্ষ্মীপুর সদরের কুশাখালী ইউনিয়নের পুকুরদিয়া উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক উত্তম কুমার দাসের বিরুদ্ধে ছাত্রীদের যৌন হয়রানির অভিযোগ উঠেছে। ঘটনা জানাজানির পর থেকে তিনি পলাতক রয়েছেন বলে জানা গেছে।
এর প্রতিবাদে মঙ্গলবার (১৮ নভেম্বর) দুপুরে বিদ্যালয় প্রাঙ্গণে বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ করেছেন শিক্ষক, শিক্ষার্থী ও অভিবাবকরা। এ সময় তারা অভিযুক্ত শিক্ষকের অপসারণ ও বিচার দাবি করেন।
আরো পড়ুন:
জকসু: ছাত্রশক্তি সমর্থিত ‘ঐক্যবদ্ধ জবিয়ান’ প্যানেল ঘোষণা
চাঁপাইনবাবগঞ্জে স্কুল ফিডিংয়ের প্রথম দিনই বনরুটি বঞ্চিত শিক্ষার্থীরা
বিদ্যালয়ের একাধিক শিক্ষার্থী অভিযোগ করে জানান, প্রধান শিক্ষক উত্তম কুমার দাস তাদের একাকী তার রুমে, ছাদের ওপর এবং মেয়েদের ওয়াশরুমে ডেকে নেন। বিভিন্ন অজুহাতে তাদের শরীরের বিভিন্ন স্পর্শকাতর স্থানে হাত দেন। এছাড়াও তিনি অসচ্ছল ছাত্রীদের পরীক্ষার ফি ও বেতন মওকুফের প্রলোভন দেখিয়ে কু-প্রস্তাব দেন।
তার বিরুদ্ধে একাধিক শিক্ষার্থী পরীক্ষায় ফেল করিয়ে দেওয়ার ভয় দেখিয়ে শ্লীলতাহানির অভিযোগ করেন। তারা জানান, এসব বিষয়ে মুখ খুললে বা কাউকে বললে পরীক্ষায় ফেল করিয়ে দেওয়াসহ তিনি ধর্ষণ ও হত্যার হুমকি দেন। গত শনিবার অষ্টম শ্রেণির এক ছাত্রী ওয়াশরুমে গেলে তিনি তাকে দেয়ালের সঙ্গে চেপে ধরে শরীরের বিভিন্ন স্থানে হাত দেন এবং ধর্ষণের চেষ্টা করেন। বিষয়টি কয়েকজন ছাত্রী দেখে ফেললে তিনি ওই ছাত্রীকে ছেড়ে দেন। পরে এ ঘটনা জানাজানি হলে বিদ্যালয়ে এবং এলাকায় চাঞ্চল্য ও ব্যাপক ক্ষোভের সৃষ্টি হয়।
ভুক্তভোগী ছাত্রীর মা বলেন, “একজন শিক্ষক মা-বাবার সমান। সেখানে তিনি একজন প্রধান শিক্ষক হয়ে কিভাবে এমন কাজ করতে পারে। এর আগেও আমার মেয়ে কয়েকবার এমন অভিযোগ করে। একদিন তিনি আমার মেয়েকে ৫০ টাকা দেন, বাড়িতে যাওয়ার পর আমি জিজ্ঞেস করলে সে বলে, স্যার দিয়েছেন কিছু খাওয়ার জন্য, স্যারকে জিজ্ঞেস করলে তিনি টাকা দেয়ার কথা স্বীকার করেন। পরদিন সে স্কুলে গেলে স্যার তাকে ডেকে কু-প্রস্তাব দেন।”
তিনি বলেন, “মান-সন্মানের কথা বিবেচনা করে আমরা তার বিদ্যালয়ে আসা বন্ধ করে দেই। প্রায় ২ মাস পর আবারো সে নিয়মিত বিদ্যালয়ে আসা শুরু করে। গতকাল (সোমবার) মেয়েকে ওয়াশরুমে ধর্ষণের চেষ্টা করে, আমি এর সুষ্ঠু বিচার চাই।”
পুকুরদিয়া উচ্চ বিদ্যালয়ের সিনিয়র শিক্ষক বলেন, “তার বিরুদ্ধে এ ধরনের অভিযোগ ইতোপূর্বে অনেকবার পেয়েছি। যেহেতু তিনি প্রধান শিক্ষক, তাই উপযুক্ত প্রমাণাদী না থাকায় আমরা কোনো ব্যবস্থা নিতে পারিনি। ধর্ষণচেষ্টার ঘটনা শিক্ষার্থীরা আমাদের জানানোর পর আমরা কর্তৃপক্ষকে বিষয়টি অবগত করার সিদ্ধান্ত নিয়েছি। আশা করি, কর্তৃপক্ষ তদন্ত করে ব্যবস্থা নেবে।”
অভিযুক্ত প্রধান শিক্ষক উত্তম কুমার দাস মুঠোফোনে বলেন, “এসব অভিযোগ মিথ্যা ও বানোয়াট, আমি ১০ বছর এখানে শিক্ষকতা করি। এলাকার কিছু লোকজন ও বিদ্যালয়ের কিছু শিক্ষক মিলে আমার বিরুদ্ধে একটি চক্রান্ত করার অপচেষ্টা করছে। মেয়েদের এগুলো মুখস্থ করিয়ে আমার বিরুদ্ধে লাগিয়েছে। আমার অপরাধ হচ্ছে আমি আওয়ামী লীগ করি, তাই তারা আমার বিরুদ্ধে এই চক্রান্ত করেছে।”
এদিকে খবর পেয়ে দাসেরহাট পুলিশ তদন্ত কেন্দ্রের ইনচার্জ (পরিদর্শক) আবুল কালাম আজাদ তাৎক্ষণিক ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন।
এ বিষয়ে সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা জামশেদ আলম রানা বলেন, “খবর পেয়ে আমি সেখানে প্রতিনিধি পাঠিয়েছি। বিদ্যালয় থেকে একটি লিখিত অভিযোগ দিলে তার প্রেক্ষিতে আমরা তদন্ত করে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করব।”
ঢাকা/জাহাঙ্গীর/মেহেদী