প্রয়াত কথাসাহিত্যক হুমায়ূন আহমেদ। কয়েক দিন আগে তার প্রাক্তন স্ত্রী গুলতেকিন খান তাকে নিয়ে সোশ্যাল মিডিয়ায় একটি পোস্ট দেন। মুহূর্তের মধ্যে ভাইরাল হয় পোস্টটি। চর্চার কেন্দ্রবিন্দুতে রূপ নেয় বিষয়টি। নেটিজেনরাও কয়েকটি শিবিরে বিভক্ত হয়ে যান, চলতে থাকে তর্ক-বিতর্ক।

এ পরিস্থিতিতে নীরব ছিলেন হুমায়ূন আহমেদের পুত্র নির্মাতা নুহাশ হুমায়ূন। এ নিয়ে কোথাও সরাসরি কোনো মন্তব্য করেননি। তবে গতকাল রাতে তার ভেরিফায়েড ফেসবুকে একটি স্ট্যাটাস দিয়েছেন এই পরিচালক। যদিও ইঙ্গিতপূর্ণ এই পোস্টে বাবা-মায়ের প্রসঙ্গ সরাসরি আনেননি তিনি। তবে নেটিজেনরা দুইয়ে দুইয়ে চার মিলিয়েছেন। 

আরো পড়ুন:

বাগদানের পরও রাশমিকার প্রথম বিয়ে কেন ভেঙেছিল?

কানতারা টু: ৩ দিনে আয় ২৯৯ কোটি টাকা

নুহাশ হুমায়ূন তার স্ট্যাটাসে লেখেন, “আপনি একজন শিল্পী বা সৃষ্টিশীল ব্যক্তিকে তাদের কাজের জন্য ভালোবাসতে পারেন। একইসঙ্গে স্বীকারও করতে পারেন যে, তারা ব্যক্তিগত জীবনে ভুলে ভরা বা ত্রুটিপূর্ণ ছিলেন। এই দুটি বাস্তবতাই একসঙ্গে সত্য হতে পারে।” 

খানিকটা ব্যাখ্যা করে নুহাশ হুমায়ূন লেখেন, “মানুষ জটিল এবং অসম্পূর্ণ (যেমন: আপনার প্রিয় উপন্যাসের সেরা চরিত্রগুলো)। কেউ কেউ লাখ লাখ মানুষকে আনন্দ দিতে পারেন; কিন্তু কাছের মানুষদের কষ্টও দিতে পারেন। সমাধান এটা নয় যে, যারা আঘাত পেয়েছেন তাদের কণ্ঠ রোধ করে দিতে হবে। আবার সমাধান এটাও নয় যে, মৃতদের প্রতি অসম্মান দেখাতে হবে।” 

নুহাশ হুমায়ূনের এ পোস্টে রিঅ্যাকশন পড়েছে প্রায় ৯ হাজার। তবে তার ফেসবুকে কমেন্ট সেকশন পাবলিক করা নেই। তবু বেশ কিছু মন্তব্য জমা পড়েছে। যাদের বড় একটি অংশ নুহাশকে সমর্থন জানিয়ে মন্তব্য করেছেন। কেউ কেউ তার বক্তব্যকে ‘একপেশে’ বলছেন।

সংগীতশিল্পী আলিফ আলাউদ্দিন লেখেন, “একেবারেই তাই।” ফাতেমা ইসলাম লুবনা লেখেন, “ভুক্তভোগীদের সবসময়ই কথা বলা উচিত। যদি তা ৫০ বছর পরেও হয়। তাদের কখনো চুপ করিয়ে দেওয়া উচিত নয়। পারিবারিক সহিংসতা বিভিন্ন রকমের হতে পারে। আমাদের সেই সব গল্প শুনতে হবে এবং বছরের পর বছর ধরে তারা যে কষ্ট সহ্য করেছেন, তা স্বীকার করে নিতে হবে।”

অর্চি নাঈমা রুকু নামে একজন লেখেন, “আমাদের কাছে আবেগগত বুদ্ধিমত্তা নেই। বরং আমাদের আছে, ‘আবেগগত অশিক্ষা’।” নুর ই মুস্তারি নামে একজন লেখেন, “আপনি যেভাবে আপনার মাকে সমর্থন করেন, তা দারুণ।”  

এই মন্তব্য নুহাশ হুমায়ূনের নজরেও পড়েছে। জবাবে এই পরিচালক লেখেন, “মৃত্যুর দিন পর্যন্ত আমি তাকে (মা) সমর্থন করে যাব। কিন্তু সেটা যেন আমার বাবার প্রতি অবজ্ঞা হিসেবে ভুল না বোঝা হয়। আমি দুজনের প্রতিই কৃতজ্ঞ এবং তাদের কেউ একজন না থাকলে আমি আজকের আমি হতে পারতাম না। আমি গর্বের সঙ্গে আমার নাম বহন করি।” নুহাশ হুমায়ূনের এই মন্তব্যে রিঅ্যাক্ট পড়েছে প্রায় ছয় শ। 

ঢাকা/শান্ত

.

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর চলচ চ ত র

এছাড়াও পড়ুন:

জবি ছাত্র জোবায়েদ হত্যা মামলায় ২ জনের সাক্ষ্য গ্রহণ

‎জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের (জবি) শিক্ষার্থী ও শাখা ছাত্রদলের আহ্বায়ক কমিটির সদস্য জোবায়েদ হোসেন হত্যা মামলায় দুইজন সাক্ষী হিসেবে আদালতে জবানবন্দি দিয়েছেন।

বুধবার (১৯ নভেম্বর) ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট নিজাম উদ্দীন তাদের জবানবন্দি রেকর্ড করেন।

আরো পড়ুন:

সখীপুরে মেয়েকে হত্যার পর নিজেকে শেষ করলেন মা

নেত্রকোণায় চালককে হত্যা করে মোটরসাইকেল ছিনতাই

সাক্ষীরা হলেন, জবি শিক্ষার্থী সৈকত হোসেন এবং সালাউদ্দিন স্পেশালাইজড হাসপাতালের মেডিকেল অফিসার ডা. ওয়াহিদুর রহমান। সৈকত নিহত জোবায়েদের বিশ্ববিদ্যালয়ের ছোট ভাই এবং ডা. ওয়াহিদ হত্যা মামলার অন্যতম আসামি বর্ষার মামা।

‎মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা বংশাল থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) আশরাফ হোসেন সাক্ষীদের জবানবন্দি রেকর্ড করার জন্য আবেদন করেন।

‎জবানবন্দিতে সৈকত বলেন, “আমি জবির ২০২১-২২ শিক্ষাবর্ষের ফিন্যান্স বিভাগের শিক্ষার্থী ও জোবায়েদ ভার্সিটির বড় ভাই। আমি জোবায়েদ ভাইয়ের ক্লোজ ছোট ভাই হওয়াতে বর্ষা আমার নাম্বার জোবায়েদ ভাই থেকে নেয়। মাঝে মাঝে হোয়াটসঅ্যাপ হাই, হ্যালো কথাবার্তা হত। ২-৩ মাস আগে বর্ষা আমাকে ফেসবুকে ফ্রেন্ড রিকোয়েস্ট পাঠায়। তখন থেকে বর্ষার সঙ্গে আমার আর যোগাযোগ হয়নি। জোবায়েদ ভাই প্রায় ১ বছর ধরে বর্ষাকে বাসায় টিউশন পড়াত।”

‎তিনি বলেন, “ভার্সিটি এলাকায় থাকাকালে গত ১৯ অক্টোবর বিকেল ৫টা ৫৮ মিনিটের দিকে বর্ষা তাকে ম্যাসেঞ্জারে ম্যাসেজ দেয়, ‘ভাইয়া কই তুমি?’ আমি জানাই ক্যাম্পাসে। বর্ষা বলে, ‘স্যারের আম্মুর নাম্বার আছে?’ কারণ জানতে চাইলে বর্ষা বলে, ‘লাগবে।’ ভাইয়ের কিছু হয়ছে কি না জানতে চাইলে বর্ষা বলে, ‘ভাইরে (জোবায়দে) কে জানি মাইরা ফেলছে।’ আমি বলি, মাইরা ফেলছে বলতে? বর্ষা বলে, ‘খুন করে ফেলছে।’ তখন বর্ষাকে কল দেওয়ার চেষ্টা করি, কিন্তু তার সঙ্গে যোগাযোগ করতে পারিনি। এরপর বিষয়টি বড় ভাইদের জানাই।”

‎ডা. ওয়াহিদুর রহমান জবানবন্দিতে বলেন, “গত ১৯ অক্টোবর সাপ্তাহিক নৈশ্যকালীন ডিউটি থাকায় বাসায় অবস্থান করছিলাম এবং ড্রইং রুমে বসে টিভি দেখছিলাম। হঠাৎ আমার স্ত্রীকে দ্বিতীয় তলার চাচাতো ভাই ফোন করে জানায়, সিঁড়িতে কোনো একজন লোক পড়ে আছে। আমরা তখন সঙ্গে সঙ্গে দরজা খুলে দেখি সিঁড়ির মাঝামাঝি একজন অজ্ঞাতনামা ব্যক্তি রক্তাক্ত অবস্থায় পড়ে আছে।”

তিনি বলেন, “তাদের চিৎকার চেঁচামেচিতে বাড়ির লোকজন জড় হয়ে যায় এবং সেখানে শনাক্ত হয় যে, আমার ভাগ্নি বর্ষার প্রাইভেট টিউটর জুবায়েদের মরদেহ। তাৎক্ষণিক ৯৯৯ নম্বরে ফোন করে পুলিশকে অবহিত করি।”

বর্ষার মামা জানান, পরবর্তীতে তিনি জানতে পারেন তার ভাগ্নি বর্ষার সঙ্গে মাহির নামক এক ছেলের প্রেমের সম্পর্ক ছিল এবং জোবায়েদ মাস্টারের সঙ্গেও বর্ষার প্রেম ছিল। এই দ্বন্দ্বের কারণে মাহির রহমান, জোবায়েদ মাস্টারকে হত্যা করে ঘটনার দিন দৌড়ে পালিয়ে যায়।

‎মামলার বিবরণ থেকে জানা যায়, মো. জোবায়েদ হোসেন বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াশোনার পাশাপাশি টিউশনি করতেন। প্রতিদিনের মতো গত ১৯ অক্টোবর বিকেল সাড়ে ৪টার দিকে বংশাল থানাধীন ৩১ নম্বর ওয়ার্ডে নুর বক্স লেনের ১৫ নম্বর হোল্ডিং রৌশান ভিলায় বর্ষাকে পড়ানোর জন্য যান।

সন্ধ্যা ৫টা ৪৮ মিনিটের দিকে ওই ছাত্রী জোবায়েদ হোসেনের বিশ্ববিদ্যালয়ের ছোট ভাই সৈকতকে ম্যাসেঞ্জারের মাধ্যমে জানায়, “জোবায়েদ স্যার, খুন হয়ে গেছে। কে বা কারা জোবায়েদ স্যারকে খুন করে ফেলছে।”

জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র মো. কামরুল হাসান ৭টার দিকে জোবায়েদের ভাই এনায়েত হোসেনকে মোবাইল ফোনের মাধ্যমে তথ্যটি জানান। এনায়েত তার শ্যালক শরীফ মোহাম্মদকে সঙ্গে নিয়ে মোটরসাইকেলে করে সাড়ে ৮টার দিকে ঘটনাস্থল রৌশান ভিলায় পৌঁছান। ভবনের নিচতলা থেকে ওপরে ওঠার সময় সিঁড়ি এবং দেয়ালে রক্তের দাগ দেখতে পান। ওই ভবনের তৃতীয় তলার রুমের পূর্ব পার্শ্বে সিঁড়িতে জোবায়েদের রক্তাক্ত মরদেহ উপুড় অবস্থায় দেখতে পান।

‎ঘটনার দুইদিন পর ২১ অক্টোবর জোবায়েদের ভাই এনায়েত হোসেন বংশাল থানায় মামলা করেন। তিনি অভিযোগ করেন, আসামিরা পরস্পর যোগসাজসে জোবায়েদকে পূর্বপরিকল্পিতভাবে ধারালো অস্ত্র দিয়ে গলার ডান পাশে আঘাত করে হত্যা করেছে।

‎মামলায় বর্ষা, তার প্রেমিক মো. মাহির রহমান, মাহিরের বন্ধু ফারদীন আহম্মেদ আয়লান ২১ অক্টোবর আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেয়। বর্তমানে তারা কারাগারে রয়েছে।

ঢাকা/লিমন/মেহেদী

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • চট্টগ্রামে এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে থেকে প্রাইভেট কার ছিটকে পড়ে একজনের মৃত্যু
  • ফেনীতে পৃথক ঘটনায় ৩ জনের মৃত্যু
  • কামাল সিদ্দিকী: আমলাতন্ত্রের ঘেরাটোপ ভাঙা একজন দেশপ্রেমী
  • চট্টগ্রামে ডেঙ্গুতে একজনের মৃত্যু
  • গাজার ফিলিস্তিনিদের দক্ষিণ আফ্রিকায় নিয়ে যাওয়া প্রতিষ্ঠানটি আসলে কারা চালাচ্ছে
  • যুক্তরাষ্ট্রের নতুন প্রস্তাব, জমি ছাড়তে হবে ইউক্রেনকে
  • এলোমেলো শিক্ষা খাত, বাড়ছে সংকট
  • সৌদি যুবরাজের সমালোচক জামাল খাশোগি যেভাবে মারা হয়েছিলো
  • সলিলের গানের ভেতরেই ছিল মিছিলের স্লোগান
  • জবি ছাত্র জোবায়েদ হত্যা মামলায় ২ জনের সাক্ষ্য গ্রহণ