কয়েকদিনের ভারী বর্ষণ ও উজানের ঢলে তিস্তা নদীর পানি বৃদ্ধি পেয়ে বিপৎসীমার ১০ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। ফলে লালমনিরহাটের নদী তীরবর্তী নিম্নাঞ্চলের কিছু পরিবার পানিবন্দি হয়ে পড়েছেন। পানিতে ভেসে গেছে মাছের খামার। আমন ধানসহ নানা জাতের সবজির ক্ষেত পানিতে তলিয়ে থাকায় ক্ষতির শঙ্কা করছেন চাষিরা। 

বন্যা সতর্কীকরণ কেন্দ্রের দাবি, রবিবার (৫ অক্টোবর) সন্ধ্যা ৬টায় দেশের বৃহত্তম সেচ প্রকল্প তিস্তা ব্যারাজ ডালিয়া পয়েন্টে তিস্তার পানি বিপৎসীমার ১০ সেন্টিমিটার ওপরে রেকর্ড করা হয়। রাতে পানি আরো বাড়তে পারে বলে ধারণা তাদের।  

আরো পড়ুন:

টানা বৃষ্টিতে সেন্টমার্টিনে জলাবদ্ধতা, ঘরবন্দি কয়েকশ পরিবার

ভবদহ জলাবদ্ধতা: ৫ নদী খননের কাজ পেল সেনাবাহিনী

স্থানীয়রা জানান, গত দুইদিনের বৃষ্টি ও উজানের ঢলে তিস্তার পানি বাড়ছে। রবিবার বিকেল ৩টায় ডালিয়া পয়েন্টে পানি বিপৎসীমার ১ সেন্টিমিটার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছিল। সন্ধ্যা ৬টায় পানি আরো বৃদ্ধি পায়। ফলে নদী তীরবর্তী নিম্নাঞ্চলের কিছু পরিবার পানিবন্দি হয়ে পড়েছেন। কতোটি পরিবার পানিবন্দি অবস্থায় আছে সে তথ্য এখনো জানা যায়নি।

গোবর্দ্ধন গ্রামের আব্দুর রশিদ বলেন, ‍“নদীর পানি বাড়তে শুরু করেছে। চরাঞ্চলের রাস্তা ঘাট ডুবে গেছে। অনেকের পুকুরের মাছ ভেসে গেছে, ডুবে গেছে আমন ধানের ক্ষেত। সময় যত যাচ্ছে ততই বাড়ছে পানি। বন্যা আতংকে রয়েছি।”

লালমনিরহাট পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী সুনিল কুমার বলেন, “তিস্তার পানি বাড়ছে। সন্ধ্যায় পানি বিপৎসীমার ১০ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রাবাহিত হচ্ছে। আগামী ১২ ঘণ্টায় তিস্তার পানি আরো বৃদ্ধি পেতে পারে। পরিস্থিতি আমরা নিবিড়ভাবে পর্যবেক্ষণ করছি। নদীপাড়ের বাসিন্দাদের সতর্কতা থাকতে আহ্বান জানাচ্ছি।”

ঢাকা/সিপন/মাসুদ

.

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর প ন বন দ নদ ব পৎস ম র পর ব র র ওপর

এছাড়াও পড়ুন:

নীলফামারীতে বিপৎসীমার ওপরে তিস্তার পানি, রেড অ্যালার্ট

ভারী বর্ষণ ও উজানের পাহাড়ি ঢলে নীলফামারী জেলার ওপর দিয়ে প্রবাহিত তিস্তা নদীর পানি আবারও বৃদ্ধি পেয়ে বিপৎসীমার ১৩ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। এমন পরিস্থিতিতে তিস্তা তীরবর্তী এলাকায় রেড অ্যালার্ট জারি করেছে পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো)।

রোববার সকাল ছয়টায় লালমনিরহাট জেলার দোয়ানীতে অবস্থিত তিস্তা ব্যারাজ পয়েন্টে তিস্তা নদীর পানি বিপৎসীমার ৭২ সেন্টিমিটার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হয়। ১২ ঘণ্টার ব্যবধানের সন্ধ্যা ছয়টায় সেখানে ৮৫ সেন্টিমিটার পানি বৃদ্ধি পেয়ে বিপৎসীমার ১৩ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছিল।

ওই পয়েন্টে তিস্তা নদীর বিপৎসীমা ৫২ দশমিক ১৫ মিটার। সকাল ৬টায় প্রবাহিত হচ্ছিল ৫১ দশমিক ৪৩ মিটার দিয়ে। সন্ধ্যা ছয়টায় সেখানে প্রবাহিত হচ্ছিল ৫২ দশমিক ২৮ মিটার দিয়ে। তিস্তা নদীর পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় তিস্তার ডান তীরের বাঁধে ভাঙন দেখা দিয়েছে। সেখানে বাশের পাইলিং করে বালির বস্তা নিক্ষেপ করছে পাউবো।

তিস্তার তীরবর্তী ডিমলা উপজেলার পূর্ব ছাতনাই, পশ্চিম ছাতনাই, খগাখড়িবাড়ি, টেপাখড়িবাড়ি, গয়াবাড়ি, খালিশাচাপানী ও ঝুনাগাছ চাপানী ইউনিয়নের ১৫টি গ্রাম এবং চরাঞ্চলের নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়ে বাড়িঘরে পানি উঠতে শুরু করেছে। পানি বৃদ্ধি অব্যাহত আছে।

ডিমলা উপজেলার পূর্ব ছাতনাই ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আবদুল লতিফ খান জানান, রোববার দুপুরের পর থেকে তিস্তা নদীর পানি বৃদ্ধি পেতে থাকে, যা অব্যাহত আছে। তিস্তার পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় ইউনিয়নের ঝাড় সিংহেরস্বর ও পূর্ব ছাতনাই গ্রামের বোল্ডারের চর, খোকার চর, খাড়াপাড়া, ফ্লাটপাড়াসহ তিস্তাপারের বিভিন্ন চরের নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়ে বাড়িঘরে পানি উঠতে শুরু করেছে। টেপাখড়িবাড়ি ইউনিয়নের ইউপি চেয়ারম্যান রবিউল ইসলাম বলেন, দুপুরের পর থেকে তিস্তা নদীর পানি দ্রুতগতিতে বৃদ্ধি পাচ্ছে। বিস্তীর্ণ এলাকার রোপা আমন খেত তলিয়ে গেছে। বিভিন্ন বাড়িঘরে পানি উঠতে শুরু করেছে।

পানি উন্নয়ন বোর্ড ডালিয়া ডিভিশনের বন্যা পূর্বাভাস ও সতর্কীকরণ কেন্দ্রের সূত্রমতে, রোববার সকাল ছয়টায় লালমনিরহাট জেলার দোয়ানীতে অবস্থিত তিস্তা ব্যারাজ পয়েন্টে তিস্তা নদীর পানি ৫১ দশমিক ৪৩ মিটার, সকাল ৯টায় ৫১ দশমিক ৪৮ মিটার, দুপুর ১২টায় ৫২ মিটার, বেলা তিনটায় ৫২ দশমিক ১৪ মিটার এবং সন্ধ্যা ৬টায় ৫২ দশমিক দশমিক ২৮ মিটার দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছিল তিস্তা নদীর পানি।

পানি উন্নয়ন বোর্ড ডালিয়া ডিভিশনের নির্বাহী প্রকৌশলী অমিতাভ চৌধুরী বলেন, ভারী বর্ষণ ও উজানের পাহাড়ি ঢলে তিস্তা নদীর পানি বৃদ্ধি পেয়েছে। রোববার সকাল ছয়টায় বিপৎসীমার ৪৩ সেন্টিমিটার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হলেও সন্ধ্যা ৬টায় ৮৫ সেন্টিমিটার পানি বৃদ্ধি পেয়ে বিপৎসীমার ১৩ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছিল। পানি বৃদ্ধির সঙ্গে সঙ্গে তিস্তা নদীর জিরো পয়েন্টের কাছাকাছি কালীগঞ্জ নামের স্থানে তিস্তার ডান তীরের প্রধান বাঁধে ভাঙন দেখা দিয়েছে। সেটির মেরামতকাজ চলছে। পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখতে ব্যারাজের সব কটি (৪৪ টি) জলকপাট খুলে রাখা হয়েছে। তিনি জানান, তিস্তা তীরবর্তী এলাকায় রেড অ্যালার্ট জারি করে সন্ধ্যায় মাইকিং করা হয়েছে। রাত ৮টার দিকে পানি বিপৎসীমার ২৩ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছিল।

সম্পর্কিত নিবন্ধ