১১ হাজার ৬০০ প্রজাতির পাখির তথ্য রয়েছে যে ডেটাবেজে
Published: 5th, October 2025 GMT
জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে অনেক প্রজাতির পাখি বর্তমানে ঝুঁকির মধ্যে রয়েছে। আমরা প্রতিদিন যেসব প্রাণী দেখি, তার মধ্যে অনেক পাখিও রয়েছে ঝুঁকিতে। বিশ্বের ৫৪ শতাংশ প্রজাতির পাখি পোকাখেকো। এসব পাখি বেশি সংকটে আছে। এ ছাড়া যেসব সামুদ্রিক পাখি মাছ খায়, তারাও বিলুপ্তির উচ্চঝুঁকিতে রয়েছে। আর তাই পাখিদের রক্ষায় দীর্ঘ ২৬ বছর ধরে বিশাল ডেটাবেজ তৈরি করেছেন যুক্তরাষ্ট্রের ইউটা বিশ্ববিদ্যালয়ের জীববিজ্ঞানী ক্যাগান সেকারিসওগলু। ‘বার্ডবেস’ নামের এই ডেটাবেজে প্রায় ১১ হাজার ৬০০ প্রজাতির পাখির তথ্য রয়েছে। সম্প্রতি বিশ্বের সব বিজ্ঞানীদের জন্য উন্মুক্ত করা হয়েছে ডেটাবেজটি।
ক্যাগান সেকারিসওগলু ১৯৯৯ সালে ছাত্রাবস্থায় বনে বাস করা ও পোকামাকড় খাওয়া গ্রীষ্মমণ্ডলীয় পাখির কিছু প্রজাতির তথ্য জানতে আগ্রহী হন। বিলুপ্তির ঝুঁকিতে থাকা পাখির প্রজাতি সম্পর্কেও জানার আগ্রহ ছিল তাঁর। কিন্তু সে সময় পাখির বিভিন্ন প্রজাতি সম্পর্কে অনেক চেষ্টা করেও বিস্তারিত তথ্য জানতে পারেননি তিনি। তখন থেকেই ক্যাগান বিভিন্ন প্রজাদির পাখি বিশ্লেষণ করা শুরু করেন। এরপর নিজেই একটি ডেটাবেজ তৈরির সিদ্ধান্ত নেন। তাঁর ২৬ বছরের কাজের ফসলই হচ্ছে বার্ডবেস। এই ডেটাবেজে ২৫৪টি পাখি পরিবারের অধীন থাকা ১১ হাজার ৫৮৯টি প্রজাতির পাখির বিভিন্ন বৈশিষ্ট্য অন্তর্ভুক্ত রয়েছে। এই বৈশিষ্ট্যগুলোর মধ্যে রয়েছে শরীরের ভর, বাসস্থান, খাদ্য, বাসার ধরন, ডিমের সংখ্যা, চলাচলের কৌশল ও উড্ডয়ন উচ্চতার তথ্য।
অনেক তথ্য থাকলেও কিছু বিরল প্রজাতির পাখির তথ্য এখনো অনুপস্থিত বার্ডবেসে। ডেটাবেজটি বর্তমানে বিনা মূল্যে ব্যবহারের সুযোগ থাকায় সহজেই বিভিন্ন প্রজাতির পাখি সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্য জানা যায়। ফলে যে কেউ চাইলে এখন নিজের আশপাশের এলাকার কেন কোন পাখি অন্যদের চেয়ে বেশি ঝুঁকিতে রয়েছে, তা জানতে পারবেন। পাখির ভিন্ন আচরণ তাদের বেঁচে থাকাকে কীভাবে প্রভাবিত করে বা পাখিগুলোর আবাসস্থল হারানোর কতটা ঝুঁকি রয়েছে, তা-ও জানা সম্ভব।
বার্ডবেসের তথ্যমতে, ফল খাওয়া অনেক পাখি গ্রীষ্মমণ্ডলীয় বনাঞ্চলে একটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। গ্রীষ্মমণ্ডলীয় বনের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বীজ বিতরণকারী হলো ফল খাওয়া পাখি। কিছু গ্রীষ্মমণ্ডলীয় বনে ৯০ শতাংশের বেশি কাষ্ঠল উদ্ভিদের বীজ এসব পাখির মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে। তারা ফল খেয়ে বীজ অন্য কোথাও মলত্যাগের মাধ্যমে ফেলে দেয়। সেই বীজ থেকে তখন গাছ জন্মায়।
সূত্র: আর্থ ডটকম
.উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
‘লালু’ ডাকে চলে আসে শিয়ালটি, থাকে গাজীপুরের গিয়াসের সঙ্গে
‘লালু’ ‘লালু’ বলে বাড়ির আঙিনায় বসে ডাকছিলেন কৃষক গিয়াস উদ্দিন (৪০)। ডাক শুনে বাড়ির পাশের জঙ্গল থেকে বের হয়ে এল এক শিয়াল। তাঁর গা ঘেঁষে বসল। নানা কায়দায় গিয়াসের কাছ থেকে আদর কেড়ে নিচ্ছিল।
গতকাল শনিবার বিকেলে এমন দৃশ্য দেখা গেল গাজীপুরের কাপাসিয়া উপজেলার সূর্যনারায়ণপুর গ্রামের কাওলারটেক এলাকায়।
গিয়াস উদ্দিন একজন কৃষক। গাছগাছালি আর জঙ্গলে ঘেরা একটি উঁচু টিলায় তাঁর বাড়ি। বাড়িতে আছে গরু, ছাগল, মুরগি ও ভেড়া। স্ত্রী দুই ছেলে-মেয়েকে নিয়ে বাবার বাড়িতে থাকেন। নিজের ভিটায় তিনি আছেন শিয়াল ও অন্য পশুগুলোকে নিয়ে।
শিয়ালের সঙ্গে এমন সম্পর্কের বিষয়ে গিয়াস উদ্দিন বলেন, বছরখানেক আগে তাঁর এক বন্ধু জঙ্গলের ভেতরে একটি ছোট শিয়ালছানা পেয়েছিলেন। পরে তিনি সেটিকে লালন-পালন করার ইচ্ছা প্রকাশ করেন। তাঁর বন্ধু শিয়ালছানাটি তাঁকে দিয়ে দেন। সেই থেকে শিয়ালটি তাঁর সঙ্গে আছে।
গিয়াস উদ্দিন বলেন, শিয়ালটি এখন সব ধরনের খাবার খায়। গরু ও মুরগির মাংস, এমনকি রান্না করা তরকারি ভাত দিয়ে মেখে দিলেও সে খায়। এ ছাড়া খাবার হিসেবে তাকে দেওয়া হয় বিস্কুট, পাউরুটি, আটার রুটিসহ নানা কিছু।
শিয়ালটি দিন ও রাতের বেশির ভাগ সময় গিয়াসের ঘর ও উঠানে থাকে। মাঝেমধ্যে বাড়ির পাশের জঙ্গলে চলে যায়। তখন ‘লালু’ বলে ডাকলে দৌড়ে চলে আসে।
শিয়ালটি আশপাশের লোকজনের কোনো ক্ষতি করে না, তারাও শিয়ালটিকে কিছু করে না