টানা ভারী বৃষ্টি ও উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢলে তিস্তা নদীর পানি বেড়ে বিপৎসীমার ১০ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। এতে লালমনিরহাটের হাতীবান্ধা ও পাটগ্রাম উপজেলায় নদীতীরবর্তী নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়েছে। হাতীবান্ধার ছয়টি ইউনিয়নসহ পাটগ্রামের দহগ্রাম ইউনিয়নে বন্যা দেখা দিয়েছে। ইতিমধ্যে পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) পক্ষ থেকে রেড অ্যালার্ট জারির পর মাইকিং করে তিস্তাপারের বাসিন্দাদের সরে যেতে বলা হয়েছে।

পাউবোর বন্যা পূর্বাভাস ও সতর্কীকরণ কেন্দ্র জানিয়েছে, আজ রোববার ও আগামীকাল সোমবার ভারী বৃষ্টিপাতের প্রভাবে তিস্তা, ধরলা ও দুধকুমার নদের পানি বিপৎসীমা অতিক্রম করতে পারে। এতে লালমনিরহাটসহ নীলফামারী ও রংপুর জেলার নদীসংলগ্ন নিম্নাঞ্চলে বন্যার আশঙ্কা আছে। ইতিমধ্যে হাতীবান্ধা ও পাটগ্রাম উপজেলায় তিস্তা নদীর পানি বাড়ায় বন্যা দেখা দিয়েছে। এতে দুই উপজেলার প্রায় আড়াই হাজার পরিবার পানিবন্দী হয়ে পড়েছে। পানিতে তলিয়ে গেছে পুকুর, আমনের খেতসহ আগাম শীতকালীন সবজির খেত।

পাউবো সূত্র জানায়, আজ সন্ধ্যা ছয়টার দিকে তিস্তা ব্যারাজ সেচ প্রকল্পের ডালিয়া পয়েন্টে পানির প্রবাহ রেকর্ড করা হয় ৫২ দশমিক ২৫ মিটার। অর্থাৎ স্বাভাবিক বিপৎসীমা ৫২ দশমিক ১৫ মিটার থেকে ১০ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে পানি প্রবাহিত হচ্ছে। আজ দুপুর ১২টায় পানি বিপৎসীমার ৯ সেন্টিমিটার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছিল। বেলা তিনটায় বিপৎসীমার ১ সেন্টিমিটার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হয়।

তিস্তায় পানি বাড়ায় হাতীবান্ধা উপজেলার ছয় ইউনিয়নের অন্তত ১০টি চর ও নিম্নাঞ্চলে বন্যা দেখা দিয়েছে। অন্যদিকে পাটগ্রাম উপজেলার দহগ্রাম ইউনিয়নের তিস্তা চরাঞ্চলসহ মুন্সিপাড়া, ক্লিনিকপাড়া, কাদেরের চর, মহিমপাড়া, চরপাড়া, কাতিপাড়া, সৈয়দপাড়া এলাকায় পাঁচ শতাধিক পরিবার পানিবন্দী হয়ে পড়েছে। সন্ধ্যা পৌনে সাতটায় পাউবোর কর্মীরা তিস্তাপারের বাসিন্দাদের মাইকিং করে সরে যেতে বলেন।

হাতীবান্ধার সিন্দুর্না ইউনিয়নের চরসিন্দুর্না এলাকার এনামুল হক বলেন, তিস্তার পানি বৃদ্ধি পেয়ে তাঁদের এলাকায় বন্যার পানি ঢুকে পড়েছে। বাড়িঘরে পানি উঠেছে। পরিবার নিয়ে তাঁরা কষ্টে আছেন।

পাটগ্রামের দহগ্রাম ইউনিয়নের কাতিপাড়া গ্রামের আমির হোসেন বলেন, বন্যায় ঘরে পানি ওঠায় রান্না করা নিয়ে বিপাকে পড়েছেন। পরিবার নিয়ে দুশ্চিন্তায় আছেন। পানি সড়কের ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। একটি সেতু ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।

হাতীবান্ধা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো.

শামীম মিঞা প্রথম আলোকে বলেন, ‘নদীর পানি অব্যাহতভাবে বাড়ছে। উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে সর্বাত্মক প্রস্তুতি নিয়ে রাখা হয়েছে। বেশ কয়েকটি ইউনিয়নে বন্যার পানি ঢুকেছে। প্রায় দুই হাজার পরিবার পানিবন্দী হয়ে পড়েছে। জেলা ও উপজেলা প্রশাসন বন্যার ক্ষয়ক্ষতি রোধে কাজ করছে।’

পাউবোর লালমনিরহাট কার্যালয়ের নির্বাহী প্রকৌশলী সুনীল কুমার প্রথম আলোকে বলেন, ভারী বৃষ্টি ও উজানের ঢলে তিস্তার পানি বেড়েছে। বর্তমানে বিপৎসীমার ১০ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে পানি প্রবাহিত হচ্ছে।

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: র ওপর দ য় ব পৎস ম র নদ র প ন বন য র পর ব র উপজ ল

এছাড়াও পড়ুন:

সাইফের ছক্কা বৃষ্টিতে আফগানিস্তান হোয়াইটওইয়াশ

ছোট লক্ষ্য। ভালো শুরুর পর একেবারেই ছন্দে বাংলাদেশ। কিন্তু হঠাৎই ছন্দপতন। এরপর তীব্র লড়াই। নখ কামড়ানো মুহূর্ত৷ স্নায়ুযুদ্ধ। শেষমেষ বিজয়ের হাসি। 

শারজাহতে বাংলাদেশ ও আফগানিস্তানের তিন ম্যাচের টি-টোয়েন্টি সিরিজের প্রতিটির চিত্র একেবারেই একই রকম৷ প্রতিটি ম্যাচের রিপোর্টই যেন হুবহু আগের ম্যাচের মত। পার্থক্য থাকে কেবল ম্যাচের নায়কের। 

আরো পড়ুন:

পাকিস্তানকে ৮৮ রানে হারাল ভারত

শেষ ম্যাচে ১৪৪ রানের টার্গেট দিল আফগানিস্তান

২-০ ব্যবধানে এগিয়ে থাকা বাংলাদেশ আজ আফগানিস্তানকে হোয়াইট ওয়াশ করার মিশনে মাঠে নামে। সেই লড়াইয়ে সবচেয়ে বড় জয় পেয়েছে আজকেই। ৪ ও ২ উইকেটের পর বাংলাদেশ আফগানিস্তানকে হারিয়েছে ৬ উইকেটে। সবচেয়ে বেশি ১২ বল হাতে রেখে আজকেই জয়ের বন্দরে পৌঁছেছে। আগের দুই ম্যাচে বল বাকি ছিল যথাক্রমে ৮টি ও ৫টি। 

বড় রান না হওয়াতে টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটের আমেজ ঠিক পাওয়া যায়নি৷ তিন ম্যাচেই আফগানিস্তান আগে ব্যাটিং পায়। দিনকে দিন রান কেবল কমেছে৷ প্রথম ম্যাচে ৯ উইকেটে ১৫১ রান। দ্বিতীয় ম্যাচে ৫ উইকেটে ১৪৭। আজ আরো ৪ রান কমেছে, ৯ উইকেটে ১৪৩।  

বাংলাদেশের জয়ের নতুন নায়ক সাইফ হাসান ছক্কা বৃষ্টি নামান শারজাহতে। ৩৮ বলে ৭টি ছক্কা ও ২টি চারে ৬৪ রানের অপরাজিত ইনিংস খেলেন সাইফ। দু-একটি শট এদিক-সেদিক হয়েছে। নয়তো পুরো ইনিংসই ছিল শিল্পীর আরাধ্য ক্যানভাস। যেখানে তুলির আঁচড় ছড়িয়ে সাইফ ছড়িয়েছেন মুগ্ধতা। 

আগের দুই ম্যাচের মত আজও বোলিংয়ে বাংলাদেশ দোর্দণ্ড প্রতাপ দেখিয়েছে। আফগানিস্তানের স্কোরবোর্ডের নাটাইটা এক মুহূর্তের জন্যও ছাড় দেননি বোলাররা। নিয়মিত উইকেট নিয়ে তাদেরকে থিতু হতে দেননি৷ সঙ্গে রানের চাকায় লাগাম টেনে রেখেছিলেন।

স্কোরবোর্ডে রান যখন ৯৮, আফগানিস্তানের ৮ ব্যাটসম্যান সাজঘরে। সেখান থেকে আফগানিস্তান ১৪৩ রান করবে সেটা কেউ কল্পনাও করেনি। বোলিংয়ে শেষ দিকে একটু ঢিলেমি দেওয়ায় কয়েকটি বাউন্ডারি এসেছে মুজিব ও দারউইসের ব্যাটে। দলের হয়ে সর্বোচ্চ ৩২ রান করেন দারউইস। মুজিব ২৩ রান করে কিছুটা মান রাখেন। 

সাইফুদ্দিন তিন ওভারে ১৫ রান দিয়ে ৩ উইকেট নিয়ে ছিলেন বাংলাদেশের সেরা। দুইটি করে উইকেট নেন নাসুম আহমেদ ও তানজিম হাসান সাকিব। 

ঢাকা/ইয়াসিন

সম্পর্কিত নিবন্ধ