ফুঁসছে তিস্তা, লালমনিরহাটে রেড অ্যালার্ট জারি
Published: 6th, October 2025 GMT
উজানের ঢল এবং টানা বর্ষণের কারণে তিস্তা নদীর পানি বিপৎসীমা অতিক্রম করে প্রবাহিত হচ্ছে। সোমবার (৬ অক্টোবর) সকালে দেশের বৃহত্তম সেচ প্রকল্প তিস্তা ব্যারাজ ডালিয়া পয়েন্টে পানি প্রবাহ রেকর্ড করা হয় ৫২ দশমিক ২৫ মিটার। যা বিপৎসীমার ১০ সেন্টিমিটার ওপরে।
এদিকে, রবিবার (৫ অক্টোবর) দিনভর পানি বাড়ার পর রাতে তা বিপৎসীমার ৩৫ সেন্টিমিটার ওপরে উঠে যায়। আকস্মিক পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় এই নদী তীরবর্তী লালমনিরহাটসহ নীলফামারী ও রংপুরের নিম্নাঞ্চলের হাজারো মানুষ বন্যা আতঙ্কে নির্ঘুম রাত কাটিয়েছেন। পরিস্থিতি মোকাবিলায় তিস্তা ব্যারাজের ৪৪টি গেটই খুলে দেয় কর্তৃপক্ষ।
আরো পড়ুন:
কুড়িগ্রামে ১৭০ হেক্টর জমির ফসল নিমজ্জিত
দুই মাসে পদ্মার পেটে ২০০ হেক্টর জমি
লালমনিরহাট পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী সুনীল কুমার বলেন, “ভারী বর্ষণ ও উজানের ঢলের কারণে পানি দ্রুত বেড়েছে। আমরা রেড অ্যালার্ট জারি করে রাতেই মাইকিং করেছি। নদীপাড়ের বাসিন্দাদের দ্রুত নিরাপদ স্থানে চলে যাওয়ার জন্য আহ্বান জানানো হয়েছে।”
পানি উন্নয়ন বোর্ড সূত্রে জানা গেছে, গতকাল রবিবার বিকেল ৩টায় ডালিয়া পয়েন্টে তিস্তার পানি বিপৎসীমার এক সেন্টিমিটার নিচে থাকলেও, সন্ধ্যা ৬টার দিকে পানি বিপৎসীমার ১০ সেন্টিমিটার ওপরে ওঠে। রাত গভীর হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে পরিস্থিতি পাল্টাতে থাকে। একপর্যায়ে ডালিয়া পয়েন্টে তিস্তার পানি বিপৎসীমার প্রায় ৩৫ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হয়।
উজানে ভারী বৃষ্টিপাত অব্যাহত থাকায় আগামী ১২ ঘণ্টায় (সোমবার সকাল ৯টা পর্যন্ত) তিস্তা, ধরলা ও দুধকুমার নদীর পানি বিপৎসীমার ওপরে থাকার আশঙ্কা রয়েছে। বৃষ্টি বন্ধ হলে পানি কমে যাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে বলে জানায় সূত্রটি।
রাতে পানি বেড়ে যাওয়ায় বাঁধেই রাত্রিযাপন করেন তিস্তা পাড়ের অনেক বাসিন্দারা। তিস্তার বাম তীরের লালমনিরহাটের হাতীবান্ধা, কালীগঞ্জ ও আদিতমারীর চরাঞ্চল দ্রুত প্লাবিত হয়েছে।
গোবর্দ্ধন গ্রামের বাসিন্দা জালাল বলেন, “ঘরে পানি ঢুকে যাওয়ায় আমরা রাতভর ঘুমাতে পারিনি। কখন ঘর ভেসে যায়, সেই আতঙ্কে পরিবার-পরিজন ও গরু-ছাগল নিয়ে বাঁধে যাওয়ার জন্য প্রস্তুত ছিলাম। তলিয়ে গেছে আমন ধান, সবজি ও মাছের খামার। রাস্তাঘাট ডুবে যাওয়ায় চরাঞ্চলের যোগাযোগ ব্যবস্থা প্রায় বিচ্ছিন্ন। তিস্তার ডান তীরের একটি বাঁধে ভাঙন দেখা দেওয়ায় স্থানীয়দের মধ্যে নতুন করে আতঙ্ক ছড়িয়েছে।”
ঢাকা/সিপন/মাসুদ
.উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর নদ স ন ট ম ট র ওপর ব পৎস ম র
এছাড়াও পড়ুন:
মুসলমান নাম নিয়ে যারা ইসলামের বিরুদ্ধে কাজ করে, তাদের বিরুদ্ধে ঐক্যবদ্ধ থাকতে হবে
হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশের আমির শাহ মুহিব্বুল্লাহ বাবুনগরী বলেছেন, বাংলাদেশের বর্তমান পরিস্থিতিতে বদদ্বীনি, কুফরি ও ভ্রান্ততার বিরুদ্ধে উলামায়ে কেরামকে ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করতে হবে। বিশেষ করে যারা মুসলমান নাম নিয়ে ইসলামের বিরুদ্ধে কাজ করে, তাদের বিরুদ্ধে সবাইকে ঐক্যবদ্ধ থাকতে হবে।
বৃহস্পতিবার রাজধানীর রমনায় ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশন মিলনায়তনে এক অনুষ্ঠানে হেফাজত আমির এ কথা বলেন। জাতীয় উলামা কাউন্সিল বাংলাদেশের আত্মপ্রকাশ উপলক্ষে ‘জাতীয় উলামা সম্মেলন-২০২৫’ শীর্ষক এই অনুষ্ঠানে তিনি প্রধান অতিথি ছিলেন।
জাতীয় উলামা কাউন্সিলের সভাপতি ও বেফাকুল মাদারিসিল আরাবিয়ার মহাসচিব মাওলানা মাহফুজুল হক সম্মেলনে সভাপতিত্ব করেন। তিনি বলেন, ‘অবস্থাদৃষ্টে মনে হচ্ছে, আগামী জাতীয় নির্বাচনে অনেক আলেম-উলামা অংশ নেবেন। আমরা পরিষ্কারভাবে বলতে চাই, আগামী জাতীয় নির্বাচনে উলামায়ে কেরামের পরস্পরে প্রতিদ্বন্দ্বিতা কাম্য নয়।’
সম্মেলনে বিশেষ অতিথির বক্তব্যে বাংলাদেশ খেলাফত মজলিসের আমির মাওলানা মামুনুল হক বলেন, ‘ইসলামি রাজনীতিতে সব সময় প্রতিপক্ষের মুখোমুখি দাঁড়ানো যায় না। সঠিক সময়ের অপেক্ষা করে লক্ষ্য অর্জনের জন্য ভূমিকা রাখতে হয়। আজ ইসলামি রাজনীতির সোনালি সময় চলছে। আমরা যদি সুযোগ কাজে না লাগাই, তাহলে সামনে বড় ধরনের ভোগান্তি তৈরি হবে।’
মুন্সিগঞ্জের জামি’আ ইসলামিয়া হালীমিয়া মাদ্রাসার প্রধান ও মধুপুরের পীর মাওলানা আবদুল হামিদ বলেন, ‘আমরা প্রয়োজনে বাতিলের বিরুদ্ধে একসঙ্গে লড়তে লড়তে মরব, কিন্তু বিভক্ত হব না ইনশা আল্লাহ।’ তিনি বলেন, ১৬ নভেম্বরের কাদিয়ানিবিরোধী আন্দোলন শেষ হয়নি, শুরু হয়েছে মাত্র। সরকারকে সুযোগ দেওয়া হয়েছে, পরেরবার আর সুযোগ দেওয়া হবে না।
হেফাজতে ইসলামের মহাসচিব মাওলানা সাজিদুর রহমান বলেন, ‘আমরা ঐক্যবদ্ধ থাকব। যারা কাজ করতে চায়, তাদের বাধা দেব না। আমরা নিজেরা নিজেদের শত্রু হব না, ইনশা আল্লাহ।’
সম্মেলনে অন্যদের মধ্যে বক্তব্য দেন বাংলাদেশ খেলাফত মজলিসের মহাসচিব মাওলানা জালালুদ্দীন আহমাদ, জাতীয় উলামা কাউন্সিলের মহাসচিব মাওলানা খালেদ সাইফুল্লাহ আইয়ুবী, মাওলানা নূরুল ইসলাম ওলিপুরী, মাওলানা সালাহুদ্দীন নানুপুরী, মাওলানা মুশতাক আহমদ প্রমুখ।