ছাত্রশিবিরের করা অভিযোগের প্রমাণ চাইলেন ছাত্রদলের ভিপি প্রার্থী
Published: 8th, October 2025 GMT
রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (রাকসু) নির্বাচনে ছাত্রশিবিরের প্যানেলের বিরুদ্ধে আচরণবিধি লঙ্ঘনের প্রমাণ দাখিলের দাবি করেছেন ছাত্রদল-সমর্থিত ‘ঐক্যবদ্ধ নতুন প্রজন্ম’ প্যানেলের ভিপি প্রার্থী শেখ নূর উদ্দীন। একই সঙ্গে তিনি তাঁদের প্যানেলের বিরুদ্ধে আনা অভিযোগের প্রমাণ চেয়েছেন ছাত্রশিবিরের কাছে।
আজ বুধবার সকাল সাড়ে ১০টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিবহন মার্কেটের আমতলা চত্বরে সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেন শেখ নূর উদ্দীন। তিনি বলেন, ‘আমরা অভিযোগের সঙ্গে প্রমাণ দিয়েছি। ছাত্রশিবির অর্থ প্রদানের যে অভিযোগ করেছে, আমরা এর প্রমাণ চাই। তাঁরাও প্রমাণ করুক। বন্ধুপ্রতিম ছাত্রশিবিরের প্রতি আহ্বান থাকবে, আপনারা আচরণবিধির প্রতি সহনশীল হন। আমরাও হই।’
আরও পড়ুনরাকসু নির্বাচনে পাল্টাপাল্টি কী অভিযোগ করল ছাত্রদল ও ছাত্রশিবির১৬ ঘণ্টা আগেএ বিষয়ে ছাত্রশিবির–সমর্থিত ‘সম্মিলিত শিক্ষার্থী জোট’ প্যানেলের ভিপি প্রার্থী মোস্তাকুর রহমান প্রথম আলোকে বলেন, ‘আমরা নির্বাচন কমিশনে অভিযোগ দিয়েছি। কমিশনের উচিত অভিযোগ যাচাই-বাছাই করা। অভিযোগের সত্যতা পেলে ব্যবস্থা গ্রহণ করবে, আর না পেলে তো নাই। প্রশাসন যদি আমাদের কাছে তথ্য-প্রমাণ চায়, আমরা সে ব্যাপারে সহযোগিতা করব।’
রাকসু নির্বাচনে ছাত্রশিবির সমর্থিত প্যানেলের ভিপি প্রার্থী মোস্তাকুর রহমান আজ সকাল থেকে প্রচার চালাচ্ছেন। বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিবহন মার্কেটে.উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
রাকসু: ছাত্রদলের বিরুদ্ধে ভোটারদের অর্থ প্রদানের অভিযোগ শিবিরের
রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (রাকসু) নির্বাচনে ছাত্রদলের বিরুদ্ধে ভোটারদের সরাসরি অর্থ প্রদানের অভিযোগ করেছে ছাত্রশিবির।
অভিযোগে জানা যায়, গত ১৮ সেপ্টেম্বর আরবি বিভাগ ২০২৪-২৫ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থীদের মাঝে ৫ হাজার টাকা বিতরণ করে ছাত্রদল।
আরো পড়ুন:
রাবিতে নবীন শিক্ষকদের নিয়ে প্রশিক্ষণ কর্মশালা শুরু
রাকসু: অভিনব সাজে নির্বাচনী প্রচারে এক প্রার্থী
মঙ্গলবার (৭ অক্টোবর) দুপুর ১টায় রাকসুর প্রধান নির্বাচন কমিশনার বরাবর নির্বাচনে ছাত্রদলের আচরণবিধি লঙ্ঘনের অভিযোগ তুলে স্মারকলিপি প্রদান করেন ছাত্রশিবির সমর্থিত ‘সম্মিলিত শিক্ষার্থী জোট’ প্যানেল।
স্মারকলিপিতে বলা হয়েছে, আসন্ন রাকসু নির্বাচনে অংশগ্রহণকারী ছাত্রদলের প্যানেল একাধিক ক্ষেত্রে আচরণবিধি লঙ্ঘন করছে। এতে নির্বাচনী পরিবেশ ক্ষুণ্ন হচ্ছে এবং অন্যান্য প্রার্থীদের প্রতি অসঙ্গত আচরণ প্রদর্শিত হচ্ছে।
ছাত্রদল প্যানেলের প্রার্থীরা আচরণবিধি ভঙ্গ করে ক্লাসরুমে প্রবেশ করে প্রচার চালাচ্ছেন। গত ১৫ সেপ্টেম্বর জিএস প্রার্থী নাফিউল ইসলাম জীবন আরবি বিভাগের ২০২৪–২৫ সেশনের শিক্ষার্থীদের ক্লাসে (শহীদুল্লাহ অ্যাকাডেমিক ভবন, কক্ষ ৩০৬) প্রচার চালান। এছাড়া ১৮ সেপ্টেম্বর আরবি বিভাগের ২০২৪–২৫ সেশনের শিক্ষার্থীদের ৫ হাজার টাকা প্রদান করে তারা।
পাশাপাশি, নির্ধারিত সময়সীমার বাইরে প্রচার চালানো এবং ভোটার নন এমন ব্যক্তিদের প্রচারে সম্পৃক্ত হওয়ার বিষয়েও অভিযোগ উত্থাপন করা হয়, যা নির্বাচন কমিশনের ঘোষিত নিয়মাবলীর সুস্পষ্ট লঙ্ঘন বলে স্মারকলিপিতে উল্লেখ করা হয়েছে।
প্রধান নির্বাচন কমিশনার বরাবর স্মারকলিপি প্রদান শেষে ‘সম্মিলিত শিক্ষার্থী জোট’ প্যানেলের জিএস প্রার্থী ফাহিম রেজা বলেন, “শুরু থেকেই কিছু প্রার্থী নির্বাচনী আচরণবিধি লঙ্ঘন করে আসছেন। চূড়ান্ত ভোটার তালিকা প্রকাশের আগেই অনেকে ভোট চাওয়া শুরু করেছেন। নিয়ম অনুযায়ী, পাঁচজনের বেশি নিয়ে মনোনয়নপত্র জমা দেওয়া যাবে না। কিন্তু দেখা গেছে, অনেক প্রার্থী বহর নিয়ে এসে মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছেন। অনেকে রঙিন লিফলেট বিতরণ করেছেন এবং ক্লাসরুমের ভিতরে গিয়ে প্রচার চালিয়েছেন, যা নির্বাচনী আচরণবিধির স্পষ্ট লঙ্ঘন।”
তিনি আরো বলেন, “আমরা নির্বাচনকে অংশগ্রহণমূলক রাখার স্বার্থে এর আগে কোনো লিখিত অভিযোগ দিইনি। তবে আমরা আবরার ফাহাদ স্মরণে ক্যাম্পাসে নিপীড়নবিরোধী দিবস পালনের অনুমতি চেয়েছিলাম, যা নির্বাচন কমিশন আচরণবিধি লঙ্ঘনের কথা বলে অনুমোদন দেয়নি। কিন্তু ছাত্রদল নির্বাচন কমিশনের অনুমতি ছাড়াই আজ বিকেলে নিজ উদ্যোগে কর্মসূচি আয়োজন করেছে। আমরা এ বিষয়ে নির্বাচন কমিশনের কাছে লিখিত অভিযোগ জানিয়েছি।”
এ বিষয়ে রাকসুর প্রধান নির্বাচন কমিশনার ড. এফ নজরুল ইসলাম বলেন, “কয়েকবার নির্বাচন পেছানোর কারণে শিক্ষার্থীদের মধ্যে স্বাভাবিকভাবেই কিছুটা শঙ্কা তৈরি হয়েছে। তবে প্রশাসন ক্যাম্পাসে যে অস্থিরতা ছিল, তার মূল কারণগুলো চিহ্নিত করে অনেকগুলোরই সমাধান করেছে।”
তিনি বলেন, “নির্বাচন স্থগিত হওয়ায় নির্বাচন কমিশনের নির্ধারিত বাজেটের চেয়ে অতিরিক্ত বাজেট প্রয়োজন হবে। তাই সব প্রার্থীদেরও অতিরিক্ত খরচ লাগবে এটাই স্বাভাবিক। আমরা ১৬ তারিখে নির্বাচনের নিশ্চয়তা দিচ্ছি।”
ঢাকা/ফাহিম/মেহেদী