সালমান শাহর মৃত্যু: রিভিশন মামলার শুনানি শেষ, আদেশ ২০ অক্টোবর
Published: 13th, October 2025 GMT
চিত্রনায়ক সালমান শাহর মৃত্যুর ঘটনায় করা মামলায় তার মায়ের করা রিভিশন আবেদনের শুনানি শেষ হয়েছে। ঢাকার ষষ্ঠ অতিরিক্ত মহানগর দায়রা জজ মো. জান্নাতুল ফেরদৌস ইবনে হক এ বিষয়ে আদেশের জন্য ২০ অক্টোবর দিন ধার্য করেছেন। সালমান শাহর মায়ের আইনজীবী মো. ওবায়দুল্লাহ এ দিন রিভিশন আবেদনের পক্ষে শুনানি শেষ করেন।
পরে তিনি বলেন, “আমরা মামলার কিছু ডকুমেন্ট চেয়ে রিভিশন দায়ের করি। ২০২২ সাল থেকে আমরা শুনানি শুরু করি। আজ শুনানি শেষ হল। আমরা শতভাগ আশাবাদী, আদালত আমাদের রিভিশন মঞ্জুর করবেন। এরপর তথ্যগুলো পর্যালোচনা করে আমরা মামলাটি পুনরায় তদন্তের আবেদন করব।”
আরো পড়ুন:
আপনার অনুপস্থিতি এখনো অবিশ্বাস্য মনে হয়: শাকিব খান
শুভ জন্মদিন স্বপ্নের নায়ক: শাবনূর
সালমান শাহ ‘হত্যার’ বিচার দাবিতে এদিন ভক্তরা আদালতপাড়ায় মানববন্ধন করেন।
১৯৯৬ সালের ৬ সেপ্টেম্বর চিত্রনায়ক সালমান শাহ (চৌধুরী মোহাম্মদ শাহরিয়ার ইমন) ঢাকার ইস্কাটনের ফ্ল্যাটে মারা যান। বাংলাদেশের চলচ্চিত্র জগতে সে সময় তার জনপ্রিয়তা ছিল তুঙ্গে।
ছেলের মৃত্যুর পর প্রথমে একটি অপমৃত্যু মামলা করেন সালমান শাহর বাবা কমরউদ্দিন আহমদ চৌধুরী। কিন্তু পরে ছেলেকে হত্যা করা হয়েছে—এমন অভিযোগে ১৯৯৭ সালের ২৪ জুলাই অভিযোগটিকে হত্যা মামলায় রূপান্তর করার আবেদন জানান তিনি। তখন অপমৃত্যু মামলার সঙ্গে হত্যাকাণ্ডের অভিযোগের বিষয়টি তদন্ত করতে সিআইডিকে নির্দেশ দেন আদালত। ১৯৯৭ সালের ৩ নভেম্বর আদালতে চূড়ান্ত প্রতিবেদন দিয়ে সিআইডি বলে, সালমান শাহ ‘আত্মহত্যা’ করেছিলেন।
সিআইডির প্রতিবেদন প্রত্যাখ্যান করে কমরউদ্দিন চৌধুরী রিভিশন মামলা দায়ের করেন। পরে ২০০৩ সালের ১৯ মে মামলাটি বিচার বিভাগীয় তদন্তে পাঠান আদালত। দীর্ঘ ১১ বছর পর ২০১৪ সালের ৩ আগস্ট, সেই প্রতিবেদন দাখিল করেন মহানগর হাকিম ইমদাদুল হক। তাতেও হত্যার অভিযোগ নাকচ করা হয়।
সালমান শাহের বাবার মৃত্যুর পর তার মা নীলা চৌধুরী মামলটি চালিয়ে যান। ২০১৫ সালের ১০ ফেব্রুয়ারি নীলা চৌধুরী বিচার বিভাগীয় তদন্ত প্রতিবেদনে ‘নারাজি’ দেন। তিনি ১১ জনের নাম উল্লেখ করে দাবি করেন, এরা তার ছেলের ‘হত্যার’ সঙ্গে জড়িত থাকতে পারে। এরপর মামলাটি তদন্ত করে র্যাব। রাষ্ট্রপক্ষ আপত্তি তুললে ২০১৬ সালের ২১ অগাস্ট, ঢাকার বিশেষ জজ ৬-এর বিচারক ইমরুল কায়েশ র্যাবকে মামলাটি আর তদন্ত না করার আদেশ দেন।
তখন তদন্তের দায়িত্বে আসে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই)। চার বছর তদন্তের পর ২০২০ সালের ২৫ ফেব্রুয়ারি তারা চূড়ান্ত প্রতিবেদন দেয়। সেখানেও বলা হয়, ঘটনার সময় উপস্থিত ও ঘটনায় সংশ্লিষ্ট ৫৪ জন সাক্ষীর জবানবন্দি বিশ্লেষণ করে, জব্দ করা আলামত পর্যালোচনা করে হত্যার অভিযোগের কোনো ‘প্রমাণ মেলেনি’।
পিবিআই তাদের তদন্ত প্রতিবেদনে বলে, “চিত্রনায়িকা শাবনূরের সঙ্গে ঘনিষ্ঠতার কারণে পারিবারিক কলহ আর স্ত্রী সামিরা হকের কারণে মা নিলুফা চৌধুরী ওরফে নীলা চৌধুরীকে ছেড়ে থাকার মানসিক যন্ত্রণায় ভুগেই অভিমানী সালমান শাহ আত্মহত্যার পথ বেছে নিয়েছিলেন।”
ওই প্রতিবেদনেও সন্তুষ্ট নন সালমানের মা নীলা চৌধুরী। ছেলের মৃত্যু কীভাবে হয়েছিল, তা জানতে তিনি আরো তদন্ত চান।
ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট মামুনুর রশীদ ২০২১ সালের ৩১ অক্টোবর পিবিআইয়ের প্রতিবেদন আমলে নিয়ে আসামিদের অব্যাহতির আদেশ দেন।
এরপর আবার সালমান শাহর পরিবারের পক্ষ থেকে কয়েকটি বিষয় নিয়ে মহানগর দায়রা জজ আদালতে রিভিশন দায়েরের আবেদন করা হয়। ২০২২ সালের ১২ জুন ঢাকা মহানগর দায়রা জজ আদালতে রিভিশন আবেদন গ্রহণ করেন। তবে বিভিন্ন কারণে আর রিভিশন শুনানি হয়নি।
১৯৭১ সালের ১৯ সেপ্টেম্বর সিলেটের দারিয়াপাড়ায় নানাবাড়িতে সালমান শাহর জন্ম। এই নায়কের মৃত্যু হয় ১৯৯৬ সালের ৬ সেপ্টেম্বর। নব্বই দশকের শুরুতে সালমান শাহ মাত্র চার বছর কাজ করে শীর্ষ নায়কে পরিণত হন।
ঢাকা/রাহাত/শান্ত
.উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর হত য র তদন ত
এছাড়াও পড়ুন:
রোনালদোর রেকর্ড ভেঙে চ্যাম্পিয়নস লিগে এমবাপ্পের দ্রুততম হ্যাটট্রি
রিয়াল মাদ্রিদের ফরাসি সুপারস্টার কিলিয়ান এমবাপে আবারও ছাপিয়ে গেলেন নিজের আগের সব আলোচনাকে। অলিম্পিয়াকোসের বিপক্ষে চ্যাম্পিয়নস লিগের লিগ-পর্বের ম্যাচে মাত্র ৬ মিনিট ৪২ সেকেন্ডে হ্যাটট্রিক করে ভেঙেছেন ক্রিস্টিয়ানো রোনালদোর রেকর্ড। যা রিয়ালের হয়ে চ্যাম্পিয়নস লিগে দ্রুততম হ্যাটট্রিকের নজির।
ভিনিসিয়ুস জুনিয়রের অ্যাসিস্ট থেকে ম্যাচের প্রথম গোল করেন এমবাপে। এরপর ঝড় তুললেন আরও দু’টি গোল করে। সব মিলিয়ে সাত মিনিটেরও কম সময়ে চ্যাম্পিয়নস লিগ ইতিহাসের দ্বিতীয় দ্রুততম হ্যাটট্রিক উপহার দিলেন ফরাসি তারকা। রোনালদোর করা হ্যাটট্রিকের চেয়ে এমবাপ্পের এই হ্যাটট্রিত প্রায় চার মিনিট দ্রুত।
আরো পড়ুন:
বেলিংহামের শেষ মুহূর্তের গোলে হার এড়াল রিয়াল
দ্রুততম ৪৪ গোলে রোনালদোর রেকর্ড ভাঙলেন এমবাপ্পে
চ্যাম্পিয়নস লিগের ইতিহাসে এমবাপের চেয়ে দ্রুত হ্যাটট্রিক আছে শুধু মোহাম্মদ সালাহর। যিনি ২০২২ সালে রেঞ্জার্সের বিপক্ষে এমবাপ্পের চেয়েও ৩০ সেকেন্ড কম সময়ে এই কীর্তি গড়েছিলেন।
চ্যাম্পিয়নস লিগের সবচেয়ে দ্রুত হ্যাটট্রিকসমূহ:
৭ মিনিট - মোহাম্মদ সালাহ (রেঞ্জার্স ১-৭ লিভারপুল, ২০২২),
৭ মিনিট - কিলিয়ান এমবাপে (অলিম্পিয়াকোস ৩-৪ রিয়াল মাদ্রিদ, ২০২৫),
৮ মিনিট - বাফেতিম্বি গোমিস (দিনামো জাগরেব ১-৭ লিওঁ, ২০১১),
৯ মিনিট - মাইক নিউয়েল (ব্ল্যাকবার্ন ৪-১ রোজেনবর্গ, ১৯৯৫),
১১ মিনিট - রাহিম স্টার্লিং (ম্যান সিটি ৫-১ আটালান্তা, ২০১৯),
১১ মিনিট - ক্রিস্টিয়ানো রোনালদো (রিয়াল মাদ্রিদ ৮-০ মালমো, ২০১৫),
১১ মিনিট - রবার্ট লেভানদভস্কি (বায়ার্ন ৭-১ সালজবুর্গ, ২০২২),
১২ মিনিট - রবার্ট লেভানদভস্কি (সার্ভেনা জভেজদা ০-৬ বায়ার্ন, ২০১৯),
১২ মিনিট - লুইজ আদ্রিয়ানো (বাতে বোরিসভ ০-৭ শাখতার, ২০১৪)।
ম্যাচ শুরুর সময় থেকে হিসাব করলে এমবাপের হ্যাটট্রিকটি টুর্নামেন্ট ইতিহাসে তৃতীয়-দ্রুততম সময়ে সম্পন্ন করা হ্যাটট্রিকও বটে।
২০২২ সালে বায়ার্নের হয়ে রবার্ট লেভানডোভস্কি সালজবুর্গের বিপক্ষে ম্যাচের ২৩ মিনিটের মধ্যে হ্যাটট্রিক করেছিলেন। তার আগে এসি মিলানের মারকো সিমোন ১৯৯৬ সালে রোজেনবর্গের বিপক্ষে ম্যাচের ২৪ মিনিটের মধ্যে করেছিলেন হ্যাটট্রিক। আর ২০২৫ সালের নভেম্বরে কিলিয়ান এমবাপ্পে অলিম্পিয়াকোসের বিপক্ষে ২৯ মিনিটের মধ্যে হ্যাটট্রিক করেন।
তার হ্যাটট্রিকে রিয়াল মাদ্রিদ ৪-৩ ব্যবধানে অলিম্পিয়াকোসকে হারিয়ে পয়েন্ট টেবিলের পঞ্চম স্থানে অবস্থান নিয়েছে।
ঢাকা/আমিনুল