রাজধানীর বারডেম হাসপাতালের নিবিড় পরিচর্যাকেন্দ্রে (আইসিইউ) ভাষাসৈনিক আহমদ রফিকের চিকিৎসা চলছে। তিনি সংজ্ঞাহীন অবস্থায় আছেন। তাঁকে অক্সিজেন দেওয়া হচ্ছে। গত রোববার তাঁকে পান্থপথের হেলথ অ্যান্ড হোপ হাসপাতাল থেকে উন্নত চিকিৎসার জন্য বারডেম হাসপাতালে নেওয়া হয়।

আহমদ রফিকের বিষয়ে নিয়মিত খোঁজ রাখছেন ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক ইসমাইল সাদী। তিনি মঙ্গলবার রাতে আহমদ রফিকের শারীরিক অবস্থা নিয়ে প্রথম আলোকে এসব তথ্য জানিয়েছেন।

ইসমাইল সাদী প্রথম আলোকে বলেন, আহমদ রফিকের কিডনির সমস্যা রয়েছে। এ ছাড়া কয়েকটি ‘মাইল্ড স্ট্রোক’ হয়েছে। তিনি এখন অচেতন অবস্থায় আছেন, তাঁকে অক্সিজেন দেওয়া হচ্ছে। বারডেম হাসপাতালের আইসিইউ বিভাগের প্রধান কানিজ ফাতেমার তত্ত্বাবধানে তাঁর চিকিৎসা চলছে।

ইসমাইল সাদী জানান, এর আগে গত ১১ সেপ্টেম্বর সকালে ল্যাবএইড হাসপাতাল থেকে তাঁকে ছাড়পত্র দেওয়া হয়। সেদিন দুপুরেই তাঁকে পান্থপথের হেলথ অ্যান্ড হোপ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছিল। তবে আহমদ রফিকের শারীরিক যে অবস্থা, তাঁর প্রয়োজনীয় চিকিৎসার পর্যাপ্ত উপকরণ ওই হাসপাতালে নেই। সার্বিক দিক বিবেচনা করে গত রোববার আহমদ রফিককে বারডেমে ভর্তি করা হয়।

আহমদ রফিকের চিকিৎসা চালিয়ে যেতে প্রয়োজনীয় বিভিন্ন বিষয়গুলো উল্লেখ করে ইসমাইল সাদী জানান, হেলথ অ্যান্ড হোপ হাসপাতালে ভর্তি থাকাকালীন গত ১৩ অথবা ১৪ সেপ্টেম্বর সংস্কৃতি মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা আহমদ রফিককে দেখতে এসেছিলেন। কর্মকর্তারা তাঁর চিকিৎসার দায়িত্ব নেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়ে গেছেন। তাঁরা মন্ত্রণালয়ের সহযোগিতার আশায় আছেন।

কবি ও বহুমাত্রিক লেখক, রবীন্দ্রবিশেষজ্ঞ আহমদ রফিক নিউ ইস্কাটনের গাউসনগরে একটি ভাড়া বাসায় একাই থাকেন। তাঁর জন্ম ১৯২৯ সালের ১২ সেপ্টেম্বর ব্রাহ্মণবাড়িয়ায়।

আহমদ রফিকের স্ত্রী মারা গেছেন ২০০৬ সালে। তিনি নিঃসন্তান। নিজের লেখা ও সংগ্রহ করা বিস্তর বই ছাড়া সম্পদ বলতে তেমন কিছু নেই। কবিতা, প্রবন্ধ, ভাষা আন্দোলনের ইতিহাস, গবেষণা মিলিয়ে তাঁর লিখিত ও সম্পাদিত গ্রন্থের সংখ্যা শতাধিক।

রবীন্দ্রবিশেষজ্ঞ হিসেবে আহমদ রফিক দুই বাংলায় অগ্রগণ্য। একুশে পদক, বাংলা একাডেমি পুরস্কারসহ বহু পুরস্কার ও পদক পেয়েছেন তিনি। কলকাতার টেগর রিসার্চ ইনস্টিটিউট থেকে পেয়েছেন ‘রবীন্দ্রতত্ত্বাচার্য’ উপাধি।

আহমদ রফিকের দৃষ্টি ক্ষীণ হয়ে আসছিল ২০১৯ সাল থেকেই। সে বছর চোখে অস্ত্রোপচার করলেও অবস্থার বেশি হেরফের হয়নি; ২০২৩ সাল থেকে প্রায় দৃষ্টিহীন। এ ছাড়া ২০২১ সালে পড়ে গিয়ে পা ভাঙার পর থেকেই আহমদ রফিকের শারীরিক অবস্থা ভালো যাচ্ছিল না।

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: অবস থ

এছাড়াও পড়ুন:

পিআর পদ্ধতিতে স্থায়ী সরকারব্যবস্থা হয় না: সালাহউদ্দিন আহমদ

আনুপাতিক প্রতিনিধিত্ব (পিআর) পদ্ধতির নির্বাচন ব্যবস্থা প্রসঙ্গে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমদ বলেন, পিআর পদ্ধতি হচ্ছে একটি পার্মানেন্ট রেস্টলেসনেস, যার মধ্য দিয়ে সব সময় অস্থিতিশীল পরিস্থিতি বিদ্যমান থাকে। এটা বিভিন্ন দেশে দেখা গেছে।

সালাহউদ্দিন আহমদ মন্তব্য করেন, পিআর পদ্ধতির মাধ্যমে কোনো স্থায়ী সরকারব্যবস্থা প্রতিষ্ঠিত হয় না। কখনো সংখ্যাগরিষ্ঠতার ভিত্তিতে সরকার গঠন করা সম্ভব হয় না। একটি ঝুলন্ত পার্লামেন্ট থাকে।

আমরা পিআর মানে মনে করি, পাবলিক রিলেশনস। আমরা পিআর মানে মনে করি, জনসংযোগ। এখন সবাই জনসংযোগে আছে। সেই পিআরে আমরা বিশ্বাস করি।—সালাহউদ্দিন আহমদ, বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য।

আজ মঙ্গলবার সকালে রাজধানীর শেরেবাংলা নগরে শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের সমাধিতে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জানানো শেষে সাংবাদিকদের এ কথা বলেন সালাহউদ্দিন আহমদ। জাতীয়তাবাদী ওলামা দলের প্রতিষ্ঠা বার্ষিকী উপলক্ষে এ অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়।

সালাহউদ্দিন আহমদ বলেন, ধর্মের ভিত্তিতে রাজনীতিতে কোনো বিভাজন বিএনপি চায়নি, চায়ও না। সামনেও দলটি এ ধরনের রাজনীতি করবে না। গণতান্ত্রিক সংস্কারের মাধ্যমে শক্তিশালী গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনে সবাইকে অংশ নিতে হবে।

আরও পড়ুনপিআর সম্পর্কে ধারণা নেই ৫৬ শতাংশের২১ সেপ্টেম্বর ২০২৫

দেশের মানুষ পিআর পদ্ধতির বিপক্ষে বলেন সালাহউদ্দিন আহমদ। তিনি আরও বলেন, একটা জরিপে ৫৬ শতাংশ মানুষের পিআর পদ্ধতি সম্পর্কে ধারণা নেই বলে জেনেছেন। আরেক জরিপে দেখেছেন, কোনো একটা দল বলছে, ৭০ শতাংশ লোক পিআর চায়। এই দুই জরিপের প্রসঙ্গ তুলে ধরে বিএনপির এই নেতা বলেন, ‘যদি ৫৬ পার্সেন্ট মানুষ পিআর পদ্ধতি না-ই বোঝে, তাহলে ৭০ পার্সেন্ট মানুষ কীভাবে পিআর পদ্ধতি চায়, সেটি আমাদের বুঝে আসে না।’

পিআর পদ্ধতি প্রসঙ্গে বিএনপির এই নেতা বলেন, ‘আমরা পিআর মানে মনে করি, পাবলিক রিলেশনস। আমরা পিআর মানে মনে করি, জনসংযোগ। এখন সবাই জনসংযোগে আছে। সেই পিআরে আমরা বিশ্বাস করি। যারা প্রোপোশনাল রিপ্রেজেন্টেটিভ মানে, পার্মানেন্ট রেস্টলেসনেস প্রতিষ্ঠা করতে চায়, তারা সফল হবে না।’

আরও পড়ুনপিআর মানে হলো ‘পারমানেন্ট রেস্টলেসনেস’: সালাহউদ্দিন আহমদ২৫ সেপ্টেম্বর ২০২৫

দেশের জনগণ এখন নির্বাচনমুখী উল্লেখ করে সালাহউদ্দিন আহমদ বলেন, দেশে এখন নির্বাচনী আমেজ চলছে। সব প্রার্থী, সম্ভাব্য প্রার্থী এবং জনগণ জনসংযোগে আছেন। এ অবস্থায় কোনো দল যদি বিভ্রান্তি সৃষ্টি করে, নির্বাচন অনুষ্ঠান বাধাগ্রস্ত করতে চায়, তাহলে জনগণ তাদের চিহ্নিত করবেন। রাজনৈতিকভাবে তাদের প্রত্যাখ্যান করারও সম্ভাবনা আছে।

সালাহউদ্দিন আহমদ বলেন, বাংলাদেশে গণতান্ত্রিক উত্তরণের প্রক্রিয়াতে বাধা সৃষ্টি করতে কেউ কেউ ষড়যন্ত্র করছে। এখানে আন্তর্জাতিক মহলও থাকতে পারে।

আরও পড়ুন‘৭০ ভাগ জনগণ পিআর পদ্ধতির পক্ষে সমর্থন জানিয়েছে’১৯ সেপ্টেম্বর ২০২৫

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • গাজীপুরে ড্রাম ট্রাকের ধাক্কায় অটোরিকশার ২ যাত্রী নিহত
  • ভাষাসংগ্রামী আহমদ রফিক মারা গেছেন
  • ভাষাসৈনিক আহমদ রফিক আর নেই
  • গবেষণালব্ধ বই যুগের আলোকবর্তিকা: ধর্ম উপদেষ্টা
  • পিআর পদ্ধতিতে স্থায়ী সরকারব্যবস্থা হয় না: সালাহউদ্দিন আহমদ