চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে ২০২৫-২৬ শিক্ষাবর্ষে প্রথম বর্ষ স্নাতক (সম্মান) শ্রেণিতে ভর্তি পরীক্ষায় এবার শিক্ষক, কর্মকর্তা ও কর্মচারীর সন্তানদের পোষ্য কোটা থাকছে না। এ ছাড়া কমেছে স্নাতকের আসন ও ভর্তির আবেদনের যোগ্যতা—জিপিএ। আগামী ১ ডিসেম্বর থেকে এ পরীক্ষার আবেদনপ্রক্রিয়া শুরু হবে। চলবে ১৫ ডিসেম্বর পর্যন্ত।

আজ সোমবার সন্ধ্যায় বিশ্ববিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত রেজিস্ট্রার অধ্যাপক মোহাম্মদ সাইফুল ইসলাম, সমাজবিজ্ঞান অনুষদের ডিন অধ্যাপক এনায়েত উল্যাহ পাটওয়ারী এবং কলা ও মানববিদ্যা অনুষদের ডিন অধ্যাপক মো.

ইকবাল শাহীন খান প্রথম আলোকে এসব তথ্য নিশ্চিত করেন।

বিশ্ববিদ্যালয় সূত্র জানায়, গতকাল রোববার সকাল ১০টায় উপাচার্যের দপ্তরের সম্মেলনকক্ষে ভর্তি পরীক্ষা পরিচালনা কমিটির দ্বিতীয় সভা হয়। এ সভায় ভর্তি পরীক্ষার তারিখ পরিবর্তন, আবেদনের যোগ্যতা ও আসন কমানোর বিষয়ে সিদ্ধান্ত হয়। পাশাপাশি পোষ্য কোটা বাতিলেরও সিদ্ধান্ত হয়। বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক মুহাম্মদ ইয়াহ্ইয়া আখতার এ সভায় সভাপতিত্ব করেন। এতে সহ-উপাচার্য (শিক্ষা) অধ্যাপক মোহাম্মদ শামীম উদ্দিন খান, সহ-উপাচার্য (প্রশাসন) অধ্যাপক মো. কামাল উদ্দিন, রেজিস্ট্রার (ভারপ্রাপ্ত) অধ্যাপক মোহাম্মদ সাইফুল ইসলাম, বিভিন্ন অনুষদের ডিন এবং ভর্তি কার্যক্রম সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।

এর আগে গত ১২ অক্টোবর ভর্তি পরীক্ষা পরিচালনা কমিটির প্রথম সভার পর পরীক্ষার সম্ভাব্য সূচি ঘোষণা করেছিল কর্তৃপক্ষ। তবে দ্বিতীয় সভায় এ সিদ্ধান্ত পরিবর্তন করা হয়। নতুন সিদ্ধান্তে আগামী ২ জানুয়ারি বিজ্ঞান, জীববিজ্ঞান, মেরিন সায়েন্সেস অ্যান্ড ফিশারিজ ও প্রকৌশল অনুষদভুক্ত ‘এ’ ইউনিটের মধ্য দিয়ে ভর্তি শুরু হবে। এ ছাড়া সমাজবিজ্ঞান ও আইন অনুষদভুক্ত ‘ডি’ ইউনিটের পরীক্ষা হবে ৩ জানুয়ারি, ব্যবসায় প্রশাসন অনুষদভুক্ত ‘সি’ ইউনিটের পরীক্ষা হবে ৯ জানুয়ারি আর কলা ও মানববিদ্যা অনুষদভুক্ত ‘বি’ ইউনিটের পরীক্ষা হবে ১০ জানুয়ারি। অন্যদিকে শারীরিক শিক্ষা ও ক্রীড়াবিজ্ঞান বিভাগ ভুক্ত ‘ডি-১ উপ–ইউনিটের’ পরীক্ষা হবে ৫ জানুয়ারি, ‘বি-১ উপ–ইউনিটের’ পরীক্ষা হবে ৭ জানুয়ারি এবং ‘বি-২ উপ–ইউনিটের’ পরীক্ষা হবে ৮ জানুয়ারি।

আবেদনের যোগ্যতা ও আসন কমছে

এবারের ভর্তি পরীক্ষায় আবেদনের যোগ্যতার জিপিএ গত বছরের তুলনায় সব ইউনিটে শূন্য দশমিক ৫ কমছে। ‘এ’ ইউনিটে এবার আবেদনের ন্যূনতম যোগ্যতা মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিক (চতুর্থ বিষয়সহ) মিলিয়ে মোট জিপিএ–৭.৭৫ নির্ধারণ করা হয়েছে। এই ইউনিটে আবেদন করতে আলাদাভাবে মাধ্যমিকে ন্যূনতম ৪ ও উচ্চমাধ্যমিকে জিপিএ–৩.২৫ থাকতে হবে।

কলা ও মানববিদ্যা অনুষদভুক্ত ‘বি’ ইউনিটে আবেদন করতে মানবিক বিভাগের শিক্ষার্থীদের মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিকে চতুর্থ বিষয়সহ মোট জিপিএ–৭ থাকতে হবে। এ ছাড়া বিজ্ঞান ও ব্যবসায় বিভাগের শিক্ষার্থীদের ন্যূনতম জিপিএ লাগবে ৭.৫০।

অন্যদিকে ব্যবসায় প্রশাসন অনুষদভুক্ত ‘সি’ ইউনিটে আবেদনের ন্যূনতম যোগ্যতা থাকতে হবে মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিকে (চতুর্থ বিষয়সহ) মোট জিপিএ–৭.৫০। এখানে বিভাগ রয়েছে ছয়টি।

সব গ্রুপের শিক্ষার্থীরাই ‘ডি’ ইউনিটে পরীক্ষা দিতে পারবেন। এই ইউনিটে আবেদনের যোগ্যতা হিসেবে মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিকে (চতুর্থ বিষয়সহ) মোট জিপিএ–৭ থাকতে হবে।

আবেদনের যোগ্যতা ও আসন কমানোর বিষয়টি নিশ্চিত করে বিশ্ববিদ্যালয়ের কলা ও মানববিদ্যা অনুষদের ডিন অধ্যাপক মো. ইকবাল শাহীন খান বলেন, এবার উচ্চমাধ্যমিক ভর্তি পরীক্ষার ফলাফল খারাপ হওয়ায় আবেদনের যোগ্যতার জিপিএ কমানো হয়েছে। মাধ্যমিকে যোগ্যতা একই রাখা হয়েছে।

বাদ যাচ্ছে পোষ্য কোটা

এবার ভর্তি পরীক্ষায় ৯ ধরনের কোটা রাখা হয়েছে। তবে ‘ওয়ার্ড’ কোটা বাতিল করা হয়েছে। এটি পোষ্য কোটা নামে পরিচিত। বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক, কর্মকর্তা ও কর্মচারীর সন্তানেরা এই কোটা পান।

বহাল থাকা ৯টি কোটা হলো মুক্তিযোদ্ধাদের সন্তান, বিদেশি, ক্ষুদ্র জাতিগোষ্ঠী, অনগ্রসর ক্ষুদ্র জাতিগোষ্ঠী, অ-উপজাতি কোটা যা পার্বত্য চট্টগ্রামে বসবাসরত বাঙালি, শারীরিক প্রতিবন্ধী, বিকেএসপির খেলোয়াড়, পেশাদার খেলোয়াড় ও দলিত জনগোষ্ঠীর শিক্ষার্থী।

জানতে চাইলে বিশ্ববিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত রেজিস্ট্রার অধ্যাপক মোহাম্মদ সাইফুল ইসলাম বলেন, ‘পোষ্য কোটার বিষয়ে শিক্ষার্থীদের চাপ রয়েছে। এ কারণে অস্থিতিশীল পরিবেশ এড়াতে আমরা বাতিলের সিদ্ধান্ত নিয়েছি।’

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: ও ম নবব দ য র পর ক ষ পর ক ষ র উপ চ র য ইউন ট র ন য নতম

এছাড়াও পড়ুন:

ভর্তিতে থাকছে না পোষ্য কোটা, কমেছে স্নাতকের আসন

চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে ২০২৫-২৬ শিক্ষাবর্ষে প্রথম বর্ষ স্নাতক (সম্মান) শ্রেণিতে ভর্তি পরীক্ষায় এবার শিক্ষক, কর্মকর্তা ও কর্মচারীর সন্তানদের পোষ্য কোটা থাকছে না। এ ছাড়া কমেছে স্নাতকের আসন ও ভর্তির আবেদনের যোগ্যতা—জিপিএ। আগামী ১ ডিসেম্বর থেকে এ পরীক্ষার আবেদনপ্রক্রিয়া শুরু হবে। চলবে ১৫ ডিসেম্বর পর্যন্ত।

আজ সোমবার সন্ধ্যায় বিশ্ববিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত রেজিস্ট্রার অধ্যাপক মোহাম্মদ সাইফুল ইসলাম, সমাজবিজ্ঞান অনুষদের ডিন অধ্যাপক এনায়েত উল্যাহ পাটওয়ারী এবং কলা ও মানববিদ্যা অনুষদের ডিন অধ্যাপক মো. ইকবাল শাহীন খান প্রথম আলোকে এসব তথ্য নিশ্চিত করেন।

বিশ্ববিদ্যালয় সূত্র জানায়, গতকাল রোববার সকাল ১০টায় উপাচার্যের দপ্তরের সম্মেলনকক্ষে ভর্তি পরীক্ষা পরিচালনা কমিটির দ্বিতীয় সভা হয়। এ সভায় ভর্তি পরীক্ষার তারিখ পরিবর্তন, আবেদনের যোগ্যতা ও আসন কমানোর বিষয়ে সিদ্ধান্ত হয়। পাশাপাশি পোষ্য কোটা বাতিলেরও সিদ্ধান্ত হয়। বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক মুহাম্মদ ইয়াহ্ইয়া আখতার এ সভায় সভাপতিত্ব করেন। এতে সহ-উপাচার্য (শিক্ষা) অধ্যাপক মোহাম্মদ শামীম উদ্দিন খান, সহ-উপাচার্য (প্রশাসন) অধ্যাপক মো. কামাল উদ্দিন, রেজিস্ট্রার (ভারপ্রাপ্ত) অধ্যাপক মোহাম্মদ সাইফুল ইসলাম, বিভিন্ন অনুষদের ডিন এবং ভর্তি কার্যক্রম সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।

এর আগে গত ১২ অক্টোবর ভর্তি পরীক্ষা পরিচালনা কমিটির প্রথম সভার পর পরীক্ষার সম্ভাব্য সূচি ঘোষণা করেছিল কর্তৃপক্ষ। তবে দ্বিতীয় সভায় এ সিদ্ধান্ত পরিবর্তন করা হয়। নতুন সিদ্ধান্তে আগামী ২ জানুয়ারি বিজ্ঞান, জীববিজ্ঞান, মেরিন সায়েন্সেস অ্যান্ড ফিশারিজ ও প্রকৌশল অনুষদভুক্ত ‘এ’ ইউনিটের মধ্য দিয়ে ভর্তি শুরু হবে। এ ছাড়া সমাজবিজ্ঞান ও আইন অনুষদভুক্ত ‘ডি’ ইউনিটের পরীক্ষা হবে ৩ জানুয়ারি, ব্যবসায় প্রশাসন অনুষদভুক্ত ‘সি’ ইউনিটের পরীক্ষা হবে ৯ জানুয়ারি আর কলা ও মানববিদ্যা অনুষদভুক্ত ‘বি’ ইউনিটের পরীক্ষা হবে ১০ জানুয়ারি। অন্যদিকে শারীরিক শিক্ষা ও ক্রীড়াবিজ্ঞান বিভাগ ভুক্ত ‘ডি-১ উপ–ইউনিটের’ পরীক্ষা হবে ৫ জানুয়ারি, ‘বি-১ উপ–ইউনিটের’ পরীক্ষা হবে ৭ জানুয়ারি এবং ‘বি-২ উপ–ইউনিটের’ পরীক্ষা হবে ৮ জানুয়ারি।

আবেদনের যোগ্যতা ও আসন কমছে

এবারের ভর্তি পরীক্ষায় আবেদনের যোগ্যতার জিপিএ গত বছরের তুলনায় সব ইউনিটে শূন্য দশমিক ৫ কমছে। ‘এ’ ইউনিটে এবার আবেদনের ন্যূনতম যোগ্যতা মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিক (চতুর্থ বিষয়সহ) মিলিয়ে মোট জিপিএ–৭.৭৫ নির্ধারণ করা হয়েছে। এই ইউনিটে আবেদন করতে আলাদাভাবে মাধ্যমিকে ন্যূনতম ৪ ও উচ্চমাধ্যমিকে জিপিএ–৩.২৫ থাকতে হবে।

কলা ও মানববিদ্যা অনুষদভুক্ত ‘বি’ ইউনিটে আবেদন করতে মানবিক বিভাগের শিক্ষার্থীদের মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিকে চতুর্থ বিষয়সহ মোট জিপিএ–৭ থাকতে হবে। এ ছাড়া বিজ্ঞান ও ব্যবসায় বিভাগের শিক্ষার্থীদের ন্যূনতম জিপিএ লাগবে ৭.৫০।

অন্যদিকে ব্যবসায় প্রশাসন অনুষদভুক্ত ‘সি’ ইউনিটে আবেদনের ন্যূনতম যোগ্যতা থাকতে হবে মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিকে (চতুর্থ বিষয়সহ) মোট জিপিএ–৭.৫০। এখানে বিভাগ রয়েছে ছয়টি।

সব গ্রুপের শিক্ষার্থীরাই ‘ডি’ ইউনিটে পরীক্ষা দিতে পারবেন। এই ইউনিটে আবেদনের যোগ্যতা হিসেবে মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিকে (চতুর্থ বিষয়সহ) মোট জিপিএ–৭ থাকতে হবে।

আবেদনের যোগ্যতা ও আসন কমানোর বিষয়টি নিশ্চিত করে বিশ্ববিদ্যালয়ের কলা ও মানববিদ্যা অনুষদের ডিন অধ্যাপক মো. ইকবাল শাহীন খান বলেন, এবার উচ্চমাধ্যমিক ভর্তি পরীক্ষার ফলাফল খারাপ হওয়ায় আবেদনের যোগ্যতার জিপিএ কমানো হয়েছে। মাধ্যমিকে যোগ্যতা একই রাখা হয়েছে।

বাদ যাচ্ছে পোষ্য কোটা

এবার ভর্তি পরীক্ষায় ৯ ধরনের কোটা রাখা হয়েছে। তবে ‘ওয়ার্ড’ কোটা বাতিল করা হয়েছে। এটি পোষ্য কোটা নামে পরিচিত। বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক, কর্মকর্তা ও কর্মচারীর সন্তানেরা এই কোটা পান।

বহাল থাকা ৯টি কোটা হলো মুক্তিযোদ্ধাদের সন্তান, বিদেশি, ক্ষুদ্র জাতিগোষ্ঠী, অনগ্রসর ক্ষুদ্র জাতিগোষ্ঠী, অ-উপজাতি কোটা যা পার্বত্য চট্টগ্রামে বসবাসরত বাঙালি, শারীরিক প্রতিবন্ধী, বিকেএসপির খেলোয়াড়, পেশাদার খেলোয়াড় ও দলিত জনগোষ্ঠীর শিক্ষার্থী।

জানতে চাইলে বিশ্ববিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত রেজিস্ট্রার অধ্যাপক মোহাম্মদ সাইফুল ইসলাম বলেন, ‘পোষ্য কোটার বিষয়ে শিক্ষার্থীদের চাপ রয়েছে। এ কারণে অস্থিতিশীল পরিবেশ এড়াতে আমরা বাতিলের সিদ্ধান্ত নিয়েছি।’

সম্পর্কিত নিবন্ধ