কোরআন পোড়ানোর প্রতিবাদে রাবিতে বিক্ষোভ
Published: 12th, January 2025 GMT
রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের (রাবি) আবাসিক হলগুলোতে পবিত্র কোরআন পোড়ানোর প্রতিবাদে মানববন্ধন ও বিক্ষোভ মিছিল করেছেন সাধারণ শিক্ষার্থীরা।
রবিবার (১২ জানুয়ারি) বেলা ৩টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্যারিস রোডে মানববন্ধন করেন তারা। এরপর সেখান থেকে বিক্ষোভ মিছিল নিয়ে ক্যাম্পাসের বিভিন্ন সড়ক প্রদক্ষিণ করেন তারা।
এ সময় ‘আল কুরআনের অপমান, সইবে না-রে মুসলমান’, ‘নারায়ে তাকবির আল্লাহু আকবার’, ‘দ্বীন ইসলাম দ্বীন ইসলাম জিন্দাবাদ জিন্দাবাদ’, ‘দিয়েছিতো রক্ত, আরও দিব রক্ত’, ‘আল কোরআনের আলো, ঘরে ঘরে জ্বালো’ ইত্যাদি স্লোগান দেন শিক্ষার্থীরা।
এর আগে, শনিবার (১১ জানুয়ারি) দিবাগত রাতে শহীদ জিয়াউর রহমান হল, সৈয়দ আমীর আলী হল, মাদার বখশ হল, শাহ মাখদুম হল, শেরে বাংলা হল, শহীদ হবিবুর রহমান হল ও মতিহার হলে পবিত্র কোরআন পোড়ানোর ঘটনা ঘটেছে। এছাড়া জিয়াউর রহমান হলের দেওয়ালে বিজেপির লোগো আঁকানো হয়েছে।
এ ঘটনা তদন্তে নয় সদস্যবিশিষ্ট তদন্ত কমিটি ঘোষণা করেছে রাবি প্রশাসন। রবিবার দুপুর ১২টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের সিনেট ভবনে এক জরুরি সভায় এই কমিটি ঘোষণা করা হয়।
মানববন্ধনে রাবি ছাত্রশিবিরের সভাপতি মুস্তাকুর রহমান জাহিদ বলেন, “আমরা এখানে একত্রিত হয়েছি এ ঘৃণ্য ঘটনার প্রতিবাদ জানাতে। আমরা শুনেছি এর আগেও সেন্ট্রাল মসজিদেও একই ঘটনা ঘটেছে। কোরআন পুড়িয়ে যারা সাম্প্রদায়িক দাঙ্গা সৃষ্টি করতে চায়, তারা ফ্যাসিস্ট শক্তির সহযোগী। এ দেশের সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতিকে ভাঙার জন্য তাদের সব ষড়যন্ত্র ব্যর্থ করতে আমরা দৃঢ়প্রতিজ্ঞ। আমরা স্পষ্ট জানিয়ে দিতে চাই, তাদের এ ষড়যন্ত্র কখনোই এখানে সফল হতে দেব না।”
বিশ্ববিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত রেজিস্ট্রার ইফতেখারুল আলম মাসউদ বলেন, “কোন প্রকৃত ধর্মপ্রাণ ব্যক্তি এমন ঘৃণ্য কাজ করতে পারে না। এ দেশে যত সাম্প্রদায়িক দাঙ্গার ঘটনা ঘটেছে, তার সবই ফ্যাসিস্ট সরকারের সহযোগীদের কৃতকর্ম। আমাদের সবার কর্তব্য হলো, এ ফ্যাসিস্ট শক্তি যেন কোনভাবেই মাথা তুলে দাঁড়াতে না পারে, সে বিষয়ে সর্বদা সজাগ থাকা। সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি বজায় রাখতে আমরা সবাই ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করব।”
জনসংযোগ দপ্তরের প্রশাসক অধ্যাপক আখতার হোসেন মজুমদার বলেন, “যে ঘটনা ঘটানো হয়েছে, তা পরিকল্পিত। এখনো ষড়যন্ত্র চলছে, আগামিতেও তারা ষড়যন্ত্র চালানোর চেষ্টা করবে। তাই আমাদের সবাইকে সজাগ থাকতে হবে।”
তিনি বলেন, “তদন্ত কমিটি গঠন সহ আইন শৃঙ্খলা বাহিনির সঙ্গে কথা বলা হয়েছে, আগামি তিনদিনের ভেতর প্রাথমিক রিপোর্ট এবং সাতদিনের ভিতরে পূর্ণ তদন্তের রিপোর্ট জমা দিতে বলা হয়েছে।”
আন্দোলনে একাত্মতা পোষণ করে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্র ইউনিয়ন, ছাত্র মিশন, ছাত্রদল, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনসহ বিভিন্ন সংগঠন।
ঢাকা/ফাহিম/মেহেদী
.উৎস: Risingbd
এছাড়াও পড়ুন:
নেত্রকোনায় বাবরকে নিয়ে নাসীরুদ্দীন পাটওয়ারীর মন্তব্যের প্রতিবাদে মানববন্ধন
নেত্রকোনায় জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) জুলাই পদযাত্রা অনুষ্ঠানে দলটির মুখ্য সমন্বয়ক নাসীরুদ্দীন পাটওয়ারী সাবেক স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী লুৎফুজ্জামান বাবরকে জড়িয়ে ১০ ট্রাক অস্ত্রের চালান নিয়ে বিরূপ মন্তব্য করার প্রতিবাদে মানববন্ধন, বিক্ষোভ মিছিল ও প্রতিবাদ সমাবেশ করা হয়েছে। আজ মঙ্গলবার দুপুরে নেত্রকোনা শহরের বড়বাজার এলাকায় ‘সচেতন আলেম ও ছাত্র–জনতা’র ব্যানারে এ কর্মসূচি হয়।
খেলাফত আন্দোলনের কেন্দ্রীয় সহকারী মহাসচিব গাজী মুহাম্মাদ আবদুর রহিমের সভাপতিত্বে দুপুর ১২টার দিকে শুরু হওয়া ঘণ্টাব্যপী মানববন্ধনে বক্তব্য দেন জেলা বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক এস এম মনিরুজ্জামান, জেলা যুবদলের সাবেক সহসভাপতি আবদুল্লাহ আল মামুন খান, হেফাজতে ইসলামের সদস্যসচিব মাওলানা মাজহারুল ইসলাম, জমিয়তে উলামায়ে ইসলামের নেতা মাওলানা আতাউর রহমান, ওলামা দলের নেতা হাফেজ মিসবাহুদ্দিন তালুকদার, খেলাফত যুব আন্দোলনের সভাপতি মুফতি মুসা শেখ, খেলাফত মজলিসের নেতা মুফতি মো. আব্দুল্লাহ, পৌর বিএনপির ভারপ্রাপ্ত সভাপতি মেহরুল আলম, খেলাফত আন্দোলনের নেতা মাওলানা জাকির হোসেন, ছাত্রনেতা মাওলানা বীন ইয়ামিন, মাওলানা আবরার ফাহাদ, মাওলানা মোতালিব খান, হাফেজ সাইফুল্লাহ প্রমুখ।
আরও পড়ুনযদি অস্ত্র হ্যান্ডলই করতে না পারেন, নিয়ে আসছিলেন কেন: নেত্রকোনায় নাসীরুদ্দীন পাটওয়ারী২৭ জুলাই ২০২৫মানববন্ধনে বক্তারা বলেন, লুৎফুজ্জামান বাবর নেত্রকোনা–৪ (মদন–মোহনগঞ্জ–খালিয়াজুরি) আসন থেকে তিনবার সংসদ সদস্য নির্বাচিত হয়েছেন। তিনি বিএনপি সরকারের আমলে সফল স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী ছিলেন। ওই সময় তিনি দলমত–নির্বিশেষে নির্বাচনী এলাকা ছাড়াও জেলার বহু বেকার তরুণ–তরুণীদের চাকরি দেওয়াসহ কর্মসংস্থানের সুযোগ করে দেন। তাঁকে নিয়ে বিরূপ মন্তব্য করায় নেত্রকোনার জনগণ মর্মাহত হয়েছেন। এনসিপি নেতা নাসীরুদ্দীন পাটওয়ারীকে তাঁর এই ঔদ্ধত্যপূর্ণ বক্তব্য প্রত্যাহার করে নিঃশর্তভাবে ক্ষমা চাইতে হবে। অন্যথায় কঠোর আন্দোলনের হুঁশিয়ারি দেন বক্তারা।
গত রোববার দুপুরে নেত্রকোনা শহরের মোক্তারপাড়া এলাকায় পুরাতন কালেক্টরেট মাঠে ‘দেশ গড়তে জুলাই পদযাত্রা কর্মসূচি’র অংশ হিসেবে পথসভা করা হয়। অনুষ্ঠানে নাসীরুদ্দীন পাটওয়ারী তাঁর বক্তব্যে বলেন, ‘বাংলাদেশে অসংখ্য হত্যাকাণ্ড ঘটেছে, অসংখ্য ঘটনা ঘটেছে। এর মধ্যে বড় একটি ঘটনা হলো, ১০ ট্রাক অস্ত্রের চালান। যদি অস্ত্র হ্যান্ডলই করতে না পারেন, তবে নিয়ে আসছিলেন কেন আপনি? আমাদের দক্ষিণ এশিয়ায় এই অস্ত্রকাহিনির কারণে বাংলাদেশের সার্বভৌমত্ব হুমকির মধ্যে পড়েছে। অসংখ্য মানুষের জীবন বিপন্ন হয়েছে।’
নাসীরুদ্দীন পাটওয়ারী আরও বলেন, ‘আমি বাবর ভাইকে (সাবেক স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী লুৎফুজ্জামান বাবর) সম্মান করি, তিনি কারা নির্যাতিত নেতা। কিন্তু আপনার ওই কাজ আমি সমর্থন করি না, করি না, করি না। আপনার এই কাজের কারণে বিএনপি ক্ষমতায় আসতে পারেনি। হাসিনার মতো একজন খুনি ও ফ্যাসিস্ট ক্ষমতায় এসেছিলেন।’ এ নিয়ে ২৭ জুলাই প্রথম আলোর অনলাইনে ‘যদি অস্ত্র হ্যান্ডলই করতে না পারেন, নিয়ে আসছিলেন কেন’ শিরোনামে একটি প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়।