ট্রাম্পের অভিষেক অনুষ্ঠানে প্রযুক্তি দুনিয়ার কারা অংশ নেবেন
Published: 13th, January 2025 GMT
নবনির্বাচিত মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ২০ জানুয়ারি ওয়াশিংটনে মার্কিন প্রেসিডেন্ট হিসেবে শপথ নেবেন। ট্রাম্পের অভিষেক অনুষ্ঠানে যোগ দেবেন বিদায়ী মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনসহ বিভিন্ন দেশের রাষ্ট্রপ্রধান ও গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিরা। অনুষ্ঠানে প্রযুক্তি দুনিয়ার অনেক তারকাও অংশ নেবেন বলে জানা গেছে।
অভিষেক অনুষ্ঠানে মেটার প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) মার্ক জাকারবার্গ, ওপেনএআইয়ের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা স্যাম অল্টম্যান, উবারের প্রধান নির্বাহী দারা খোসরোশাহীসহ বিভিন্ন প্রযুক্তিপ্রতিষ্ঠানের শীর্ষ কর্মকর্তারা অংশ নেবেন বলে আশা করা হচ্ছে। এরই মধ্যে মেটা ও অ্যামাজন উভয় প্রতিষ্ঠানই অভিষেক অনুষ্ঠানের বিশেষ তহবিলে ১০ লাখ মার্কিন ডলার অনুদান দিয়েছে। অন্যদিকে ওপেনএআইয়ের প্রধান স্যাম অল্টম্যান ব্যক্তিগতভাবে ১০ লাখ মার্কিন ডলার দিয়েছেন।
গত ৫ নভেম্বর অনুষ্ঠিত মার্কিন প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে জয়ী হন রিপাবলিকান পার্টির প্রার্থী ট্রাম্প। এরপর গত কয়েক মাসে বেশ কয়েকজন প্রযুক্তি উদ্যোক্তা ডোনাল্ড ট্রাম্পের সঙ্গে দেখা করেছেন। ট্রাম্প দায়িত্ব নেওয়ার আগে মার্ক জাকারবার্গ দুবার ট্রাম্পের সঙ্গে দেখা করেছেন। এরই মধ্যে ট্রাম্পের কারণে ফেসবুকের বেশ কিছু নীতিরও পরিবর্তন করেছে মেটা। গুগলের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা সুন্দর পিচাই, অ্যাপলের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা টিম কুক এবং অ্যামাজনের প্রতিষ্ঠাতা জেফ বেজোসও ট্রাম্পের সঙ্গে দেখা করেছেন। মূলত দ্বিতীয়বার প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হওয়ার পর ট্রাম্পের সঙ্গে দূরত্ব কাটানোর চেষ্টা করছেন প্রযুক্তি উদ্যোক্তারা।
আরও পড়ুনযুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে প্রযুক্তি উদ্যোক্তারা কে কার পক্ষে ছিলেন০৬ নভেম্বর ২০২৪ট্রাম্পের অভিষেক অনুষ্ঠানে ওপেনএআইয়ের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা স্যাম অল্টম্যানের যোগ দেওয়ার সম্ভাবনা নিয়ে প্রযুক্তি বিশ্বে বেশ জল্পনা-কল্পনা শুরু হয়েছে। এর কারণ, ট্রাম্পের ঘনিষ্ঠ হিসেবে পরিচিত টেসলা, স্পেসএক্স ও নিউরালিংকের প্রতিষ্ঠাতা ইলন মাস্কের সঙ্গে স্যাম অল্টম্যানের শক্রতা। স্যাম অল্টম্যানের নেতৃত্বাধীন ওপেনএআইয়ের বিরুদ্ধে মামলাও করেছেন ইলন মাস্ক। আর তাই স্যাম অল্টম্যানও চেষ্টা করছেন ডোনাল্ড ট্রাম্পের দলে ভিড়তে। প্রযুক্তি দুনিয়ার অন্যান্য ব্যক্তিদের মধ্যে ওপেনএআইয়ের প্রেসিডেন্ট গ্রেগ ব্রকম্যান ও প্রধান পণ্য কর্মকর্তা কেভিন ওয়েইল ট্রাম্পের অভিষেক অনুষ্ঠানে অংশ নিতে পারেন।
আরও পড়ুনডোনাল্ড ট্রাম্পের সঙ্গে প্রযুক্তি উদ্যোক্তারা কেন নৈশভোজ করছেন১৮ ডিসেম্বর ২০২৪গুগলের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা সুন্দর পিচাই, অ্যাপলের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা টিম কুক এবং অ্যামাজনের প্রতিষ্ঠাতা জেফ বেজোসের মতো প্রযুক্তি দুনিয়ার অন্য তারকারা মার্কিন প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে জয়ের পর ট্রাম্পের সঙ্গে দেখা করলেও অভিষেক অনুষ্ঠানে অংশ নেবেন কি না, তা এখনো জানা যায়নি।
সূত্র: টাইমস অব ইন্ডিয়া
উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
দ্বিজাতিতত্ত্বের কবর দিয়েই বাংলাদেশের জন্ম, এখানে সাম্প্রদায়িকতার জায়গা নেই: জেড আই খান পান্না
মোহাম্মদ আলী জিন্নাহর দ্বিজাতিতত্ত্বের কবর দিয়েই বাংলাদেশের জন্ম হয়েছে মন্তব্য করে সুপ্রিম কোর্টের জ্যেষ্ঠ আইনজীবী জেড আই খান পান্না বলেছেন, এই দেশে সাম্প্রদায়িকতার কোনো স্থান নেই।
আজ শুক্রবার সুপ্রিম কোর্ট বারের হলরুমে ‘বাংলাদেশে মানবাধিকার সংকট ও আইনি প্রতিকার পাওয়ার পথ’ শীর্ষক এক সেমিনারে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন জেড আই খান পান্না। সেমিনারটির আয়োজন করে আন্তর্জাতিক সংস্থা হিউম্যান রাইটস কংগ্রেস ফর বাংলাদেশ মাইনোরিটিস (এইচআরসিবিএম), বাংলাদেশ চ্যাপ্টার।
বক্তব্যে জেড আই খান পান্না বলেন, ‘এখানে সংখ্যালঘুর কথা বলা হচ্ছে। একজন মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে এখন আমি সবচেয়ে বেশি সংখ্যালঘু। আজ মুক্তিযোদ্ধার গলায় জুতার মালা দেখি, জুতা দিয়ে বাড়ি দিতে দেখি, কিন্তু কিছু করতে পারি না। তাই আমি সবচেয়ে বড় অসহায়।’
এসব কথা বলতে বলতে সুপ্রিম কোর্টের জ্যেষ্ঠ আইনজীবী জেড আই খান পান্না কেঁদে ফেলেন। কান্নাজড়িত কণ্ঠে তিনি বলেন, জীবনে কখনো জেনে-বুঝে অন্যায়ের সঙ্গে আপস করেননি। যাঁরা মুক্তিযুদ্ধকে ধারণ করেন, তাঁদের অন্যায়ের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়ানোর আহ্বান জানান তিনি।
জেড আই খান পান্না আরও বলেন, ৩০ লাখ শহীদ আর ২ লাখ মা-বোনের ইজ্জতের বিনিময়ে বাংলাদেশ স্বাধীন হয়েছে, কারও সঙ্গে এর তুলনা চলে না। এটা সাম্প্রদায়িকতার দেশ না। সংবিধানে যেন কেউ হাত না দেয়। সরকারের অনেকেই বিদেশি হয়েও স্বদেশি ভাব দেখাচ্ছেন।
সেমিনারে বিশেষ অতিথির বক্তব্যে সুপ্রিম কোর্টের জ্যেষ্ঠ আইনজীবী সুব্রত চৌধুরী বলেন, বাংলাদেশে সংখ্যালঘুদের মৌলিক অধিকার ও মানবাধিকার যেন নিঃশেষ হয়ে গেছে। সমাজে ন্যায়বিচার বা সুবিচার পাওয়ার কথা থাকলেও তা মিলছে না। সংখ্যালঘুদের ওপর হামলার বিচার হয় না। কেউ কেউ ধরা পড়লেও পরে বেরিয়ে যায়।
সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী সুমন কুমার রায় বলেন, সব সরকারের আমলেই বাংলাদেশের সংখ্যালঘুরা নির্যাতিত। বর্তমান নিরপেক্ষ অন্তর্বর্তী সরকারের আমলেও সবচেয়ে বেশি উপেক্ষিত সংখ্যালঘু জনগোষ্ঠী। সংস্কার কমিশনে সংখ্যালঘুদের কোনো প্রতিনিধিত্ব নেই। রংপুরসহ বিভিন্ন এলাকায় হামলা হলেও সরকারের কোনো প্রতিক্রিয়া আসে না, এমনকি দুঃখও প্রকাশ করে না।
গত বছরের ৫ আগস্টের পর সংখ্যালঘুদের ওপর নির্যাতনের প্রেক্ষিতে প্রতিবাদ শুরু হলে তা দমন করতেই ষড়যন্ত্র শুরু হয়েছে উল্লেখ করে সুমন কুমার দাবি করেন, বাংলাদেশ সম্মিলিত সনাতনী জাগরণ জোটের মুখপাত্র চিন্ময় কৃষ্ণ দাস ব্রহ্মচারীকে মিথ্যা মামলায় গ্রেপ্তার করা হয়েছে। সনাতনী সম্প্রদায়ের বাক্স্বাধীনতা বন্ধ করতে, নেতৃত্ব দমন করতে এসব করা হচ্ছে।
সেমিনারে সভাপতিত্ব করেন সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী জে কে পাল। সঞ্চালনায় ছিলেন এইচআরসিবিএমের বাংলাদেশ চ্যাপটারের আহ্বায়ক লাকি বাছাড়। সেমিনারে আরও বক্তব্য দেন সুপ্রিম কোর্টের জ্যেষ্ঠ আইনজীবী মনজিল মোরশেদ ও মো. গোলাম মোস্তফা।