শেরপুরে জনবহুল এলাকায় ইটভাটা বন্ধের দাবি এলাকাবাসীর
Published: 14th, January 2025 GMT
শেরপুর সদর উপজেলার বাজিতখিলা ইউনিয়নের প্রতাবিয়া গ্রামে ‘এএমবি’ নামে ইটভাটা বন্ধের দাবি জানিয়েছেন স্থানীয়রা। ভাটাটির অবস্থান জনবহুল এলাকায়।
স্থানীয়রা জানান, ২০২১ সালে ইটভাটার মালিক মানিক মিয়া জনবসতিপূর্ণ এলাকায় স্থানীয়দের প্রবল বাধার মুখে ইটভাটা স্থাপন করেন। স্থানীয়দের আবেদনের প্রেক্ষিতে পরিবেশগত অবস্থান বিবেচনা করে তৎকালীন পরিবেশ অধিদপ্তরের সহকারী পরিচালক মো.
এ বিষয়ে এলাকাবাসী বিক্ষোভ ও মানববন্ধন করেছেন। ইটভাটা স্থায়ীভাবে বন্ধের দাবিতে জেলা প্রশাসক ও পরিবেশ অধিদপ্তরের কার্যালয়ে আবেদন করেছেন।
আরো পড়ুন:
সাতক্ষীরায় ৩ ইটভাটায় সাড়ে ৭ লাখ টাকা জরিমানা
ম্যাজিস্ট্রেটের পথ আটকে ইটভাটা ভাঙার দাবি
স্থানীয় শাকিল আহমেদ শিমুল বলেন, এ ইটভাটার ধোয়ায় পরিবেশ দূষিত হচ্ছে। আশপাশে প্রাথমিক বিদ্যালয়, মাদ্রাসা ও বসতঘরের ক্ষতি হচ্ছে। মানুষজন বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত হচ্ছে। ভাটার ট্রলির কারণে অভ্যন্তরীণ সড়কগুলো নষ্ট হয়ে যাচ্ছে।
স্থানীয় জামান মিয়া, হাবিবুর রহমান হাবিব, এনামুল হকসহ অর্ধশতাধিক এলাকাবাসী জানান, ভাটার মালিক আগে আওয়ামী লীগের রাজনীতির প্রভাব দেখিয়েছেন। এখন বিএনপির নেতাদের প্রভাব বিস্তারের চেষ্টা করছেন কিন্তু কেউ এলাকার চিন্তা করছেন না।
এ বিষয়ে ভাটার মালিক মানিক মিয়া বলেন, ‘‘সবাই যেভাবে ভাটা পরিচালনা করে আমিও সেভাবে করছি। আমি দুইজন নেতাকে ৫০ শতাংশ মালিকানা দিয়ে নতুন করে অংশী মালিকানার মাধ্যমে ইটভাটা পরিচালনার কথা ভাবছি। স্থানীয়রা হিংসা করে ভাটায় ইট পোড়াতে বাধা দিচ্ছে।’’
শেরপুর জেলা পরিবেশ অধিদপ্তরের সহকারী পরিচালক মো. নূর কুতুবে আলম সিদ্দিক জানান, এএমবি ইটভাটা সম্পর্কে তিনি কিছু জানেন না। এ বিষয়ে খোঁজ খবর নিয়ে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
ঢাকা/তারিকুল/বকুল
উৎস: Risingbd
এছাড়াও পড়ুন:
২ হাজার কোটি টাকা আত্মসাতের অভিযোগে মামলা হচ্ছে সালমান এফ রহমানের বিরুদ্ধে
জালিয়াতির মাধ্যমে এলসির বিপরীতে প্রায় দুই হাজার কোটি টাকা আত্মসাৎ ও পাচারের অভিযোগে পাঁচটি মামলা করতে যাচ্ছে দুর্নীতি দমন কমিশন, তাতে বেক্সিমকো গ্রুপের ভাইস চেয়ারম্যান সালমান এফ রহমানও আসামি হতে যাচ্ছেন।
আজ সোমবার দুদকের প্রধান কার্যালয় মামলাগুলোর অনুমোদন দেয়। সাবেক প্রধানমন্ত্রীর বেসরকারি, শিল্প ও বিনিয়োগবিষয়ক উপদেষ্টা সালমান রহমানের পাশাপাশি তাঁর ছেলে, ভাই, ভাতিজা, জনতা ব্যাংকের কর্মকর্তাসহ ৩৪ জনের বিরুদ্ধে এই মামলাগুলো হবে।
রাজধানীর সেগুনবাগিচায় দুদকের প্রধান কার্যালয়ে সংস্থাটির মহাপরিচালক মো. আক্তার হোসেন সাংবাদিকদের বলেন, অনুমোদিত পাঁচ মামলায় ৩৪ জন আসামির বিরুদ্ধে মোট ২১ কোটি ৫৫ লাখ ২৮ হাজার ৮০১ মার্কিন ডলার বা প্রায় ১ হাজার ৯৩৯ কোটি ৭৫ লাখ ৯২ হাজার টাকা আত্মসাৎ ও মানি লন্ডারিংয়ের অভিযোগ আনা হয়েছে।
মামলায় সালমান এফ রহমান ছাড়া আসামিদের মধ্যে রয়েছেন তাঁর ছেলে শায়ান এফ রহমান, ভাই বেক্সিমকো গ্রুপের চেয়ারম্যান সোহেল এফ রহমান, সোহেল রহমানের ছেলে আহমেদ শাহরিয়ার রহমান, বেক্সিমকো গ্রুপের পরিচালক ইকবাল আহমেদ, ব্যবস্থাপনা পরিচালক ওসমান কায়সার চৌধুরী, পরিচালক এ বি সিদ্দিকুর রহমান, মাসুদ ইকরামুল্লাহ খান, শাহ মঞ্জুরুল হক ও রীম এইচ শামসুদ্দোহা।
এ ছাড়া স্কাইনেট অ্যাপারেলস লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক আনোয়ারুল বাশার ও পরিচালক নাসরিন আহমেদ, ক্রিসেন্ট অ্যাকসেসরিজের এমডি আবু নাঈম মাহমুদ সালেহিন ও পরিচালক মো. মোস্তাফিজুর রহমান তানভীর, প্লাটিনাম গার্মেন্টস লিমিটেডের এমডি মোহাম্মদ আলিফ ইবনে জুলফিকার ও পরিচালক নুসরাত হায়দার, পিয়ারলেস গার্মেন্টস লিমিটেডের এমডি ওয়াসীউর রহমান ও পরিচালক রিজিয়া আক্তার, নিউ ঢাকা ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেডের এমডি সালাউদ্দিন খান মজলিস ও পরিচালক আবদুর রউফ, কাঁচপুর অ্যাপারেলস লিমিটেডের এমডি মাহফুজুর রহমান খান ও পরিচালক সৈয়দ তানবির এলাহী আফেন্দী সম্ভাব্য আসামির তালিকায় রয়েছেন।
জনতা ব্যাংকের মধ্য থেকে আসামি করা হচ্ছে ব্যাংকটির সাবেক ব্যবস্থাপনা পরিচালক আবদুছ ছালাম আজাদ ও আবদুল জব্বার, সাবেক মহাব্যবস্থাপক মিজানুর রহমান, অবসরপ্রাপ্ত উপমহাব্যবস্থাপক আবদুর রহিম, সাবেক মহাব্যবস্থাপক শহিদুল হক, অবসরপ্রাপ্ত ডিজিএম (রপ্তানি বিভাগ) মমতাজুল ইসলাম, সিনিয়র অফিসার রফিকুল ইসলাম, ব্যবস্থাপক সালেহ আহম্মেদ, অবসরপ্রাপ্ত এজিএম মোয়াজ্জেম হোসেন, সাবেক এজিএম (রপ্তানি) মোহাম্মদ শাজাহান, সাবেক এজিএম (রপ্তানি) হুমায়ুন কবির ঢালী ও প্রিন্সিপাল অফিসার শ ম মাহাতাব হোসাইন বাদশাকে।
দুদকের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, আসামিদের যোগসাজশে জনতা ব্যাংকের লোকাল অফিস থেকে বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের নামে বিপুল পরিমাণ অর্থ আত্মসাৎ ও বিদেশে পাচার করা হয়। এর মধ্যে পিয়ারলেস গার্মেন্টস লিমিটেডের নামে ৫ কোটি ২ লাখ ৫০ হাজার ৭৭২ দশমিক ২৫ ডলার, প্লাটিনাম গার্মেন্টস লিমিটেডের নামে ১ কোটি ৮৮ লাখ ৩ হাজার ৬৫৮ দশমিক ৯১ ডলার, কাঁচপুর অ্যাপারেলস লিমিটেডের নামে ৮ কোটি ৪০ লাখ ২৯ হাজার ৫৪৭ দশমিক ৪৫ ডলার, স্কাইনেট অ্যাপারেলস লিমিটেডের নামে ১ কোটি ৪৭ লাখ ২৯ হাজার ৩৪০ ডলার এবং ঢাকা ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেডের নামে ৪ কোটি ৭৭ লাখ ১৫ হাজার ৪৮২ দশমিক ৪৬ ডলার আত্মসাৎ হয়।
সব মিলিয়ে আত্মসাৎ করা অর্থের পরিমাণ দাঁড়ায় প্রায় ২১ কোটি ৫৫ লাখ ডলার, যা বাংলাদেশি মুদ্রায় প্রায় দুই হাজার কোটি টাকা।
সাবেক সংসদ সদস্য সালমান এফ রহমান গত বছর জুলাই অভ্যুত্থানে আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের কয়েক দিনের মধ্যে গ্রেপ্তার হয়ে এখন কারাগারে রয়েছেন। এরপর তাঁর বিরুদ্ধে বিভিন্ন অভিযোগে বেশ কয়েকটি মামলা হয়।