এক দশকের বেশি থিয়েটারের সঙ্গে যুক্ত ছিলেন। পারিবারিক দিক থেকে যোগসূত্র আরও আগের। মায়ের অনুপ্রেরণা ও পরিবারের সহযোগিতায় তিনি আজ এত দূরে। বারবার হোঁচট খাওয়ার পর থেমে থাকেননি। নিজেকে গড়তে চেষ্টা চালিয়ে গেছেন। সেই চেষ্টা এখনও চলমান। বলছি, তরুণ প্রজন্মের অভিনেতা আরশ খানের কথা। এখন টিভি কিংবা ডিজিটাল প্ল্যাটফর্মের অতি চেনা মুখ তিনি। হয়ে উঠেছেন জনপ্রিয় থেকে জনপ্রিয়তর। 

টেলিভিশন ও ইউটিউব নাটকে তাঁর সরব উপস্থিতি। কয়েক বছরের অভিনয়ের ক্যারিয়ারে তাঁর নাটকগুলোর প্রতি দর্শকের যেমন আগ্রহ তৈরি হচ্ছে, ঠিক তেমনি নির্মাতারাও হয়ে উঠছেন আরশকেন্দ্রিক।

গেল দেড় মাসে মুক্তি পেয়েছে আরশের প্রায় দুই ডজন নাটক। ভিউর দিক থেকে প্রায় সবগুলোই ১ মিলিয়নের ওপরে। এর মধ্যে রয়েছে ‘চ্যালেঞ্জ’, ‘আহত ভালোবাসার ঘ্রাণ’, ‘বিয়েশাদি’, ‘হৃদয় জুড়ে তুই’, ‘প্রেম তবু হারে না’, ‘তুমি পাশে থাকলে’, ‘সুখের ঠিকানা’, ‘ফার্স্ট নাইট’, ‘বেলা শেষে’, ‘পড়তে আমার ভাল্লাগেনা’, ‘জলের গান’, ‘যদি তোর না হই’ ও ‘শেষ থেকে শুরু’ নাটক। এ ছাড়া গেল বৃহস্পতিবার মুক্তি পেয়েছে তাঁর অভিনীত দুটি নাটক ‘বিন্দাস’ ও ‘তোমারি জন্য’।

এরই মধ্যে বেশকিছু নাটকের শুটিংও শেষ করেছেন। এ ছাড়া আসছে ভালোবাসা দিবস উপলক্ষে কয়েকটি নাটকের কাজ করছেন তিনি। এই অভিনেতার মতে, অভিনয়ের প্রতি আমার ভালোবাসাটা তো আছে। এখন আমি গল্প, চরিত্র কিছুটা বুঝি। যখন ছাড় দিয়ে কাজ করেছি, তখন শুধু টিকে থাকার চেষ্টা করেছি। অপেক্ষা করেছি ভালো দিনের। 

আরশের সেই স্ট্রাগল এখনও চলছে। এর মধ্যে প্রাপ্তি, তাঁর ভক্ত তৈরি হয়েছে। ভক্তরা তাঁর কাজ দেখতে চান। মাঝে কমেডি গল্পে বেশি কাজ করলেও গেল বছর পুরোটাই রোমান্টিক গল্পে বেশি কাজ করেছেন তিনি।। এখন তিনি কাজ করতে চান সব ধরনের গল্পে। তবে শর্ত একটাই। ভালো গল্প ও চ্যালেঞ্জিং চরিত্র হতে হবে। তাঁর কথায়, ‘আমি এখন সব ধরনের গল্পে অভিনয় করতে চাই। সব পরিচালকের সঙ্গে কাজ করতে চাই। যারা আমাকে ডাকেন না তাদের বলতে চাই, আমার সেই ডেডিকেশনটা আছে। চ্যালেঞ্জিং চরিত্রের ভরসা করতে পারেন। অভিনয় দিয়ে সবার মন ভরাতে পারব।’

নতুন মাধ্যম ওটিটি নিয়েও ভাবনা রয়েছে তাঁর। আটঘাট বেঁধেই মাঠে নামতে চান তিনি। অবশ্য প্ল্যাটফর্মে কিছুটা আক্ষেপও আছে এই অভিনেতার। সে কারণে নাটক বেশি প্রাধান্য দিয়ে ওটিটিতে কাজ করতে চান তিনি। তাঁর মতে, ‘ওটিটিতে কাজের বিষয়টা শুধু তো আমার চাওয়া পাওয়ার ওপর নির্ভর করে না। এখানে বেশকিছু বিষয় থাকে। প্রত্যেকটা প্ল্যাটফর্মে আলাদা করে একটা গ্রুপ থাকে। অভিনয় বিবেচনা করে কাস্ট করা হয় বলে আমার মনে হয় না। আবার কিছু কিছু সময় যারা ভালো, তারাও কাজ পাচ্ছেন। আসলে নাটক নিয়ে ব্যস্ততার কারণে তাদের সঙ্গে যোগাযোগ করতে পারছি না। ওটিটির দিকে ছুটতে গেলে নাটকে গ্যাপ পড়ে যাবে। তারপরও যদি আমার মনের মতো গল্প পাই, অবশ্যই কাজ করব।’

এত কিছুর পর বর্তমানের নাটক ও এই ইন্ডাস্ট্রি নিয়ে অনেকের অনেক রকম অভিযোগ। কেউ বলেন, নাটক ভালো হচ্ছে না। আবার কেউ প্রশ্ন তোলেন নাটকের মান নিয়েও। তবে আরশ খানের মতে, ‘আমাদের দেশ ছয় ঋতুর দেশ। একেকজনের মানসিকতা একেক রকম। সবার টেস্ট তো ভিন্ন ভিন্ন। সবার বাছ-বিচারের স্বাধীনতা আছে। কাজ করলে অভিযোগ আসবে। তবে তার মধ্য থেকে দিনশেষে ভালো কাজ প্রশংসা পাবেই।’

নিজের ক্যারিয়ার নিয়ে এখন বেশ সচেতন তিনি। নতুন কাজের ক্ষেত্রে আরও সচেতন হতে চান। তাঁর ভাষ্য, ‘একটা সময় ছিল আমার কাজ পাওয়াটা জরুরি। সেই সময়টা বুঝে না বুঝে নাটকের মাধ্যমে মানুষকে অনেক রং মেসেজ দিয়েছি। এটা স্বীকার করছি। সেই নাটকগুলোর সংলাপ শুনলে মনে হয় এটা আমার দেওয়া ঠিক হয়নি। কারণ, আগামী ১০ বছর দেশের মানুষগুলো কেমন হবে, সেটার কিছুটা নির্ভর করে মিডিয়ার দ্বারা। তাই যেহেতু সেই সময়টা চলে গেছে। এখন গল্প ও সমাজকে ভালো বার্তা দেওয়ার নাটকগুলোকে বেশি প্রাধান্য দেব।’

.

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: আরশ খ ন ক জ কর

এছাড়াও পড়ুন:

অফিসে আপনি কি ১১ ঘণ্টার বেশি কাজ করেন

প্ল্যান ওয়ান জার্নালে প্রকাশিত একটি গবেষণা নিয়ে চলছে আলোচনা। সেখানে দুই হাজার ফুলটাইম কর্মজীবীর ওপর একটা জরিপ পরিচালনা করা হয়। পেশাগত কাজ বা চাপের সঙ্গে মানসিক স্বাস্থ্যের সম্পর্ক নিয়ে পরিচালিত গবেষণাটি থেকে পাওয়া গেছে চমকপ্রদ তথ্য।

বিশেষজ্ঞরা জানিয়েছেন, যাঁরা কর্মক্ষেত্রে ১১ ঘণ্টা বা তার বেশি কাজ করেন, তাঁদের খাদ্যাভ্যাস তুলনামূলকভাবে অস্বাস্থ্যকর, তাঁরা অন্যদের তুলনায় মানসিক চাপে ভোগেন বেশি। ঠিকমতো পানি খাওয়ার প্রবণতা কম। পরিবার, প্রকৃতি ও পোষা প্রাণীর সঙ্গে সময় কাটানোর প্রবণতাও কম। কম ঘুমান। আর যেকোনো মানসিক আঘাত থেকে সেরে ওঠার পর্যাপ্ত সময় বা সুযোগ পান না। এই মানুষেরাই বেশি হতাশায় ভোগেন।

শুধু তা-ই নয়, দ্রুত বুড়িয়ে যাওয়া এবং হৃদ্‌রোগ ও স্ট্রোকের মতো কার্ডিওভাস্কুলার রোগে আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকিও বেশি। যাঁরা ১১ ঘণ্টা বা তার বেশি সময় অফিস করেন, তাঁদের মধ্যে কর্মক্ষেত্রে অসুস্থ হয়ে যাওয়ার সংখ্যাও অনেক।

আরও পড়ুন২৫ বছর ধরে অফিসে যাননি তিনি১৩ মার্চ ২০২৫যদি ১১ ঘণ্টা কর্মক্ষেত্রে থাকতেই হয়, তাহলে যেসব বিষয় খেয়াল রাখবেন

রাতে ৮ ঘণ্টা ঘুমাতেই হবে। তাতে শরীর ও মস্তিষ্ক দিনের শারীরিক ও মানসিক পরিশ্রমের ধকল কাটিয়ে ওঠার সুযোগ পাবে।

কাজের ফাঁকে ফাঁকে বিরতি নিন। সবুজের দিকে তাকান। ডেস্কে গাছ রাখতে পারেন। উঠে একটু হাঁটুন। ব্যায়াম করুন। সহকর্মীর সঙ্গে চা খেতে খেতে গল্প করুন। গবেষণা জানাচ্ছে, ছোট ছোট বিরতি কাজে মনোযোগ পুনঃস্থাপন করতে সাহায্য করে এবং কাজের গুণমান বাড়ায়।

দুপুরে খাওয়ার পর একটা ন্যাপ নিতে পারেন।

২ লিটারের একটা বোতলে পানি রাখবেন। প্রতিদিন ১ বোতল পানি অবশ্যই শেষ করবেন। তা ছাড়া পানি, শরবত, জুস, ডাবের পানি, তরমুজ, শসা, আনারস ইত্যাদি খাবেন। হাইড্রেটেড থাকলে এনার্জি ধরে রেখে কাজ করা সহজ হয়।

প্রক্রিয়াজাত খাবার, কার্বোনেটেড ড্রিংক, চিনিযুক্ত খাবার বাদ দিন। এসব কেবল আপনার ক্লান্তি বাড়াবে।

আর সম্ভব হলে কর্মক্ষেত্রে কথা বলে আপনার কর্মঘণ্টা ৮ ঘণ্টায় নিয়ে আসতে পারলে তো কথাই নেই।

সূত্র: এনবিসি নিউজ

আরও পড়ুনঅফিসের বাড়তি কাজকে যেভাবে ‘না’ বলবেন১৩ মার্চ ২০২৫

সম্পর্কিত নিবন্ধ