‘স্ত্রীকে বলেছিলাম, যদি বের না হতে পারি মাফ করে দিও’
Published: 23rd, January 2025 GMT
কেরানীগঞ্জের ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগার ও গাজীপুরের কাশিমপুর হাইসিকিউরিটি কারাগার থেকে পিলখানা হত্যা মামলায় বন্দি সাবেক সীমান্ত রক্ষীবাহিনী বিডিআরের ১৬৭ জওয়ান মুক্তি পেয়েছেন। এর মধ্যে ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগার থেকে ৪১ জন ও কাশিমপুর থেকে মুক্তি পেয়েছেন ১২৬ জন। গতকাল বৃহস্পতিবার বিকেলে তারা মুক্তি পেয়ে যার যার বাড়ি চলে যান। এ সময় উভয় কারাফটকে আবেগঘন দৃশ্যের অবতারণা হয়। দীর্ঘদিন পর স্বজনকে কাছে পেয়ে মুক্তিপ্রাপ্ত বিডিআর জওয়ান অনেকেই কেঁদে ফেলেন।
কেরানীগঞ্জের কেন্দ্রীয় কারাগারের বাইরে এদিন সকাল থেকে জওয়ানদের অপেক্ষায় ছিলেন স্বজন। তাদের হাতে দেখা গেছে ফুলের তোড়া। দুপুরে মুক্তিপ্রাপ্তরা একে একে বের হয়ে আসেন। এ সময় স্বজনকে কাছে পেয়ে আবেগাপ্লুত হয়ে পড়েন তারা।
কেরানীগঞ্জ কারাগারের বাইরে এদিন সকাল ৮টা থেকে মা-খালা, আত্মীয়স্বজন নিয়ে বাবা মনসুর আলীর অপেক্ষায় ছিল মেয়ে মালিহা জান্নাতুন। দুপুরে কারাগার থেকে বেরিয়ে আসেন ঠাকুরগাঁও জেলার হরিপুরের বাসিন্দা মনসুর আলী। মালিহা বলে, বাবা যখন জেলে যান তখন আমার বয়স ছিল তিন মাস। এখন আমি রণহাট্টা চৌরংগী উচ্চ বিদ্যালয়ের দশম শ্রেণির শিক্ষার্থী। আমার মা জামনুর নাহারসহ খালাদের নিয়ে সকাল থেকে জেলখানার সামনে অপেক্ষায় আছি। আমার বাবা ১৬ বছর পর জেল থেকে মুক্তি পাওয়ায় আমরা অনেক আনন্দিত। আমার বাবা এখন মুক্ত বাতাসে বসবাস করবেন। আমরা বাবাকে নিয়ে ঘুরতে যাব।
মুক্তি পাওয়া মনসুর আলী বলেন, ‘আমার মেয়েকে তিন মাস বয়সে রেখে গিয়েছিলাম। স্ত্রীকে বলেছিলাম, আমি যদি বের হতে না পারি তুমি আমাকে মাফ করে দিও। আল্লাহর কাছে শুকরিয়া, আমি নির্দোষ বলে ১৬ বছর পরে মুক্তি পেয়েছি। এখন মুক্ত বাতাসে থাকতে পারব।’
মুক্তিপ্রাপ্ত আরেক বিডিআর জওয়ান সুবেদার মুজাফফর হোসেন বলেন, আল্লাহর কাছে লাখ লাখ শুকরিয়া। সবার চেষ্টা ও সহযোগিতায় আজ মুক্ত। আমি ইঞ্জিনিয়ারিং কোরে ছিলাম। নির্দোষ বলেই মুক্তি পেয়েছি।
জওয়ান মো.
জওয়ান শামসুদ্দিন বলেন, ‘সবকিছুই আল্লাহর ইচ্ছা। কেউ পালিয়ে যায়, কেউ মুক্ত হচ্ছে।
আমরা কোনো অপরাধ করিনি। অপরাধ করলে বেঁচে থাকতে পারতাম না। জীবন থেকে অনেক বছর ঝরে গেছে। এটা কেউ ফেরত দিতে পারবে না। বাকি জীবনটা যেন ভালোভাবে কাটিয়ে দিতে পারি।’
একই পরিবেশ দেখা গেছে কাশিমপুর কারাগারের বাইরেও। গতকাল বেলা ১১টার পর থেকে মুক্তি পাওয়া জওয়ানরা একে একে বের হতে থাকেন। দুপুর হওয়ার আগেই সবাই মুক্তি পেয়ে স্বজনের সঙ্গে যার যার বাড়ি চলে যান। কাশিমপুর কারাগারের সিনিয়র জেল সুপার আব্দুল্লাহ আল মামুন জানান, আদালতের সব কাগজপত্র যাচাই-বাছাইয়ের পর বিডিআর জওয়ানদের মুক্তি দেওয়া হয়। ঢাকার বিশেষ ট্রাইবুনাল-২-এর বিচারক ইব্রাহিম মিয়া গত রোববার বিস্ফোরক আইনের মামলায় তাদের জামিন মঞ্জুর করেন।
উৎস: Samakal
এছাড়াও পড়ুন:
সিরাজ–কৃষ্ণাতে ম্যাচে ফিরল ভারত
অ্যান্ডারসন-টেন্ডুলকার ট্রফিতে মোহাম্মদ সিরাজের মতো আর কোনো পেসার নেই, এভাবে বলাই যায়। কারণ, সিরাজ ও ক্রিস ওকসই এই সিরিজের সব কটি ম্যাচ খেলেছেন। সেই ওকসও ওভাল টেস্টের প্রথম দিনে চোট পেয়ে টেস্ট থেকে ছিটকে গেছেন, টিকে আছেন সিরাজ।
টিকে থাকা সিরাজ কী করেছেন? গতকাল ওভাল টেস্টের দ্বিতীয় দিনের দ্বিতীয় সেশনে ৮ ওভারের এক স্পেলে ফিরিয়েছেন ওলি পোপ, জো রুট, জ্যাকব বেথেলকে। এরপর আরও এক উইকেট। সিরাজকে যোগ্য সঙ্গ দিয়েছেন প্রসিধ কৃষ্ণা। দ্বিতীয় সেশনের শেষ ওভারে দুই উইকেটসহ তিনিও নিয়েছেন ৪ উইকেট। ভারতের ২২৪ রানের জবাবে ব্যাট করতে নেমে প্রথম ইনিংসে ইংল্যান্ড অলআউট হয়েছে ২৪৭ রানে। দ্বিতীয় ইনিংসে ব্যাট করতে নেমে ভারত কাল দ্বিতীয় দিনের খেলা শেষ করেছে ২ উইকেটে ৭৫ রান নিয়ে। দুই ‘জীবন’ পাওয়া যশস্বী জয়সোয়াল ৫১ ও আকাশ দীপ ৪ রান নিয়ে উইকেটে আছেন।
অথচ কাল প্রথম সেশন শেষে ম্যাচের চিত্র ছিল আলাদা। ইংল্যান্ড প্রথম ১৬ ওভারেই তোলে ১ উইকেটে ১০৯ রান। দুই ওপেনার জ্যাক ক্রলি ও বেন ডাকেট ৭৭ বলে গড়েন ৯২ রানের জুটি। এমন বাজবলীয় শুরুর পর চিত্র পুরোপুরি বদলে যায় দ্বিতীয় সেশনে। শুরুটা করেন কৃষ্ণা। তাঁর শর্ট বলে পুল করতে গিয়ে ক্যাচ দেন ক্রলি। পরের গল্পটা সিরাজের। প্রথম স্পেলে ৪ ওভারে ৩১ রান দেওয়া সিরাজকে অধিনায়ক গিল যখন বোলিংয়ে আনেন, তখন ইংল্যান্ডের রান ২৪ ওভারে ২ উইকেটে ১৪২। তিনি একে একে ফেরান দুই সেট ব্যাটসম্যান পোপ (২২), রুটকে (২৯) ও বেথেলকে (৬)। এরপর কৃষ্ণার দুই উইকেটে দ্বিতীয় সেশনটা পুরোপুরি ভারতের হয়ে যায়। ইংল্যান্ড দ্বিতীয় সেশনে ১০৬ রান তুলতে হারায় ৬ উইকেট। তৃতীয় সেশনে আর ৩২ রান যোগ করতে পারে তারা।
আরও পড়ুনকাঁধের চোটে ভারতের বিপক্ষে আর খেলতে পারবেন না ওকস১১ ঘণ্টা আগেলোকেশ রাহুলকে আউট করার পর অ্যাটকিনসনের আনন্দ