নয় দিন পার হয়ে গেলেও কক্সবাজারের টেকনাফ স্থলবন্দরে আসার পথে আটক পণ্যবাহী একটি কার্গো বোট এখনো ছাড়েনি মিয়ানমারের বিদ্রোহী গোষ্ঠী আরাকান আর্মি। আজ রোববার সকাল পর্যন্ত প্রায় ৩০ হাজার বস্তা বহনকারী বোট আরাকান আর্মির হেফাজতে রয়েছে। এর আগে গত সোমবার আরাকান আর্মির হেফাজতে থাকা দুটি কার্গো বোট টেকনাফ স্থলবন্দরে পৌঁছে।  

পণ্যবাহী একটি বোট এখনও ছাড়েনি বলে জানিয়েছেন টেকনাফ স্থলবন্দর ইউনাইটেড ল্যান্ড পোর্টের ম্যানেজার সৈয়দ মোহাম্মদ আনোয়ার হোসেন। তিনি বলেন, ‘এর আগে দুটি পণ্যবাহী কার্গো বোট আরাকান আর্মির হেফাজত থেকে মুক্তি পায়। এসব পণ্যবাহী খালাস চলমান। তবে দশ দিন পার হয়ে গেলেও তাদের কাছে আরও একটি পণ্যবাহী বোট রয়েছে। সেখানে প্রায় ৩০ হাজার বস্তা বিভিন্ন ধরনের মালামাল রয়েছে।’

এ বিষয়ে টেকনাফ স্থলবন্দর সিঅ্যান্ডএফ এজেন্ট অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক ও ব্যবসায়ী এহতেশামুল হক বাহাদুর বলেন, ‘আমরা ব্যবসায়ীরা খুব চিন্তিত। কেননা, এখনও একটি পণ্যবাহী কার্গো বোট ছাড়েনি আরাকান আর্মি। সেখানে আমাদের বহু ব্যবসায়ীদের মালামাল রয়েছে। তল্লাশির দশ দিন পার হলেও বড় কার্গো বোট তাদের হেফাজতে রয়েছে। এ ধরনের সমস্য সমাধানে সবাইকে এক সঙ্গে কাজ করা দরকার। না হলেও ব্যবসায়ীরা টেকনাফে ব্যবসা গুটিয়ে নিবেন।’

স্থলবন্দরের ব্যবসায়ীরা বলছেন, দেড় মাস পর গত ১১ জানুয়ারি মিয়ানমারের ইয়াংগুন থেকে কয়েকজন ব্যবসায়ীর পণ্যবাহী কার্গো বোট টেকনাফ স্থলবন্দরের উদ্দেশে রওনা দেয়। এরপর ১৬ জানুয়ারি দুপুর ১২টায় নাফ নদের মোহনায় দেশটির জলসীমায় নাইক্ষ্যংকদিয়া নামক এলাকায় তল্লাশির নামে পণ্যবাহী তিনটি আটকে দিয়েছিল আরাকান আর্মি। এর মধ্যে আচার, শুঁটকি, সুপারি, কপিসহ ৫০ হাজারের বেশি বস্তা পণ্য রয়েছে। এসব পণ্য স্থলবন্দরের ব্যবসায়ী শওকত আলী, ওমর ফারুক, মো.

আয়াছ, এমএ হাসেম, মো. ওমর ওয়াহিদ, আবদুর শুক্কুর সাদ্দামসহ অনেকের। 

সর্বশেষ গত সোমবার সকালে সাতুরু এবং এমবি হারিকিউ লেছ নামে দুটি পণ্যবাহী বোট ফেরত আসলেও একটি কার্গো বোট আরাকান আর্মি হেফাজতে রয়েছে। তবে ফেরত আসা বোটে ২৭ হাজার ২২২ বস্তা মালামাল রয়েছে।

এক বন্দর ব্যবসায়ী বলেন, ‘আরাকান আর্মি এখনও একটি পণ্যবাহী বোট ছাড়েনি। মূলত তল্লাশির নামে বোটে থাকা অনেক মালামাল খালাস করে চেক করছে। তাদের তল্লাশি এখনও চলছে। দুই-একদিনের মধ্য ছেড়ে দেওয়ার সম্ভবনা রয়েছে। মূলত কার্গো বোটটির মালিক মিয়ানমারের শীর্ষ এক সেনা কর্মকর্তার ঘনিষ্ঠজন। তার কারনে আরাকান আর্মি চাপ প্রয়োগ দিতে তল্লাশির নামে আটকে রেখেছে। পাশাপাশি আরাকান আর্মি এখন থেকে সীমান্তে বাণিজ্য ভাগ বসাতে তৎপরতা চালিয়ে যাচ্ছে।’
   
এ বিষয়ে আমদানিকারক কায়েছ এন্টারপ্রাইজের মালিক নুরুল কায়েছ সাদ্দাম বলেন, ‘এখনও একটি পণ্যবাহী কার্গো বোট ছাড়েনি। সেখানে আমারসহ অনেকে বিভিন্ন পণ্য রয়েছে। এর আগে দুটি পণ্যবাহী বোট ছেড়ে দিয়েছিল। কিন্তু এটি কেন এখনও ছেড়ে দেয়নি সেটি বলা মুশকিল।’

টেকনাফ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) শেখ এহসান উদ্দিন বলেন, ‘এখনও একটি পণ্যবাহী কার্গো ছাড়েনি। এটির খোঁজ-খবর নেওয়া হচ্ছে।’

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: আর ক ন আর ম এখনও একট ব যবস য় র ও একট

এছাড়াও পড়ুন:

হাইতিতে গ্যাং হামলায় ৫০ জনের বেশি নিহত

ক্যারিবীয় দ্বীপপুঞ্জের দেশ হাইতিতে গত সপ্তাহে একাধিক গ্যাং হামলায় ৫০ জনেরও বেশি মানুষ নিহত হয়েছে। জাতীয় মানবাধিকার প্রতিরক্ষা নেটওয়ার্কের (আরএনডিডিএইচ) তথ্যানুসারে, সংকটে জর্জরিত দেশটিতে সর্বশেষ ভয়াবহ গণহত্যার ঘটনা এটি।

মঙ্গলবার (১৬ সেপ্টেম্বর) বার্তা সংস্থা এএফপির বরাত দিয়ে এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে মার্কিন সংবাদমাধ্যম ব্যারন’স। 

গতকাল সোমবার এএফপিকে পাঠানো এক প্রতিবেদনে আরএনডিডিএইচ জানায়, গত ১১ ও ১২ সেপ্টেম্বর রাজধানী পোর্ট-অ-প্রিন্সের উত্তর এলাকায় এই হামলাগুলো ঘটে।

ওই প্রতিবেদনে বলা হয়, ‘২০২৫ সালের ১৪ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত নিহত হওয়া বহু মানুষের লাশ এখনও পাওয়া যায়নি। লাশগুলো এখনও ঝোপের মধ্যে পড়ে আছে এবং কুকুর লাশগুলো খেয়ে ফেলেছে।’

পশ্চিম গোলার্ধের সবচেয়ে দরিদ্র দেশ হাইতি। দেশটির একটি অংশ ও রাজধানী পোর্ট-অ-প্রিন্সের বেশিরভাগ এলাকা সশস্ত্র গ্যাংগুলোর নিয়ন্ত্রণে থাকায় সহিংসতা বৃদ্ধি পাচ্ছে।

২০২৪ সালের শুরুর দিকে গ্যাংগুলোর একটি জোট লাগাতার হামলা শুরু করলে পরিস্থিতির চরম অবনতি হয়। যার ফলে প্রধানমন্ত্রী এরিয়েল হেনরি পদত্যাগ করেন এবং প্রেসিডেন্টের অন্তর্বর্তীকালীন পরিষদের কাছে ক্ষমতা হস্তান্তর করেন।

হাইতির পুলিশকে সমর্থন করার জন্য কেনিয়ার নেতৃত্বাধীন বহুজাতিক বাহিনী মোতায়েন করার পরও সহিংসতা দমন করা সম্ভব হয়নি।

আরএনডিডিএইচ জানিয়েছে, ভিভ আনসানম গ্যাং জোট, যারা ২০২৪ সালের মার্চ মাস থেকে ক্যাবারেট শহরের নিয়ন্ত্রণে রয়েছে, তারা গত সপ্তাহে নিকটবর্তী ল্যাবোডেরি শহরে বেসামরিক জনগণের বিরুদ্ধে অত্যন্ত নিষ্ঠুর গণহত্যা চালিয়েছে। শহরটি রাজধানী পোর্ট-অ-প্রিন্স থেকে প্রায় ২৫ কিলোমিটার উত্তরে অবস্থিত।

সংস্থাটি আরো জানায়, ‘তারা ৫০ জনেরও বেশি মানুষকে হত্যা করেছে এবং বেশ কয়েকটি বাড়িতে আগুন ধরিয়ে দিয়েছে।’

প্রতিবেদনে আরো বলা হয়, ‘বেঁচে থাকা কয়েকজন পার্শ্ববর্তী এলাকায় পালিয়ে যেতে সক্ষম হন। অন্যান্যরা আক্রমণকারীদের হাত থেকে বাঁচতে নৌকায় করে সমুদ্রে পালিয়ে যায়।’ 

জাতিসংঘের মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেস গত মাসে সতর্ক করে বলেছেন, হাইতিতে ‘রাষ্ট্রীয় কর্তৃত্ব ভেঙে পড়ছে।’

তিনি নিরাপত্তা পরিষদকে সতর্ক করে বলেন, হাইতির রাজধানীর বাইরেও সহিংসতা ছড়িয়ে পড়ছে। সেখানকার ৯০ শতাংশ অঞ্চলের ওপর গ্যাংগুলোর নিয়ন্ত্রণ রয়েছে।

রবিবার, তিনি ক্যাবারে কমিউনে হামলার নিন্দা জানিয়েছেন এবং দেশগুলোকে প্রয়োজনীয় ‘সরবরাহ, কর্মী ও তহবিল দিয়ে বহুজাতিক নিরাপত্তা সহায়তা মিশনকে শক্তিশালী করার প্রচেষ্টা ত্বরান্বিত করার’ আহ্বান জানিয়েছেন।

জাতিসংঘের মানবাধিকার বিষয়ক হাইকমিশনারের তথ্যানুসারে, চলতি বছরের প্রথমার্ধে হাইতিতে কমপক্ষে ৩ হাজার ১৪১ জন নিহত হয়েছে।

ঢাকা/ফিরোজ

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • প্রথম চালানে ৩৭ হাজার ৪৬০ কেজি ইলিশ গেল ভারতে
  • শান্তি স্থাপনের লক্ষ্যে আত্মসমর্পণ ও অস্ত্রত্যাগের প্রস্তাব মাওবাদীদের
  • আখাউড়া স্থলবন্দরে আমদানি-রপ্তানি বন্ধ
  • হাইতিতে গ্যাং হামলায় ৫০ জনের বেশি নিহত