তুমুল জনপ্রিয় সব গানের গায়িকা কনকচাঁপা ঘর বেঁধেছেন সুরকার ও সংগীত পরিচালক মইনুল ইসলাম খানের সঙ্গে। আজ তার স্বামীর ৬৬ তম জন্মদিন। বিশেষ দিনে আবেগঘন একটি পোস্ট দিয়েছেন নিজের ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজে।

লেখার শুরুতে কনকচাঁপা বলেন, “আজ থেকে ৬৬ বছর আগে এইদিনে তুমি জন্মেছিলে। বুড়িদাদির মতো আমার খুব সেই আঁতুড় ঘর দেখতে ইচ্ছে হয়! শীতের রাত, আমার প্রিয়তমা শাশুড়িআম্মা না জানি কত কষ্ট করেছেন। তখন তো আর ডায়াপার ছিল না। কি গোলাপি একটা তুলার বল না জানি ছিল! যদি একটু দেখতে পেতাম!”

শ্বশুর-শাশুড়ির প্রতি কৃতজ্ঞতা জানিয়ে কনকচাঁপা বলেন, “তোমার পয়লা স্কুলে যাওয়ার দিন তোমাকে কেমন দেখাচ্ছিল সেটা জানার খুব আগ্রহ। যদিও পারিবারিক অ্যালবামে আমি তোমার অনেক ছোটবেলার ছবি দেখে তোমার শৈশব কৈশোর মুখস্ত। আমার শ্বশুর-শাশুড়িকে কৃতজ্ঞতা তারা তোমাকে জন্ম দিয়েছেন।”

আরো পড়ুন:

যারা পেলেন এবারের অস্কার মনোনয়ন

গায়িকা মোনালি ঠাকুর সত্যি হাসপাতালে?

ঘটা করে জন্মদিন উদযাপনে আগ্রহ নেই মইনুল ইসলামের। সে কথা উল্লেখ করে কনকচাঁপা বলেন, “আজ তোমার জন্মদিন, অনেক আয়োজন করার কথা। কিন্তু তুমি তো এগুলো পছন্দই করো না। আমি অনেক চেষ্টা করেছি উৎসব জমাতে, তুমি সেই উৎসবে পানি ঢালো ফি বছর তাই ভেবেছি এগুলো আর করব না। তবে তোমার জন্মদিনে কিছু ‘না বলা কথা’ বলি, কথাগুলো হলো— এই এক জীবনে তোমার কাছে আমার কৃতজ্ঞতার অন্ত নাই।

মুক্তার মতো কনকচাঁপাকে যত্নে রেখেছেন তার স্বামী। প্রিয় মানুষটির প্রতি কৃতজ্ঞতা জানিয়ে এই শিল্পী বলেন, “তুমি আমাকে লালন না করলে আমি কি ‘আমি’ হতাম? আমার হাজার হাজার রেকর্ডিং, হাজার হাজার মঞ্চে তুমি যেভাবে চোখ দিয়ে আমাকে আগলে রেখেছো তা সত্যিই বিরল। তোমার হাত ধরে রাস্তা পার হতে যেমন আমি ডানে-বামে তাকাই না, তেমন গাইতে গেলে আর কতক্ষণ গাইব সময় গুণি না। দর্শক ভাবে কনকচাঁপা নিজে একটার পরে একটা সাজিয়ে গাইছেন। কিন্তু নেপথ্যে তোমার সরব উপস্থিতি অনেকেই বোঝে না। তুমি আমাকে শিল্পী হিসেবে, তোমার স্ত্রী হিসেবে মুক্তা যেমন সযত্নে তুলায় পেঁচিয়ে রাখে তেমন রেখেছো আজীবন। সেখানে আমি কতটুকু বা প্রতিদান দিতে পারি!”

স্বামীর সঙ্গে ‘মধুর ঝগড়া’ না করতে পারলে দম আটকে আসে কনকচাঁপার। তা স্মরণ করে তিনি বলেন, “তুমি বাজার না করলে আমি রান্না করে কোনো শান্তিই পাই না। সামান্য নুন ও আমার নুন বলে মনে হয় না। আর তোমার সাথে ঝগড়া না করলে আমার দম আটকে আসে আর তারচেয়েও বড় কথা আমি তোমার সাথে ঝগড়া করে অনেক মজা পাই। কারণ তুমি বেশিরভাগ সময় যুৎসই শব্দ খুঁজে না পেয়ে খেই হারাও আর আমার মুখে সারগামের সপাট তানের মতো খই ফোটে হাহা। অগত্যা তুমি যখন অসহায় হয়ে বলো ছি ছি মানুষ যদি জানতো যে তুমি এত ঝগড়া করতে পারো! তখন বুঝি, আমি নিশ্চিত জিতে গেছি হিহিহি।”

‘মধুর ঝগড়া’র ব্যাখ্যা করে কনকচাঁপা বলেন, “শোন, হারা আর জেতা কিসের, আমরা আমরাই তো। আমার সবকিছু আমার, তোমার সবকিছুও আমার। এ বছর তুমি আমার স্বপ্ন পূর্ণ করেছো আল্লাহর রহমতে, তার জন্য আল্লাহ যেন ওই পারে তোমাকে বিশাল বালাখানা উপহার দেন, তাতে হুরপরি থাকলেও আমার কোনো অসুবিধা নাই (থাকলে কি আর করা)।”

শাসন আর আবদার— কনকচাঁপা দুটোই প্রকাশ করেছেন তার বয়ানে। ‘আকাশের ওই মিটি মিটি তারা’খ্যাত এই গায়িকা বলেন, “তুমি সবসময় মানুষের কাছে নিজের বয়স বাড়াও, এই কাজ আর কখনো করবে না। আর একটা কথা, আম্মা তো নাই, এখন আমিই তোমার একমাত্র আশ্রয়, বুইঝো কিন্তু। আমার আরো কিছু গাছ দরকার, ঠিকঠাক কিনে দিও আচ্ছা? আর এ বছর সিগারেটটা ছেড়ে দাও প্লিজ।”

স্বামীর জন্য প্রার্থনা করে লেখার ইতি টেনেছেন কনকচাঁপা। তার ভাষায়— “আজকের দিনে আল্লাহর কাছে আমার এই দোয়া যে, আল্লাহ যেন তোমাকে অনেক লম্বা নেক হায়াত দেন, সুদীর্ঘ আয়ু নিয়ে আমাকে সাথে নিয়ে বেঁচে থাকো। শুভজীবন বন্ধু।”

ঢাকা/শান্ত

.

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর আল ল হ

এছাড়াও পড়ুন:

প্রাণের গানে সালাহর উৎসব

শেষ বাঁশি বাজতেই নেচে-গেয়ে উৎসবে মাতেন সালাহ-অ্যালিসন-এলিস্টাররা। তবে পর্বটা খুব বেশি লম্বা হয়নি। অধিনায়ক ভার্জিল ফন ডাইক সবাইকে ডেকে মাঠের একটি গোলপোস্টের সামনে জড়ো করেন। আর্নে স্লটের নেতৃত্বে কোচিং স্টাফরাও যোগ দেন সেখানে। গ্যালারি সামনে রেখে কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে চেইনের মতো করে সারিবদ্ধভাবে দেয়াল বানিয়ে দাঁড়ান সবাই। পুরো এনফিল্ড তখন সমবেত কণ্ঠে গাইতে শুরু করে– You’ll Never Walk Alone...। অলরেডদের হৃদয় থেকে উৎসারিত এ গানেই পূর্ণতা পায় উৎসব।

এ গানের সঙ্গে সঙ্গে অন্য রকম এক আবহ তৈরি হয় সেখানে। বিশ্বের কোনো স্টেডিয়াম ছুঁতে পারবে না এনফিল্ডের এই আবহ। এই আবহ তৈরি অলরেডদের বিশ্বাসে, বছরের পর বছর যারা কেউ কাউকে একা হাঁটতে দেয়নি। রোববার সকাল থেকেই এনফিল্ডের চারপাশে তৈরি হয়েছিল উৎসবের পরিবেশ। আতশবাজি ও লাল আবিরে রঙিন হয়ে উঠেছিল লিভারপুলের আকাশ-বাতাস। আগে থেকেই বন্দর শহরটির দেয়ালে দেয়ালে ঐতিহাসিক গানটির সঙ্গে ‘২০’ লেখা গ্রাফিতি আঁকা শুরু হয়ে গিয়েছিল। 

ম্যাচ শুরুর দুই ঘণ্টা আগেই এনফিল্ড চত্বর রীতিমতো অবরুদ্ধ হয়ে পড়ে। আর্নে স্লট, সালাহদের স্বাগত জানাতে দাঁড়িয়ে ছিলেন হাজার হাজার সমর্থক। লাল জার্সি পরা কাতারে কাতারে সমর্থকদের মাঝখান দিয়ে লাল বাসে করে লিভারপুলের ফুটবলাররা স্টেডিয়ামের আঙিনায় প্রবেশ করেন অন্যরকম এক পরিবেশে। ১৯৮৯-৯০ মৌসুমের পর ৩০ বছর ট্রফি জেতেনি তারা। পাঁচ বছর আগে ট্রফি জিতলেও করোনাভাইরাস মহামারির কারণে উদযাপন হয়েছিল দর্শকশূন্য গ্যালারিতে। তাই এমন অনেক সমর্থক আছেন, যারা প্রিয় ক্লাবকে লিগ জিততে দেখেননি। সেই তরুণ প্রজন্মের উচ্ছ্বাসটা ছিল বেশি। 

২০তম শিরোপা জয়ের কৃতিত্ব আর্নে স্লট দিয়েছেন সাবেক কোচ ইয়ুর্গেন ক্লপকে। এমনকি তিনি সঞ্চালকের এক প্রশ্নের জবাবে পুরো গ্যালারিকে নিয়ে ক্লপের নামে গানও গেয়েছেন। ২০১৫ সালে লিভারপুলে যোগ দেওয়ার পর ক্লপ তিলে তিলে গড়ে তুলেছেন ক্লাবটিকে। এর মধ্যে দুবার অবিশ্বাস্য লড়াই করেও মাত্র ১ পয়েন্টের ব্যবধানে ম্যানসিটির কাছে শিরোপা হারাতে হয়েছিল তাদের। ২০২০ সালে জিতলেও সমর্থকদের নিয়ে উল্লাস করতে পারেননি।

ক্লপের লিগজয়ী দলের সদস্য ছিলেন মোহামেদ সালাহ। এবার ভিন্ন স্বাদ পেয়েছেন মিসরীয় এ তারকা। শিরোপা জয়ের পর স্কাই স্পোর্টসকে তিনি বলেন, ‘সমর্থকদের সঙ্গে নিয়ে শিরোপা জয়ের অনুভূতি অবিশ্বাস্য। গতবারের (২০২০) চেয়ে এবার শতভাগ ভালো ছিল। এটা অনেক বেশি আনন্দময়। এটা সত্যিই বিশেষ কিছু।’ 

প্রথমবারের মতো প্রিমিয়ার লিগ জেতা আর্জেন্টাইন তারকা এলেক্সিস ম্যাক এলিস্টারের জন্যও এ শিরোপা বিশেষ কিছু, ‘বিশ্বকাপ জিতেছিলাম, এখন জিতেছি প্রিমিয়ার লিগ। আমার জন্য সত্যই এটা বিশেষ কিছু। সতীর্থদের ছাড়া এটা সম্ভব হতো না। আমাদের দলটি সত্যিই অসাধারণ।’

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • গোলের উৎসবের ম্যাচে বার্সা-ইন্টারের রুদ্ধশ্বাস ড্র
  • জবি ছাত্রীর আত্মহত্যার প্ররোচনার মামলায় আটক তরুণ
  • সুইডেনে বন্দুকধারীর হামলায় নিহত ৩
  • চ্যাম্পিয়ন হওয়ার পরও লিভারপুলের কোন খেলোয়াড়েরা পদক পাবেন না
  • বিশ্বের বড় বড় উৎসব কোথায় হয়
  • প্রাগে পুরস্কৃত ‘নট আ ফিকশন’,অনলাইনে মুক্তি ১ মে
  • প্রাণের গানে সালাহর উৎসব
  • ফসলের ক্ষেতে আশার আলো
  • জারুল, সোনালু ও কৃষ্ণচূড়ার হাসি
  • কানে ‘আলী’, দায়িত্ব নিলো সংস্কৃতি মন্ত্রণালয়