ঘরে ৫০০ কোটি টাকা আছে তথ্যে হানা দিয়েছিল ডাকাত
Published: 27th, January 2025 GMT
বাসায় নগদ ৫০০ কোটি টাকা আছে। গৃহকর্তার ঘনিষ্ঠ এক ব্যক্তির দেওয়া এ তথ্য পেয়ে বিভিন্ন পেশার মানুষকে নিয়ে দল গঠন করে ডাকাতির পরিকল্পনা করেছিল বালু ব্যবসায়ী ওয়াজেদ রাকিব। ডাকাতি করতে যাওয়ার সময় টাকা নিতে ২৫টি বস্তাও সঙ্গে নেয় তারা, তবে শেষ রক্ষা হয়নি। গত শুক্রবার রাতে নগরের খুলশীতে যমুনা অয়েলের সাবেক ব্যবস্থাপনা পরিচালক গিয়াস উদ্দিন আনসারীর বাসায় ডিজিএফআই সদস্য পরিচয়ে ডাকাতি করতে গিয়ে স্থানীয় লোকজনের কাছে ধরা পড়ে তারা। পরে পুলিশ গিয়ে রাকিবসহ ১২ ডাকাতকে গ্রেপ্তার করে।
পুলিশ জানায়, চট্টগ্রামের পটিয়া উপজেলার মৃত মাহবুব খানে ছেলে রাকিব। গত রোববার থেকে গ্রেপ্তারকৃতদের জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে। তারা নানা রকম তথ্য দিয়েছে। তবে ৫০০ কোটি টাকা থাকার তথ্যদাতা গিয়াস উদ্দিন আনসারীর ঘনিষ্ঠজনকে খুঁজছে পুলিশ। এ ঘটনায় অন্তত ২০ জন সম্পৃক্ত বলে ধারণা করা হচ্ছে। ইতোমধ্যে কয়েকজনের নামও পাওয়া গেছে।
ডাকাতির চেষ্টায় গিয়াস উদ্দিন শুক্রবার খুলশী থানায় মামলা করেন। গ্রেপ্তার ১২ জন হলো– ওয়াজেদ রাকিব, মো.
জিজ্ঞাসাবাদে যুক্ত কর্মকর্তারা জানান, গত ৭ জানুয়ারি গৃহকর্তার এক ঘনিষ্ঠ ও আস্থাভাজনের কাছ থেকে রাকিব জানতে পারে, গিয়াস উদ্দিনের বাসায় ৫০০ কোটি টাকা রয়েছে। সেই তথ্য পেয়ে ওয়াসিম ও মালিকের সঙ্গে পরামর্শ করে রাকিব। তারা হোসাইন নামে আরেকজনকে যুক্ত করে। হোসাইনের মাধ্যমে যুক্ত হয় শওকত আকবর ও মোজাহের। তারা নগরের হালিশহরে কয়েক দফা বৈঠকও করে। সেখানে গোয়েন্দা পরিচয়ে ডাকাতির সিদ্ধান্ত হয়। পেশায় সিঅ্যান্ডএফ ব্যবসায়ী মোজাহের ডিজিএফআইর নকল পরিচয়পত্র তৈরি, পিস্তল ও ওয়াকিটকিগুলো সংগ্রহ করে।
পরিকল্পনা অনুযায়ী, দুটি মাইক্রোবাসে খুলশী ৩ নম্বর সড়কের ভবনে যায় তারা। সেখানে গিয়ে নিজেদের গোয়েন্দা সংস্থার লোক পরিচয় দিয়ে ভবনে প্রবেশ করে। নিরাপত্তারক্ষীদের হাত-পা বেঁধে অষ্টম তলায় গিয়াস উদ্দিনের বাসায় যায়। তিনটি ফ্ল্যাট নিয়ে আনসারীর বাসাটি ডুপ্লেক্স। আটতলার মূল দরজা দিয়ে ঢোকে ডাকাতরা। এর পর ভেতরের সিঁড়ি ব্যবহার করে ৯ তলায় ওঠা যায়। তারা সেখানে উঠে দুটি কক্ষের ডিজিটাল ফিঙ্গার লক ভাঙার চেষ্টা করে। এ সময় বাসায় কেউ ছিল না। সপরিবারে কক্সবাজার বেড়াতে গিয়েছিলেন গিয়াস উদ্দিন। শব্দ পেয়ে প্রতিবেশীরা পুলিশকে খবর দেন।
পুলিশ জানিয়েছে, অন্য মাইক্রোবাসে আরও কয়েকজন পালিয়ে গেছে। আসামিদের তথ্য অনুযায়ী রোববার বাসাটি থেকে দুটি খেলনা পিস্তল, দুটি ওয়াকিটকি ও ডিজিএফআইর নকল দুটি পরিচয়পত্র উদ্ধার করা হয়েছে। খেলনা পিস্তলের কাভারে পুলিশের লোগো ও বাংলাদেশ পুলিশ লেখা রয়েছে। পুলিশ কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, ওয়াকিটকিগুলো অত্যাধুনিক। সাত থেকে আট ঘণ্টা কথা বলা যায়।
নগর পুলিশের উপকমিশনার (অপরাধ) রইছ উদ্দিন বলেন, পালিয়ে যাওয়া আসামিদের শনাক্তের চেষ্টা চলছে। তাদের গ্রেপ্তারে অভিযান অব্যাহত আছে। জিজ্ঞাসাবাদ শেষে গ্রেপ্তারকৃতদের আদালতে সোপর্দ করা হবে।
বাসায় ৫০০ কোটি টাকা প্রসঙ্গে গিয়াস উদ্দিন আনসারীকে একাধিকবার কল করা হলেও তিনি সাড়া দেননি।
উৎস: Samakal
এছাড়াও পড়ুন:
গিয়াস কাদের চৌধুরী ও গোলাম আকবর খোন্দকারকে শোকজ
বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান গিয়াস উদ্দিন কাদের চৌধুরী এবং চট্টগ্রাম উত্তর জেলা বিএনপির আহ্বায়ক গোলাম আকবর খোন্দকারকে শোকজ করা হয়েছে। আজ বুধবার দলীয় শৃঙ্খলা পরিপন্থি কর্মকাণ্ডে যুক্ত থাকার অভিযোগ তাদের এ নোটিশ পাঠানো হয়েছে বলে বিএনপির দপ্তর সূত্র নিশ্চিত করেছে।
গত বছরের নভেম্বরে কেন্দ্রীয় ভাইস চেয়ারম্যান গিয়াস কাদের চৌধুরীকে একবার শোকজ করা হয়েছিল। তখন তিনি শোকজের জবাব দিয়েছিলেন। তবে অসন্তোষ প্রকাশ করে গিয়াস কাদেরকে সতর্ক করেছিল বিএনপি।
গিয়াস কাদের চৌধুরী ফজলুল কাদের চৌধুরীর ছেলে ও প্রয়াত বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাউদ্দিন কাদের চৌধুরীর ভাই। আর চট্টগ্রাম উত্তর জেলার রাজনীতিতে গিয়াসের সঙ্গে গোলাম আকবরের প্রকাশ্য দ্বন্দ্ব দীর্ঘদিনের।