ট্রাম্পের গ্রিনল্যান্ড নিয়ন্ত্রণে নেওয়ার ঘোষণায় সেনা মোতায়েনের কথা ভাবছে ফ্রান্স
Published: 29th, January 2025 GMT
প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ডেনমার্কের স্বায়ত্তশাসিত অঞ্চল গ্রিনল্যান্ড দ্বীপ নিয়ন্ত্রণে নেওয়ার ঘোষণা দিয়েছেন। এমনকি গ্রিনল্যান্ড দখল করতে সামরিক শক্তি প্রয়োগের হুমকিও দিয়েছেন। ট্রাম্প গত বছরের নভেম্বরে প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে জয় পাওয়ার পর একাধিকবার এই বিষয়ে কথাও বলেছেন তিনি।
এমন অবস্থায় গ্রিনল্যান্ডে সেনা মোতায়েনের কথা বিবেচনা করছে ফ্রান্স। মঙ্গলবার রাতে এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে বার্তাসংস্থা আনাদোলু।
বার্তাসংস্থাটি বলছে, গ্রিনল্যান্ড অধিগ্রহণের বিষয়ে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের বিতর্কিত মন্তব্যের প্রতিক্রিয়ায় ফ্রান্স এবার এই আর্কটিক দ্বীপটিতে সেনা মোতায়েনের কথা বিবেচনা করছে বলে মঙ্গলবার ফরাসি পররাষ্ট্রমন্ত্রী জ্যঁ-নোয়েল ব্যারোট বলেছেন।
ব্যারোট বলেন, ফ্রান্স ইতোমধ্যেই ডেনমার্কের সাথে বিষয়টি নিয়ে আলোচনা করেছে। তবে সেনা মোতায়েনের এই পদক্ষেপ বাস্তবায়নের জন্য তাৎক্ষণিক কোনও পরিকল্পনা নেই বলেও জোর দিয়ে জানিয়েছেন তিনি।
ব্যারোট সুদ রেডিওর সাথে এক সাক্ষাৎকারে বলেন, 'এই মুহূর্তে, সেনা মোতায়েন ডেনমার্কের ইচ্ছা নয়। নিরাপত্তা স্বার্থ হুমকির মুখে পড়লে ইউরোপ পদক্ষেপ নেবে।'
গ্রিনল্যান্ড দখলের বিষয়ে ট্রাম্পের ক্রমবর্ধমান আগ্রহকে মোকাবিলায় ডেনমার্ক ইউরোপীয় দেশগুলোর সমর্থন চাওয়ার মধ্যেই ফ্রান্সের পক্ষ থেকে এই মন্তব্যগুলো সামনে এলো। ট্রাম্প আর্কটিক এই দ্বীপের প্রাকৃতিক সম্পদ এবং কৌশলগত মূল্য উল্লেখ করে বলেছেন, 'আমি মনে করি আমরা এটি পেতে যাচ্ছি।'
ডেনমার্কের প্রধানমন্ত্রী মেটে ফ্রেডেরিকসেন বিষয়টি নিয়ে আলোচনার জন্য ইউরোপীয় নেতাদের সঙ্গে বৈঠক করছেন এবং গ্রিনল্যান্ডের প্রতি যেকোনও ধরনের তাৎক্ষণিক সামরিক হুমকি প্রত্যাখ্যান করেছেন। তিনি ট্রান্সআটলান্টিক সহযোগিতার গুরুত্বের ওপরও জোর দিয়েছেন।
ফরাসি পররাষ্ট্রমন্ত্রী জ্যঁ-নোয়েল ব্যারোট আর্কটিক এই অঞ্চলকে 'সংঘাতের নতুন ক্ষেত্র' হিসাবে বর্ণনা করেছেন এবং ডেনমার্কের প্রধানমন্ত্রী ফ্রেডেরিকসেন উত্তেজনার আরও বৃদ্ধি এড়িয়ে সতর্ক দৃষ্টিভঙ্গির ইঙ্গিত দিয়েছেন।
এছাড়া সম্প্রতি আর্কটিকে প্রতিরক্ষায় ২ বিলিয়ন ইউরো বিনিয়োগের ঘোষণা দিয়েছে ডেনমার্ক।
.উৎস: Samakal
এছাড়াও পড়ুন:
একজন চা শ্রমিকের দিনে আয় ১৭৮ টাকা
হবিগঞ্জে ছোট-বড় মিলেয়ে চা বাগানের সংখ্যা প্রায় ৪১টি। এসব বাগানের বাসিন্দা প্রায় দেড় লাখ। এর মধ্যে, স্থায়ী ও অস্থায়ী মিলে ৩২ থেকে ৩৫ হাজার মানুষ চা পাতা উত্তোলনে জড়িত।
চা বাগানে একজন শ্রমিককে প্রতিদিন ২৩ কেজি পাতা তুলতে হয়। এর বিনিময়ে মজুরি পান ১৭৮ টাকা ৫০ পয়সা। অভিযোগ রয়েছে, কোনো কোনো বাগানে নিয়মিত এই মজুরিও দেওয়া হয় না।
শ্রমিকদের দাবি, দৈনিক মজুরি ৫০০ থেকে ৬০০ টাকা করতে হবে। বর্তমানে যে মজুরি পাওয়া যায় তা দিয়ে সংসার চলে না। প্রতিদিনই নিত্যপণ্যের দাম বাড়ছে। সেই সঙ্গে চা শ্রমিকদের নৈমিত্তিক ছুটির ব্যবস্থা করতে হবে।
আরো পড়ুন:
বৈষম্য কেন? নারী শ্রমিকেরা পান না সমান মজুরি
ধান কাটায় আধুনিক যন্ত্রের ব্যবহার, পেশা বদলাচ্ছেন কৃষি শ্রমিকেরা
সরেজমিনে কয়েকটি বাগান ঘুরে দেখা যায়, শ্রমিকরা ছোট্ট কুঠুরিতে গাদাগাদি করে পরিবারের সবাইকে নিয়ে বসবাস করেন। পুষ্টিকর খাবার তো দূরের কথা, দু-বেলা পেটভরে খেতে পারেন না।
শ্রমিকদের দাবির বিষয়ে জানতে চাইলে বাংলাদেশ চা শ্রমিক ইউনিয়নের ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক নৃপেন পাল বলেন, ‘‘দুই বছর অন্তর চা শ্রমিকদের বিভিন্ন দাবি ও সমস্যা নিয়ে চা বাগান মালিক পক্ষের সংগঠনের সঙ্গে চা শ্রমিক ইউনিয়ন প্রতিনিধির বৈঠক হয়। সর্বশেষ গত বছরের আগস্টে বৈঠক হয়েছে। সে সময় ৮ টাকা ৫০ পয়সা বৃদ্ধি পেয়ে মজুরি ১৭৮ টাকা ৫০ নির্ধারিত হয়েছে।’’
শ্রমিকদের কষ্টের কথা স্বীকার করে তিনি বলেন, ‘‘দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতিতে এই টাকায় চলা যায় না। দেশের কোথাও এতো সস্তা শ্রমের দাম নেই। বর্তমানে একজন কৃষিশ্রমিক দিনে ৫০০-১০০০ টাকা আয় করেন, একজন রিকশাচালকের প্রতিদিনের আয় ৭০০ থেকে ৯০০ টাকা। সেখানে একজন চা শ্রমিক পান ১৭৮ টাকা ৫০ পয়সা। এজন্য তাকে প্রতিদিন ২৩ কেজি পাতা তুলতে হয়।’’
চা শ্রমিকদের অধিকার আদায়ে নাটক ও গানের মাধ্যমে দাবি জানিয়ে আসা জেলার চুনারুঘাট উপজেলার দেউন্দি প্রতীক থিয়েটারের সভাপতি সুনীল বিশ্বাস বলেন, ‘‘দৈনিক ১৭৮ টাকা ৫০ পয়সা মজুরিতে শ্রমিকদের চলা কঠিন হয়ে পড়েছে। অচিরেই মজুরি ৬০০ টাকা নির্ধারণ করা হোক। এছাড়া, শ্রমিকদের আরো সুযোগ সুবিধা বৃদ্ধি করা প্রয়োজন।’’
ঢাকা/রাজীব