অমর একুশে বইমেলায় প্রকাশিত হচ্ছে ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের (ইবি) আরবী ভাষা ও সাহিত্য বিভাগের ২০২১-২২ বর্ষের শিক্ষার্থী নাজমুল হাসানের প্রকাশিত প্রথম উপন্যাস ‘ইতি’।

সাগরিকা প্রকাশনী থেকে প্রকাশিত এ উপন্যাসটি রকমারিসহ অন্যান্য অনলাইন বুক শপে পাওয়া যাবে বলে জানিয়েছেন বরগুনা জেলার আমতলী উপজেলার কৃতি এ লেখক।

মেলায় বই প্রকাশের অনুভূতি জানাতে গিয়ে লেখক নাজমুল হাসান বলেন, “নিজের লেখা বই মেলায় প্রকাশিত হওয়া যেকোন লেখকের জন্যই এক বিশেষ আনন্দের অনুভূতি। আমার জন্যও এটি স্বপ্ন পূরণের মুহূর্ত। এতদিনের ভাবনা, লেখা, পরিশ্রম সবকিছু মিলিয়ে অবশেষে যখন বইটি পাঠকদের হাতে পৌঁছাবে, তখন নিজের অনুভূতি ভাষায় প্রকাশ করা কঠিন।

আরো পড়ুন:

বইয়ের প্রচার রবীন্দ্রনাথও করেছেন: রফিকুজ্জামান রণি

উপন্যাস লিখবার সময় আমি অন্য যেকোন লেখা থেকে বিরত থাকি: পাপড়ি রহমান

লেখক হওয়া ওঠার গল্পে তিনি বলেন, সমাজের অসঙ্গতি ও বাস্তব জীবনের জটিলতা আমাকে ভাবায়, মনকে গভীরভাবে নাড়া দেয়। এ অস্থিরতা ও অসঙ্গতি আমাকে প্রতিনিয়ত পীড়া দেয়। এগুলো নিয়ে নিরন্তর লিখতে চেয়েছি। এক সময় অনুভব করলাম, আমার লেখাগুলো কাগজে-কলমে সীমাবদ্ধ না থেকে পাঠকের কাছে পৌঁছানো উচিত।”

তিনি আরো বলেন, “কলমই আমার একমাত্র আশ্রয়, লেখাই আমার সবচেয়ে শক্তিশালী প্রতিবাদ। তখনই সিদ্ধান্ত নেই উপন্যাসটি প্রকাশ করার, যেন পাঠকরাও আমার ভাবনা, অনুভূতি ও বাস্তবতার চিত্র উপলব্ধি করতে পারেন।”

বইটি প্রকাশের নেপথ্যের সীমাবদ্ধতা তুলে ধরে নাজমুল হাসান বলেন, “প্রথম বই প্রকাশের ক্ষেত্রে চ্যালেঞ্জ থাকবেই। পাণ্ডুলিপি প্রস্তুত করা থেকে শুরু করে প্রকাশক খোঁজা, মানসম্মত সম্পাদনা ও কাভার ডিজাইনের মতো বিষয়গুলোতে অনেক সময় ও পরিশ্রম করতে হয়েছে। কখনো মনে হয়েছে হয়তো পেরে উঠব না, তবে নিজের উপর বিশ্বাস ছিল।”

উপন্যাসটির নামকরণের কারণ জানতে চাইলে তিনি বলেন, “ইতি মানে শেষ। তবে শেষ মানেই শেষ নয়, বরং নতুন শুরুর সূচনা। আমার উপন্যাসেও জীবনের কিছু অধ্যায়ের শেষ এবং সেখান থেকে নতুন কিছু শুরু হওয়ার গল্প তুলে ধরা হয়েছে।”

তরুণ লেখকদের প্রতি আত্নবিশ্বাসী থাকার আহ্বান জানিয়ে এ লেখক বলেন, “লেখালেখির প্রতি ভালোবাসা এবং সমাজের বাস্তবতাকে উপলব্ধি করা খুব জরুরি। পাশাপাশি নিয়মিত পড়া ও লেখার চর্চা চালিয়ে যেতে হবে। সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ হলো, আত্মবিশ্বাস রাখা ও সমালোচনা থেকে শেখা।”

উপন্যাসের ঘটনা বর্ণনা করতে গিয়ে তিনি বলেন, “উপন্যাসের এক গুরুত্বপূর্ণ মুহূর্তে প্রধান চরিত্র বুঝতে পারে, যার উপর সে সবসময় নির্ভর করত, সেই ব্যক্তি আসলে তার জীবনে অনেক বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছে। এ উপলব্ধি তার জীবনের মোড় ঘুরিয়ে দেয়। সে সিদ্ধান্ত নেয় পুরোনো সম্পর্কের ইতি টেনে নতুনভাবে জীবন শুরু করার।”

ঢাকা/তানিম/মেহেদী

.

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর উপন য স

এছাড়াও পড়ুন:

বিশ্লেষণ: ইসরায়েলিরা এখন বুঝতে পারছে ফিলিস্তিনি ও লেবানিজরা কী ভোগ করছে

ফিলিস্তিনের গাজাকে মৃত্যু উপত্যকা বানিয়ে, প্রতিবেশী লেবাননকে ধ্বংসস্তূপে পরিণত করে এবার ইরানের বিরুদ্ধে যুদ্ধে নামায় ইসরায়েলের জনগণ সত্যিকার অর্থে বিভীষিকার মধ্যে বেঁচে থাকার অভিজ্ঞতা পাচ্ছে। ইরানের পাল্টা হামলায় গুঁড়িয়ে যাওয়া ভবন ও স্থাপনার বাসিন্দারা কঠিন পরিস্থিতির মধ্যে দিয়ে যাচ্ছে। ক্ষেপণাস্ত্রের আঘাতে, ভেঙে পড়া স্থাপনার নিচে চাপা পড়ে মারা যাওয়া স্বজনের লাশ যে কতটা যন্ত্রণার, তা ইসরায়েলিরা এবার উপলবিদ্ধ করছে।

ইসরায়েল ও ইরানের মধ্যে হামলা, পাল্টা হামলার বাস্তবতা নিয়ে আলজাজিরা কথা বলেছে সামরিক ও রাজনৈতিক বিশ্লেষক এলিজা জে. ম্যাগনিয়ার সঙ্গে। তিনি মনে করেন, দুই দেশের মধ্যে চলমান সংঘাত আরো গুরুতর রূপ নেবে। তবে তিনি বলেন, ধ্বংসযজ্ঞ অব্যাহত থাকলে ইসরায়েলের সাধারণ মানুষের সমর্থন কমে আসতে পারে।

প্যারিস থেকে এলিজা মাগনিয়ার আলজাজিরাকে বলেন, “আমার মনে হচ্ছে পরিস্থিতি আরো খারাপের দিকে যাবে, কারণ এটি সেই যুদ্ধের শুরুর মাত্র কয়েক দিন, যেটা ইসরায়েল ইরানের বিরুদ্ধে ঘোষণা করেছে।”

আরো পড়ুন:

লেবাননে ইসরায়েলি ড্রোন হামলায় হিজবুল্লাহ কমান্ডার নিহত

মার্কিন প্রতিনিধিদলের সঙ্গে লেবানন প্রেসিডেন্টের বৈঠক

এলিজা ম্যাগনিয়ার একজন অভিজ্ঞ যুদ্ধবিষয়ক সংবাদদাতা ও রাজনৈতিক ঝুঁকি বিশ্লেষক, যার অভিজ্ঞতা ৩৫ বছরেরও বেশি। তিনি মধ্যপ্রাচ্য, উত্তর আফ্রিকা, ইউরোপ এবং পশ্চিম এশিয়ার বিভিন্ন সংঘাত কাভার করেছেন। বর্তমানে তিনি আলরাই মিডিয়া গ্রুপ-এর সঙ্গে যুক্ত এবং ইরাকসংক্রান্ত বিষয়ে পরামর্শ দিয়ে থাকেন। সামরিক বিশ্লেষণ ও রাজনৈতিক ভাষ্য বিশ্লেষণের ওপর ভিত্তি করে গড়ে উঠেছে তার দক্ষতা, যার মাধ্যমে তিনি সংশ্লিষ্ট অঞ্চলের চলমান সংঘাত ও ভূরাজনৈতিক পরিস্থিতি নিয়ে গভীর পর্যালোচনা হাজির করেন।

আলজাজিরার প্রশ্নের জবাবে এলিজা ম্যাগনিয়ার বলেন, “ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী, সামরিক বাহিনীসহ শীর্ষ কর্মকর্তারা এরইমধ্যে জনগণকে সতর্ক করে দিয়েছেন যে, এই যুদ্ধ খুবই ভয়াবহ হবে এবং এর মূল্য দিতে হবে চরমভাবে। কিন্তু ইরানের বিরুদ্ধে যুদ্ধ নিয়ে নেতানিয়াহুর পেছনে দাঁড়িয়ে থাকা ইসরায়েলি সমাজ এত ভয়াবহ ধ্বংসের আশঙ্কা করেনি। কারণ ১৯৭৩ সালের পর থেকে ইসরায়েল আর কোনো রাষ্ট্রের সঙ্গে এমন বড় মাত্রার যুদ্ধে যায়নি এবং কখনো এত বড় হামলা সহ্য করেনি; তাও আবার তেল আবিবের কেন্দ্রস্থলে।”

তিনি আরো বলেন, “তাই এখন তারা উপলব্ধি করতে শুরু করেছে ফিলিস্তিনিরা কী ভোগ করেছে, লেবানিজরা কী সহ্য করেছে। তারা নিজের চোখে ধ্বংস দেখতে পাচ্ছে- তেল আবিবে, হাইফায় ভবন ধসে পড়ছে, চারদিকে আগুন জ্বলছে। সম্পত্তি বলে কিছু আর অবশিষ্ট নেই। মাত্র এক দিনেই আটজন নিহত, ২৫০ জন আহত; ইসরায়েলে বহু বছর ধরে এমন কিছু ঘটেনি। এসব পরিস্থিতির জন্য ইসরায়েলি সমাজ মোটেই প্রস্তুত ছিল না।”

ঢাকা/রাসেল

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • বিশ্লেষণ: ইসরায়েলিরা এখন বুঝতে পারছে ফিলিস্তিনি ও লেবানিজরা কী ভোগ করছে