ঢাকা উত্তর ও দক্ষিণ সিটি করপোরেশন এলাকার ১৯টি খাল সংস্কারের কর্মসূচি নেওয়া হয়েছে। প্রথম ধাপে ছয়টি খাল সংস্কারের মাধ্যমে শুরু হয়েছে এ কর্মসূচি। গতকাল রোববার ঢাকার মিরপুরে ডিএনসিসির বাউনিয়া খাল পারে সংস্কার কাজের উদ্বোধন করেন তিন উপদেষ্টা।
সড়ক থেকে খালে ভাসমান এক্সক্যাভেটরে লালগালিচা বিছানো হয়। উদ্বোধন অনুষ্ঠান শেষে পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয় এবং পানিসম্পদ উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান, গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয় এবং শিল্প উপদেষ্টা আদিলুর রহমান খান এবং স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়া এর ওপর দিয়ে হেঁটে এক্সক্যাভেটরে পৌঁছে সমন্বিতভাবে খাল সংস্কার কার্যক্রম উদ্বোধন করেন।

উদ্বোধন অনুষ্ঠানে চলতি বছরের মধ্যেই ঢাকার ১৯ খাল দখল ও দূষণমুক্ত করা হবে জানিয়ে সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান বলেন, ঢাকার খালগুলোতে প্রাণ ফিরিয়ে আনতে হবে। খালগুলো হবে প্রাণকেন্দ্র। খালের আশপাশের বাসাবাড়ির বর্জ্য পরিকল্পিতভাবে নির্দিষ্ট স্থানে ফেলার ব্যবস্থা করতে হবে। এ জন্য স্থানীয়দের নিয়ে কমিটি করা হবে। দুই কিলোমিটার পরপর একটি কমিটি থাকবে, তারা তদারকি করবে।
সংস্কার কাজ শুরু হওয়া খালগুলো হলো– ডিএনসিসি এলাকার বাউনিয়া, কড়াইল, রূপনগর ও বেগুনবাড়ি এবং ডিএসসিসি এলাকার মাণ্ডা ও কালুনগর। কার্যক্রমের মধ্যে সীমানা নির্ধারণ, খাল পরিষ্কার, পার সংরক্ষণসহ ব্লু নেটওয়ার্ক নির্মাণ করার কথা রয়েছে।

খালে মাছ ও পারে চাষাবাদের পরিকল্পনা রয়েছে উল্লেখ করে পরিবেশ উপদেষ্টা বলেন, ‘কাজ শেষ করতে সময় লাগবে। আমরা শুরু করে দিচ্ছি। খাল খনন হবে আগে; এর পর পুনরুদ্ধার করা হবে। পুনরুদ্ধারের সময় অনেক বাধা আসবে, তা সবাই মিলে রুখতে হবে।’
অনুষ্ঠানে আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়া অন্তর্বর্তী সরকার ‘সংস্কার এবং বিচারের এজেন্ডা’ নিয়ে কাজ করছে বলে জানান। তিনি বলেন, ‘অতি স্বল্প সময়ের মধ্যে আমাদের পক্ষে বড় বড় সমস্যার সমাধান করা সম্ভব নয়। পুরো দেশকে ঠিক করে ফেলা স্বল্প সময়ের মধ্যে সম্ভব নয়। তবে আমরা আপনাদের কিছু মডেল দিয়ে যেতে চাই। নাগরিকদের আমরা কিছু উদাহরণ দেখিয়ে যেতে চাই– এভাবেও কাজ করা সম্ভব।’

এদিকে খাল সংস্কারে ভোর থেকেই বাউনিয়া খাল পারে গোটা দশেক এক্সক্যাভেটর জড়ো করা হয়। দুটি এক্সক্যাভেটর ভাসমান অবস্থায় খালের ভেতর রাখা হয়। বাকিগুলোর সঙ্গে সড়কে সারি দিয়ে রাখা হয় গোটা দশেক ডাম্প ট্রাক। বায়ুদূষণ রোধের ভারী যন্ত্র ছাড়াও ছিলেন অর্ধশত মশক নিধন কর্মী, শতাধিক শ্রমিক ও পরিচ্ছন্নতাকর্মী।
এক্সক্যাভেটরে লালগালিচা বিছানোর খবর বিভিন্ন গণমাধ্যমে প্রকাশিত হলে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে সমালোচনার ঝড় ওঠে। সৈয়দা রিজওয়ানা হাসানের কাছেও এক সাংবাদিক প্রশ্ন রাখেন, ‘আগে

মেয়ররা ধুমধাম করে খাল 
উদ্ধার কার্যক্রম উদ্বোধন করলেও লালগালিচা থাকত না। আজ তো উপদেষ্টারা খালে নামলেন লালগালিচার ওপর দিয়ে।’ উত্তরে তিনি বলেন, ‘আমি ওটা খেয়াল করিনি।’
পরে গণমাধ্যমে পাঠানো ডিএনসিসির জনসংযোগ কর্মকর্তা মকবুল হোসাইন সই করা ব্যাখ্যায় বলা হয়, ভাসমান এক্সক্যাভেটর একটি অস্থায়ী স্থানে রাখা হয়। এতে ওঠার রাস্তা অনেক ঢালু ও কাদামাটির। এক্সক্যাভেটরের মেঝে পিচ্ছিল থাকায় অতিথিদের নিরাপদ যাতায়াত ও চলাচল এলাকা দৃষ্টিগ্রাহ্য করতে একটি লাল রঙের কার্পেটের মতো ম্যাট ব্যবহার করা হয়েছে। এটি কোনো আনুষ্ঠানিক লালগালিচা নয়।
 

.

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: উপদ ষ ট

এছাড়াও পড়ুন:

মুসলমান বলেই রোহিঙ্গারা ভয়াবহ পরিস্থিতির শিকার

রোহিঙ্গা সম্প্রদায়ের দুরবস্থা বর্তমান সময়ে অন্যতম করুণ মানবিক সংকট বলে উল্লেখ করেছেন প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস। তিনি বলেছেন, শুধু মুসলমান হওয়ার কারণেই রোহিঙ্গারা এই ভয়াবহ পরিস্থিতির শিকার।

গতকাল সোমবার রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় তুরস্কের একটি সংসদীয় প্রতিনিধিদলের সঙ্গে সাক্ষাতের সময় এ কথা বলেন প্রধান উপদেষ্টা। পাঁচ সদস্যের ওই প্রতিনিধিদলের নেতৃত্ব দিয়েছেন তুরস্ক-বাংলাদেশ সংসদীয় মৈত্রী গ্রুপের সভাপতি ও তুর্কি পার্লামেন্ট সদস্য মেহমেত আকিফ ইয়িলমাজ।

সাক্ষাতে দুই পক্ষ বাণিজ্য, বিনিয়োগ ও মানবিক সহায়তার ক্ষেত্রগুলোতে দ্বিপক্ষীয় সহযোগিতা আরও জোরদার করার উপায় নিয়ে আলোচনা করে। এ সময় মেহমেত আকিফ ইয়িলমাজ বলেন, তুরস্ক ও বাংলাদেশের মধ্যে গভীর সাংস্কৃতিক ও ঐতিহাসিক সম্পর্ক রয়েছে। দুই দেশের মধ্যে বিদ্যমান দৃঢ় বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্কের ওপর আলোকপাত করেন তিনি।

ইয়িলমাজ বলেন, তাঁদের প্রতিনিধিদল রোববার কক্সবাজারে রোহিঙ্গা শিবির পরিদর্শন করেছে এবং তুর্কি বিভিন্ন সরকারি ও বেসরকারি সংস্থা, বিশেষ করে তুর্কি ফিল্ড হাসপাতালের মানবিক কার্যক্রম সম্পর্কে অবহিত হয়েছে। এ সময় রোহিঙ্গা সম্প্রদায়ের প্রতি তুরস্কের অবিচল সমর্থনের জন্য কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন প্রধান উপদেষ্টা। তুর্কি উদ্যোক্তাদের বাংলাদেশে বিনিয়োগের আহ্বান জানান তিনি।

অধ্যাপক ইউনূস বলেন, ‘রোহিঙ্গা সম্প্রদায়ের দুরবস্থা আমাদের সময়ের অন্যতম করুণ মানবিক সংকট। তারা শুধু মুসলমান বলেই এই ভয়াবহ পরিস্থিতির শিকার এবং তাদের নাগরিকত্ব কেড়ে নেওয়া হয়েছে।’ তিনি আরও বলেন, ‘আট বছর ধরে আশ্রয়শিবিরে থাকায় রোহিঙ্গা শিশুদের শিক্ষা ও ভবিষ্যৎ সুযোগ একেবারেই সীমিত হয়ে পড়েছে। এই অবস্থা হতাশা ও অস্থিতিশীলতার জন্ম দিতে পারে।’

সম্পর্কিত নিবন্ধ