কেঁদে কেঁদে নায়িকা পপি বললেন, দেহটা ছাড়া কিছুই আমার ছিল না
Published: 6th, February 2025 GMT
জোরপূর্বক জমি দখলের ঘটনাকে কেন্দ্র করে এক সময়ের জনপ্রিয় নায়িকা সাদিকা পারভীন পপি এখন তুমুল আলোচনায়। তার বিরুদ্ধে জমি দখলের চেষ্টার অভিযোগ তুলেছেন তার মাসহ পরিবারের সদস্যরা। এমনকি জিডি করা হয়েছে পপির বিরুদ্ধে। বিষয়টি নিয়ে সাময়িকভাবে চুপ থাকলেও এবার বিষয়ে কথা বলেছেন এই নায়িকা।
বৃহস্পতিবার (৬ ফেব্রুয়ারি) গণমাধ্যমে পাঠানো একটি ভিডিও বার্তায় পপি বলেন, ‘আমার দেহটা ছাড়া কোনো কিছুই আমার ছিল না। এতো বছর আমি যে টাকা উপার্জন করেছি সমস্ত অর্থ পরিবার আমার থেকে নিয়ে নিয়েছে। কারণ, আমার টাকায় কেনা অনেক সম্পত্তি আমার নামে কেনা ছিল না। অ্যাকাউন্টগুলো শূন্য। একটা সময় এসে মানুষের বেঁচে থাকার জন্য কিছু জিনিস প্রয়োজন হয়। একটা সময় যখন দেখলাম আমার পরিবারই আমার সব কিছু নিয়ে নিয়েছে। তারপরও আমি চুপ ছিলাম। যাদের কোলেপিঠে করে মানুষ করেছি আমি তাদের দ্বারায় নির্যাতিত হয়েছি। তারা আমাকে শারীরিকভাবে নির্যাতন করেছে, আমার টাকা চুরি করে আমাকেই মারার পরিকল্পনা করেছে। আমাকে মেরে ফেলার জন্য খুনিও ভাড়া করেছে।’
মঙ্গলবার পপির বিরুদ্ধে গণমাধ্যমে কথা তার মা মরিয়ম বেগম মেরি। এরপর মায়ের কথা উল্লেখ করে হুহু করে কেঁদে ফেলেন পপি। বলেন, ‘মা তো অনেক বড় একটা বিষয়। যার কোনো তুলনা হয় না। কিন্তু পৃথিবীতে সব মা মা না। ভালো মাও আছে খারাপ মাও আছে। দুর্ভাগ্যবশত আমার মা হয়তো আমাকে সেভাবে ভালোবাসতে পারেনি। কারণ, আমি আমার পরিবারের কাছে সোনার ডিমপারা একটা হাঁস, দুধ দেওয়া একটা গরু কিংবা টাকা ছাপানোর একটা মেশিন ছিলাম। একজন মানুষ যখন মেশিন হিসেবে পরিচিত পায় তার মূল্য মেশিন হিসেবেই থাকে। ফলে সন্তান হিসেবে সেই ভালোবাসাটা হয়তো পাইনি। তার পরও মায়ের প্রতি আমার কোনো অভিযোগ নেই।’
পপি জানান, তার ভাই-বোনদের ব্যাবহার ও তাদের অনৈতিক কার্যক্রমের কারণে তিনি পরিবার থেকে দূরে ছিলেন। শেষ পর্যন্ত নিজের টাকায় কেনা জমি কিনতে গিয়ে তাকে ভূমি দস্যু হতে হল।
সবশেষে পরিবারে প্রতি অনুরোধ জানান পপি। তিনি বলেন, ‘পরিবারের প্রতি আমার অনুরোধ, আমাকে চেনার দরকার নেই। আপনারা শুধু আমাকে ভালো থাকতে দিন। তাহলেই আমি খুশি। আমি কার কতদিন বাঁচবো। যেকদিন বাঁচবো সুন্দরভাবে বাঁচতে চাই, একটু ভালো থাকতে চাই, সৃষ্টিকর্তার নাম করতে চাই, কাজ করতে দিয়ে যে বদনাম কামিয়েছি যেগুলো মুছে ফেলে সুন্দরভাবে মরতে চাই।’
এর আগে পপির বিরুদ্ধে জমি দখলের চেষ্টার অভিযোগ তুলে ৩ ফেব্রুয়ারি সোনাডাঙ্গা থানায় সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করেছেন তার বোন ফিরোজা পারভীন। জিডি সূত্রে জানা গেছে, পৈতৃক ৬ কাঠা জমি দখলের নেওয়ার জন্য স্বামী আদনান উদ্দিন কামাল, কল্লোল মজুমদার ও শিপনসহ পপি ৩ ফেব্রুয়ারি দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে শিববাড়ি এলাকার ভাড়াটিয়া বাড়ির সামনে যান। এতে বাধা দিলে পপি ও তার স্বামী ফিরোজা পারভীনকে হুমকি দেন।
.উৎস: Samakal
এছাড়াও পড়ুন:
সাজেকে নিহত খুবি শিক্ষার্থী রিংকীর মরদেহ নেওয়া হবে গাইবান্ধা
খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের পদার্থবিজ্ঞান ডিসিপ্লিনের সেশনাল ট্যুরে সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত শিক্ষার্থী মোছা. রুবিনা আফসানা রিংকীর মরদেহ বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের তত্ত্বাবধানে তার বাড়ি গাইবান্ধায় নেওয়া হবে।
এছাড়া শিক্ষার্থী নিহত ও আহতের ঘটনায় আজ বৃহস্পতিবার (১৮ আগস্ট) বিশ্ববিদ্যালয়ে শোক ঘোষণা করা হয়েছে। একই সাথে এদিন সকল ক্লাস-পরীক্ষাও বন্ধ রয়েছে।
বৃহস্পতিবার (১৮ আগস্ট) বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র বিষয়ক পরিচালক অধ্যাপক ড. মো. নাজমুস সাদাত এ তথ্য জানিয়েছেন।
তিনি বলেন, ‘‘খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের পদার্থবিজ্ঞান ডিসিপ্লিনের শিক্ষার্থীদের সেশনাল ট্যুরের সময় রাঙামাটির সাজেক যাওয়ার পথে গাড়ি দুর্ঘটনার শিকার হয়। এতে পদার্থবিজ্ঞান ডিসিপ্লিনের শিক্ষার্থী মোছা. রুবিনা আফসানা রিংকী নিহত হন। দুর্ঘটনায় নিহত রুবিনা আফসানা রিংকির মরদেহ বিশ্ববিদ্যালয়ের কর্তৃপক্ষের তত্ত্বাবধানে তাদের বাড়ি গাইবান্ধায় নেওয়া হবে। এই দুর্ঘটনায় আরো কয়েকজন শিক্ষার্থী ও শিক্ষক আহত হয়েছেন। আহতদেরকে দ্রুত চিকিৎসার জন্য খাগড়াছড়ি সদর হাসপাতালে নেওয়া হয়েছে। উন্নত চিকিৎসার জন্য তিনজনকে চট্টগ্রামে স্থানান্তর করা হচ্ছে ।”
তিনি বলেন, “এই শোকাবহ ঘটনায় খুলনা বিশ্ববিদ্যালয় পরিবার গভীরভাবে মর্মাহত। আজ বৃহস্পতিবার বিশ্ববিদ্যালয়ে শোক ঘোষণা করা হয়েছে, সকল ক্লাস পরীক্ষা বন্ধ রাখা হয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের পক্ষ থেকে খাগড়াছড়ি এবং বান্দরবানের সিভিল প্রশাসন ও পুলিশ প্রশাসনের সাথে সার্বক্ষণিক যোগাযোগ রাখা হচ্ছে। ছাত্রদের সঙ্গে শিক্ষকবৃন্দ উপস্থিত আছেন। তিনি নিজে এবং সহকারী পরিচালকসহ কর্মকর্তারা খাগড়াছড়ি রওনা হয়েছেন।”
খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের মসজিদসহ সকল উপাসনালয়ে নিহত শিক্ষার্থীর আত্মার মাগফিরাত এবং আহতদের সুস্থতার জন্য বিশেষ দোয়া ও প্রার্থনা করার জন্য সকলের প্রতি অনুরোধ করেন তিনি।
এদিকে, সাজেকে শিক্ষার্থী নিহত ও আহতের ঘটনায় খুলনা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে সব ধরনের সেশনাল ট্যুর অনির্দিষ্টকালের জন্য স্থগিত করেছে কর্তৃপক্ষ। বুধবার (১৭ সেপ্টেম্বর) বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-রেজিস্ট্রার কাকলি রহমান স্বাক্ষরিত এক বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।
বিজ্ঞপ্তিতে উল্লেখ করা হয়, পদার্থবিজ্ঞান ডিসিপ্লিনের ২০২৩-২০২৪ শিক্ষাবর্ষ ৪র্থ বর্ষ টার্ম-২ এর সেশনাল ট্যুরে অংশগ্রহণরত অবস্থায় সড়ক দুর্ঘটনায় একজন শিক্ষার্থীর মৃত্যু হয়েছে। এ সময়ে আরো কয়েকজন শিক্ষার্থী গুরুতর আহত হয়ে চিকিৎসাধীন আছেন। শিক্ষার্থীর এই অকাল মৃত্যুতে খুলনা বিশ্ববিদ্যালয় পরিবার গভীরভাবে শোকাহত এবং আহতদের দ্রুত চিকিৎসার জন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে।
এ পরিপ্রেক্ষিতে পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত সকল দূরপাল্লার সেশনাল ট্যুর স্থগিত করার বিষয়ে সংশ্লিষ্ট সকলকে অনুরোধ করেছে কর্তৃপক্ষ।
উল্লেখ্য, রাঙামাটির বাঘাইছড়ির সাজেক পর্যটনকেন্দ্রে যাওয়ার পথে চান্দের গাড়ি পাহাড়ের খাদে পড়ে খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের এক শিক্ষার্থী নিহত হন। এসময় আহত হয়েছেন আরো ১১ জন। বুধবার দুপুর ১২টার দিকে সাজেকের হাউসপাড়া এলাকায় এ দুর্ঘটনা ঘটে।
নিহত রুবিনা আফসানা রিংকী খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের পদার্থবিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থী ছিলেন। আহতরা সবাই একই বিভাগের শিক্ষার্থী।
ঢাকা/নুরুজ্জামান/এস