জোরপূর্বক জমি দখলের ঘটনাকে কেন্দ্র করে এক সময়ের জনপ্রিয় নায়িকা সাদিকা পারভীন পপি এখন তুমুল আলোচনায়। তার বিরুদ্ধে জমি দখলের চেষ্টার অভিযোগ তুলেছেন তার মাসহ পরিবারের সদস্যরা। এমনকি জিডি করা হয়েছে পপির বিরুদ্ধে। বিষয়টি নিয়ে সাময়িকভাবে চুপ থাকলেও এবার বিষয়ে কথা বলেছেন এই নায়িকা।

বৃহস্পতিবার (৬ ফেব্রুয়ারি) গণমাধ্যমে পাঠানো একটি ভিডিও বার্তায় পপি বলেন, ‘আমার দেহটা ছাড়া কোনো কিছুই আমার ছিল না। এতো বছর আমি যে টাকা উপার্জন করেছি সমস্ত অর্থ পরিবার আমার থেকে নিয়ে নিয়েছে। কারণ, আমার টাকায় কেনা অনেক সম্পত্তি আমার নামে কেনা ছিল না। অ্যাকাউন্টগুলো শূন্য। একটা সময় এসে মানুষের বেঁচে থাকার জন্য কিছু জিনিস প্রয়োজন হয়। একটা সময় যখন দেখলাম আমার পরিবারই আমার সব কিছু নিয়ে নিয়েছে। তারপরও আমি চুপ ছিলাম। যাদের কোলেপিঠে করে মানুষ করেছি আমি তাদের দ্বারায় নির্যাতিত হয়েছি। তারা আমাকে শারীরিকভাবে নির্যাতন করেছে, আমার টাকা চুরি করে আমাকেই মারার পরিকল্পনা করেছে। আমাকে মেরে ফেলার জন্য খুনিও ভাড়া করেছে।’

মঙ্গলবার পপির বিরুদ্ধে গণমাধ্যমে কথা তার মা মরিয়ম বেগম মেরি। এরপর মায়ের কথা উল্লেখ করে হুহু করে কেঁদে ফেলেন পপি। বলেন, ‘মা তো অনেক বড় একটা বিষয়। যার কোনো তুলনা হয় না। কিন্তু পৃথিবীতে সব মা মা না। ভালো মাও আছে খারাপ মাও আছে। দুর্ভাগ্যবশত আমার মা হয়তো আমাকে সেভাবে ভালোবাসতে পারেনি। কারণ, আমি আমার পরিবারের কাছে সোনার ডিমপারা একটা হাঁস, দুধ দেওয়া একটা গরু কিংবা টাকা ছাপানোর একটা মেশিন ছিলাম। একজন মানুষ যখন মেশিন হিসেবে পরিচিত পায় তার মূল্য মেশিন হিসেবেই থাকে। ফলে সন্তান হিসেবে সেই ভালোবাসাটা হয়তো পাইনি। তার পরও মায়ের প্রতি আমার কোনো অভিযোগ নেই।’

পপি জানান, তার ভাই-বোনদের ব্যাবহার ও তাদের অনৈতিক কার্যক্রমের কারণে তিনি পরিবার থেকে দূরে ছিলেন। শেষ পর্যন্ত নিজের টাকায় কেনা জমি কিনতে গিয়ে তাকে ভূমি দস্যু হতে হল।

সবশেষে পরিবারে প্রতি অনুরোধ জানান পপি। তিনি বলেন, ‘পরিবারের প্রতি আমার অনুরোধ, আমাকে চেনার দরকার নেই। আপনারা শুধু আমাকে ভালো থাকতে দিন। তাহলেই আমি খুশি। আমি কার কতদিন বাঁচবো। যেকদিন বাঁচবো সুন্দরভাবে বাঁচতে চাই, একটু ভালো থাকতে চাই, সৃষ্টিকর্তার নাম করতে চাই, কাজ করতে দিয়ে যে বদনাম কামিয়েছি যেগুলো মুছে ফেলে সুন্দরভাবে মরতে চাই।’

এর আগে পপির বিরুদ্ধে জমি দখলের চেষ্টার অভিযোগ তুলে ৩ ফেব্রুয়ারি সোনাডাঙ্গা থানায় সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করেছেন তার বোন ফিরোজা পারভীন। জিডি সূত্রে জানা গেছে, পৈতৃক ৬ কাঠা জমি দখলের নেওয়ার জন্য স্বামী আদনান উদ্দিন কামাল, কল্লোল মজুমদার ও শিপনসহ পপি ৩ ফেব্রুয়ারি দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে শিববাড়ি এলাকার ভাড়াটিয়া বাড়ির সামনে যান। এতে বাধা দিলে পপি ও তার স্বামী ফিরোজা পারভীনকে হুমকি দেন।

.

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: পর ব র দখল র

এছাড়াও পড়ুন:

মুসলমান বলেই রোহিঙ্গারা ভয়াবহ পরিস্থিতির শিকার

রোহিঙ্গা সম্প্রদায়ের দুরবস্থা বর্তমান সময়ে অন্যতম করুণ মানবিক সংকট বলে উল্লেখ করেছেন প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস। তিনি বলেছেন, শুধু মুসলমান হওয়ার কারণেই রোহিঙ্গারা এই ভয়াবহ পরিস্থিতির শিকার।

গতকাল সোমবার রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় তুরস্কের একটি সংসদীয় প্রতিনিধিদলের সঙ্গে সাক্ষাতের সময় এ কথা বলেন প্রধান উপদেষ্টা। পাঁচ সদস্যের ওই প্রতিনিধিদলের নেতৃত্ব দিয়েছেন তুরস্ক-বাংলাদেশ সংসদীয় মৈত্রী গ্রুপের সভাপতি ও তুর্কি পার্লামেন্ট সদস্য মেহমেত আকিফ ইয়িলমাজ।

সাক্ষাতে দুই পক্ষ বাণিজ্য, বিনিয়োগ ও মানবিক সহায়তার ক্ষেত্রগুলোতে দ্বিপক্ষীয় সহযোগিতা আরও জোরদার করার উপায় নিয়ে আলোচনা করে। এ সময় মেহমেত আকিফ ইয়িলমাজ বলেন, তুরস্ক ও বাংলাদেশের মধ্যে গভীর সাংস্কৃতিক ও ঐতিহাসিক সম্পর্ক রয়েছে। দুই দেশের মধ্যে বিদ্যমান দৃঢ় বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্কের ওপর আলোকপাত করেন তিনি।

ইয়িলমাজ বলেন, তাঁদের প্রতিনিধিদল রোববার কক্সবাজারে রোহিঙ্গা শিবির পরিদর্শন করেছে এবং তুর্কি বিভিন্ন সরকারি ও বেসরকারি সংস্থা, বিশেষ করে তুর্কি ফিল্ড হাসপাতালের মানবিক কার্যক্রম সম্পর্কে অবহিত হয়েছে। এ সময় রোহিঙ্গা সম্প্রদায়ের প্রতি তুরস্কের অবিচল সমর্থনের জন্য কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন প্রধান উপদেষ্টা। তুর্কি উদ্যোক্তাদের বাংলাদেশে বিনিয়োগের আহ্বান জানান তিনি।

অধ্যাপক ইউনূস বলেন, ‘রোহিঙ্গা সম্প্রদায়ের দুরবস্থা আমাদের সময়ের অন্যতম করুণ মানবিক সংকট। তারা শুধু মুসলমান বলেই এই ভয়াবহ পরিস্থিতির শিকার এবং তাদের নাগরিকত্ব কেড়ে নেওয়া হয়েছে।’ তিনি আরও বলেন, ‘আট বছর ধরে আশ্রয়শিবিরে থাকায় রোহিঙ্গা শিশুদের শিক্ষা ও ভবিষ্যৎ সুযোগ একেবারেই সীমিত হয়ে পড়েছে। এই অবস্থা হতাশা ও অস্থিতিশীলতার জন্ম দিতে পারে।’

সম্পর্কিত নিবন্ধ