আমতলীতে বাস কাউন্টার দখল নিয়ে বিএনপির দুই পক্ষের সংঘর্ষ, আহত ১৭
Published: 8th, February 2025 GMT
বরগুনার আমতলীতে বাস কাউন্টার দখলে নেওয়াকে কেন্দ্র করে বিএনপির দুই পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষে ১৭ জন আহত হয়েছে। আজ শনিবার বেলা সাড়ে ১১টার দিকে আমতলী পৌর এলাকার বাঁধঘাটে এ ঘটনা ঘটে।
আহত ব্যক্তিদের মধ্যে রাহাত ফকির (২৯), ফরহাদ ফকির (৩২), আলী (২৫), সামসুল হক চৌকিদার (৪২), রেজাউল চৌকিদার (৩৫), বেল্লাল চৌকিদার (৩০), আল আমিন (৩৭), মিজানুর রহমান (৩৫), শহীদ (২১), বায়েজিদ (২৬) ও মিল্টনকে (৩৮) পটুয়াখালী ও বরিশাল শের–ই–বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। আহত অন্য ব্যক্তিদের স্থানীয়ভাবে প্রাথমিক চিকিৎসা দেওয়া হয়।
স্থানীয় ও দলীয় সূত্রে জানা গেছে, আমতলী পৌরসভার বটতলা ইউনিক পরিবহনের কাউন্টার দখল নিয়ে আমতলী পৌর বিএনপির আহ্বায়ক কবির ফকির ও আমতলী উপজেলা যুবদলের যুগ্ম আহ্বায়ক সামসুল হক চৌকিদারের মধ্যে বিরোধ চলছে।
সামসুল হক চৌকিদারের দাবি, তাঁকে ইউনিক পরিবহন কর্তৃপক্ষ কাউন্টার পরিচালনার দায়িত্ব দিয়েছে। অন্যদিকে কবির ফকিরের দাবি, ইউনিক পরিবহন কর্তৃপক্ষ তাঁকে কাউন্টার পরিচালনার দায়িত্ব দিয়েছে। তবে চার মাস ধরে কবির ফকির ওই বাস কাউন্টার পরিচালনা করেছেন।
শনিবার সকালে যুবদল নেতা সামসুল হক চৌকিদারের লোকজন বাস কাউন্টারটি দখল করতে যান। এ সময় কবির ফকিরের চাচাতো ভাই আমতলী উপজেলা বিএনপির বহিষ্কৃত আহ্বায়ক জালাল ফকিরের দুই ছেলে রাহাত ফকির ও ফরহাদ ফকিরের নেতৃত্বে বাস কাউন্টার দখলে বাধা দেওয়া হয়। এ সময় দুই পক্ষের লোকজন সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ে। খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।
কয়েকজন প্রত্যক্ষদর্শী বলেন, শনিবার সকালে বটতলা ঢাকা বাসস্ট্যান্ডের ইউনিক পরিবহন কাউন্টারের তালা সামসুল হক চৌকিদারের লোকজন ভেঙে ফেলেন। এ নিয়ে বাসস্ট্যান্ডে দুই পক্ষের মধ্যে পাল্টাপাল্টি ধাওয়ার ঘটনা ঘটে। এ ঘটনার জের ধরে ওই দিন দুপুরে বাঁধঘাট চৌরাস্তায় কবির ফকিরের লোকজন সামসুল হক চৌকিদারের ওপর হামলা চালান। পরে দুই পক্ষ সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ে। দেশীয় অস্ত্র নিয়ে দফায় দফায় সংঘর্ষে বেশ কয়েকজন আহত হয়েছেন।
এ বিষয়ে আমতলী উপজেলা ছাত্রদলের আহ্বায়ক সোয়েব ইসলাম হেলাল বলেন, ‘আমার ভাই বেল্লাল চৌকিদার কোনো রাজনীতির সঙ্গে জড়িত নয়। তার ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানে রাহাত ফকির ও ফরহাদ ফকিরসহ তার সহযোগীরা হামলা করে আট লাখ টাকা ছিনিয়ে নিয়ে গেছে। একই সঙ্গে আমার ভাইকে কুপিয়ে জখম করেছে।’
ইউনিক পরিবহন কর্তৃপক্ষ আমাকে লিখিত কাউন্টার পরিচালনার দায়িত্ব দিয়েছে। কিন্তু কবির ফকির কাউন্টার জোরপূর্বক দখলে রেখেছেন। আমি এ বিষয়টি পুলিশকে জানিয়েছি।সামসুল হক চৌকিদার, আমতলী উপজেলা যুবদলের যুগ্ম আহবায়কআমতলী উপজেলা যুবদলের যুগ্ম আহবায়ক সামসুল হক চৌকিদার বলেন, ‘ইউনিক পরিবহন কর্তৃপক্ষ আমাকে লিখিত কাউন্টার পরিচালনার দায়িত্ব দিয়েছে। কিন্তু কবির ফকির কাউন্টার জোরপূর্বক দখলে রেখেছেন। আমি এ বিষয়টি পুলিশকে জানিয়েছি। পুলিশ চেষ্টা করেও কবির ফকিরকে মানাতে পারেনি। শনিবার আমি কাউন্টারে গেলে কবির ফকিরের লোকমার কাউন্টার সামসুল হক চৌকিদার ও তার লোকজন দখলে করতে যায়। এতে আমার লোকজন বাধা দেয়। এতে ক্ষিপ্ত হয়ে সামসুল হক চৌকিদার ও তার লোকজন আমার দুই ভাইয়ের ছেলেসহ সাতজনকে কুপিয়ে জখম করেছে।জন আমাদের দেশীয় অস্ত্র দিয়ে কুপিয়ে জখম করেছে।’
আমার কাউন্টার সামসুল হক চৌকিদার ও তাঁর লোকজন দখলে করতে যায়। এতে আমার লোকজন বাধা দেয়। এতে ক্ষিপ্ত হয়ে সামসুল হক ও তাঁর লোকজন আমার দুই ভাইয়ের ছেলেসহ সাতজনকে কুপিয়ে জখম করেছে।কবির ফকির, আমতলী পৌর বিএনপির আহ্বায়কতবে এ বিষয়ে আমতলী পৌর বিএনপির আহ্বায়ক কবির ফকির বলেন, ‘আমার কাউন্টার সামসুল হক চৌকিদার ও তাঁর লোকজন দখলে করতে যায়। এতে আমার লোকজন বাধা দেয়। এতে ক্ষিপ্ত হয়ে সামসুল হক ও তাঁর লোকজন আমার দুই ভাইয়ের ছেলেসহ সাতজনকে কুপিয়ে জখম করেছে।’
আমতলী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের চিকিৎসা কর্মকর্তা রাশেদ মাহমুদ বলেন, আহত সাতজনকে চিকিৎসা দিয়ে পটুয়াখালী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।
আমতলী থানার ওসি মো.
উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: র ল কজন ব ব এনপ র স ঘর ষ য বদল উপজ ল
এছাড়াও পড়ুন:
অস্ত্র দিয়ে ডাকাত তকমা, উদ্ধার করল নৌবাহিনী
নোয়াখালীর হাতিয়ায় ডাকাত তকমা দিয়ে দু’জনকে পিটিয়ে বিদ্যুতের খুঁটির সঙ্গে বেঁধে রাখা হয়। হাতে ধরিয়ে দেওয়া হয় দেশীয় অস্ত্র। ছবি তুলে ও ভিডিও করে ছেড়ে দেওয়া হয় সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে। উত্তেজিত জনতা তাদের ঘিরে রাখে। যদিও অনেকেই জানতেন না, ঘটনাটি সাজানো। খবর পেয়ে নৌবাহিনীর একটি দল আহত দু’জনকে উদ্ধার করে। সোমবার রাতে উপজেলার জাহাজমারা ইউনিয়নের আমতলী বাজারে এ ঘটনা ঘটে। রাতেই তাদের হাতিয়া থানায় হস্তান্তর করা হয়।
উদ্ধার দু’জন হলেন জাহাজমারা ইউনিয়নের ৩ নম্বর ওয়ার্ড চরহেয়ার এলাকার মজিবুল হকের ছেলে আরিফ হোসেন এবং একই ইউনিয়নের মোল্লাবাজার এলাকার মো. আশরাফের ছেলে মো. আসিফ। এদের মধ্যে আরিফ পেশায় রিকশাচালক।
স্থানীয়রা জানান, জাহাজমারা আমতলী বাজারের পশ্চিম পাশে রাস্তার চর দখল নিয়ে বিএনপির দুই পক্ষের মধ্যে বিরোধ চলছে। এক পক্ষের নেতৃত্ব দেন জহির চেরাং, অন্য পক্ষের নেতৃত্ব দেন কাউসার। কাউসারপক্ষ অনেক দিন থেকে চরটির দখল নিয়ে আছে। ঘটনার দিন সোমবার বিকেলে জহির চেরাংয়ের লোকজন চরটির দখল নেওয়ার জন্য সংঘবদ্ধ হয়। পরে প্রতিপক্ষের ধাওয়া খেয়ে পালিয়ে গেলেও দু’জনকে ধরে তারা বাজারে নিয়ে আসে। পরে ওই দু’জনকে বিদ্যুতের খুঁটির সঙ্গে বেঁধে পরিকল্পিতভাবে ডাকাত নাটক সাজানো হয়।
ছবি তুলে ও ভিডিও করে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছেড়ে দেওয়ায় সেখানে উৎসুক জনতা ভিড় করে। খবর পেয়ে নৌবাহিনীর একটি দল অবরুদ্ধ দু’জনকে উদ্ধার করে থানায় নিয়ে আসে। পরে নৌবাহিনী ও পুলিশের দুটি গোয়েন্দা দলের তদন্তের মাধ্যমে প্রকৃত ঘটনা বেরিয়ে আসে।
আসিফের বাবা আশরাফ জানান, তাঁর ছেলের বিরুদ্ধে থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি পর্যন্ত নেই। অথচ তাঁকে ডাকাত বানানোর চেষ্টা করা হয়েছে। তাঁর ছেলে নিরপরাধ দাবি করেন তিনি।
আমতলী বাজার বণিক সমিতির সভাপতি মো. লিটন জানান, চরের আধিপত্য নিয়ে দু’পক্ষের সংঘর্ষের ঘটনায় দু’জনকে আটক করা হয়। পরে নৌবাহিনী এসে তাদের নিয়ে যায়। তারা ডাকাতির সঙ্গে জড়িত কিনা, তাঁর জানা নেই।
হাতিয়া থানার ওসি একেএম আজমল হুদা বলেন, উদ্ধার দু’জনের বিরুদ্ধে ডাকাতির সঙ্গে জড়িত থাকার যে তথ্য দেওয়া হয়েছে, তার কোনো সত্যতা পাওয়া যায়নি। এ বিষয়ে তদন্ত করে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।