Samakal:
2025-11-03@15:01:22 GMT

কৃষক অবহেলিত কেন?

Published: 9th, February 2025 GMT

কৃষক অবহেলিত কেন?

দীর্ঘকাল ধরে কৃষকসমাজ অবহেলিত। তাদের পরিশ্রমের মাধ্যমে খাদ্য উৎপাদিত হয়, কিন্তু রাষ্ট্র তাদের যথাযথ মূল্য ও স্বীকৃতি দেয় না। অনেক কৃষক এখনও আধুনিক প্রযুক্তি, ভালো বীমা এবং সরকারি সহায়তা থেকে বঞ্চিত।

সরকার কিছু উন্নয়নমূলক পদক্ষেপ নিলেও মূল সমস্যাগুলো এখনও রয়ে গেছে। কৃষকদের জন্য দীর্ঘমেয়াদি ও কার্যকরী সহায়তা, উন্নত প্রশিক্ষণ এবং সঠিক মনোযোগ তাদের নাজুক অবস্থা পরিবর্তন করতে পারে। তাদের স্বার্থরক্ষা এবং তাদের উন্নয়ন অবশ্যই দেশের উন্নতির জন্য অপরিহার্য। তারা দেশের অর্থনীতির মেরুদণ্ড, কিন্তু তাদের পরিস্থিতি উন্নত করার জন্য পর্যাপ্ত পদক্ষেপ এখনও নেওয়া হয়নি। আমাদের দেশে কৃষকদের যেসব সমস্যার মুখোমুখি হতে হয়, তার মধ্যে অন্যতম হলো ঋণের বোঝা, মূল্যহীন ফসলের দাম, অভ্যন্তরীণ বাজারে তাদের ন্যায্যমূল্য না পাওয়া, আধুনিক কৃষিপ্রযুক্তির অভাব, প্রশিক্ষণের স্বল্পতা এবং দুর্বল বীমা ব্যবস্থা ইত্যাদি। সরকার ভর্তুকি মূল্যে সার, কীটনাশক ও আধুনিক যন্ত্রপাতির সরবরাহ, কৃষি তথ্যসেবা এবং সেচ ব্যবস্থার উদ্যোগ নিয়ে তাদের জন্য কিছু উন্নয়নমূলক কাজ করছে। এই উদ্যোগগুলো আরও উন্নত এবং ব্যাপকভাবে বাস্তবায়ন করতে হবে, যাতে কৃষকরা প্রকৃত সুবিধা পান।

একই সঙ্গে কৃষকদের সংগঠিত করা, তাদের অধিকার প্রতিষ্ঠা এবং দীর্ঘমেয়াদি উন্নয়ন পরিকল্পনার মধ্যে অন্তর্ভুক্ত করা খুবই জরুরি। প্রয়োজন কৃষকদের জন্য আরও সমন্বিত পরিকল্পনা এবং তাদের জীবিকার উন্নয়নের জন্য প্রকৃত নীতি গ্রহণ করতে হবে। কৃষি খাতের প্রতিটি স্তরে প্রয়োগযোগ্য সঠিক নীতি এবং সমর্থন কৃষককে তাদের অবহেলা থেকে মুক্ত করতে সাহায্য করবে।

দেশের মানুষকে কৃষকদের প্রতি আরও সচেতন ও শ্রদ্ধাশীল হতে হবে। কারণ তারাই আমাদের খাবার সরবরাহের প্রধান অবলম্বন। কৃষকদের প্রতি অবহেলা এবং তাদের সমস্যা দীর্ঘদিনের। শুধু সরকারি নীতির মধ্যে সীমাবদ্ধ না থেকে আমাদের সবারই এই সমস্যার প্রতি মনোযোগী হওয়া প্রয়োজন। কৃষকদের সঠিক মূল্য ও সম্মান দেওয়া, তাদের জীবিকা নিশ্চিত করা এবং তাদের খাদ্য নিরাপত্তা ঠিক রাখতে বড় ধরনের পরিবর্তন দরকার।

প্রথমত, কৃষির আধুনিকীকরণ এক বিশাল চ্যালেঞ্জ। অনেক কৃষক এখনও ঐতিহ্যবাহী পদ্ধতিতে চাষাবাদ করেন, যা তাদের উৎপাদনশীলতা কমিয়ে দেয়। আধুনিক প্রযুক্তির প্রবর্তন, সঠিক প্রশিক্ষণ এবং কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা বা ড্রোন প্রযুক্তি ব্যবহার কৃষকদের জন্য একটি বড় সুযোগ হতে পারে। এগুলোর উপযোগিতা এবং ব্যবহার সবার কাছে নিশ্চিত করতে হবে।

দ্বিতীয়ত, কৃষকদের জন্য অর্থনৈতিক সহায়তা অত্যন্ত জরুরি। ঋণের চাপ ও বঞ্চনা, অস্বচ্ছ কৃষিবাজার, প্রকৃত দামে ফসল বিক্রি করতে না পারা– এই সমস্যাগুলোর সমাধান ছাড়া তাদের জীবনমান উন্নত করা সম্ভব নয়। সরকারি সহযোগিতার পাশাপাশি, বেসরকারি খাতেরও এই বিষয়ে এগিয়ে আসা উচিত। এ ছাড়া কৃষকদের জন্য স্থায়ী সুদহীন ঋণ, অর্থনৈতিক সুরক্ষা এবং সঠিক মূল্য নিশ্চিত করা জরুরি।

তৃতীয়ত, একটি কার্যকর এবং স্বচ্ছ কৃষিবাজার ব্যবস্থা তৈরি করা দরকার। এখনও অনেক কৃষক তাদের উৎপাদিত ফসলের ন্যায্য মূল্য পাযন না, যেহেতু মধ্যস্বত্বভোগীরা অধিকাংশ লাভ নিয়ে যায়। ফসলের ন্যায্যমূল্য পাওয়া নিশ্চিত করতে আধুনিক বাজার ব্যবস্থা, সরাসরি কৃষক-বাজার লিঙ্ক এবং সরবরাহ চেইন উন্নয়ন খুবই গুরুত্বপূর্ণ।

এ ছাড়া, কৃষকদের সামাজিক নিরাপত্তা, স্বাস্থ্যসেবা এবং শিক্ষার সুযোগ বৃদ্ধি করা এবং কৃষি খাতে নারীর অংশগ্রহণ বাড়ানোও গুরুত্বপূর্ণ। কৃষক পরিবারের সদস্যদের জন্য স্বাস্থ্য, শিক্ষা ও অন্যান্য সুযোগ-সুবিধা নিশ্চিত করা তাদের উন্নয়নে সহায়ক হবে।

তবে, সব সমস্যার মূলে রয়েছে কৃষি খাতে দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনা, টেকসই উন্নয়ন এবং কৃষকদের উন্নতির জন্য সঠিক রাজনৈতিক সদিচ্ছা। একমাত্র তখনই তারা তাদের মেধা ও পরিশ্রমের সঠিক মূল্য পাবেন এবং তারা দেশের উন্নয়নে সঠিকভাবে অবদান রাখতে পারবেন।

আক্তার মনি
শিক্ষার্থী, ইসলামের ইতিহাস ও সংস্কৃতি, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়, ঢাকা
aktermonia031@gmail.

com

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: ন শ চ ত কর দ র জন য ব যবস থ অবহ ল সমস য সরক র

এছাড়াও পড়ুন:

সামুদ্রিক মাছে ভরপুর আড়ত, দাম কেমন

স্তূপ করে রাখা ইলিশে ভরে গেছে ঘাট। চারদিকে মাছের গন্ধ, বরফের ঠান্ডা ধোঁয়া, ক্রেতার হাঁকডাক। কেউ দর কষছেন, কেউ আবার টাটকা ইলিশ দেখে ব্যাগভর্তি করে নিচ্ছেন। গতকাল শনিবার দুপুরে চট্টগ্রাম নগরের কর্ণফুলী নদীর তীরে ফিশারিঘাটের নতুন মাছবাজারে গিয়ে দেখা গেল এই ব্যস্ত চিত্র।

নিষেধাজ্ঞার পর বাজার যেন নিজের ছন্দে ফিরেছে। গত ২৫ অক্টোবর সাগরে মাছ ধরার ২২ দিনের নিষেধাজ্ঞা শেষ হয়েছে। এর পর থেকেই একের পর এক ট্রলার ভিড়ছে ঘাটে—কোনো ট্রলারভর্তি লইট্টা, কোনোটা ছুরি, চিংড়ি, ফাইস্যা বা ইলিশে ভরপুর। ভোর থেকেই আড়তগুলোয় শুরু হয় নিলাম, পরে সেই মাছ চলে যায় শহরের বাজারে। এমনকি জেলার গ্রামীণ হাটবাজারেও পৌঁছে যাচ্ছে ট্রাকভর্তি মাছ।

গতকাল দুপুরে গিয়ে দেখা গেল, নদীর ঘাট ঘেঁষে ট্রলার। ঘাটে নামছে বরফঠান্ডা মাছের বাক্স। আড়তের সামনে ইলিশের স্তূপ ঘিরে ক্রেতাদের ভিড়। বিক্রেতারা তখন বরফ ছুড়ে দিচ্ছেন মাছের ওপর। ছোট আকারের ইলিশের দাম ক্রেতাদের কেউ হাঁকছেন ১০ হাজার, কেউ ১২ হাজার টাকা—শেষমেশ দর থামছে ১৬ হাজার টাকায়। ওই দরে বিক্রি হলো ১ মণ ছোট আকারের ইলিশ। এক কেজিতে পড়ছে পাঁচ থেকে ছয়টি করে মাছ।

নিষেধাজ্ঞার সময় মাছ ধরা বন্ধ থাকায় বাজারে সরবরাহে ঘাটতি ছিল। এখন ধীরে ধীরে সব ঠিক হচ্ছে। তবে গত কয়েক দিন সাগরের নিম্নচাপ ও ঘূর্ণিঝড়ের আশঙ্কায় অনেক জেলে গভীর সমুদ্রে যেতে পারেননি। ফলে বড় ইলিশ আসছে কম।নুর মোহাম্মদ, আড়তদার

মেসার্স হাজি আবদুল গণি ফিশিংয়ের স্বত্বাধিকারী নুর মোহাম্মদ প্রথম আলোকে জানান, নিষেধাজ্ঞা উঠে যাওয়ার পর থেকেই জেলেরা সমুদ্রে পাড়ি জমিয়েছেন। কিন্তু বড় আকারের ইলিশ এখনো তেমন ধরা পড়ছে না। ছোট ও মাঝারি ইলিশই বাজারে বেশি আসছে।

ব্যস্ত ঘাট, ব্যস্ত আড়ত

ফিশারিঘাটে এখন সকাল থেকেই যেন উৎসবের আমেজ। ট্রলার ঘাটে ভিড়লেই শুরু হয় কর্মচাঞ্চল্য। আড়তগুলোর সামনেই চলছে বাক্সে মাছ ভরানোর কাজ। আড়তদারেরা জানান, চট্টগ্রামের এই ঘাটে প্রতিদিন লাখ লাখ টাকার মাছ বিক্রি হয়। নিষেধাজ্ঞার সময় বাজার একটু স্তিমিত থাকে। অন্য সময় লেগে থাকে ব্যস্ততা।

ছোট ইলিশ কেজিতে ৪০০ থেকে ৪৫০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। আবার কোনো ইলিশ সাড়ে ৩০০ টাকায়ও পাওয়া যাচ্ছে। বড় আকারের যেগুলো, সেগুলোর দাম একটু চড়া; প্রতি কেজি ১ হাজার থেকে ১ হাজার ২০০ টাকা।

আড়তদার নুর মোহাম্মদের মতে, নিষেধাজ্ঞার সময় মাছ ধরা বন্ধ থাকায় বাজারে সরবরাহে ঘাটতি ছিল। এখন ধীরে ধীরে সব ঠিক হচ্ছে। তবে গত কয়েক দিন সাগরের নিম্নচাপ ও ঘূর্ণিঝড়ের আশঙ্কায় অনেক জেলে গভীর সমুদ্রে যেতে পারেননি। ফলে বড় ইলিশ আসছে কম। একই আক্ষেপ করলেন মেসার্স মা মরিয়ম ফিশিংয়ের কর্ণধার ছৈয়দ নুর। তিনি বলেন, বড় আকারের ইলিশ কম আসছে। তবে অন্যান্য সামুদ্রিক মাছ প্রচুর ধরা পড়ছে। বিক্রিও ভালো।

দরদাম যেমন

ফিশারিঘাটের পাইকার ও খুচরা বিক্রেতাদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেল, ছোট ইলিশ কেজিতে ৪০০ থেকে ৪৫০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। আবার কোনো ইলিশ সাড়ে ৩০০ টাকায়ও পাওয়া যাচ্ছে। বড় আকারের যেগুলো, সেগুলোর দাম একটু চড়া—প্রতি কেজি ১ হাজার থেকে ১ হাজার ২০০ টাকা।

মাছের ওপর বরফ ছিটানো হচ্ছে। গতকাল দুপুর ১২টায় চট্টগ্রাম নগরের ফিশারিঘাট নতুন মাছ বাজারে

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • সেঞ্চুরির অপেক্ষায় মুশফিকুর, তিন দিনেই জয় রাজশাহীর
  • বিশ্বকে ১৫০ বার ধ্বংস করার মতো পারমাণবিক অস্ত্র আমাদের আছে: ট্রাম্প
  • দুই সপ্তাহের মধ্যে তেহরানে সুপেয় পানি ফুরিয়ে যেতে পারে
  • চলন্ত অবস্থায় বৈদ্যুতিক গাড়ি চার্জ করতে সক্ষম সড়ক চালু ফ্রান্সে
  • জ্বালানি খাতে দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনা প্রয়োজন
  • বাজারে আগাম সবজি আসতে দেরি, দাম চড়া
  • যশোরে জিআই পণ্য খেজুর গুড় তৈরির রস সংগ্রহে গাছ প্রস্তুতির উদ্বোধন
  • টমাহক কত দূরে আঘাত হানতে পারে, রাডারে কেন ধরা পড়ে না
  • সামুদ্রিক মাছে ভরপুর আড়ত, দাম কেমন
  • ইউক্রেনকে টমাহক ক্ষেপণাস্ত্র দিতে পেন্টাগনের সায়, চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেবেন ট্রাম্প