৮০ শতক জমি নিয়ে ১৮ বছরের টানাপোড়েন
Published: 9th, February 2025 GMT
সিলেট নগরীর রিকাবীবাজারের পুলিশ লাইন লুসাই গির্জা সমিতির ৮০ শতক জমির মালিকানা নিয়ে ১৮ বছর ধরে টানাপোড়েন চলছে। ২০০৭ সালে সেখানে একটি টাওয়ার নির্মাণকে কেন্দ্র করে শুরু হয় আইনি লড়াই। পরে চলে দখল-পাল্টা দখল। সিরাজুল ইসলাম নামের এক আইনজীবীর সঙ্গে সমিতিসহ একাধিক পক্ষের দুই ডজন মামলার পরও বিরোধ নিষ্পত্তি হয়নি। পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে গতকাল রোববার নগরীর একটি হোটেলে সংবাদ সম্মেলন করেন ত্রিপক্ষীয় সমঝোতা কমিটির সমন্বয়ক তৌহিদুল ইসলাম। ভূমি বিরোধের প্রেক্ষাপটে পুলিশ লাইন লুসাই গির্জা সমিতি, ক্ষতিগ্রস্ত ব্যক্তি ও লিজগ্রহীতার সমন্বয়ে এ কমিটি গঠন করা হয়।
উভয় পক্ষের কাগজপত্র ঘেঁটে দেখা যায়, লুসাই সম্প্রদায়ের কিছু লোক রিকাবীবাজার পুলিশ লাইন এলাকায় বসবাস করতেন। খ্রিষ্ট ধর্মাবলম্বী এ সম্প্রদায়ের হারেঙ্গা লুসাই ছিলেন ব্রিটিশ পুলিশ বাহিনীর সুবেদার। ১৯৪৭ সালে ১ দশমিক ৩৭ একর জমি লুসাই সম্প্রদায়ের প্রার্থনা ও মৃতদেহ সমাহিত করতে বরাদ্দ দেয় সরকার। এর মধ্যে ৪৪ শতক জমি সিলেট স্টেডিয়াম অন্তর্ভুক্ত করে নেয়। ১৯৭৪ সালে গির্জা সমিতির প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি হারেঙ্গা লুসাইয়ের নামে জমিটি রেকর্ড হয়। ১৯৮৬
সালে তিনি মারা গেলে তাঁর মরদেহ সেখানে সমাহিত করা হয়।
গতকালের সংবাদ সম্মেলনে অভিযোগ করা হয়, সিলেট জেলা বারের আইনজীবী সিরাজুল ইসলাম ২০০৬ সালে জাল আমমোক্তারনামার মাধ্যমে গির্জা সমিতির ইজারাকৃত জমির মধ্যে ৮০ শতক ইম্পালস বিল্ডার্স লিমিটেড কোম্পানির নামে দলিল সৃষ্টি করেন। বিভিন্ন জনের কাছ থেকে শেয়ার ও ফ্ল্যাটের বিপরীতে তিনি কয়েক কোটি টাকা আদায় করেন। তাঁর নামে দুদকের একটিসহ থানা ও আদালতে ১১টি মামলা রয়েছে। অন্যদিকে সিরাজ বিভিন্ন ব্যক্তির বিরুদ্ধে ১৩টি মামলা করেছেন।
সংবাদ সম্মেলন থেকে সংখ্যালঘু লুসাই খ্রিষ্টান সম্প্রদায়ের ভূমি দখলকারী সিরাজুল ইসলামের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ এবং লুসাইরা যেন তাদের জায়গায় শান্তিপূর্ণ ধর্মীয় কার্যক্রম পরিচালনা করতে পারে সেজন্য প্রশাসনের হস্তক্ষেপ কামনা করেন। উপস্থিত ছিলেন গির্জা সমিতির সদ্য সাবেক চেয়ারম্যান জমিংথাংগা লুসাই, ভুক্তভোগী নাজমুল ইসলাম, এম এ সাত্তার, সেলিনা সুলতানা, রুহিন খান ও কামরান আহমদ।
অভিযোগের বিষয়ে সিরাজুল ইসলাম দাবি করেন, আমি বৈধভাবে জমি কিনে সেখানে ভবন করি। লুসাই সম্প্রদায়ের কোনো সমিতি নেই। জায়গার মালিক ছিলেন হারেঙ্গা লুসাই। তাঁর উত্তরাধিকারীরা বিক্রি করে দিয়েছে।
উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: ভবন ন র ম ণ স র জ ল ইসল ম
এছাড়াও পড়ুন:
বার কাউন্সিল আদেশ ও বিধিমালা যেভাবে পড়বেন
বাংলাদেশ বার কাউন্সিলের আইনজীবী তালিকাভুক্তির লিখিত পরীক্ষা ২৮ জুন অনুষ্ঠিত হবে। প্রার্থীদের সুবিধার জন্য লিখিত পরীক্ষার প্রস্তুতির পরামর্শ প্রকাশ করা হচ্ছে। আজ পঞ্চম পর্বে থাকছে বার কাউন্সিল আদেশ ও বিধিমালা ১৯৭২ বিষয়ে প্রস্তুতির পরামর্শ। পরামর্শ দিয়েছেন ঢাকা জজকোর্টের আইনজীবী রিয়াজুর রহমান।
বাংলাদেশ বার কাউন্সিল আদেশ ও বিধিমালা ১৯৭২ মূলত আইনজীবীদের পেশাজীবনের অনুসরণীয় বিধিমালা। এ আইন থেকে আইনজীবী তালিকাভুক্তি লিখিত পরীক্ষায় দুটি প্রশ্ন আসবে। উত্তর দিতে হবে একটি। নম্বর থাকবে ১০।
প্রশ্নপত্রের মানবণ্টন দেখেই বোঝা যাচ্ছে আইনটি কেমন হতে পারে। মূলত বার কাউন্সিলের গঠন, আইনজীবী হওয়ার যোগ্যতা এবং একজন আইনজীবী হিসেবে সমাজের প্রতি, মক্কেলের প্রতি, সহকর্মীদের প্রতি যেসব দায়িত্ব পালন করতে হবে, তা এ আইনে বলা হয়েছে। বাস্তবধর্মী ও পেশাজীবনে অতি চর্চিত একটি আইন হলো বাংলাদেশ বার কাউন্সিল আদেশ ও বিধিমালা ১৯৭২। এ আইন থেকে বিষয়ভিত্তিক পড়াশোনা করলে পরীক্ষায় ভালো নম্বর পাওয়া সম্ভব।
যেমন বার কাউন্সিল কীভাবে গঠিত হয়, বার কাউন্সিলের কার্যবালি কী, সদস্যরা কীভাবে নির্বাচিত হন, কতগুলো কমিটি রয়েছে, কমিটির কাজ কী কী—এগুলো পড়তে হবে। অনেকেই আছে বার কাউন্সিল ও বার অ্যাসোশিয়েশনের মধ্যে পার্থক্য বোঝেন না। এটি ভালো করে রপ্ত করতে হবে। এমন প্রশ্ন হরহামেশা পরীক্ষায় আসে।
এ ছাড়া বার ট্রাইব্যুনালের গঠন ও কার্যাবলি, আইনজীবীদের পেশাগত অসদাচরণের জন্য কী কী ধরনের শাস্তি রয়েছে, বার কাউন্সিল কি আইনজীবীদের বিরুদ্ধে সুয়োমোটো শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করতে পারে—বিষয়গুলো কোনোভাবেই বাদ দেওয়া যাবে না। অনুচ্ছেদ ৩৩, ৩৪, ৩৫, ৩৬, ৩২ এবং বিধি ৪১, ৪১ক ও ৫০–এ এসব বিষয়ে বিস্তারিত বলা আছে। সেগুলো ভালো করে পড়তে হবে। অনুসন্ধান করার ক্ষেত্রে ট্রাইব্যুনালের ক্ষমতা, একজন আইনজীবী হিসেবে আরেক আইনজীবীর বিরুদ্ধে ট্রাইব্যুনালে অভিযোগ দায়েরের পদ্ধতি সম্পর্কে বিস্তর জানতে হবে। এসব বিষয় থেকে নিয়মিত প্রশ্ন আসে।
পেশাগত বিধি অংশে রচনামূলক প্রশ্ন আসতে পারে। যেমন পেশাগত বিধি এবং নীতিমালার আলোকে আদালতের প্রতি, মক্কেলের প্রতিসহ আইনজীবীদের প্রতি ও জনসাধারণের প্রতি একজন আইনজীবীর দায়িত্ব ও কর্তব্য পর্যালোচনা করতে বলা হয়। বর্তমান ঢাকা বারসহ বেশ কয়েকটি বার অ্যাসোশিয়েশনে এডহক কমিটি রয়েছে। এডহক বার কাউন্সিলের গঠন ও ফাংশনস সম্পর্কে প্রশ্ন আসতে পারে। এগুলো ভালো করে পড়তে হবে।
অনেক সময়ে আইনজীবীর বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়েরসংক্রান্ত মুসাবিদা করতে দেওয়া হয়। তাই এই মুসাবিদা নিয়মিত অনুশীলন করবেন। মনে রাখবেন, মামলার মুসাবিদা ও আইনজীবীর বিরুদ্ধে অভিযোগের মুসাবিদার ধরন কিন্তু এক নয়। তাই যেকোনো ভালো একটি বই থেকে ফরমেটটি দেখে নেবেন এবং অনুশীলন করবেন। একই সঙ্গে বিগত কয়েক বছরের প্রশ্ন সমাধান করবেন। এ আইন থেকে বিগত বছরের প্রশ্ন রিপিটও হয়।
একটি বিষয় মনে রাখবেন, আইনটি সহজ বলে অবহেলা করার সুযোগ নেই। কারণ, কৃতকার্য হওয়ার জন্য এই ১০ নম্বর অনেক বেশি গুরুত্ব বহন করে।