সংস্কার ব্যতিত নির্বাচন হলে তা প্রশ্নবিদ্ধ হবে: ফয়জুল করীম
Published: 10th, February 2025 GMT
যদি রাষ্ট্র সংস্কার ব্যতিত নির্বাচন দেওয়া হয়, সেই নির্বাচন প্রশ্নবিদ্ধ হবে। সেই নির্বাচন জনগণ গ্রহণ করবে না। তাড়াহুড়ের কিছু নেই, আগে প্রয়োজনীয় সংস্কার করে তারপর নির্বাচন দেওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের নায়েবে আমীর মুফতী সৈয়দ মুহাম্মদ ফয়জুল করীম।
সোমবার (১০ ফেব্রুয়ারি) বিকেলে রাঙামাটি শহরের পৌরসভা চত্বরে অনুষ্ঠিত ‘সংখ্যানুপাতিক পদ্ধতিতে জাতীয় সংসদ নির্বাচন এবং রাষ্ট্রীয়ভাবে ইসলামী হুকুমত প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে গণসমাবেশ’ অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ সব কথা বলেন।
মুফতী সৈয়দ মুহাম্মদ ফয়জুল করীম বলেন, পার্বত্য শান্তিচুক্তি করা ভুল ছিল। একইসঙ্গে পার্বত্য এলাকায় বিদ্যমান সকল কোটা বাতিলের দাবি জানিয়ে মেধা ও যোগ্যতার ভিত্তিতে সকল নিয়োগ করার দাবি করেন তিনি।
পাহাড়ে সকলের ভূমি বসবাসের অধিকার দাবি করে তিনি বলেন, ‘‘এখানে বাঙালি-পাহাড়ি কোনো ভেদাভেদ থাকবে না। পাহাড়ের নিরাপত্তা বাড়াতে সীমান্তে সড়ক দ্রুত শেষ করতে হবে। আমাদের দেশের এক ইঞ্চি মাটিও কাউকে দখল করতে দিবো না। দখল করতে চাইলে রক্ত দিয়ে তা প্রতিহত করবো।’’
বক্তব্যে মুফতী সৈয়দ মুহাম্মদ ফয়জুল করীম বলেন, ‘‘আমরা সংখ্যানুপাতিক হারে নির্বাচন চাই। যদি সংখ্যানুপাতিক হারে নির্বাচন হয়, তাহলে সংসদে জাতীয় সরকার গঠন হবে। যেখানে প্রতিটি মানুষের প্রতিনিধি সংসদে থাকবে। প্রত্যেকে সংসদে কথা বলতে পারবে। বিএনপিও জাতীয় সরকার চায়। আর জাতীয় সরকারের জন্য সবচেয়ে উত্তম পদ্ধতি হলো সংখ্যানুপাতিক সিস্টেম নির্বাচন।’’ তিনি অন্তর্বর্তী সরকারের কাছে এ পদ্ধতিতে নির্বাচন দেওয়ার দাবি জানান।
তিনি আরো বলেন, ‘‘ইসলামী সরকার ক্ষমতায় আসলে সাম্যের মাধ্যমে দেশ পরিচালনা করা হবে। ইসলামী অর্থনীতি গরিবদের জন্য। যে পরিমাণ টাকা লুট করা হয়েছে, সেগুলো গরিবদের জন্য যদি দেওয়া হতো, দেশে কোনো গরিব থাকত না। প্রতিটি শিশু দেড় লাখ টাকা ঋণের বোঝা নিয়ে জন্ম গ্রহণ করছে।’’
গণসমাবেশ ইমলামী আন্দোলন বাংলাদেশ রাঙামাটি শাখার সভাপতি আলহাজ্ব মুহাম্মাদ জসিম উদ্দীনের সভাপতিত্ব বক্তব্য রাখেন ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ প্রেসিডিয়াম সদস্য অধ্যাপক মাহবুবুর রহমান, কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক আলহাজ্ব মুহাম্মদ জান্নাতুল ইসলাম, মাওলানা আরিফ মেহের উদ্দিন, আলহাজ্ব শরিফুল আলম চৌধুরী।
ঢাকা/শংকর/বকুল
.উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর সরক র ইসল ম
এছাড়াও পড়ুন:
নির্বাচনের আগেই জুলাই সনদের আইনি ভিত্তি দিতে হবে
জুলাই সনদের আইনি ভিত্তি আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আগেই দেওয়ার দাবি জানিয়েছেন ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের আমির চরমোনাই পীর সৈয়দ মুহাম্মাদ রেজাউল করীম। তিনি বলেন, পিলখানা হত্যাকাণ্ড ও শাপলা চত্বরের গণহত্যাসহ উল্লেখযোগ্য বিষয়গুলোকে জুলাই সনদে অন্তর্ভুক্ত করতে হবে।
আজ সোমবার বিকেলে ঢাকার জুরাইন রেলগেট–সংলগ্ন বিক্রমপুর প্লাজা চত্বরে এক গণসমাবেশে ইসলামী আন্দোলনের আমির এ কথা বলেন।
পিআর (সংখ্যানুপাতিক প্রতিনিধিত্ব) পদ্ধতিতে জাতীয় নির্বাচন আয়োজন, প্রয়োজনীয় রাষ্ট্রসংস্কার ও জুলাই সনদের আইনি ভিত্তি প্রদান এবং অপরাধী ও খুনিদের দৃশ্যমান বিচারের দাবিতে এই গণসমাবেশের আয়োজন করে ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ কদমতলী-শ্যামপুর থানা।
সমাবেশে ইসলামী আন্দোলনের আমির রেজাউল করীম বলেন, পিআর পদ্ধতিতে জাতীয় নির্বাচন দিতে হবে। বাংলাদেশের মানুষ এখন পিআর পদ্ধতিতে নির্বাচন চায়।
অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টার উদ্দেশে ইসলামী আন্দোলনের আমির বলেন, ‘নতুনভাবে আবার এই নির্বাচনের মাধ্যমে দেশের মানুষকে আপনি কী মেসেজ দিতে চান? আবার সেই স্বৈরাচার আসবে? আবার সেই চাঁদাবাজ আসবে? আবার সেই মায়ের কোলগুলো খালি হবে? দেশের টাকা বিদেশে পাচার হবে? আয়নাঘর তৈরি হবে? পিলখানা হত্যা হবে?’ তিনি বলেন, ‘এটা বাংলাদেশের মানুষ আমরা আর দেখতে চাই না। পরিবর্তন করতে হবে, সংস্কার করতে হবে।’
বিভিন্ন মৌলিক সংস্কারে বিএনপির নোট অব ডিসেন্ট দেওয়ার (দ্বিমত পোষণ করার) বিষয়ে ইসলামী আন্দোলনের আমির বলেন, সরকার গঠনের পরে দুই বছরের ভেতরে সংস্কার করার কথা বলা হচ্ছে। অন্ধকে হাইকোর্ট দেখিয়ে লাভ নেই। হাইকোর্ট এখন সবাই চেনে।
একটি রাজনৈতিক দল জুলাই অভ্যুত্থানের চেতনা এখনো বুঝতে পারেনি উল্লেখ করে সৈয়দ মুহাম্মাদ রেজাউল করীম বলেন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ও জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে দলটির কলঙ্ক রচিত হয়েছে। সামনে নির্বাচনেও বাংলাদেশের মানুষ একই কলঙ্ক রচনা করবে। বাংলাদেশের ভেতরে তারা মাথা উঁচু করে দাঁড়াতে পারবে না।
সমাবেশে জামায়াতে ইসলামীর সেক্রেটারি জেনারেল মিয়া গোলাম পরওয়ার বলেন, অন্তর্বর্তী সরকার সব রাজনৈতিক দলের মধ্যে ঐকমত্য সৃষ্টি করে দলগুলোকে নির্বাচনমুখী করার পরিবেশ সৃষ্টি করতে পারছে না।
জামায়াতের সেক্রেটারি জেনারেল বলেন, ‘সবাই বলেছে, জুলাই সনদকে আইনি ভিত্তি দিতে হবে। একটি বড় দল বলেছে সংবিধানের সংশোধন, আইনি ভিত্তি দেওয়ার এই কাজগুলো এখন হবে না। নির্বাচনের পরে যে সংসদ আসবে, তারাই এসে নাকি সেই কাজগুলো করবে। তাহলে কেন জুলাই সনদের জন্য দুই মাস সময় নষ্ট করা হলো? এর পেছনে নিশ্চয়ই অসৎ উদ্দেশ্য আছে।’
মিয়া গোলাম পরওয়ার বলেন, পিআর পদ্ধতি ছাড়া বাংলাদেশে নিরপেক্ষ নির্বাচন হবে না। উচ্চকক্ষ ও নিম্নকক্ষ দুটিতেই পিআর মানতে হবে, তা না হলে দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত রাজপথের আন্দোলন অব্যাহত থাকবে। দেশবাসীকে আন্দোলনের প্রস্তুতি নেওয়ার আহ্বান জানান তিনি।
গণসমাবেশে সভাপতিত্ব করেন ইসলামী আন্দোলনের প্রেসিডিয়াম সদস্য মাওলানা সৈয়দ মোসাদ্দেক বিল্লাহ আল মাদানী। সঞ্চালনা করেন দলটির সাংগঠনিক সম্পাদক মাওলানা কে এম শরীয়াতুল্লাহ ও ঢাকা মহানগর দক্ষিণের যুগ্ম সম্পাদক মাওলানা আবদুর রাজ্জাক। সমাবেশে আরও বক্তব্য দেন জামায়াতে ইসলামীর কর্মপরিষদ সদস্য মাওলানা খলিলুর রহমান মাদানী, ইসলামী আন্দোলনের প্রেসিডিয়াম সদস্য মাওলানা আশরাফ আলী আকন প্রমুখ।