অপারেশন ডেভিল হান্ট: ফরিদপুরে দুই ইউপি চেয়ারম্যান গ্রেপ্তার
Published: 12th, February 2025 GMT
ফরিদপুরের নগরকান্দায় যৌথ বাহিনীর বিশেষ অভিযান ‘অপারেশন ডেভিল হান্টে’ ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) দুই চেয়ারম্যানকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। গতকাল মঙ্গলবার রাতে নিজ বাড়ি থেকে তাঁদের গ্রেপ্তার করা হয়।
গ্রেপ্তার দুজন হলেন নগরকান্দা উপজেলা আওয়ামী লীগের সহসভাপতি ও ডাঙ্গী ইউপির চেয়ারম্যান ভবুকদিয়া গ্রামের বাসিন্দা কাজী আবুল কালাম (৬১) এবং পুরাপাড়া ইউপির চেয়ারম্যান দফা গ্রামের বাসিন্দা আতাউর রহমান (৪৮)। আতাউরের আওয়ামী লীগে কোনো পদ নেই। তবে সাবেক সংসদ সদস্য শাহদাব আকবরের অনুসারী হিসেবে পরিচিত।
এ সম্পর্কে সহকারী পুলিশ সুপার (নগরকান্দা সার্কেল) মো.
কাজী আবুল কালাম ২০১১, ২০১৬ ও ২০২১—টানা তিনবার চেয়ারম্যান পদে জয়ী হন। ২০১১ সালের নির্বাচনে তাঁর বিরুদ্ধে ফলাফল কারচুপির অভিযোগ এনেছিলেন প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী ও সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান সরদার সাইফুজ্জামান। পরের দুবার আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী হিসেবে নৌকা প্রতীকে নির্বাচন করে জয়ী হন তিনি। তিনি চেয়ারম্যান হওয়ার পর ইউনিয়ন পরিষদের কার্যক্রম ডাঙ্গী গ্রাম থেকে সরিয়ে এনে নিজ গ্রাম ভবুকদিয়ায় অস্থায়ী ইউপি কার্যালয় স্থাপন করেন।
আরও পড়ুনগাজীপুরে ‘অপারেশন ডেভিল হান্টে’ সাবেক এমপিসহ আটক ১০০১০ ফেব্রুয়ারি ২০২৫২০২১ সালের নভেম্বরে অনুষ্ঠিত পুরাপাড়া ইউপির নির্বাচনে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে জয়ী হন আতাউর রহমান। এরপর স্থানীয় সাবেক সংসদ সদস্য প্রয়াত সাজেদা চৌধুরীর ছোট ছেলে শাহদাব আকবরের সঙ্গে তাঁর সখ্য গড়ে উঠে। তাঁর বিরুদ্ধে বিভিন্ন সময় তাঁর ইউপি সদস্যরা টিআর, কাবিখা, কাবিটা, উন্নয়ন প্রকল্পের টাকা, হাটবাজার, এডিবিসহ বিভিন্ন প্রকল্পের টাকা আত্মসাতের অভিযোগ করেছেন। এ বিষয়ে তাঁর বিরুদ্ধে ২০২৩ সালে আট ইউপি সদস্য উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কাছে লিখিত অভিযোগ দিয়েছিলেন।
আরও পড়ুনযৌথ বাহিনীর বিশেষ অভিযান ‘ডেভিল হান্ট’ শুরু০৮ ফেব্রুয়ারি ২০২৫উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: সদস য
এছাড়াও পড়ুন:
চমেক শিক্ষার্থী আবিদুর হত্যা মামলায় খালাসপ্রাপ্ত ১২ জনকে আত্মসমর্পণের নির্দেশ
চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজের (চমেক) শিক্ষার্থী আবিদুর রহমান আবিদকে ১৪ বছর আগে পিটিয়ে হত্যার অভিযোগে করা মামলায় বিচারিক আদালতের রায়ে খালাস পাওয়া ১২ জনকে আত্মসমর্পণ করতে নির্দেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট।
খালাসের রায়ের বিরুদ্ধে বাদীর করা আবেদনের শুনানি নিয়ে বিচারপতি মো. জাকির হোসেন ও বিচারপতি সৈয়দ জাহেদ মনসুরের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ আজ মঙ্গলবার এ আদেশ দেন।
ঘটনাটি ঘটেছিল ২০১১ সালের অক্টোবর মাসে। তখন চমেকের ৫১তম ব্যাচের বিডিএস তৃতীয় বর্ষের ছাত্র ছিলেন আবিদুর রহমান। তাঁর বাড়ি কক্সবাজারের চকরিয়া উপজেলার উত্তর বড়ইতলী গ্রামে। আর আসামিরা চমেক ছাত্রলীগ (বর্তমানে নিষিদ্ধ) শাখার তৎকালীন নেতা-কর্মী ছিলেন।
মামলার এজাহারের ভাষ্য, ২০১১ সালের ১৯ অক্টোবর বেলা আড়াইটা, সন্ধ্যা ৭টা ও রাত ১০টায় তিন দফা পিটুনির পর চিকিৎসার সুযোগ না দিয়ে আবিদুর রহমানকে তাঁর বোনের বাসায় পাঠিয়ে দেওয়া হয়। পরে তাঁর চিকিৎসা করার ব্যবস্থা নেওয়ার ক্ষেত্রে আসামিরা বাধা দেন। পরদিন তাঁকে চমেক হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। চিকিৎসাধীন অবস্থায় ২০১১ সালের ২১ অক্টোবর রাত সাড়ে আটটার দিকে মারা যান আবিদুর রহমান।
এ ঘটনায় আবিদুর রহমানের মামা নেয়ামত উল্লাহ বাদী হয়ে ছাত্রলীগের তৎকালীন ২২ নেতা-কর্মীর বিরুদ্ধে ২০১১ সালের ২৩ অক্টোবর চট্টগ্রামের পাঁচলাইশ মডেল থানায় হত্যা মামলা করেন। মামলার তদন্ত শেষে ২০১২ সালের ফেব্রুয়ারিতে পুলিশ ১২ জনের বিরুদ্ধে আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করে। আর এজাহারভুক্ত অপর ১০ আসামিকে মামলার অভিযোগ থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয়।
আলোচিত এ হত্যা মামলার বিচার শেষে ২০১৯ সালের ১০ জুলাই রায় দেন চট্টগ্রামের অতিরিক্ত মহানগর দায়রা জজ জান্নাতুল ফেরদৌস চৌধুরী। রায়ে আসামিদের খালাস দেওয়া হয়।
বিচারিক আদালতের রায়ে খালাসপ্রাপ্ত ১২ জন হলেন ছাত্রলীগ নিয়ন্ত্রিত ছাত্রসংসদের তৎকালীন সহসভাপতি (ভিপি) মফিজুর রহমান জুম্মা, চমেক ছাত্রলীগ শাখার তৎকালীন সভাপতি সোহেল পারভেজ, সাধারণ সম্পাদক বিজয় সরকার, সহসাধারণ সম্পাদক হিমেল চাকমা, ফেরদৌস রাসেল, শান্ত দেবনাথ, মাহাফুজুর রহমান, ধীমান নাসির উদ্দিন পাটোয়ারী, দেবাশীষ চক্রবর্তী, মোস্তফা কামাল, রাশেদুর রেজা সানি ও সালমান মাহমুদ সিদ্দিকী ওরফে রাফসান।
খালাসের রায়ের বিরুদ্ধে ২ হাজার ৪৭ দিন বিলম্ব মার্জনা চেয়ে চলতি মাসে হাইকোর্টে রিভিশন আবেদন করেন মামলার বাদী।
আদালতে আবেদনকারীর পক্ষে জ্যেষ্ঠ আইনজীবী মো. ওজিউল্লাহ, আইনজীবী মোহাম্মদ শিশির মনির, আজিমুদ্দিন পাটোয়ারী ও ইয়াছিন আলফাজ শুনানিতে ছিলেন।
পরে আবেদনকারীর আইনজীবী মোহাম্মদ শিশির মনির প্রথম আলোকে বলেন, ১২ জনকে ৩০ দিনের মধ্যে বিচারিক আদালতে আত্মসমর্পণ করতে নির্দেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট। রুলে বিচারিক আদালতের দেওয়া রায় কেন বাতিল করা হবে না, তা জানতে চাওয়া হয়েছে।