ভারতের দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী কে হবেন, সেই জল্পনা আজও অব্যাহত। দৌড়ে রয়েছে একাধিক নাম। এর মধ্যে এ পদে এক নারীর কথাও বিবেচনা করা হচ্ছে।

ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি বিদেশ সফরে থাকায় দিল্লির সরকার গঠনের প্রক্রিয়া আপাতত বন্ধ। কিন্তু মুখ্যমন্ত্রী পদ কে পাবেন, তা নিয়ে আলোচনা আছে।

ফ্রান্স ও যুক্তরাষ্ট্র সফর শেষে নরেন্দ্র মোদি দিল্লি ফেরার পরই রাজধানী রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী কে হবেন, বিজেপি তা ঠিক করবে। এখন পর্যন্ত ঠিক আছে, নতুন মুখ্যমন্ত্রী ও মন্ত্রিপরিষদ আগামী রোববার শপথ নেবে।

বিজেপির সভাপতি জে পি নাড্ডা এই অবসরে দিল্লির নেতাদের সঙ্গে আলাদা আলাদা বৈঠক করছেন। কিন্তু কে হবেন মুখ্যমন্ত্রী, তা এখনো কোটি টাকার প্রশ্ন। অথচ ফল ঘোষণার পর এক সপ্তাহ কাটতে চলেছে। এই অবসরে আম আদমি পার্টি (আপ) সরব হয়েছে। তাদের অভিযোগ, সরকার না থাকায় রাজ্যের সব পরিষেবা ও জরুরি কাজ থমকে রয়েছে। ভোগান্তি হচ্ছে সাধারণ মানুষের।

আম আদমির প্রধান অরবিন্দ কেজরিওয়ালকে হারিয়েছেন বিজেপির প্রভেশ শর্মা। তিনি প্রধান দাবিদার। প্রভেশের বাবা সাহেব সিং ভার্মা দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী ছিলেন। তবে তাঁর বিরুদ্ধে ঘৃণাভাষণের বেশ কিছু অভিযোগ আছে। গোষ্ঠীদ্বন্দ্বের ঊর্ধ্বেও তিনি নন।

গত বছর লোকসভা ভোটে বিজেপি নেতৃত্ব দিল্লির সাত সাংসদের মধ্যে ছয়জনকেই বাদ দিয়ে নতুন মুখের ওপর ভরসা রেখেছিলেন। বাদ দেওয়া হয়নি শুধু উত্তর–পূর্ব দিল্লির সংসদ সদস্য ভোজপুরি সিনেমার জনপ্রিয় নায়ক মনোজ তিওয়ারিকে। পূর্ব–উত্তর প্রদেশ ও বিহারের যেসব মানুষ দিল্লিতে পাকাপাকিভাবে বাস করছেন, পূর্বাঞ্চলি বলে যাঁদের পরিচয়, তাঁদের সমর্থন পেতে বিজেপি মনোজ তিওয়ারিকে ব্যবহার করেছে। এই প্রথম পূর্বাঞ্চলীয় ভোটারদের সমর্থন বিজেপি ভালো রকম আদায় করেছে। সে কারণে মনোজও মুখ্যমন্ত্রিত্বের অন্যতম দাবিদার।

বিজেপির দিক থেকে দিল্লির শেষ মুখ্যমন্ত্রী ছিলেন সুষমা স্বরাজ। তাঁর অকালপ্রয়াণের পর মেয়ে বাঁশুরি আইন পেশা ছেড়ে রাজনীতিতে এসেছেন। নিউ দিল্লি কেন্দ্র থেকে গত ভোটে জিতে লোকসভার সদস্যও হয়েছেন। নারী মুখ্যমন্ত্রী করতে হলে তাঁর নামই প্রথম পছন্দ বলে মনে করা হচ্ছে। নারী দাবিদারদের মধ্যে আরও রয়েছেন শালিমারবাগ কেন্দ্র থেকে জয়ী রেখা গুপ্ত ও গ্রেটার কৈলাস কেন্দ্র থেকে জয়ী শিখা রায়।

মুখ্যমন্ত্রী বাছাইয়ের ক্ষেত্রে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি ও কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ অবশ্য ইদানীং বেশ চমক সৃষ্টি করছেন। আগে উত্তরাখন্ড, পরে রাজস্থান, হরিয়ানা ও মধ্যপ্রদেশের পরিচিতদের দাবি উপেক্ষা করে বেছে নিয়েছেন আনকোরা নতুন বিশ্বস্ত মুখ, গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত গ্রহণের আগে যাঁরা কেন্দ্রীয় নেতৃত্বের মতামত নেবেন। দিল্লিতেও যে তেমন হবে না, জোর দিয়ে বলা যায় না। সাসপেন্স আপাতত এটুকুই।

তবে সরকার গঠিত না হলেও বিজেপি থেমে নেই। রাজ্যের আমলা মহলকে ইতিমধ্যেই বলা হয়েছে ১৫ দিন, ৫০ দিন ও ১০০ দিনের মধ্যে রূপায়ণ করা যাবে—এমন সরকারি প্রকল্পগুলোর তালিকা প্রস্তুত করে ফেলতে। রাজনৈতিক নির্দেশ পেয়ে রাজ্যের মুখ্য সচিব বিভাগীয় কর্তাদের এই নির্দেশ দিয়ে বলেছেন, দেশের সঙ্গে দিল্লিও যে দ্রুত ‘বিকশিত’ হতে চলেছে, তার প্রমাণ মানুষের কাছে রাখতে হবে।

নির্দেশে বলা হয়েছে, সরকারি স্বাস্থ্য পরিষেবা, নিকাশি ব্যবস্থা, জঞ্জাল অপসারণ, পানীয় জল সরবরাহের মতো জরুরি বিষয়গুলো কিছু দিন ধরে বেহাল অবস্থার মধ্যে ছিল। দ্রুত সেই অবস্থা শোধরাতে কী কী করতে হবে, তা যেন শুক্রবারের মধ্যে ঠিক করে রাখা হয়। সরকার গড়ার সঙ্গে সঙ্গে সেই কাজ হাতে নিতে হবে। ১০০ দিন অতিক্রান্ত হওয়ার আগেই দেখাতে হবে বিজেপির সরকার কাজের।

বিজেপি এই সঙ্গে আরও জানিয়েছে, নতুন মন্ত্রিসভার প্রথম বৈঠকেই দিল্লিতে কেন্দ্রীয় সরকারের স্বাস্থ্যবিমা ‘আয়ুষ্মান প্রকল্প’ চালু করা হবে। আপ সরকার এই প্রকল্প দিল্লিতে চালু করেনি। তার বদলে সরকারের নিজস্ব চিকিৎসাবিমা চালু করা হয়েছিল। দিল্লির মতো পশ্চিমবঙ্গেও ‘আয়ুষ্মান প্রকল্প’ চালু করা হয়নি। এই বিমা প্রকল্পে রাজ্যবাসী নাগরিকদের চিকিৎসার জন্য ৫ লাখ রুপি কেন্দ্রীয় সরকার দেবে। অনুরূপভাবে রাজ্য সরকারও দেবে ৫ লাখ রুপি।

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: ম খ যমন ত র প রকল প মন ত র সরক র

এছাড়াও পড়ুন:

শাবিপ্রবির ভর্তি পরীক্ষা ১৩ ও ১৪ জানুয়ারি

শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (শাবিপ্রবি) ২০২৫-২৬ শিক্ষাবর্ষের প্রথম সেমিস্টারের ভর্তি পরীক্ষা আগামী ১৩ ও ১৪ জানুয়ারি অনুষ্ঠিত হবে।

সোমবার (৩ নভেম্বর) বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার সৈয়দ ছলিম মোহাম্মদ আব্দুল কাদির স্বাক্ষরিত এক বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়েছে।

আরো পড়ুন:

শাবিতে জুলাই গণঅভ্যুত্থান নিয়ে জাতিসংঘের তদন্ত প্রতিবেদনের ওপর সেমিনার

শাকসুর নির্বাচন কমিশন ঘোষণা

বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, ভর্তি কার্যক্রম সুষ্ঠুভাবে সম্পাদনের জন্য বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন সংশ্লিষ্ট সবার সহযোগিতা কামনা করছে।

এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য সাজেদুল করিম বলেন, “গুচ্ছ প্রক্রিয়া না থেকে স্বতন্ত্র ভর্তি পরীক্ষা নেওয়ার জন্য আমাদের শিক্ষকরা আজ উপাচার্যের কাছে একটা স্মারকলিপি জমা দিয়েছে। শিক্ষকরা গুচ্ছ পদ্ধতিতে থাকতে চায় না। আমরা বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন এককভাবে ভর্তি পরীক্ষার নেওয়ার জন্য সামনের দিকে কাজ এগোচ্ছি। অতিদ্রুত ভর্তি পরীক্ষার পূর্ণাঙ্গ সময়সূচি নির্ধারণ করে প্রকাশ করা হবে।”

২০২৪-২৫ শিক্ষাবর্ষ থেকে শাবিপ্রবি গুচ্ছ পদ্ধতি থেকে বেরিয়ে স্বতন্ত্রভাবে ভর্তি পরীক্ষা নেওয়া শুরু করে। এবারো একইভাবে ভর্তি পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হবে।

এর আগে, গুচ্ছ পদ্ধতিতে অংশ নিতে বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন (ইউজিসি) থেকে চিঠি পেলেও শেষ পর্যন্ত বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ নিজস্ব ব্যবস্থাপনায় ভর্তি পরীক্ষা আয়োজনের সিদ্ধান্ত নেয়।

ঢাকা/ইকবাল/মেহেদী

সম্পর্কিত নিবন্ধ