বিশ্বে স্বৈরাচার সরকারের যত গোপন বন্দিশালা
Published: 13th, February 2025 GMT
বিশ্বে অপরাধীদের আটকে রাখতে কারাগারের ব্যবস্থা থাকলেও অনেক দেশের সরকার, বিশেষ করে স্বৈরাচার সরকার গোপনে কিছু বন্দিশালা পরিচালনা করে থাকে। বিভিন্ন সময়ে বিভিন্ন দেশে এমন গোপন বন্দিশালার কথা প্রকাশ্যে এসেছে। এসব বন্দিশালায় ভিন্নমতের মানুষকে বিনা বিচারে আটকে রেখে নির্যাতন-নিপীড়নের ঘটনা ঘটে। এমনকি বন্দীদের হত্যার ঘটনাও ঘটে। বিশ্বের এমন কয়েকটি গোপন বন্দিশালা সম্পর্কে জেনে নেওয়া যাক।
আর্জেন্টিনার ইএসএমএ বন্দিশালা
১৯৭৬ সালে এক সামরিক অভ্যুত্থানে আর্জেন্টিনার তৎকালীন প্রেসিডেন্ট ইসাবেলা পেরন ক্ষমতাচ্যুত হন। এরপর ১৯৮৩ সাল পর্যন্ত আর্জেন্টিনায় স্বৈরশাসন চলেছে। আর এই সময়ের মধ্যে আর্জেন্টিনায় ব্যাপক মানবাধিকার লঙ্ঘনের ঘটনা ঘটেছে। ভিন্ন মতাবলম্বী, অধিকারকর্মী এবং বামপন্থী রাজনৈতিক দৃষ্টিভঙ্গি পোষণকারী মানুষের ওপর দমন–পীড়ন চলেছে। স্বৈরশাসনের একেবারে শুরুর দিকে বুয়েনস এইরেসে নেভি স্কুল অব মেকানিকস (ইএসএমএ) নামের একটি স্কুলকে গোপন বন্দিশালায় পরিণত করা হয়।
কুখ্যাত এই বন্দিশালায় বন্দীদের ওপর নানা ধরনের নির্যাতন-নিপীড়ন চালানো হতো। অনেক বন্দীকে উড়োজাহাজে করে নিয়ে সমুদ্রে ছুড়ে ফেলা হয়েছে। বন্দীদের মধ্যে অন্তঃসত্ত্বা নারীরাও ছিলেন। বন্দিশালার ভেতরে একটি মাতৃত্বকালীন ওয়ার্ড ছিল। সেখানে বন্দী নারীরা সন্তান জন্ম দেওয়ামাত্রই নবজাতকদের তাঁদের কাছ থেকে সরিয়ে ফেলা হতো। বন্দী মায়েদের তাকিয়ে তাকিয়ে দেখা ছাড়া আর কিছুই করার ছিল না। স্বৈরশাসনের সঙ্গে সম্পৃক্ত পরিবারগুলো এসব শিশুকে দত্তক নিত।
স্বৈরশাসন চলাকালে এবং পরবর্তী সময়ে সামরিক নেতারা ওই বন্দিশালার নির্যাতন–নিপীড়নের তথ্য আড়াল করার চেষ্টা করতেন। যেমন ১৯৭৯ সালে আন্তর্জাতিক পর্যবেক্ষকেরা সেখানে পরিদর্শনে গেলে বন্দিশালার কর্মীরা সেখানকার বেজমেন্টের সিঁড়ি আড়াল করে ফেলেন। সিঁড়ির অস্তিত্ব আড়াল করতে তাঁরা একটি দেয়াল তৈরি করে দেন। ওই বেজমেন্টে বেশির ভাগ নির্যাতন-নিপীড়নের ঘটনা ঘটত।
এই বন্দিশালায় পাঁচ হাজার মানুষকে আটকে রাখা হয়েছিল। তাঁদের বেশির ভাগেরই আর হদিস পাওয়া যায়নি। মাত্র ২০০ জন জীবিত অবস্থায় পরিবারের কাছে ফিরতে পেরেছিলেন।
মানবাধিকার লঙ্ঘনের ভয়াবহতার স্মারক হিসেবে ২০০৭ সালে নির্যাতন কেন্দ্রটিকে জাদুঘর ঘোষণা করা হয়। সেখানে নির্যাতনের বিভিন্ন আলামত সংরক্ষণ করা হয়েছে। ২০২৩ সালে জাতিসংঘের শিক্ষা, বিজ্ঞান ও সংস্কৃতিবিষয়ক সংস্থা ইউনেসকো একে বিশ্ব ঐতিহ্যের স্থান হিসেবে ঘোষণা করেছে।
সিরিয়ার সেদনায়া কারাগার.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: ন বন দ শ ল বন দ শ ল য় বন দ শ ল র আর জ ন ট ন র ঘটন
এছাড়াও পড়ুন:
খামেনিকে হত্যায় ইসরায়েলি পরিকল্পনা আটকে দেন ট্রাম্প
ইরানের সর্বোচ্চ নেতা আয়াতুল্লাহ আলী খামেনিকে হত্যার ইসরায়েলের পরিকল্পনা কয়েক দিন আগে আটকে দেন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। দুজন মার্কিন কর্মকর্তা বার্তা সংস্থা রয়টার্সকে এ তথ্য জানিয়েছেন।
এমন সময় এ খবর সামনে এসেছে, যখন ইরানে চালানো হামলার প্রথম দিনই দেশটির সশস্ত্র বাহিনীর শীর্ষ পদের প্রায় সব কর্মকর্তাকে হত্যা করে ইসরায়েল। এ ছাড়া ইসরায়েলি হামলায় খামেনির একজন উপদেষ্টাও নিহত হন।
মার্কিন প্রশাসনের একজন ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা বলেন, ‘ইরানিরা কি এখন পর্যন্ত কোনো আমেরিকানকে হত্যা করেছে? না। যতক্ষণ না তারা তা করছে, ততক্ষণ আমরা রাজনৈতিক নেতৃত্বের পেছনে লাগার বিষয়ে, এমনকি আলাপও করছি না।’
খামেনিকে হত্যার পরিকল্পনার বিষয়ে রয়টার্সের প্রতিবেদনের বিষয়ে জানতে চাইলে ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু রোববার ফক্স নিউজকে বলেন, ‘কখনো আলাপই হয়নি, এমন অনেক বিষয় নিয়েও খবর প্রকাশ করা হয়েছে। আমি সে বিষয়ে কিছু বলতে চাই না।’
ফক্সের ‘স্পেশাল রিপোর্ট উইথ ব্রেট বেয়ার’ অনুষ্ঠানে ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আমরা যা করার দরকার, তা করি।’
নেতানিয়াহু বলেন, ইরানে ইসরায়েলের সামরিক হামলার একটি ফল হতে পারে সরকার পরিবর্তন। তেহরানের সৃষ্ট ‘অস্তিত্বের হুমকি’ দূর করতে ইসরায়েল যা যা প্রয়োজন, তা-ই করবে বলেও জানান তিনি।
এদিকে চলমান এই সংঘাত ব্যাপক আকারে ছড়িয়ে পড়ার আশঙ্কা বেড়েছে। তবে প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প বলেছেন, এটি সহজেই শেষ করা যেতে পারে। একই সঙ্গে ইরানকে সতর্ক করে তিনি বলেছেন, যদি ইরান কোনো আমেরিকান লক্ষ্যবস্তুতে আঘাত করে, তবে যুক্তরাষ্ট্রও এ সংঘাতে জড়িয়ে পড়তে পারে।