হবিগঞ্জ জেলার লাখাই উপজেলার ধলেশ্বরী নদীর একটি জলমহালের দখল নিয়ে দুই পক্ষে সংঘর্ষ হয়েছে। এতে উভয় পক্ষের প্রায় শতাধিক মানুষ আহত হয়েছেন। সংঘর্ষের পর এলাকায় উত্তেজনা বিরাজ করছে। এ ঘটনায় আইনশৃঙ্খলাবাহিনী অভিযান চালিয়ে ছয়জনকে আটক করেছে। 

রোববার বিকালে হবিগঞ্জের লাখাই উপজেলায় এ সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। লাখাই থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো.

বন্দে আলী বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। 

স্থানীয়রা জানায়, পাঁচ বছর আগে উন্নয়ন প্রকল্পের আওতায় ধরেশ্বরী নদীর পাশে কাইঞ্জা বিলটি সর্বোচ্চ দরদাতা হিসেবে পায় হারিছ মিয়া। তবে তৎকালীন স্থানীয় সাংসদ আবু জাহির প্রভাব খাটিয়ে একই উপজেলার মুড়াকড়ি ইউনিয়নের কৃষ্ণা দাসকে অবৈধভাবে বিলটি দখলে দেয়। পরে হারিছ মিয়া উচ্চ আদালতে মামলা করেন। কিন্তু দীর্ঘ তিন বছর বিলটি অবৈধভাবে ভোগদখল করে আসছিলেন কৃষ্ণ দাস। ২০২৪ সালের ৫ আগস্ট আ. লীগ সরকারের পতনের পর হারিছ মিয়ার লোকজন বিলটি দখলে নেয়। সম্প্রতি কৃষ্ণ দাসের পক্ষ নিয়ে লাখাই উপজেলার আরিফ আহমেদ বিলটির পুনর্দখল করেন। এ নিয়ে এলাকায় উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে। রোববার দুপুরে থেকে সন্ধ্যা সাতটা পর্যন্ত দেশীয় অস্ত্র নিয়ে দুই পক্ষ সংঘর্ষে জড়ায়। এ সময় উভয় পক্ষের প্রায় শতাধিক লোকজন আহত হয়। আহতরা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসা নিয়েছেন।

আহতদের মধ্যে সোহেল মিয়া, আক্কাস মিয়া, ছোবারক মিয়া,আফিয়া বেগম, মো. ফজল মিয়া, সুমন মিয়া, ইয়াছিন মিয়া, নূল আলম, স্বপন মিয়া, মলাই মিয়া, শাহীন মিয়া, সবুজ মিয়া, সজিব মিয়া, আমিন মিয়া, রিপন মিয়া, শিজিল মিয়া, আকাইদ মিয়া, বাদল মিয়া, জামাল মিয়া, হিরন মিয়া, খায়রুল মিয়া, জমসেদ আলী, ইদ্রিস ভূইয়া, মোবাস্বর মিয়া, ফারুক মিয়া, মো. মিলন, শেখ রিপন, মো. তাজুল ইসলাম, মো. সাগর মিয়া, মো. নাজিম মিয়া, আলামিন মিয়া, রকি মিয়া, খায়রুল বাশার, জাজিরুল ইসলাম, ওমর ফারুক, তুষার মিয়া, মামুন মিয়া, কাউছার মিয়া, মিনার উদ্দিন ও নজরুল মিয়ার নাম জানা গেছে।

এ বিষয়ে কথা বলতে আরিফ আহমেদ রোপনের মোবাইলে কল করা হলেও যোগাযোগ করা সম্ভব হয়নি।

জলমহালের বিষয়ে লাখাই উপজেলার সহকারী কমিশনার (ভূমি) মাকসুদুর রহমান ও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা শাহীনা আক্তারকে কল দিলেও তারা রিসিভ করেননি।

তবে লাখাই উপজেলার থানা ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. বন্দে আলী সমকালকে বলেন, কিছুদিন পর পর বিলের দখল নিয়ে দুই পক্ষ সংঘর্ষে জড়ায়। তাদের কোন পক্ষই থানায় এসে কোন অভিযোগ দেয়নি। আজও বিল নিয়ে সংঘর্ষ হয়েছে। ঘটনাস্থল থেকে আমরা ৬ জনকে আটক করেছি। তবে পরিস্থিতি শান্ত আছে।

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: স ঘর ষ আহত ল খ ই উপজ ল র স ঘর ষ

এছাড়াও পড়ুন:

নোয়াখালীতে পলাতক আওয়ামী লীগ নেতাকে আশ্রয় দেওয়ায় তাঁতী দলের নেতা বহিষ্কার

নোয়াখালীর হাতিয়া উপজেলায় চট্টগ্রামের সন্দ্বীপ উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি মো. আলাউদ্দিনকে নিজ বাড়িতে আশ্রয় দেওয়ার অভিযোগে জাতীয়তাবাদী তাঁতী দলের এক নেতাকে দল থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে।

বহিষ্কৃত মোহাম্মদ সৈকত উপজেলার বুড়িরচর ইউনিয়ন তাঁতী দলের সভাপতি ছিলেন। আজ শুক্রবার বিকেলে জেলা তাঁতী দলের সদস্যসচিব মোরশেদ আলম প্রথম আলোকে বিষয়টি নিশ্চিত করেন।

এর আগে বৃহস্পতিবার রাতে জেলা তাঁতী দলের আহ্বায়ক ইকবাল করিম সোহেল ও সদস্যসচিব মোরশেদ আলমের যৌথ স্বাক্ষরিত চিঠিতে বহিষ্কারের আদেশ দেওয়া হয়।

চিঠিতে বলা হয়, দলীয় শৃঙ্খলাবিরোধী কর্মকাণ্ডে জড়িত থাকার অভিযোগে মোহাম্মদ সৈকতকে বহিষ্কার করা হয়েছে। একই সঙ্গে ইউনিয়ন পর্যায়ে কমিটি মূল্যায়নে ব্যর্থ হওয়ায় হাতিয়া উপজেলা তাঁতী দলের দক্ষিণ কমিটিকে সতর্ক করা হয়েছে।

দলীয় সূত্র জানায়, বৃহস্পতিবার ভোরে হাতিয়া উপজেলার বুড়িরচর ইউনিয়নের জোড়খালী গ্রামে সৈকতের বাড়ি থেকে সন্দ্বীপ উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি আলাউদ্দিনকে গ্রেপ্তার করে হাতিয়া থানা–পুলিশ। এ সময় তাঁর কাছ থেকে ১০টি ককটেল উদ্ধার করা হয়। আলাউদ্দিন ও মোহাম্মদ সৈকত সম্পর্কে ফুফা–ভাগনে।

এ বিষয়ে মোহাম্মদ সৈকত প্রথম আলোকে বলেন, ‘আমাদের বাড়িতে অনেকগুলো পরিবার থাকে। আমি ব্যবসার কাজে দিনের বেশির ভাগ সময় বাইরে থাকি। আলাউদ্দিন কখন বাড়িতে এসেছেন, তা আমার জানা নেই। আমাদের ঘর থেকে তাঁর শ্বশুরদের ঘর অনেক দূরে। উদ্দেশ্যমূলকভাবে আমাকে জড়ানো হয়েছে।’

নোয়াখালী জেলা তাঁতী দলের সদস্যসচিব মোরশেদ আলম বলেন, আওয়ামী লীগের পলাতক নেতাকে আত্মগোপনে থাকার সুযোগ করে দেওয়ায় মোহাম্মদ সৈকতকে বহিষ্কার করা হয়েছে। পাশাপাশি উপজেলার দক্ষিণাঞ্চলের তাঁতী দল কমিটিকেও সতর্ক করা হয়েছে।

আরও পড়ুনহাতিয়ায় শ্বশুরবাড়িতে পালিয়ে থাকা সন্দ্বীপ উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি গ্রেপ্তার৩১ জুলাই ২০২৫

সম্পর্কিত নিবন্ধ