‘এখানে কী হচ্ছে তুই বুঝছ না? যা আছে বের কর’
Published: 16th, February 2025 GMT
সড়কে পড়ে আছে গাড়ি ভাঙচুরের কাচের টুকরা। পাশেই আস্ত গাছের গুঁড়ি। এ গাছ ফেলেই অবরোধ করা হয় সড়ক। ডাকাত দল লুট করে নিয়ে যায় চালকদের সর্বস্ব। শুধু লুট করেই ক্ষান্ত হয়নি; চালকদের করা হয় মারধর। ভাঙচুর করা হয় যানবাহন।
গত শনিবার রাত দেড়টার দিকে আবারও ডাকাতির ঘটনা ঘটেছে ঘাটাইলে। উপজেলার সন্ধানপুর ইউনিয়নের ঘাটাইল-সাগরদীঘি সড়কের ফকিরচালা এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। এলাকাবাসী ও পুলিশের উপস্থিতি টের পেয়ে পালিয়ে যায় সংঘবদ্ধ ডাকাতরা। যানবাহনের মধ্যে ছিল ট্রাক, সিএনজিচালিত অটোরিকশা ও মোটরসাইকেল।
এর আগে নভেম্বর থেকে ডিসেম্বর মাসের মধ্যে এক মাসে পাঁচ বাড়িতে ডাকাতির ঘটনা ঘটে। এ নিয়ে ‘রাত নামলেই ডাকাত আতঙ্ক’ শিরোনামে ১৯ ডিসেম্বর সমকালে একটি প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়।
গত শনিবার রাতে ড্রামট্রাক (দশ চাকার বড় ট্রাক) নিয়ে ডাকাতের কবলে পড়েন চালক মিন্টু মিয়া। তিনি জানান, অনেকগুলো গাড়ির সারি দেখে গ্লাস নামিয়ে জানতে চান এখানে কী হয়েছে? এরই মধ্যে ডাকাত দলের একজন এসে তাঁকে বলে ‘এখানে কী হচ্ছে তুই বুঝছ না? যা আছে বের কর। না দিতে চাইলে রামদার উল্টো পিঠ দিয়ে তার ঘাড়ে আঘাত করা হয়। পরে তাঁর কাছ থেকে নগদ ২০ হাজার টাকা এবং ২০ হাজার টাকা মূল্যের একটি স্মার্টফোন নিয়ে যায়।
মিন্টু আরও জানান, ডাকাতরা চলে যাওয়ার পর তিনি গাড়ি থেকে নেমে অন্যান্য চালকদের থেকে জানতে পারেন ডাকাতির কবলে পড়েছিল ১০টি গাড়ি। কাঁচামালবাহী এক ট্রাকচালকের কাছ থেকেই লুট করা হয় ৬০ হাজার টাকা।
কথা হয় ডাকাতির কবলে পড়া তিনটি ড্রামট্রাকের মালিক বাদল ফকিরের সঙ্গে। তাঁর ভাষ্য, রাতে তাঁর গাড়ির চালক একজনকে ফোন দিলে ফোন বন্ধ পান। এরপর অপরজনকে ফোন দিলে সে রিসিভ করে না। কিছুক্ষণ পর মোন্নাফ মিয়া নামে অপর গাড়ির এক চালক ফোন করে তাঁকে জানান ট্রাকগুলো ডাকাতের কবলে পড়েছে। সঙ্গে সঙ্গে তিনি ঘাটাইল থানায় ফোন করেন।
বাদল জানান, চালকদের দেওয়া তথ্যমতে তিনটি স্মার্টফোন, একটি বাটনফোন এবং ৩০ হাজার টাকা নিয়ে গেছে ডাকাতরা। মারধরের শিকার হয়েছেন চালকরা। তিনি ঢাকায় থাকায় এ মুহূর্তে আইনি প্রক্রিয়ায় যেতে পারছেন না। ঘাটাইল ফিরে আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা করবেন।
ডাকাত দলের কবলে পড়েছিলেন ঘাটাইল উপজেলার বাইচাইল গ্রামের শহিদুল ইসলাম টিক্কা। তিনি বলেন, ‘আমার কাছে থাকা নগদ ৭ হাজার টাকা এবং একটি স্মার্টফোন নিয়ে গেছে।’
এর আগে নভেম্বর থেকে ডিসেম্বর মাসের মধ্যে যে পাঁচ বাড়িতে ডাকাতির ঘটনা ঘটে, তাদের মধ্যে ভুক্তভোগী একজন বিএনপি নেতা রফিকুল ইসলাম। গত ২৪ নভেম্বর লক্ষিন্দর ইউনিয়নের বেইলা গ্রামে তাঁর বাড়িতে ডাকাতির ঘটনা ঘটে। রাত আড়াইটার দিকে ১০-১৫ জনের ডাকাত দল বাড়ির ফটক ভেঙে ভেতরে প্রবেশ করে। অস্ত্রের ভয় দেখিয়ে রশি দিয়ে ঘরের সবার হাত-পা বেঁধে ফেলে। ডাকাতরা আলমারি ভেঙে লুট করে নিয়ে যায় ১৩ ভরি স্বর্ণালঙ্কার, প্রায় ৫০ ভরি রুপার অলঙ্কার, দেড় লাখ টাকা ও একটি স্মার্টফোন। নগদ টাকাসহ প্রায় ১৯ লাখ টাকার মালপত্র ডাকাতরা নিয়ে যাওয়ার পর ভুক্তভোগীদের ডাক-চিৎকারে প্রতিবেশীরা এসে তাদের হাত-পায়ের বাঁধন খুলে দেন। এ ঘটনায় ২৮ নভেম্বর থানায় মামলা করেন রফিকুল ইসলাম।
মামলা নিয়ে কথা হয় রফিকুলের সঙ্গে। তাঁর ভাষ্য, গত সপ্তাহে সাগরদীঘি তদন্তকেন্দ্রের পরিদর্শকের কাছে মামলার অগ্রগতি বিষয়ে জানতে চাইলে তদন্ত কাজ চলমান রয়েছে বলে জানানো হয়। বাদীর দাবি, এ ধরনের কথা বারবার বলে আসছে পুলিশ। বিষয়টি নিয়ে আগামী সপ্তাহে টাঙ্গাইল জেলা পুলিশ সুপারের কাছে যাবেন বলে সমকালকে জানান তিনি।
ঘাটাইল থানার ওসি রকিবুল ইসলাম বলেন, ‘খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে যাই এবং ভুক্তভোগীদের দেওয়া তথ্যমতে ডাকাতির ঘটনায় যারা ছিল তাদের বয়স খুবই কম। এ ঘটনায় কেউ অভিযোগ দেয়নি।’
উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: ড ক ত র কবল ড ক ত র ঘটন ড ক ত দল চ লকদ র ল ইসল ম ল ট কর
এছাড়াও পড়ুন:
শেফালি আর দীপ্তিতে নতুন মুম্বাইয়ে নতুন বিশ্ব চ্যাম্পিয়ন ভারত
নাবি মুম্বাই। নয়া মুম্বাই। নতুন সেই মুম্বাইয়ে কাল নতুন বিশ্ব চ্যাম্পিয়ন পেল মেয়েদের ওয়ানডে বিশ্বকাপ। ফাইনালে দক্ষিণ আফ্রিকাকে হারিয়ে বিশ্ব চ্যাম্পিয়ন হয়েছে ভারত।
দীপ্তি শর্মার করা ৪৬তম ওভারের তৃতীয় বলে নাদিন ডি ক্লার্কের তোলা ক্যাচটি এক্সট্রা কাভারে ভারত অধিনায়ক হারমানপ্রীত কৌরের হাতে জমা হতেই বিশ্ব চ্যাম্পিয়নের আনন্দে মাতল পুরো ভারত। দক্ষিণ আফ্রিকা ২৪৬ রানে অলআউট, ভারত ৫২ রানে জয়ী।
ভারতের জয়ের উৎসব অবশ্য শুরু হয়ে গিয়েছিল পাঁচ ওভার আগেই। লরা ভলভার্টকে ফিরিয়ে পথের কাঁটা উপড়ে ফেলেই উদ্যাপন শুরু করেছিল ভারতীয়রা। অসাধারণ এক সেঞ্চুরি করে দক্ষিণ আফ্রিকান অধিনায়ক চোখ রাঙাছিলেন ভারতের উৎসব ভন্ডুল করার। কিন্তু সেঞ্চুরি করার পরপরই ক্যাচ তুললেন ভলভার্ট। আর সেই ক্যাচ নিতে গিয়ে আমানজোত কৌর ভারতের প্রায় শত কোটি মানুষের হৃৎস্পন্দন প্রায় থামিয়ে দিয়েছিলেন। একবার নয়, দুবার নয়, তৃতীয়বারের চেষ্টাতেই ক্যাচ নিতে পারেন আমানজোত। এবারও বোলার সেই অফ স্পিনার দীপ্তি শর্মা।
৯৮ বলে ১০১ রান করে ভলভার্ট যখন ফিরলেন দক্ষিণ আফ্রিকার স্কোর ৪১.১ ওভারে ২২০/৭। এরপর শুধু আনুষ্ঠানিকতাই ছেড়েছে ভারত। দীপ্তি আরও ২টি উইকেট নিয়ে পেয়ে গেছেন ৫ উইকেট। আর ভারত হয়ে গেছে চ্যাম্পিয়ন। এর আগে ব্যাট হাতেও ৫৮ বলে ৫৮ রানের দারুণ এক ইনিংস খেলেছেন দীপ্তি।
ব্যাট হাতে ৮৭ রান করা শেফালি বর্মা বল হাতে নিয়েছেন ২ উইকেট