চাকসু নিয়ে শিক্ষার্থীদের সঙ্গে প্রশাসনের মতবিনিময়
Published: 17th, February 2025 GMT
চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদের (চাকসু) গঠনতন্ত্র যুগোপযোগী করার লক্ষ্যে প্রশাসনের সঙ্গে শিক্ষার্থীদের মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। এতে আগামী ১০ দিনের মধ্যে চাকসু নিয়ে একটি নীতিমালা করার ঘোষণা দেওয়া হয়েছে।
সোমবার (১৭ ফেব্রুয়ারি) দুপুর ২টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাজবিজ্ঞান অনুষদ মিলনায়তনে চাকসু সংবিধান রিভিউ কমিটি এ সভার আয়োজন করে।
এ সময় উপস্থিত ছিলেন রিভিউ কমিটির প্রধান ও চবি উপ-উপাচার্য (প্রশাসন) অধ্যাপক ড.
বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের চবির সমন্বয়ক মাহফুজুর রহমান বলেন, “প্রশাসন দায়িত্ব নেওয়ার অনেকদিন হয়ে গেলেও এখনো নীতিমালা তৈরি হয়নি। কারা কারা প্রার্থী হতে পারবে তা পরিষ্কার করতে হবে। সহ-সম্পাদক পদগুলো বাতিল করে পদ আরো বাড়ানো হোক। মুক্তিযোদ্ধা বিষয়ক সম্পাদক, ছাত্রী বিষয়ক সম্পাদক পদ এবং বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিষয়ক সম্পাদকের পদ সৃষ্টি করতে হবে।”
চবি রাষ্ট্রচিন্তার পক্ষ থেকে চৌধুরী তাসনিম জাহান শ্রাবণ বলেন, “এতদিনে চাকসুর নীতিমালা এবং রোডম্যাপ ঘোষণার কথা থাকলেও দুঃখজনকভাবে তা হয়নি। আমাদের গঠনতন্ত্র অনুযায়ী চাকসু হলো একটা ক্লাবের মতো। কিন্তু চাকসুকে হতে হবে এমন একটা সংগঠন, যেটা শিক্ষার্থীদের অধিকার আদায়ে কথা বলবে। নির্বাচনে একজন প্রার্থীর যথাযথ যোগ্যতা নির্ধারণ করতে হবে। এছাড়া প্রার্থীদের প্রচার-প্রচারণা নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রেসকে ব্যবহার করা যেতে পারে।”
চবি শিক্ষার্থী মুশফিকুর রহমান ইমন বলেন, “লক্ষ্য ও উদ্দেশ্যকে আরো মোডিফাই করা প্রয়োজন। আন্তঃবিশ্ববিদ্যালয় সম্পাদক, জলবায়ু ও পরিবেশ সম্পাদকের পদ তৈরি হওয়া দরকার। নির্বাচনের স্থান হল থেকে অ্যাকাডেমিক ভবনে নিয়ে আসতে হবে। চাকসু সভাপতির একচ্ছত্র ক্ষমতা হ্রাস করতে হবে। রমজানের আগেই চাকসুর রোডম্যাপ ঘোষণা করতে হবে।”
শাখা ছাত্রদলের সদস্য আইয়ুর রহমান তৌফিক বলেন, “চাকসুর সভাপতি শিক্ষার্থী থেকে নির্বাচিত হতে হবে। মেয়েদের জন্য আলাদা সহ-সভাপতি পদ এবং মুক্তিযোদ্ধা, গণতন্ত্র ও অভ্যুত্থান বিষয়ক সম্পাদক পদ তৈরি করতে হবে। মানবাধিকার লঙ্ঘনসহ অপরাধে জড়িত থাকলে কেউ প্রার্থী হতে পারবে না। ছাত্রলীগের দোসররা যেন প্রার্থী হতে না পারে, সেদিকে শক্ত অবস্থান নিতে হবে।”
চাকসু সংবিধান কমিটির প্রধান উপ-উপাচার্য (প্রশাসন) ড. মো. কামাল উদ্দিন বলেন, “শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে অনেক চমৎকার মতামত পেয়েছি। আগামী তিনদিনের মধ্যে শিক্ষার্থীরা কমিটিকে লিখিত প্রস্তাবনা দিবেন। শিক্ষার্থীদের মতামতগুলোকে সামনে রেখে আগামী ১০ দিনের মধ্যে একটি নীতিমালা তৈরি করা হবে। এরপর সে নীতিমালা নিয়ে শিক্ষার্থীদের সঙ্গে আবার বসা হবে।”
ঢাকা/মিজান/মেহেদী
উৎস: Risingbd
এছাড়াও পড়ুন:
মুসলমান বলেই রোহিঙ্গারা ভয়াবহ পরিস্থিতির শিকার
রোহিঙ্গা সম্প্রদায়ের দুরবস্থা বর্তমান সময়ে অন্যতম করুণ মানবিক সংকট বলে উল্লেখ করেছেন প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস। তিনি বলেছেন, শুধু মুসলমান হওয়ার কারণেই রোহিঙ্গারা এই ভয়াবহ পরিস্থিতির শিকার।
গতকাল সোমবার রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় তুরস্কের একটি সংসদীয় প্রতিনিধিদলের সঙ্গে সাক্ষাতের সময় এ কথা বলেন প্রধান উপদেষ্টা। পাঁচ সদস্যের ওই প্রতিনিধিদলের নেতৃত্ব দিয়েছেন তুরস্ক-বাংলাদেশ সংসদীয় মৈত্রী গ্রুপের সভাপতি ও তুর্কি পার্লামেন্ট সদস্য মেহমেত আকিফ ইয়িলমাজ।
সাক্ষাতে দুই পক্ষ বাণিজ্য, বিনিয়োগ ও মানবিক সহায়তার ক্ষেত্রগুলোতে দ্বিপক্ষীয় সহযোগিতা আরও জোরদার করার উপায় নিয়ে আলোচনা করে। এ সময় মেহমেত আকিফ ইয়িলমাজ বলেন, তুরস্ক ও বাংলাদেশের মধ্যে গভীর সাংস্কৃতিক ও ঐতিহাসিক সম্পর্ক রয়েছে। দুই দেশের মধ্যে বিদ্যমান দৃঢ় বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্কের ওপর আলোকপাত করেন তিনি।
ইয়িলমাজ বলেন, তাঁদের প্রতিনিধিদল রোববার কক্সবাজারে রোহিঙ্গা শিবির পরিদর্শন করেছে এবং তুর্কি বিভিন্ন সরকারি ও বেসরকারি সংস্থা, বিশেষ করে তুর্কি ফিল্ড হাসপাতালের মানবিক কার্যক্রম সম্পর্কে অবহিত হয়েছে। এ সময় রোহিঙ্গা সম্প্রদায়ের প্রতি তুরস্কের অবিচল সমর্থনের জন্য কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন প্রধান উপদেষ্টা। তুর্কি উদ্যোক্তাদের বাংলাদেশে বিনিয়োগের আহ্বান জানান তিনি।
অধ্যাপক ইউনূস বলেন, ‘রোহিঙ্গা সম্প্রদায়ের দুরবস্থা আমাদের সময়ের অন্যতম করুণ মানবিক সংকট। তারা শুধু মুসলমান বলেই এই ভয়াবহ পরিস্থিতির শিকার এবং তাদের নাগরিকত্ব কেড়ে নেওয়া হয়েছে।’ তিনি আরও বলেন, ‘আট বছর ধরে আশ্রয়শিবিরে থাকায় রোহিঙ্গা শিশুদের শিক্ষা ও ভবিষ্যৎ সুযোগ একেবারেই সীমিত হয়ে পড়েছে। এই অবস্থা হতাশা ও অস্থিতিশীলতার জন্ম দিতে পারে।’