এবার হোঁচট খেলে আর উঠে দাঁড়াতে পারব না: উপদেষ্টা মাহফুজ
Published: 18th, February 2025 GMT
দেশের মানুষ বারবার ভুল করেছে, বারবার হোঁচট খেয়েছে। এবার হোঁচট খেলে আর উঠে দাঁড়ানো যাবে না বলে মন্তব্য করেছেন অন্তর্বর্তী সরকারের উপদেষ্টা মাহফুজ আলম।
মাহফুজ আলম বলেন, ‘১৯৪৭ সালে রক্ত দিয়ে পাকিস্তান আনার পর তাঁরা বিশ্বাসঘাতকতা করেছে। ১৯৭১ সালে লাখো শহীদের রক্তের বিনিময়ে দেশ পেয়েছি। গ্রামেগঞ্জে সর্বত্রই যুদ্ধ হয়েছে। সেই যুদ্ধের পরও আমরা স্বাধীন হতে পারিনি। এরপর ১৯৯০ ঘটেছে। সবশেষ ২০২৪। ফলে বারবার ভুল করছি, বারবার হোঁচট খাচ্ছি। এবার হোঁচট খেলে আর উঠে দাঁড়াতে পারব না।’
আজ মঙ্গলবার দুপুরে তারুণ্যের উৎসব ২০২৫–এ প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন উপদেষ্টা মাহফুজ আলম। দেশজুড়ে আয়োজিত উৎসবের ধারাবাহিকতায় ঢাকায় প্রেস ইনস্টিটিউট বাংলাদেশের (পিআইবি) উদ্যোগে প্রতিষ্ঠানটির মিলনায়তনে উৎসবের আয়োজন করা হয়েছে। উৎসবের অংশ হিসেবে আজ মঙ্গলবার ও আগামীকাল বুধবার পিআইবি চত্বরে আলোকচিত্র, গ্রাফিতি ও ভিডিও প্রদর্শনীর আয়োজন করা হয়েছে।
মাহফুজ আলম বলেন, এবারের তরুণ প্রজন্মের বড় অংশ যখন বুড়ো হয়ে যাবে, তখন তাঁরা আসলে এই রাষ্ট্রকে গড়ে তোলার আর সুযোগ পাবেন না। ফলে রক্তক্ষয়ী অভ্যুত্থানের মাধ্যমে যে সুবর্ণ সুযোগ পাওয়া গেছে, সেটিকে কাছে লাগাতে হবে। ব্যক্তি রাষ্ট্র এবং সমাজকে পুনর্গঠিত করতে হবে। বাংলাদেশের তরুণ সমাজকে বৈশ্বিকভাবে নেতৃত্ব দিতে হবে।
বাংলাদেশের মানুষ বারবার আশাহত হয়েছে উল্লেখ করে উপদেষ্টা বলেন, সরকারের পক্ষ থেকে জুলাই-আগস্টের গণহত্যার বিচার ও সংস্কারের কাজ তাঁরা এগিয়ে নিচ্ছেন। এ জন্য সবার সহযোগিতা কামনা করে তিনি বলেন, ‘যতটুকু সময় পাব, সবার ঐকমত্যের ভিত্তিতে সেই সময়ের মধ্যে তরুণদের আশা–আকাঙ্ক্ষার বাংলাদেশ গড়ার চেষ্টা চলছে।’
ইতিহাস থেকে কেউ শিক্ষা নেয়নি এমন প্রবাদের কথা উল্লেখ করে মাহফুজ আলম বলেন, তবে হাসিনা তাঁর বাবার কাছ থেকে শিক্ষা নিয়েছেন। শেখ মুজিবুর রহমান যেসব কাজ করে যেতে পারেননি, নিপীড়নের মাধ্যমে সেই কাজগুলো হাসিনা চালিয়ে গেছেন। ১৯৭২ সালে যেভাবে নিপীড়ন চালানো হয়েছিল, একই পদ্ধতিতে হাসিনাও মানুষের ওপর নিপীড়ন চালিয়েছেন।
দেশে ফ্যাসিবাদের গোড়াপত্তন মুজিব করেছিলেন বলে মন্তব্য করে মাহফুজ আলম বলেন, মুজিব রক্ষীবাহিনী দিয়ে নির্যাতন চালিয়েছেন। আর হাসিনা পুলিশকে রক্ষীবাহিনী বানিয়েছেন, বিজিবিকে সীমান্ত থেকে এনে রক্ষীবাহিনীতে পরিণত করেছিলেন। সেনাবাহিনীকেও হাসিনা দূষিত করে গেছেন।
হাসিনার ফ্যাসিবাদে দলীয় গুন্ডাদের পাশাপাশি পুলিশও ছিল উল্লেখ করে মাহফুজ বলেন, মৌলবাদ ও জঙ্গি বলে সাধারণ মানুষকে হত্যা করে সেটির ন্যায্যতা দিয়েছেন হাসিনা। এখন ফ্যাসিস্টদের অবশিষ্ট অংশ উৎখাত করা জরুরি।
অনুষ্ঠানে অন্তর্বর্তী সরকারের প্রেস সচিব শফিকুল আলম বলেন, তারুণ্যের উৎসব উপলক্ষে সারা দেশে মেয়েরা ২ হাজার ৯০০ ম্যাচ খেলেছে। এটা নিয়ে প্রতিবেদন হয়নি। একটি খেলা বন্ধ নিয়ে আলোচনা হয়েছে।
শফিকুল আলম বলেন, ‘গত ১৫ বছর আমরা কেউ নামলাম না। আমাদের অপেক্ষা করতে হলো কিছু নাহিদের জন্য, আসিফদের জন্য। কিছু মাহফুজদের জন্য। হাসিনার মতো ভয়ংকর স্বৈরাচারকে নিয়ন্ত্রণ করতে পারেনি বুড়োরা। বারবার বড় বড় মিছিল হয়েছে নয়া পল্টনে বা ঢাকাজুড়ে। আমরা কেউ দাঁড়াতে পারিনি। একদিন হঠাৎ তরুণেরা বলল আমরা দাঁড়াব, এরপর দেখেন কী পরিবর্তন আসল। ওরা (আওয়ামী লীগ) কিছু করতে পারেনি। দেখেন তার পুরো পলিটিক্যাল ক্যারিয়ার ইজ ওভার। যে ভয়ানক ম্যাসাকার (গণহত্যা) করেছে, এটাকে জাতিসংঘ বলেছে মানবতার বিরুদ্ধে অপরাধ।’
প্রেস সচিব বলেন, ‘আপনি যখন ১ হাজার ৪০০ লোক মারবেন, যার ১৩ শতাংশ শিশু, সেখানে তো সবাই মানবতাবিরোধী অপরাধ বলবেই। তিনি চলে গেছেন, তাঁর দল এখন দেখেন। তাঁরা বলেন, তাঁরা নাকি হরতাল করছেন। আমি হরতালের তো কিছুই দেখিনি। তরুণেরা নতুন করে বাংলাদেশ নির্মাণ করবে, তাতে আমরা সবাই একীভূত হব।’
বক্তব্য দিতে গিয়ে মূর্ছা গেলেন বিবি আয়েশা
জুলাই-আগস্ট গণ-অভ্যুত্থানে শহীদ শাকিলের মাও এসেছিলেন তারুণ্যের এই উৎসবে। অনুষ্ঠানের প্রথম পর্যায়ে বক্তব্য শুরুর পর কান্নায় ভেঙে পড়েন তিনি। একপর্যায়ে তিনি দাঁড়ানো অবস্থা থেকে মাটিতে লুটিয়ে পড়েন। পরে তাঁকে প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে সুস্থ করা হয়েছে।
এর আগে বিবি আয়েশা কান্নাজড়িত কণ্ঠে বলেন, ‘ছেলেকে খুব কষ্ট করে পড়ালেখা করাইছি। দেশের মা–বোনের নিরাপত্তার জন্য আমার ছেলে আন্দোলন করতে নেমেছিল। ছেলে হত্যার বিচার সরকারের কাছে চাই। যারা ছাত্রদের গুলি করার হুকুম দিছে, তাদের বিচার চাই।’
পিআইবির মহাপরিচালক ফারুক ওয়াসিফের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়ের সচিব মাহবুবা ফারজানা। সভাপতির বক্তব্যে তিনি বলেন, ‘ফ্যাসিস্ট সরকার আমাদের ওপর জগদ্দল পাথরের মতো চেপে বসেছিল। প্রতিটি প্রতিষ্ঠানকে তারা ধ্বংস করে গেছে। তরুণদের নেতৃত্বে জাতি ১৫ বছরের কালো অধ্যায় পার করতে পেরেছে।’
.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: উপদ ষ ট সরক র র র জন য
এছাড়াও পড়ুন:
যে কারণে সালাহ-ফন ডাইকদের কাছে এই শিরোপা বিশেষ
একসময় ইংলিশ ফুটবলের রাজা তারাই ছিল। ষাটের দশকের মাঝামাঝি থেকে আশির দশকের শেষ পর্যন্ত তো বলতে গেলে লিভারপুলেরই একচ্ছত্র আধিপত্য ছিল ইংল্যান্ডের শীর্ষ লিগে। তখন অবশ্য নামটা প্রিমিয়ার লিগ ছিল না, ছিল প্রথম বিভাগ লিগ। ১৯৯২ সালে প্রিমিয়ার লিগ নাম হওয়ার পর থেকে যেন লিভারপুলের দুর্ভাগ্যের শুরু। প্রথম বিভাগ যুগে ১৮টি লিগ জেতা লিভারপুল প্রিমিয়ার লিগ যুগে এসে জিততেই ভুলে গেল!
প্রিমিয়ার লিগে শুরু হলো ম্যানচেস্টার ইউনাইটেডের একচ্ছত্র রাজত্ব। স্যার অ্যালেক্স ফার্গুসনের অধীন ১৩বার লিগ জিতে ইউনাইটেডের মোট লিগ শিরোপা হয়ে গেল ২০টি। লিভারপুলকে পেরিয়ে তারা হয়ে গেল ইংল্যান্ডের ইতিহাসে সবচেয়ে সফল ক্লাব।
ইউনাইটেডের সেই আধিপত্যও শেষ হলো ২০১৩ সালে ফার্গুসনের অবসরের পর। কিন্তু রাজত্ব ফিরে পেল না লিভারপুল। ইংলিশ ফুটবলের নতুন রাজা হয়ে ওঠল ম্যানচেস্টার সিটি। পেপ গার্দিওলার অধীন সর্বশেষ সাত মৌসুমে ছয়বার শিরোপা জিতে সিটি একের পর এক নতুন রেকর্ড গড়তে থাকল।
আরও পড়ুনলাল সমুদ্রে গোল উৎসবে চ্যাম্পিয়ন লিভারপুল১১ ঘণ্টা আগেমাঝে ২০১৯-২০ মৌসুমে ৩০ বছর পর লিভারপুল পেল ইংলিশ লিগের শিরোপার স্বাদ। তবে পৃথিবী তখন করোনা মহামারি চলছে। শিরোপা উৎসব হলো না লিভারপুলের মনের মতো।
এবার আর্নে স্লটের অধীন প্রথম মৌসুমেই আবার চ্যাম্পিয়ন লিভারপুল। সেটাও কী রাজকীয়ভাবে! চার ম্যাচ হাতে রেখে, নিজেদের মাঠ অ্যানফিল্ডে, ভরা গ্যালারির সামনে। লিভারপুলের এটি ২০তম লিগ শিরোপা, ইউনাইটেডের সঙ্গে যৌথভাবে তারাও এখন ইংল্যান্ডের সবচেয়ে সফল ক্লাব।
ইতিহাস গড়া এই ট্রফি জেতার পর কী বলছেন লিভারপুলের খেলোয়াড়েরাকোডি গাকপোর উদ্যাপন