যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের ঘনিষ্ঠ মিত্র ও বিশ্বের শীর্ষ ধনকুবের ইলন মাস্কের দেশটির সরকারি সিদ্ধান্ত নেওয়ার আনুষ্ঠানিক কোনো ক্ষমতা নেই বলে জানিয়েছে হোয়াইট হাউস। একই সঙ্গে প্রেসিডেন্টের কার্যালয় থেকে নিশ্চিত করা হয়েছে, যুক্তরাষ্ট্রের সরকারি দক্ষতাবিষয়ক বিভাগের (ডিওজিই) আনুষ্ঠানিক কর্মী নন মাস্ক।

গতকাল সোমবার আদালতে জমা দেওয়া নথিপত্রে এসব তথ্য জানিয়েছে হোয়াইট হাউস। যুক্তরাষ্ট্রের নতুন বিভাগ ডিওজিইর প্রধান হিসেবে মনে করা হয় মাস্ককে। দেশের সরকারি ব্যয় কমানো এবং কর্মী ছাঁটাইয়ের লক্ষ্যে ক্ষমতায় বসার পর বিভাগটি প্রতিষ্ঠা করেছেন ট্রাম্প। গত নভেম্বরে তিনি বলেছিলেন, ডিওজিইর নেতৃত্ব দেবেন ‘মহান’ ইলন মাস্ক।

আদালতে নথিপত্র জমা দিয়েছেন যুক্তরাষ্ট্রের প্রশাসনিক কার্যালয়ের পরিচালক জশুয়া ফিশার। ইলন মাস্কের বিরুদ্ধে নিউ মেক্সিকোসহ ১৪টি অঙ্গরাজ্যের করা একটি মামলার পর নথিগুলো জমা দেওয়া হয়।

নথিতে বলা হয়েছে, ইলন মাস্ক হোয়াইট হাউসের একজন কর্মী এবং প্রেসিডেন্টের জ্যেষ্ঠ উপদেষ্টা। হোয়াইট হাউসের অন্যান্য জ্যেষ্ঠ উপদেষ্টার মতো মাস্কেরও নিজ থেকে সরকারি সিদ্ধান্ত নেওয়ার আনুষ্ঠানিক ক্ষমতা নেই। তিনি শুধুই প্রেসিডেন্টকে পরামর্শ দিতে পারবেন। তিনি ‘ডিওজিই সার্ভিস’ বা ‘ডিওজিই সার্ভিস টেম্পোরারি অর্গানাইজেশন’–এর কর্মীও নন।

এদিকে আজ মঙ্গলবার যুক্তরাষ্ট্রের সংবাদমাধ্যম ফক্স নিউজে ট্রাম্প ও মাস্কের একটি যৌথ সাক্ষাৎকার সম্প্রচারের কথা রয়েছে। এর আগে সাক্ষাৎকারটির একটি খণ্ডাংশ প্রকাশ করা হয়। তাতে ইলন মাস্কই হোয়াইট হাউস চালাচ্ছেন—সমালোচকদের এমন মন্তব্যের কড়া জবাব দিতে দেখা যায় ট্রাম্পকে।

ট্রাম্প বলেন, ‘আমি মনে করি, ইতিহাসে আমার চেয়ে বেশি আর কাউকে নিয়ে খারাপ প্রচার–প্রচারণা হয়নি। তবে আমি কী শিখেছি, তা আপনি কি জানেন ইলন? (তা হলো) মানুষ স্মার্ট।’ এ সময় ইলন মাস্ক বলেন, ‘হ্যাঁ, আসলেই তাঁরা (স্মার্ট)।’

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: ইলন ম স ক ক ষমত সরক র

এছাড়াও পড়ুন:

দ্বিজাতিতত্ত্বের কবর দিয়েই বাংলাদেশের জন্ম, এখানে সাম্প্রদায়িকতার জায়গা নেই: জেড আই খান পান্না

মোহাম্মদ আলী জিন্নাহর দ্বিজাতিতত্ত্বের কবর দিয়েই বাংলাদেশের জন্ম হয়েছে মন্তব্য করে সুপ্রিম কোর্টের জ্যেষ্ঠ আইনজীবী জেড আই খান পান্না বলেছেন, এই দেশে সাম্প্রদায়িকতার কোনো স্থান নেই।

আজ শুক্রবার সুপ্রিম কোর্ট বারের হলরুমে ‘বাংলাদেশে মানবাধিকার সংকট ও আইনি প্রতিকার পাওয়ার পথ’ শীর্ষক এক সেমিনারে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন জেড আই খান পান্না। সেমিনারটির আয়োজন করে আন্তর্জাতিক সংস্থা হিউম্যান রাইটস কংগ্রেস ফর বাংলাদেশ মাইনোরিটিস (এইচআরসিবিএম), বাংলাদেশ চ্যাপ্টার।

বক্তব্যে জেড আই খান পান্না বলেন, ‘এখানে সংখ্যালঘুর কথা বলা হচ্ছে। একজন মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে এখন আমি সবচেয়ে বেশি সংখ্যালঘু। আজ মুক্তিযোদ্ধার গলায় জুতার মালা দেখি, জুতা দিয়ে বাড়ি দিতে দেখি, কিন্তু কিছু করতে পারি না। তাই আমি সবচেয়ে বড় অসহায়।’

এসব কথা বলতে বলতে সুপ্রিম কোর্টের জ্যেষ্ঠ আইনজীবী জেড আই খান পান্না কেঁদে ফেলেন। কান্নাজড়িত কণ্ঠে তিনি বলেন, জীবনে কখনো জেনে-বুঝে অন্যায়ের সঙ্গে আপস করেননি। যাঁরা মুক্তিযুদ্ধকে ধারণ করেন, তাঁদের অন্যায়ের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়ানোর আহ্বান জানান তিনি।

জেড আই খান পান্না আরও বলেন, ৩০ লাখ শহীদ আর ২ লাখ মা-বোনের ইজ্জতের বিনিময়ে বাংলাদেশ স্বাধীন হয়েছে, কারও সঙ্গে এর তুলনা চলে না। এটা সাম্প্রদায়িকতার দেশ না। সংবিধানে যেন কেউ হাত না দেয়। সরকারের অনেকেই বিদেশি হয়েও স্বদেশি ভাব দেখাচ্ছেন।

সেমিনারে বিশেষ অতিথির বক্তব্যে সুপ্রিম কোর্টের জ্যেষ্ঠ আইনজীবী সুব্রত চৌধুরী বলেন, বাংলাদেশে সংখ্যালঘুদের মৌলিক অধিকার ও মানবাধিকার যেন নিঃশেষ হয়ে গেছে। সমাজে ন্যায়বিচার বা সুবিচার পাওয়ার কথা থাকলেও তা মিলছে না। সংখ্যালঘুদের ওপর হামলার বিচার হয় না। কেউ কেউ ধরা পড়লেও পরে বেরিয়ে যায়।

সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী সুমন কুমার রায় বলেন, সব সরকারের আমলেই বাংলাদেশের সংখ্যালঘুরা নির্যাতিত। বর্তমান নিরপেক্ষ অন্তর্বর্তী সরকারের আমলেও সবচেয়ে বেশি উপেক্ষিত সংখ্যালঘু জনগোষ্ঠী। সংস্কার কমিশনে সংখ্যালঘুদের কোনো প্রতিনিধিত্ব নেই। রংপুরসহ বিভিন্ন এলাকায় হামলা হলেও সরকারের কোনো প্রতিক্রিয়া আসে না, এমনকি দুঃখও প্রকাশ করে না।

গত বছরের ৫ আগস্টের পর সংখ্যালঘুদের ওপর নির্যাতনের প্রেক্ষিতে প্রতিবাদ শুরু হলে তা দমন করতেই ষড়যন্ত্র শুরু হয়েছে উল্লেখ করে সুমন কুমার দাবি করেন, বাংলাদেশ সম্মিলিত সনাতনী জাগরণ জোটের মুখপাত্র চিন্ময় কৃষ্ণ দাস ব্রহ্মচারীকে মিথ্যা মামলায় গ্রেপ্তার করা হয়েছে। সনাতনী সম্প্রদায়ের বাক্‌স্বাধীনতা বন্ধ করতে, নেতৃত্ব দমন করতে এসব করা হচ্ছে।

সেমিনারে সভাপতিত্ব করেন সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী জে কে পাল। সঞ্চালনায় ছিলেন এইচআরসিবিএমের বাংলাদেশ চ্যাপটারের আহ্বায়ক লাকি বাছাড়। সেমিনারে আরও বক্তব্য দেন সুপ্রিম কোর্টের জ্যেষ্ঠ আইনজীবী মনজিল মোরশেদ ও মো. গোলাম মোস্তফা।

সম্পর্কিত নিবন্ধ