নেত্রকোনার পূর্বধলায় একটি যাত্রীবাহী চলন্ত ট্রেনের ইঞ্জিনে হঠাৎ করে আগুন ধরে। পরে স্থানীয় লোকজন ও ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা দ্রুত ঘটনাস্থলে গিয়ে ঘণ্টাখানেকের চেষ্টায় আগুন নিয়ন্ত্রণে আনেন।

আজ বুধবার দুপুর পৌনে ১২টার দিকে শ্যামগঞ্জ-জারিয়া রেলপথের জারিয়া আনসার ক্যাম্প বালুঘাটা সেতুর কাছে বলাকা ডাউন ট্রেনে এ দুর্ঘটনা ঘটে। বেলা একটার দিকে এ প্রতিবেদন লেখা পর্যন্ত ওই রেলপথে ট্রেন চলাচল বন্ধ রয়েছে।

প্রত্যক্ষদর্শী ও পূর্বধলা স্টেশন সূত্রে জানা গেছে, নেত্রকোনার শ্যামগঞ্জ-জারিয়া রেলপথে প্রতিদিন পাঁচটি ট্রেন আসা যাওয়া করে। এর মধ্যে ঢাকা থেকে একটি বলাকা ডাউন ট্রেন রয়েছে। অন্য চারটি লোকাল ট্রেন ময়মনসিংহ থেকে ওই পথে চলাচল করে। আজ বুধবার ভোর সাড়ে পাঁচটার দিকে বলাকা ট্রেনটি ঢাকার কমলাপুর স্টেশন থেকে পূর্বধলার জারিয়ার উদ্দেশে ছেড়ে যায়। বেলা সাড়ে ১১টার দিকে ট্রেনটি পূর্বধলা স্টেশনে পৌঁছে। এর তিন মিনিট পর ওই স্টেশন থেকে পরের স্টেশন জারিয়ার উদ্দেশে ছেড়ে যায়। কিন্তু দুপুর পৌনে ১২টার দিকে জারিয়া আনসার ক্যাম্প বালুঘাটা সেতুর কাছে পৌঁছালেই ট্রেনের ইঞ্জিনে হঠাৎ করে আগুন ধরে যায়। পরে স্থানীয় ব্যক্তিরা আগুন নেভাতে চেষ্টা চালান। খবর পেয়ে ফায়ার সার্ভিসের লোকজন এসে আগুন পুরোপুরি নিয়ন্ত্রণে আনেন।

ট্রেনে থাকা যাত্রী রফিকুল ইসলাম বলেন, ‘আমি ট্রেনে করে ময়মনসিংহ থেকে জারিয়া যাচ্ছিলাম। পূর্বধলা স্টেশন থেকে ট্রেন ছাড়ার প্রায় ১৫ মিনিট পরই ট্রেনের ইঞ্জিনে হঠাৎ করে অস্বাভাবিক কালো ধোঁয়া আর আগুন দেখতে পাই। আতঙ্কে যাত্রীরাও হইহুল্লোড় শুরু করেন। সঙ্গে সঙ্গে ইঞ্জিনে থাকা লোকোমাস্টার ট্রেন থামাতে বলেন। এরপর স্থানীয় লোকজন পানি ছিটিয়ে আগুন নেভানোর চেষ্টা করেন। পরে ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা এসে ইঞ্জিনের আগুন পুরোপুরি নিয়ন্ত্রণে আনেন। তবে ট্রেনে থাকা যাত্রী বা অন্য কোনো বগির ক্ষতি হয়নি।’

ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শী জারিয়া এলাকার বাসিন্দা তরিকুল মিয়া প্রথম আলোকে বলেন, ‘দুপুর পৌনে ১২টার দিকে বাড়ি থেকে বের হয়ে দেখি ইঞ্জিনে আগুন ধরা একটি যাত্রীবাহী ট্রেন বালুঘাটা সেতু এলাকায় এসে থেমেছে। আগুন দেখে স্থানীয় নারী-পুরুষ সবাই গামলা, কলসি, বালতিতে পানি এনে আগুন নেভানোর চেষ্টা করেন। পরে ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা এসে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনেন। তবে কাছে পানি থাকায় আমরা সবাই মিলে প্রায় ৯০ শতাংশ আগুন নিয়ন্ত্রণে আনি। পরে ফায়ার সার্ভিস পৌঁছায়।’

এ বিষয়ে পূর্বধলা রেলস্টেশনের স্টেশনমাস্টার আবুল মোমেন প্রথম আলোকে বলেন, ‘ইঞ্জিনের একটি যন্ত্র থেকে আগুনের সূত্রপাত হয়েছিল বলে জেনেছি। আগুন লাগার বিষয়টি টের পেয়ে চালক সঙ্গে সঙ্গে ট্রেন থামিয়ে দেন। আগুনে ইঞ্জিনটির ক্ষতি হয়েছে। পরীক্ষা-নিরীক্ষার পর পুরো ক্ষয়ক্ষতির বিষয়ে জানা যাবে। আর আগুন লাগা ইঞ্জিনটি বেশ পুরোনো ছিল। ময়মনসিংহ থেকে উদ্ধারকারী ট্রেনের ইঞ্জিন রওনা হয়েছে। ট্রেনটি শ্যামগঞ্জ জংশনে নিয়ে যাওয়া হবে। দুপুর পৌনে ১২টা থেকে শ্যামগঞ্জ-জারিয়া রেললাইনে ট্রেন চলাচল বন্ধ রয়েছে।’

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: শ য মগঞ জ জ র য়

এছাড়াও পড়ুন:

ক্ষমা পেয়ে কাজে যোগ দিলেন চিকিৎসক ধনদেব চন্দ্র বর্মণ

ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল পরিদর্শনে আসা স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক (ডিজি) মো. আবু জাফরের সঙ্গে তর্কে জড়ানো চিকিৎসক ধনদেব চন্দ্র বর্মণকে ক্ষমা করা হয়েছে। শোকজের জবাব সন্তোষজনক হওয়ায় তাঁকে ক্ষমা করে আগের পদ আবাসিক সার্জন (ক্যাজুয়ালটি) পদে বহাল করা হয়েছে। ইতিমধ্যে তিনি কর্মস্থলে যোগ দিয়েছেন।

এ বিষয়ে আজ বৃহস্পতিবার সকালে মুঠোফোনে ধনদেব চন্দ্র বর্মণ বলেন, ‘কর্তৃপক্ষ আমার জবাবে সন্তুষ্ট হয়ে পূর্বের পদে বহাল করেছেন। আমি কাজে যোগ দিয়েছি।’

গতকাল বুধবার ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল গোলাম ফেরদৌস স্বাক্ষরিত একটি পত্র জারি করা হয়। এতে বলা হয়েছে, ‘৬ ডিসেম্বর স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল পরিদর্শনকালে হাসপাতালের আবাসিক সার্জন (ক্যাজুয়ালটি) ও সহকারী অধ্যাপক (সার্জারি) ইনসিটু, ধনদেব চন্দ্র বর্মণকে মহাপরিচালকের সঙ্গে ঔদ্ধত্যপূর্ণ ও অসৌজন্যমূলক আচরণের জন্য কারণ দর্শানোর নোটিশ প্রদান করা হয় এবং সেই সঙ্গে ক্যাজুয়ালটি ওটি ইনচার্জের দায়িত্ব থেকে অব্যাহতি প্রদান করা হয়। তিনি তাঁর অনাকাঙ্ক্ষিত আচরণের কারণে ক্ষমা চেয়ে এবং ভবিষ্যতে এরূপ অনাকাঙ্ক্ষিত আচরণ করবেন না বলে অঙ্গীকার করে যথাযথ কর্তৃপক্ষের মাধ্যমে লিখিত জবাব দাখিল করেন। পরবর্তী সময়ে তাঁর দাখিলকৃত জবাব স্বাস্থ্য অধিদপ্তরে প্রেরণ করা হয়।’

চিঠিতে আরও বলা হয়, স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক মহোদয় বরাবর প্রেরিত প্রতিবেদন সন্তোষজনক হওয়ায় মহাপরিচালকের উদারতা ও মহানুভবতায় ধনদেব চন্দ্র বর্মণকে ক্ষমা প্রদর্শন করেন এবং তাঁকে পূর্বের কর্মস্থল ক্যাজুয়ালটি ওটি ইনচার্জ পদে পুনর্বহাল রাখার জন্য নির্দেশ প্রদান করেন। সে মোতাবেক তাঁকে ক্যাজুয়ালটি ওটি ইনচার্জের দায়িত্বে পুনর্বহাল করা হলো। এই আদেশ পত্র জারির তারিখ থেকে কার্যকর হবে।’

আরও পড়ুনস্বাস্থ্যের ডিজির সঙ্গে তর্কে জড়ালেন চিকিৎসক, বললেন ‘আমাকে সাসপেন্ড করেন, নো প্রবলেম’০৬ ডিসেম্বর ২০২৫

৬ ডিসেম্বর ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল পরিদর্শন করেন স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক (ডিজি) মো. আবু জাফর। এ সময় হাসপাতালের ক্যাজুয়ালটি অপারেশন থিয়েটার পরিদর্শনে গিয়ে ডিজি কক্ষের ভেতরে টেবিল থাকার কারণ জানতে চান চিকিৎসকদের কাছে। এ সময় জরুরি বিভাগের ক্যাজুয়ালটি ইনচার্জ ধনদেব চন্দ্র বর্মণ তাঁর সঙ্গে তর্কে জড়ান।

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • ডিজির সঙ্গে তর্ক, ক্ষমা চেয়ে দায়িত্বে ফিরলেন সেই চিকিৎসক
  • ক্ষমা পেয়ে কাজে যোগ দিলেন চিকিৎসক ধনদেব চন্দ্র বর্মণ
  • নান্দাইলে বিএনপির মনোনীত প্রার্থী পরিবর্তনের দাবিতে মশালমিছিল
  • অশ্রুসিক্ত ক্যামেরায় সম্ভ্রমহারার ছবি