পাকিস্তানে বাস থেকে নামিয়ে অস্ত্রধারীদের গুলি, নিহত ৭
Published: 19th, February 2025 GMT
পাকিস্তানের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলীয় বেলুচিস্তান প্রদেশে অস্ত্রধারী ব্যক্তিদের হামলায় সাত বাসযাত্রী নিহত হয়েছেন। গতকাল মঙ্গলবার লাহোরগামী বাসটিতে এ হামলা চালানো হয়। অঞ্চলটির কর্মকর্তারা এ কথা জানিয়েছেন।
বেলুচিস্তান প্রদেশের বারখান এলাকায় এ হামলার ঘটনা ঘটেছে। আফগানিস্তান ও ইরান সীমান্তবর্তী প্রদেশটিতে বিদ্রোহীদের সঙ্গে পাকিস্তানের কয়েক দশক ধরে লড়াই চলছে। এসব বিদ্রোহী ব্যাপক আকারে অঞ্চলটির স্বায়ত্তশাসন এবং সেখানকার প্রাকৃতিক সম্পদের হিস্যা চায়।
জ্যেষ্ঠ প্রশাসনিক কর্মকর্তা ওয়াকার খুরশিদ আলম রয়টার্সকে বলেন, সশস্ত্র প্রায় ৪০ ব্যক্তি কয়েকটি বাস ও যানবাহন থামিয়ে পরিচয়পত্র তল্লাশি করতে থাকে। এরপর বাস থেকে ওই সাত যাত্রীকে নামিয়ে গুলি করে হত্যা করে তারা।
খুরশিদ আলম বলেছেন, নিহত সাতজনই মধ্যাঞ্চলীয় পাঞ্জাব প্রদেশের বাসিন্দা।
ওই এলাকার সহকারী কমিশনার খাদিম হুসেন বলেছেন, বারখানকে পাঞ্জাবের দক্ষিণাঞ্চলীয় শহর ডেরা গাজী খানের সঙ্গে সংযোগকারী একটি সড়কে এ হত্যাকাণ্ডের ঘটনা ঘটেছে।
এখন পর্যন্ত কোনো গোষ্ঠী এ হামলার দায় স্বীকার করেনি। এ হত্যাকাণ্ডের উদ্দেশ্য কী, তা–ও নিশ্চিত হওয়া যায়নি। সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা রয়টার্সকে বলেছেন, এলাকাটি ঘিরে ফেলা হয়েছিল। তবে হামলাকারীরা পালিয়ে গেছে।
এর আগে গত শুক্রবার কয়লাখনির শ্রমিকদের বহনকারী একটি গাড়িকে লক্ষ্য করে বোমা হামলায় কমপক্ষে ১১ জন নিহত ও ৬ জন আহত হয়েছেন।
গত আগস্টে পাকিস্তানের বিভিন্ন থানা, অবকাঠামো এবং বেসামরিক নাগরিকদের ওপর কয়েকটি হামলার ঘটনা ঘটে। এর মধ্যে রাস্তার পাশে একটি হামলার ঘটনায় ২৩ জন নিহত হন।
বালুচ লিবারেশন আর্মি (বিএলএ) ওই হামলার দায় স্বীকার করেছিল।
পাকিস্তানে কেন্দ্রীয় সরকারের বিরুদ্ধে যে কয়েকটি জাতিগত সশস্ত্র গোষ্ঠী লড়াই করছে, তার একটি বিএলএ।
সশস্ত্র গোষ্ঠীগুলো চীনা নাগরিকদেরও হামলার নিশানা করেছে।
চীনের পৃষ্ঠপোষকতায় গোয়াদার গভীর সমুদ্রবন্দরের কাজ চলছে। এটির অবস্থান বেলুচিস্তান প্রদেশে।
.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: র ঘটন
এছাড়াও পড়ুন:
একজন চা শ্রমিকের দিনে আয় ১৭৮ টাকা
হবিগঞ্জে ছোট-বড় মিলেয়ে চা বাগানের সংখ্যা প্রায় ৪১টি। এসব বাগানের বাসিন্দা প্রায় দেড় লাখ। এর মধ্যে, স্থায়ী ও অস্থায়ী মিলে ৩২ থেকে ৩৫ হাজার মানুষ চা পাতা উত্তোলনে জড়িত।
চা বাগানে একজন শ্রমিককে প্রতিদিন ২৩ কেজি পাতা তুলতে হয়। এর বিনিময়ে মজুরি পান ১৭৮ টাকা ৫০ পয়সা। অভিযোগ রয়েছে, কোনো কোনো বাগানে নিয়মিত এই মজুরিও দেওয়া হয় না।
শ্রমিকদের দাবি, দৈনিক মজুরি ৫০০ থেকে ৬০০ টাকা করতে হবে। বর্তমানে যে মজুরি পাওয়া যায় তা দিয়ে সংসার চলে না। প্রতিদিনই নিত্যপণ্যের দাম বাড়ছে। সেই সঙ্গে চা শ্রমিকদের নৈমিত্তিক ছুটির ব্যবস্থা করতে হবে।
আরো পড়ুন:
বৈষম্য কেন? নারী শ্রমিকেরা পান না সমান মজুরি
ধান কাটায় আধুনিক যন্ত্রের ব্যবহার, পেশা বদলাচ্ছেন কৃষি শ্রমিকেরা
সরেজমিনে কয়েকটি বাগান ঘুরে দেখা যায়, শ্রমিকরা ছোট্ট কুঠুরিতে গাদাগাদি করে পরিবারের সবাইকে নিয়ে বসবাস করেন। পুষ্টিকর খাবার তো দূরের কথা, দু-বেলা পেটভরে খেতে পারেন না।
শ্রমিকদের দাবির বিষয়ে জানতে চাইলে বাংলাদেশ চা শ্রমিক ইউনিয়নের ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক নৃপেন পাল বলেন, ‘‘দুই বছর অন্তর চা শ্রমিকদের বিভিন্ন দাবি ও সমস্যা নিয়ে চা বাগান মালিক পক্ষের সংগঠনের সঙ্গে চা শ্রমিক ইউনিয়ন প্রতিনিধির বৈঠক হয়। সর্বশেষ গত বছরের আগস্টে বৈঠক হয়েছে। সে সময় ৮ টাকা ৫০ পয়সা বৃদ্ধি পেয়ে মজুরি ১৭৮ টাকা ৫০ নির্ধারিত হয়েছে।’’
শ্রমিকদের কষ্টের কথা স্বীকার করে তিনি বলেন, ‘‘দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতিতে এই টাকায় চলা যায় না। দেশের কোথাও এতো সস্তা শ্রমের দাম নেই। বর্তমানে একজন কৃষিশ্রমিক দিনে ৫০০-১০০০ টাকা আয় করেন, একজন রিকশাচালকের প্রতিদিনের আয় ৭০০ থেকে ৯০০ টাকা। সেখানে একজন চা শ্রমিক পান ১৭৮ টাকা ৫০ পয়সা। এজন্য তাকে প্রতিদিন ২৩ কেজি পাতা তুলতে হয়।’’
চা শ্রমিকদের অধিকার আদায়ে নাটক ও গানের মাধ্যমে দাবি জানিয়ে আসা জেলার চুনারুঘাট উপজেলার দেউন্দি প্রতীক থিয়েটারের সভাপতি সুনীল বিশ্বাস বলেন, ‘‘দৈনিক ১৭৮ টাকা ৫০ পয়সা মজুরিতে শ্রমিকদের চলা কঠিন হয়ে পড়েছে। অচিরেই মজুরি ৬০০ টাকা নির্ধারণ করা হোক। এছাড়া, শ্রমিকদের আরো সুযোগ সুবিধা বৃদ্ধি করা প্রয়োজন।’’
ঢাকা/রাজীব