Samakal:
2025-06-16@06:27:52 GMT

শূন্য থেকে পূর্ণ

Published: 21st, February 2025 GMT

শূন্য থেকে পূর্ণ

শহীদ মিনারে শ্রদ্ধা নিবেদন শেষে হেঁটে বইমেলায় প্রবেশ করার চিরাচরিত রূপটি গতকাল শুক্রবার দেখা যায়নি। একুশে ফেব্রুয়ারি হওয়া সত্ত্বেও সকালে সোহরাওয়ার্দী উদ্যান ও বাংলা একাডেমি প্রাঙ্গণ ফাঁকা ছিল। দর্শনার্থী ও পাঠকশূন্য পরিবেশ বিরাজ করে দুপুর পর্যন্ত। কিন্তু বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে এ চিত্র পাল্টাতে থাকে। দিনশেষে টিএসসি থেকে দোয়েল চত্বর জনসমুদ্রে পূর্ণ হয়।
শ্যামলী থেকে দুই মেয়েকে নিয়ে মেলায় আসেন সরকারি চাকরিজীবী আসমা আক্তার। তিনি বলেন, ‘ছোটবেলায় আমি পত্রিকা দেখে তালিকা করে রাখতাম কোন কোন বই কিনব। মেলার শেষ দিকে এসে সেই বইগুলো কিনতাম। অন্য কিছু না পারি, সন্তানদের সেই ধারাটা শেখানোর চেষ্টা করছি।’

কমিক্সের স্টলে দেখা যায় ভিড়। তরুণদের কাছে জনপ্রিয় মাঙ্গা কমিক্সের প্রকাশনী সোর্সের মহাব্যবস্থাপক নয়ন বলেন, ‘বিকেলের পর থেকে স্টলে ভিড় বাড়ছে। বলতে পারি, আজকে বিকেল থেকে ৩০০-৪০০ বই বেচেছি।’
গতকাল মেলায় নতুন পালক যুক্ত করেছে বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমি ও বাংলাদেশ গ্রুপ থিয়েটার ফেডারেশান। যৌথ আয়োজনে উদ্যানের মুক্তমঞ্চে চলছে অমর একুশে নাট্যোৎসব। এই মঞ্চে নাটক উপভোগ করতে আসা আল আমিন বলেন, ‘একদিকে নাটক, অন্যদিকে বইমেলা, খুব ভালো লাগছে।’

গতকাল শিশু চত্বরও ছিল সরব। বিকেলের পর থেকে শিশু চত্বরের প্রতিটি স্টলে ভিড় দেখা গেছে। ছোট্ট রিমু মেলায় তার বাবা-মায়ের সঙ্গে প্রথম এসেছে। সে ঘুরে ঘুরে বিভিন্ন স্টলে গিয়ে ছবিযুক্ত বই আছে কিনা, জিজ্ঞেস করছে। তার এই আনন্দ দেখে বাবা আমিনুল বলেন, ‘মেলায় এসে এ রকম খোলা পরিবেশ, নানান বই দেখে ওদের আনন্দে আমরাও আনন্দিত হচ্ছি।’
আগামী প্রকাশনীর মালিক ওসমান গণি বলেন, ‘আমাদের প্রকাশনা শিল্প বিকাশে অমর একুশে গ্রন্থমেলা বড় ভূমিকা রেখেছে। আমরা চাইব, এই মেলা যেন কোনোভাবে ক্ষতিগ্রস্ত না হয়। প্রকাশকরা সব সময় আশাবাদী। সামনের দিনগুলো ভালো হবে– এই প্রত্যাশা আমাদের।’

অসংগতি
টিএসসি চত্বরের মেলার প্রবেশদ্বারে নারী-পুরুষের চেকিং গেট থাকলেও গতকাল ভিড়ে আলাদা করে ঢোকার উপায় ছিল না। টিএসসি ও দোয়েল চত্বরে ছিল প্রচুর হকার। দিনে দেখা যায় অবাধে দোয়েল চত্বর থেকে ঢুকছে মোটরসাইকেল ও সিএনজিচালিত অটোরিকশা। সন্ধ্যায় সে পরিস্থিতি না থাকলেও হকারদের অত্যাচার বাড়ে। পুরো এলাকাজুড়ে সৃষ্টি হয় মেলায় আগত পাঠক ও দর্শনার্থীদের, ফলে যানজট। পুলিশ ও মেলার নিরাপত্তারক্ষীদের শৃঙ্খলা বজায় রাখতে হিমশিম খেতে হয়।

নতুন বই
গতকাল মেলায় আসে ৩০৭টি নতুন বই। এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো–আবদুন নূরের রক্তস্নাত একুশে (আগামী), মাসুম মাহমুদের ইফা ও জাদুর পেনসিল (ময়ূরপঙ্খি), দেওয়ান আজিজের মাটির ময়না ও হিম বাতাসের গল্প (অর্জন), হাসান হাফিজের সোনালী সব রূপকথা (বার্ডস), ড.

মোহাম্মদ আলীর বিজ্ঞানের জাদু: জাদুর বিজ্ঞান (প্রিয় প্রকাশ)।

মঞ্চের আয়োজন
সকাল ৮টায় মূল মঞ্চে অনুষ্ঠিত হয় স্বরচিত কবিতা পাঠের আসর। এতে প্রায় দেড় শতাধিক কবি অংশ নেন। সভাপতিত্ব করেন হাসান হাফিজ। বিকেল ৪টায় মূল মঞ্চে অনুষ্ঠিত হয় অমর একুশে বক্তৃতা ২০২৫। স্বাগত বক্তব্য দেন একাডেমির মহাপরিচালক মোহাম্মদ আজম। ‘ভাষার লড়াই, গণঅভ্যুত্থান ও বৈষম্যহীন বাংলাদেশের স্বপ্ন’ শীর্ষক প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন আনু মুহাম্মদ। সভাপতিত্ব করেন বাংলা একাডেমির সভাপতি আবুল কাসেম ফজলুল হক।

আনু মুহাম্মদ বলেন, ভাষা আন্দোলনের প্রেরণাই ছিল পরবর্তী উনসত্তরের গণঅভ্যুত্থান, একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধ, নব্বইয়ের স্বৈরশাসনবিরোধী আন্দোলন এবং চব্বিশের ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানের শক্তি। ন্যায়সংগত, বৈষম্যমুক্ত সমাজের আকাঙ্ক্ষা নিয়ে আমরা মুক্তিযুদ্ধের আগে ও পরে নিরন্তর সংগ্রাম করেছি।
লেখক বলছি মঞ্চে আলোচনা করেন মোহন রায়হান এবং আবিদ আজম।
সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে কবিতা আবৃত্তি করেন রুম্মানা জান্নাত, নিলয় রফিক ও কাজিম রেজা। সংগীত পরিবেশন করেন শিল্পী শাহিন পারভীন, অধরা সরকার রিয়া, এ কে এম সাইদ হোসেন, তাহরিমা বতুল রিভাসহ অনেকে।

 

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: বইম ল এক ড ম গতক ল

এছাড়াও পড়ুন:

লন্ডনে ড. ইউনূস-তারেক রহমানের বৈঠককে স্বাগত জানাল জেএসডি

লন্ডনে প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস ও বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের বৈঠকের আলোচনা ও ঐকমত্যের সূচনাকে স্বাগত জানিয়েছে জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল (জেএসডি)। দলটি বলেছে, আমরা স্মরণ করিয়ে দিতে চাই, জনগণ শুধু কথায় নয়, বাস্তবে সংস্কার ও বিচারের দৃশ্যমান অগ্রগতির পদক্ষেপ দেখতে চায়।

শুক্রবার জেএসডির সভাপতি আ স ম আবদুর রব ও সাধারণ সম্পাদক শহীদ উদ্দিন মাহমুদ স্বপন এক বিবৃতিতে এ কথা বলেন।

তারা বলেন, এই উচ্চপর্যায়ের সংলাপ দেশে রাজনৈতিক সমঝোতা ও জাতীয় ঐক্যের মাধ্যমে গণঅভ্যুত্থানের কাঙ্ক্ষিত অভিপ্রায় অনুযায়ী রাষ্ট্র সংস্কার, শান্তিপূর্ণ ক্ষমতা হস্তান্তর এবং গণতন্ত্রের ধারাবাহিকতা প্রতিষ্ঠার পথে এক গুরুত্বপূর্ণ মাইলফলক।

বিবৃতিতে নেতারা বলেন, অধ্যাপক ইউনূস এবং তারেক রহমানের বৈঠক ও বিবৃতিতে আগামী বছরের পবিত্র রমজানের আগেই একটি নির্বাচন অনুষ্ঠানের সম্ভাবনার ওপর গুরুত্বারোপ এবং তার পূর্বশর্ত হিসেবে কাঙ্ক্ষিত সংস্কার ও ফ্যাসিস্ট সরকারের বিচারের প্রক্রিয়ায় দৃশ্যমান অগ্রগতি অর্জনের ঘোষিত প্রত্যয়ে রাজনীতিতে স্থিতিশীলতা নিশ্চিত করবে।

বিবৃতিতে বলা হয়, গণমানুষের রক্তস্নাত গণঅভ্যুত্থানের অন্যতম দাবি- গণতন্ত্র পুনঃপ্রতিষ্ঠার জন্য কাঠামোগত মৌলিক সংস্কার এবং গণহত্যাকারী ফ্যাসিবাদী শক্তির বিচারের ব্যবস্থা। এই বিষয় দুটির দৃশ্যমান অগ্রগতিই কেবল একটি গ্রহণযোগ্য নির্বাচনের ভিত্তি রচনা করতে পারে।

রাজনৈতিক দলগুলোর পাশাপাশি সমাজের শ্রমজীবী, কর্মজীবী ও পেশাজীবীদের মতামত, আকাঙ্ক্ষা ও অংশগ্রহণে রাষ্ট্রীয় রাজনীতির মৌলিক সংস্কারের লক্ষ্যে দ্রুত ‘জাতীয় সনদ’ প্রণয়নের আহ্বান জানায় জেএসডি।

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • নাগরিক সমাজ শাসকদের পক্ষে থাকে কেন?
  • আবু সাঈদ হত্যা: এক মাসের মধ্যে তদন্ত শেষ করার নির্দেশ ট্রাইব্যুনালের
  • রংপুরে আবু সাঈদ হত্যা: এক মাসের মধ্যে তদন্ত শেষ করার নির্দেশ ট্রাইব্যুনালের
  • গণঅভ্যুত্থানে আহত সামিউলের দিন কাটছে অনিশ্চয়তায়
  • লন্ডনে ড. ইউনূস-তারেক রহমানের বৈঠককে স্বাগত জানাল জেএসডি