Samakal:
2025-05-01@03:15:30 GMT

শূন্য থেকে পূর্ণ

Published: 21st, February 2025 GMT

শূন্য থেকে পূর্ণ

শহীদ মিনারে শ্রদ্ধা নিবেদন শেষে হেঁটে বইমেলায় প্রবেশ করার চিরাচরিত রূপটি গতকাল শুক্রবার দেখা যায়নি। একুশে ফেব্রুয়ারি হওয়া সত্ত্বেও সকালে সোহরাওয়ার্দী উদ্যান ও বাংলা একাডেমি প্রাঙ্গণ ফাঁকা ছিল। দর্শনার্থী ও পাঠকশূন্য পরিবেশ বিরাজ করে দুপুর পর্যন্ত। কিন্তু বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে এ চিত্র পাল্টাতে থাকে। দিনশেষে টিএসসি থেকে দোয়েল চত্বর জনসমুদ্রে পূর্ণ হয়।
শ্যামলী থেকে দুই মেয়েকে নিয়ে মেলায় আসেন সরকারি চাকরিজীবী আসমা আক্তার। তিনি বলেন, ‘ছোটবেলায় আমি পত্রিকা দেখে তালিকা করে রাখতাম কোন কোন বই কিনব। মেলার শেষ দিকে এসে সেই বইগুলো কিনতাম। অন্য কিছু না পারি, সন্তানদের সেই ধারাটা শেখানোর চেষ্টা করছি।’

কমিক্সের স্টলে দেখা যায় ভিড়। তরুণদের কাছে জনপ্রিয় মাঙ্গা কমিক্সের প্রকাশনী সোর্সের মহাব্যবস্থাপক নয়ন বলেন, ‘বিকেলের পর থেকে স্টলে ভিড় বাড়ছে। বলতে পারি, আজকে বিকেল থেকে ৩০০-৪০০ বই বেচেছি।’
গতকাল মেলায় নতুন পালক যুক্ত করেছে বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমি ও বাংলাদেশ গ্রুপ থিয়েটার ফেডারেশান। যৌথ আয়োজনে উদ্যানের মুক্তমঞ্চে চলছে অমর একুশে নাট্যোৎসব। এই মঞ্চে নাটক উপভোগ করতে আসা আল আমিন বলেন, ‘একদিকে নাটক, অন্যদিকে বইমেলা, খুব ভালো লাগছে।’

গতকাল শিশু চত্বরও ছিল সরব। বিকেলের পর থেকে শিশু চত্বরের প্রতিটি স্টলে ভিড় দেখা গেছে। ছোট্ট রিমু মেলায় তার বাবা-মায়ের সঙ্গে প্রথম এসেছে। সে ঘুরে ঘুরে বিভিন্ন স্টলে গিয়ে ছবিযুক্ত বই আছে কিনা, জিজ্ঞেস করছে। তার এই আনন্দ দেখে বাবা আমিনুল বলেন, ‘মেলায় এসে এ রকম খোলা পরিবেশ, নানান বই দেখে ওদের আনন্দে আমরাও আনন্দিত হচ্ছি।’
আগামী প্রকাশনীর মালিক ওসমান গণি বলেন, ‘আমাদের প্রকাশনা শিল্প বিকাশে অমর একুশে গ্রন্থমেলা বড় ভূমিকা রেখেছে। আমরা চাইব, এই মেলা যেন কোনোভাবে ক্ষতিগ্রস্ত না হয়। প্রকাশকরা সব সময় আশাবাদী। সামনের দিনগুলো ভালো হবে– এই প্রত্যাশা আমাদের।’

অসংগতি
টিএসসি চত্বরের মেলার প্রবেশদ্বারে নারী-পুরুষের চেকিং গেট থাকলেও গতকাল ভিড়ে আলাদা করে ঢোকার উপায় ছিল না। টিএসসি ও দোয়েল চত্বরে ছিল প্রচুর হকার। দিনে দেখা যায় অবাধে দোয়েল চত্বর থেকে ঢুকছে মোটরসাইকেল ও সিএনজিচালিত অটোরিকশা। সন্ধ্যায় সে পরিস্থিতি না থাকলেও হকারদের অত্যাচার বাড়ে। পুরো এলাকাজুড়ে সৃষ্টি হয় মেলায় আগত পাঠক ও দর্শনার্থীদের, ফলে যানজট। পুলিশ ও মেলার নিরাপত্তারক্ষীদের শৃঙ্খলা বজায় রাখতে হিমশিম খেতে হয়।

নতুন বই
গতকাল মেলায় আসে ৩০৭টি নতুন বই। এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো–আবদুন নূরের রক্তস্নাত একুশে (আগামী), মাসুম মাহমুদের ইফা ও জাদুর পেনসিল (ময়ূরপঙ্খি), দেওয়ান আজিজের মাটির ময়না ও হিম বাতাসের গল্প (অর্জন), হাসান হাফিজের সোনালী সব রূপকথা (বার্ডস), ড.

মোহাম্মদ আলীর বিজ্ঞানের জাদু: জাদুর বিজ্ঞান (প্রিয় প্রকাশ)।

মঞ্চের আয়োজন
সকাল ৮টায় মূল মঞ্চে অনুষ্ঠিত হয় স্বরচিত কবিতা পাঠের আসর। এতে প্রায় দেড় শতাধিক কবি অংশ নেন। সভাপতিত্ব করেন হাসান হাফিজ। বিকেল ৪টায় মূল মঞ্চে অনুষ্ঠিত হয় অমর একুশে বক্তৃতা ২০২৫। স্বাগত বক্তব্য দেন একাডেমির মহাপরিচালক মোহাম্মদ আজম। ‘ভাষার লড়াই, গণঅভ্যুত্থান ও বৈষম্যহীন বাংলাদেশের স্বপ্ন’ শীর্ষক প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন আনু মুহাম্মদ। সভাপতিত্ব করেন বাংলা একাডেমির সভাপতি আবুল কাসেম ফজলুল হক।

আনু মুহাম্মদ বলেন, ভাষা আন্দোলনের প্রেরণাই ছিল পরবর্তী উনসত্তরের গণঅভ্যুত্থান, একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধ, নব্বইয়ের স্বৈরশাসনবিরোধী আন্দোলন এবং চব্বিশের ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানের শক্তি। ন্যায়সংগত, বৈষম্যমুক্ত সমাজের আকাঙ্ক্ষা নিয়ে আমরা মুক্তিযুদ্ধের আগে ও পরে নিরন্তর সংগ্রাম করেছি।
লেখক বলছি মঞ্চে আলোচনা করেন মোহন রায়হান এবং আবিদ আজম।
সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে কবিতা আবৃত্তি করেন রুম্মানা জান্নাত, নিলয় রফিক ও কাজিম রেজা। সংগীত পরিবেশন করেন শিল্পী শাহিন পারভীন, অধরা সরকার রিয়া, এ কে এম সাইদ হোসেন, তাহরিমা বতুল রিভাসহ অনেকে।

 

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: বইম ল এক ড ম গতক ল

এছাড়াও পড়ুন:

শেখ হাসিনাকে দেশে ফিরে মামলা মোকাবিলার চ্যালেঞ্জ মির্জা ফখরুলের

গণঅভ্যুত্থানের মুখে পালিয়ে ভারতে আশ্রয় নেওয়া সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে দেশে ফিরে মামলা মোকাবিলার চ্যালেঞ্জ গ্রহণের আহ্বান জানিয়েছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। 

মঙ্গলবার (২৯ এপ্রিল) বিকালে ঠাকুরগাঁও সদর উপজেলার চিলারং ইউনিয়নে দলীয় কর্মসূচির অংশ হিসেবে গণসংযোগের সময় দেওয়া বক্তব্যে এই আহ্বান রাখেন তিনি।

শেখ হাসিনার শাসন আমলে বিএনপি নেতাকর্মীদের নির্যাতনের শিকার হওয়ার কথা তুলে ধরেন মির্জা ফখরুল। গুম, খুন, ভিত্তিহীন মামলা, লুটপাট, টাকা পাচার, বাকস্বাধীনতা হরণ ও ভোট চুরিসহ নানা বিষয় নিয়ে কথা বলেন তিনি। 

আরো পড়ুন:

জুলাই গণহত্যা: শেখ হাসিনাসহ ৪০৮ জনের বিরুদ্ধে আরেক মামলা

হাসিনা-রেহানাসহ ২২ জনের গ্রেপ্তার-সংক্রান্ত প্রতিবেদন ১২ মে

শেখ হাসিনাকে উদ্দেশ্য করে মির্জা ফখরুল বলেন, ‍“আমাদের নেতাকর্মীদের গুম করা হয়েছে। লাখ লাখ নেতাকর্মীকে মিথ্যা মামলা দিয়ে নির্যাতন করা হয়েছে, তাদের ঘরে থাকতে দেননি আপনি। আমরা তো কোথাও পালিয়ে যাইনি। আদালতে মিথ্যা মামলা আইনের মাধ্যমে ফেইস (মোকাবিলা) করেছি। উকিল ধরে জামিন নিয়েছি। আপনি (শেখ হাসিনা) পালিয়ে আছেন কেন? আপনিও মামলা লড়েন। আপনি দেশে এসে দাড়ান না দেখি।”

জনগণের উদ্দেশে তিনি বলেন, “আপনারা অনেকে মনে করেন শেখ হাসিনা আবারো দেশে ফিরে আসবেন। তিনি তো ১৫ বছর দেশের প্রধানমন্ত্রী ছিলেন। তার বাবা শেখ মুজিবুর রহমান একজন বিখ্যাত মানুষ ছিলেন। তার তো দেশ থেকে পালানোর কথা ছিল না। তিনি পালালেন কেন? কারণ তিনি একজন ডাইনি ছিলেন। জনগণের ওপর এমন নির্যাতন করেছেন যে, তিনি পালাতে বাধ্য হয়েছেন। জনগণ যদি সেদিন তাকে পেত, তাহলে ছিঁড়ে খেত।” 

দলীয় নেতাকর্মীদের উদ্দেশে মির্জা ফখরুল বলেন, “হাসিনা দেশে ফিরে রাজনীতি করলে আমাদের কিছু করতে হবে না, জনগণই তাকে দেখে নেবে।” 

আওয়ামী লীগের শাসনামলের কথা স্মরণ করিয়ে দিয়ে তিনি বলেন, “বিএনপির নেতাকর্মীরা যেন আওয়ামী লীগের মতো অন্যায় না করে; এতে মানুষ ভালোবাসবে না। দলের কোনো নেতাকর্মীরা অন্যায় করলে যেন জেলার নেতারা তাদের শক্ত হাতে দমন করেন; তারা যেন অন্যায়কারীদের পুলিশের হাতে তুলে দেন। তাই অপকর্ম বন্ধ করুন, না হলে আওয়ামী লীগের মতো অবস্থা হবে।” 

ত্রোদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের দৃষ্টি রেখে জনসংযোগ চালিয়ে যাচ্ছে বিএনপি। মির্জা ফখরুলসহ দলটির শীর্ষ নেতারা সভা-সমাবেশ করছেন। এই নির্বাচনে আওয়ামী লীগের অংশগ্রহণের সুযোগ রাখা, না রাখা নিয়ে ব্যাপক মতপার্থক্য রয়েছে; সেই সঙ্গে আইনি ঝক্কিও সামনে আসছে।

গণহত্যার দায়ে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের একাধিক মামলায় আসামি করা হয়েছে শেখ হাসিনাকে। এ ছাড়া কয়েক শত ফৌজদারি মামলায় তিনি আসামি। অনেক মামলায় তাকে গ্রেপ্তারে পরোয়ানা জারি করেছেন আদালত। তবে ভারতের আশ্রয়ে থাকা শেখ হাসিনাকে দেশে ফেরানোর কোনো নিশ্চয়তা এখনো তৈরি হয়নি। 

গণঅভ্যুত্থানের মুখে ৫ আগস্ট দেশ ছেড়ে ছোট বোন রেহানাকে সঙ্গে নিয়ে ভারতে চলে যান শেখ হাসিনা। সেদেশে উচ্চনিরাপত্তা শৃঙ্খলে বসবাস করছেন বলে আন্তর্জাতিক সাংবাদমাধ্যমের খবরে বলা হয়ে থাকে। সেখান থেকে দেশে আওয়ামী লীগ ও এর সহযোগী সংগঠনের বিভিন্ন পর্যায়ের নেতাকর্মীদের সঙ্গে অনলাইনে তার কথোপকথনের ভিডিও ছড়িয়ে পড়ে, যা নিয়ে অস্বস্তির কথা ভারতকে জানিয়ে রেখে অন্তর্বর্তী সরকার। 

ঢাকা/মঈনুদ্দীন/মাসুদ

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • সংস্কারের একাল-সেকাল
  • তরুণ সমাজ দেশপ্রেমে উত্তীর্ণ হয়েছে, বাংলাদেশ উচ্চস্থানে উন্নীত হবে : ডিসি
  • শামীম ওসমানের ছেলে অয়নের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা
  • শেখ হাসিনাকে দেশে ফিরে মামলা মোকাবিলার চ্যালেঞ্জ মির্জা ফখরুলের
  • গণঅভ্যুত্থানের তরুণ নেতৃত্ব ও রাজনীতিতে প্রাণপ্রবাহ
  • জুলাই বিপ্লবী মেয়েরা আজ নিরাপদ বোধ করছে না: ফরহাদ মজহার
  • আশুলিয়ায় লাশ পোড়ানোর ঘটনায় জড়িত দুজন শনাক্ত  
  • ড. ইউনূস অভ্যুত্থানের ঘোষণাপত্র দেননি, আমাদের হাতে বিপ্লবের দলিল নেই: ফরহাদ মজহার
  • ড. ইউনূস গণঅভ্যুত্থানের ফসল, নেতা নন: ফরহাদ মজহার
  • গণঅভ্যুত্থানে শহীদ রিজভীর ভাইকে কুপিয়ে জখম, গ্রেপ্তার ৩