ছাত্রাবাস থেকে রাবি শিক্ষার্থীর মরদেহ উদ্ধার
Published: 22nd, February 2025 GMT
ছাত্রাবাসের নিজ কক্ষ থেকে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের (রাবি) শিক্ষার্থী মো. সিফাত সিফাতুল্লাহর ঝুলন্ত মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে।
শুক্রবার (২১ ফেব্রুয়ারি) সন্ধ্যায় বিশ্ববিদ্যালয়ের সংলগ্ন মেহেরচণ্ডী এলাকার তুহিন ছাত্রাবাস থেকে এ মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক মাহবুবর রহমান।
মো.
একই ছাত্রাবাসে থাকা গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের শিক্ষার্থী সিদ্দিকুর রহমান বলেন, “সিফাত বেশ কিছুদিন ধরে বিষন্নতায় ভুগছিলেন। এ কারণেই হয়তো আত্মহত্যা করেছেন।”
সিফাতের সহপাঠী হাসিব চৌধুরী বলেন, “সিফাত কিছুদিন ধরে নিয়ে বিষন্নতায় ভুগছিলেন। কিন্তু আমাদের কারো সঙ্গে এ বিষয়ে কিছু শেয়ার করেনি। তিনি খুবই ভালো একটি ছেলে। নিয়মিত ধর্মচর্চা করেন। সিফাতের আকস্মিক মৃত্যুর খবর কোনভাবেই বিশ্বাস করতে পারছি না।”
এ বিষয়ে প্রক্টর অধ্যাপক মাহবুবর রহমান বলেন, “আমাদের এক শিক্ষার্থী ক্যাম্পাস সংলগ্ন একটি ছাত্রাবাসে তার নিজ কক্ষে আত্মহত্যা করেছে। এ বিষয়ে তার রুমমেট আমাকে সন্ধ্যা ৬টার দিকে কল করে। শোনামাত্রই আমি থানা পুলিশকে কল করি এবং সেখানে গিয়ে দেখি গলায় গামছা পেঁচিয়ে সিলিং ফ্যানের সঙ্গে ঝুলে আছে। ঘটনাস্থলে গিয়ে পুলিশ নামিয়ে দেখে ইতোমধ্যে মারা গেছে।
মৃত্যুর কারণ সম্পর্কে জানতে চাইলে তিনি বলেন, “তার বন্ধুবান্ধব ও বিভাগের শিক্ষকদের থেকে যতটুকু জানতে পেরেছি, সে খুবই হতাশায় ছিল। তার রুমমেট বাইরে গেলেই সে আত্মহত্যা করে।”
চন্দ্রিমা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মতিয়ার রহমান (ওসি) জানান, তারা ঝুলন্ত অবস্থায় ওই শিক্ষার্থীর লাশ উদ্ধার করেছেন। লাশটি ময়নাতদন্তের জন্য রাজশাহী মেডিকেল হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়েছে। মৃত্যুর কারণ এখনো বলা যাচ্ছে না।
ঢাকা/ফাহিম/মেহেদী
উৎস: Risingbd
এছাড়াও পড়ুন:
সাকিবের পথে হাঁটছেন মিরাজ
সাকিব আল হাসানের সঙ্গে নিজের তুলনাকে মেহেদী হাসান মিরাজ হয়তো উপভোগই করেন। কারণ, তাঁর স্বপ্ন সাকিবের মতো বিশ্বনন্দিত অলরাউন্ডার হয়ে ওঠা। সেই পথে বোধ হয় গুটি গুটি পায়ে এগিয়ে যাচ্ছেন। বিশেষ করে টেস্টে দেশে-বিদেশে সম্প্রতি ভালো করছেন। পাকিস্তানে দারুণ প্রশংসিত ছিলেন অলরাউন্ড পারফরম্যান্স করে। জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে দুই টেস্টের হোম সিরিজে উভয় টেস্টে নিজেকে ছাপিয়ে গেলেন। সিলেটের হারের ম্যাচেও ১০ উইকেট ছিল তাঁর। চট্টগ্রামে সেঞ্চুরি ও পাঁচ উইকেট নিয়ে সাকিব ও সোহাগ গাজীর কাতারে নাম লেখালেন। মূলত মিরাজের অলরাউন্ড নৈপুণ্যে ইনিংস ব্যবধানে টেস্ট জেতা সম্ভব হয়।
গতকাল শতকের ঘরে যেতে কম কসরত করতে হয়নি তাঁর। নব্বইয়ের ঘরে গিয়ে তো অনিশ্চয়তায় পড়ে গিয়েছিলেন হাসানের আউটের শঙ্কায়। ভাগ্য সুপ্রসন্ন হওয়ায় দ্বিতীয় শতকের দেখা পান তিনি। ২০২১ সালে এই চট্টগ্রামেই ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে প্রথম টেস্ট সেঞ্চুরি ছিল মিরাজের। গতকালের পারফরম্যান্স নিয়ে টাইগার এ অলরাউন্ডার বলেন, ‘ব্যাটিংয়ের সময় চেষ্টা করেছিলাম ২ রান নিয়ে ১০০ রানে যেতে। সেভাবে দৌড় দিয়েছিলাম। কিন্তু ফিল্ডারের হাতে বল চলে গিয়েছিল (হাসি)। তার পর তো আল্লাহর ওপর ছেড়ে দিয়েছিলাম। হাসান অনেক ভালো সাপোর্ট দিয়েছে। তানজিমও ভালো সাপোর্ট দিয়েছে। তাইজুল ভাইও। এই তিনজনকেই অনেক অনেক ধন্যবাদ। কারণ, ওদের জন্যই আমি ১০০ রান করতে পেরেছি।’
জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে করা সেঞ্চুরি ও পাঁচ উইকেট প্রাপ্তিকে নিজের সেরা পারফরম্যান্স দাবি মিরাজের, ‘ওয়েস্ট ইন্ডিজের সাথে ১০০ করেছিলাম, ৩ উইকেট নিয়েছিলাম। অল্পের জন্য ৫ উইকেট হয়নি। হলে ভালো লাগত। ওই ম্যাচ হেরেছিলাম এই মাঠে। সে জিনিসটা মাথায় ছিল। ভালো লাগছে ম্যাচটি জিতেছি।’ মিরাজ ১৬২ বলে ১১টি চার ও একটি ছয় মেরে ১০৪ রান করেন। ২১ ওভারে ৩২ রান দিয়ে নেন পাঁচ উইকেট।
টেস্টে এ রকম অলরাউন্ড পারফরম্যান্স বাংলাদেশে আর দু’জনের আছে। সাকিব আল হাসান দু’বার ম্যাচে সেঞ্চুরি ও পাঁচ উইকেট পেয়েছেন ২০১১ সালে পাকিস্তানের বিপক্ষে মিরপুরে আর ২০১৪ সালে খুলনায়। সোহাগ গাজী নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে সেঞ্চুরি ও পাঁচ উইকেট শিকার করেন চট্টগ্রামে। সেই মাইলফলক ছোঁয়া মিরাজকে সম্প্রতি অলরাউন্ডার ক্যাটেগরিতে ফেলা হয়। সাকিবের বিকল্প ভাবা হয় তাঁকে এখন।
এ ব্যাপারে মিরাজের অভিমত, ‘দেখেন একটা জিনিস, যখন সাকিব ভাই ছিলেন, ভিন্ন রোল ছিল। এখন ভিন্ন রোল। যেহেতু টিম ম্যানেজমেন্ট, সবাই ব্যাটিংয়ে আস্থা রাখে। আমিও ভেবেছি আমার ব্যাটিংটা গুরুত্বপূর্ণ। এখন হয়তো আমি লিডিং রোল প্লে করছি, আগে সাকিব ভাই করত। এখন আমাদের দায়িত্ব আরও বেশি।’
সিলেটে দুই ইনিংসে পাঁচ উইকেট করে নিয়েও দলকে জেতাতে পারেননি মিরাজ। চট্টগ্রামে সাদমান, তাইজুলের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে ম্যাচ জয়ের নায়ক হন। এই সাফল্য নিয়ে বলেন, ‘সত্যি কথা বলতে, প্রথম ম্যাচ হারার পর যেভাবে কামব্যাক করেছি, এটা খুবই দরকার ছিল। আমাদের সবাই ভেবেছিল, আমরা ভালো করব।’ মিরাজ কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেছেন কোচিং স্টাফ ও সতীর্থের কাছে। আর তাঁর কাছে কৃতজ্ঞতা পুরো দলের।