জুলাই গণঅভ্যুত্থানে অংশ নেওয়া শিক্ষার্থীরা ট্রমায় আছেন
Published: 22nd, February 2025 GMT
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে (ঢাবি) স্নাতক ও স্নাতকোত্তর প্রর্যায়ের শিক্ষার্থীদের মানসিক সমস্যা নিয়ে সেমিনার আয়োজিত হয়েছে। এতে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র-আন্দোলন ও জুলাই গণঅভ্যুত্থানকে কেন্দ্র করে দেশের স্নাতক ও স্নাতকোত্তর পর্যায়ের শিক্ষার্থীরা মানসিক স্বাস্থ্য সমস্যায় ভুগছেন বলে জানানো হয়।
শনিবার (২২ ফেব্রুয়ারি) দুপুরে বিশ্ববিদ্যালয়ের সিরাজুল ইসলাম লেকচার হলে আয়োজিত ‘অ্যাড্রেসিং সাইকোলজি প্রবলেম এমাং আন্ডার গ্রাজুয়েট অ্যান্ড পোস্ট গ্রাজুয়েট স্টুডেন্টস আফটার জুলাই-আগস্ট মুভমেন্ট ইন বাংলাদেশ’ শীর্ষক বৈজ্ঞানিক সেমিনারে এ তথ্য জানানো হয়।
সেন্টার ফর রিসার্চ ইন মাল্টিডিসিপ্লিন (সিআরএম), ঢাকা ইউনিভার্সিটি রিসার্চ সোসাইটি (ডিইউআরএস) এবং সেন্টার ফর সাইকোলজিক্যাল হেলথ (সিপিএইচ) এর যৌথ উদ্যোগে সেমিনারটি আয়োজিত হয়েছে।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় এডুকেশনাল এন্ড কাউন্সেলিং সাইকোলজি বিভাগের অধ্যাপক ড.
এ সময় অন্যদের মাঝে বক্তব্য দেন, যুক্তরাজ্যের সেন্টার ফর সাইকোলজিক্যাল হেলথ এর পরিচালক নাজমুল হোসেন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় মনোবিজ্ঞান বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক সৈয়দ তানভীর রহমান, ক্লিনিক্যাল সাইকোলজি বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ড. এস এম আবুল কালাম আজাদ, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের মনোরোগ বিভাগের সহকারী অধ্যাপক ড. সেলিনা ফাতেমা বিনতে শহীদ, সাইকোলজি অ্যান্ড রিসার্চ একাডেমির পরিচালক মো. ওমর ফারুক, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের মুখপাত্র উমামা ফাতেমা প্রমুখ।
মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন কানাডা প্রবাসী মনোবিজ্ঞানী সাদিয়া শারমিন উর্মি এবং সিআরএম এর প্রতিষ্ঠাতা মাহাদী-উল-মোর্শেদ। স্বাগত বক্তব্য দেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় গবেষণা সংসদের ইনোভেশন অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট উইং এর সাধারণ সম্পাদক নিশিতা জামান নিহা।
মূল প্রবন্ধে সাদিয়া শারমিন উর্মি ও মাহাদী-উল-মোর্শেদ জানান, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র-আন্দোলন ও জুলাই গণঅভ্যুত্থানকে কেন্দ্র করে দেশের স্নাতক ও স্নাতকোত্তর পর্যায়ের শিক্ষার্থীরা মানসিক স্বাস্থ্য সমস্যায় ভুগছে। যেসব শিক্ষার্থী অন্তত পাঁচদিন আন্দোলনে অংশ নিয়েছিলেন, তারা এক ধরনের মানসিক ট্রমার মধ্যে রয়েছেন।
ঢাকা, চট্টগ্রাম, সিলেট ও রাজশাহী অঞ্চলে ১৭-১৮ বছর বয়সী ৩৭৫ জন শিক্ষার্থীর কাছ থেকে তথ্য সংগ্রহ করে এ গবেষণা প্রতিবেদন তৈরি করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন গবেষকগণ।
উপ-উপাচার্য (শিক্ষা) অধ্যাপক ড. মামুন আহমেদ গবেষকদের ধন্যবাদ জানিয়ে বলেন, “বর্তমানে ব্যক্তি, পরিবারসহ সমাজের সর্বত্র অস্থিরতা বিরাজ করছে। বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন ও জুলাই গণঅভ্যুত্থানের সময় চোখের সামনে রক্ত ও হতাহতের দৃশ্য দেখে মানুষের মানসিক চাপ ও অস্থিরতা বেড়ে গেছে। মানুষের মধ্যে এক ধরনের ট্রমা কাজ করছে।”
তিনি বলেন, “শিক্ষার্থীদের এ ট্রমা কাটাতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন বিভিন্ন উদ্যোগ গ্রহণ করেছে। সবার সম্মিলিত প্রচেষ্টায় শীঘ্রই সামাজিক অস্থিরতা দূর করে একটি সুস্থ সমাজ গঠন সম্ভব হবে।”
ঢাকা/সৌরভ/মেহেদী
উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর জ ল ই গণঅভ য ত থ ন
এছাড়াও পড়ুন:
গণঅভ্যুত্থানের বর্ষপূর্তি উপলক্ষে ঢাবি শিবিরের ৩ দিনব্যাপী কর্মসূচি
জুলাই গণঅভ্যুত্থানের বর্ষপূর্তি উপলক্ষে তিন দিনব্যাপী কর্মসূচি ঘোষণা করেছে বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্রশিবিরের ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় (ঢাবি) শাখা।
বুধবার (৩০ জুলাই) বিকেলে বিশ্ববিদ্যালয়ের মধুর ক্যান্টিনের সামনে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এ কর্মসূচি ঘোষণা করেন শাখা সভাপতি এসএম ফরহাদ।
আগামী ৫, ৬ ও ৭ আগস্ট এই কর্মসূচিগুলো অনুষ্ঠিত হবে। আয়োজনে থাকছে প্রামাণ্যচিত্র প্রদর্শন, বিপ্লবী নাটক, গান, কবিতা, আলোচনা সভা ও বিশেষ চিত্র প্রদর্শনী। কর্মসূচির সূচনা হবে ৫ আগস্ট (মঙ্গলবার) ভোর ৫টায় প্রতীকী সাইকেল র্যালির মাধ্যমে, যা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাস থেকে শুরু হয়ে গণভবন পর্যন্ত যাবে।
আরো পড়ুন:
মেয়াদোত্তীর্ণ অগ্নিনির্বাপকে চলছে বেরোবি
তাহলে তো স্পন্সর নিয়ে প্রোগ্রাম করলেই চাঁদাবাজি: সালাউদ্দিন
সকাল ৯টায় টিএসসিতে থাকবে সাধারণ নাস্তার আয়োজন। এর পরপরই প্রদর্শিত হবে ‘জুলাই বিপ্লব’ ভিত্তিক একটি প্রামাণ্যচিত্র। একইসঙ্গে বিপ্লবী গান ও কবিতা পরিবেশিত হবে । সকাল ১০টা থেকে শহীদ পরিবার ও আহত যোদ্ধাদের মুখে অভ্যুত্থানের অভিজ্ঞতা শোনার আয়োজন থাকবে।
দুপুর ২টায় একটি মাইম পরিবেশনা ও নাটক মঞ্চস্থ হবে। এরপর বিকেল সাড়ে ৩টা ও সাড়ে ৫টায় পরপর আরো দুটি নাটক প্রদর্শিত হবে। সন্ধ্যা ৬টায় ব্যতিক্রমী আয়োজন ‘প্ল্যানচ্যাট বিতর্ক’ অনুষ্ঠিত হবে। এটি একটি প্রতীকী বিতর্ক, যেখানে গণআন্দোলনে নিহতদের উত্তরাধিকার ও আত্মিক উপস্থিতিকে ঘিরে আলাপ-প্রতিআলাপের একটি রূপক পরিসর গড়ে উঠবে ।
৬ আগস্ট দ্বিতীয় দিনের কর্মসূচির শুরুতেই থাকবে রাজনৈতিক ও দার্শনিক আলোচনা সভা। সকাল ১০টার দিকে ‘জুলাই গণঅভ্যুত্থান ও ফ্যাসিবাদ পলায়নের ১ বছর: প্রাপ্তি ও প্রত্যাশা’ শীর্ষক আলোচনা অনুষ্ঠিত হবে। এরপর বিকেল ৩টার দিকে ‘জুলাই গণঅভ্যুত্থান পরবর্তী ছাত্ররাজনীতি ও ডাকসু নির্বাচন’ বিষয়ে আলোচনা হবে। সন্ধ্যা সাড়ে ৭টায় ‘নয়া রাজনৈতিক বন্দোবস্তে ইসলাম প্রসঙ্গ’ শীর্ষক মতবিনিময়ের মাধ্যমে পর্দা নামবে দ্বিতীয় দিনের কর্মসূচির।
কর্মসূচির তৃতীয় দিন ৭ আগস্ট দিনব্যাপী চলবে বিশেষ চিত্র প্রদর্শনী ও প্রামাণ্যচিত্র প্রদর্শন। সেখানে ‘জুলাই অভ্যুত্থান’ ও গণআন্দোলন সংশ্লিষ্ট নানা দলিল, ছবি ও ভিডিও উপস্থাপন করা হবে।
সার্বিক বিষয়ে ঢাবি শাখা ছাত্রশিবির সভাপতি এসএম ফরহাদ বলেন, “২০২৪ সালের জুলাই মাসে ঘটে যাওয়া গণজাগরণ ও ছাত্র প্রতিরোধ ছিল বাংলাদেশের রাজনৈতিক ইতিহাসে এক অনন্য মাইলফলক। সেই ঘটনার স্মরণে এবং তা থেকে শিক্ষা নিয়ে ভবিষ্যতের পথরেখা নির্ধারণের প্রয়াসে ঢাবির টিএসসি প্রাঙ্গণে বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্রশিবিরের ঢাবি শাখা আয়োজন করতে যাচ্ছে তিন দিনব্যাপী ‘আমরাই ৩৬ জুলাই: আমরা থামবো না’ শীর্ষক অনুষ্ঠান।”
তিনি বলেন, “এ আয়োজন হবে শিল্প, সংস্কৃতি, স্মৃতি ও রাজনৈতিক ভাবনার এক সংমিশ্রণ। জুলাই অভ্যুত্থানের শহীদ ও আহতদের অভিজ্ঞতা আমাদের অনুপ্রেরণা। আর সংস্কৃতির মাধ্যমে আমরা সেই প্রতিরোধ চেতনাকে নতুন প্রজন্মের মধ্যে ছড়িয়ে দিতে চাই।”
ঢাকা/সৌরভ/মেহেদী