Samakal:
2025-05-01@05:00:07 GMT

ফাগুনের বৃষ্টিতে ছন্দপতন

Published: 23rd, February 2025 GMT

ফাগুনের বৃষ্টিতে ছন্দপতন

সকালের দিকে মেলায় ক্রেতা-দর্শনার্থীর উপস্থিতি ছিল কম। তাই প্রকাশকরা বিকেল ও সন্ধ্যার অপেক্ষায় ছিলেন। কিন্তু আকস্মিক বৃষ্টিতে সব আশায় গুড়ে বালি। ক্রেতা-দর্শনার্থীরা যে যার মতো এদিক-ওদিক চলে যান। পরে বৃষ্টি থামলেও মেলা তেমন জমেনি।  
গতকাল শনিবার সন্ধ্যায় অমর একুশে বইমেলায় কথাগুলো বলছিলেন আবিষ্কার প্রকাশনীর স্বত্বাধিকারী দেলোয়ার হোসেন। রাজধানীতে বসন্তের বিরল বৃষ্টি স্বস্তি আনলেও বইমেলায় বিক্রি এলোমেলো করেছে। 

এদিন সকাল থেকে উন্মুক্ত ছিল মেলার দ্বার, ছিল শিশুপ্রহরও। তবে সকালে ক্রেতা-দর্শনার্থীর ভিড় তেমন চোখে পড়েনি। প্রকাশকরা বিকেল ও সন্ধ্যায় বিক্রিতে জোয়ার আসবে– এমন প্রত্যাশা করছিলেন। কিন্তু বিকেল সাড়ে ৫টার পর শুরু হয় বৃষ্টি। এতেই ঘটে ছন্দপতন।

সরেজমিন দেখা যায়, বৃষ্টি আসার আগে বারবার মাইকিং করে স্টল মালিকদের সতর্ক করে বাংলা একাডেমি কর্তৃপক্ষ। তাদের প্রস্তুত থাকতে তাগিদ দেওয়া হয়। মাইকিং করে পাঠক-দর্শনার্থীকে নিরাপদ জায়গায় আশ্রয় নিতে বলা হয়।

তুমুল বৃষ্টি ও বাতাসে স্টলের তেমন ক্ষতি না হলেও বই বিক্রিতে ধস নামে বলে জানান অবসরের বিক্রয়কর্মী জামিল। তিনি বলেন, বিকেলের দিকে যখন লোক সমাগম ও বিক্রি বাড়তে শুরু করেছিল, তখনই বৃষ্টি এলো। তবে কিছু ক্রেতা বৃষ্টির মধ্যেও ছিলেন। পরে বই কিনেছেন। বৃষ্টি না হলে বিক্রি আরও বাড়ত।

দিনের শুরুতে শিশুচত্বরে লোক সমাগম ও শিশুদের তেমন উপস্থিতি দেখা যায়নি। এ বিষয়ে ঝিঙেফুলের প্রকাশক গিয়াসউদ্দিন বলেন, আসলে বাচ্চাদের কাছে শিশুচত্বরে মূল আকর্ষণ থাকে সিসিমপুর। সেটা না থাকায় আমাদের বিক্রিতেও ঘাটতি পড়েছে। এমনিতে এ বছর মেলায় বিক্রি কম। 

সন্ধ্যা ৭টার পর বৃষ্টি কমতে শুরু করলে ক্রেতা-দর্শনার্থীর ভিড় কিছুটা বাড়ে। বৃষ্টিতে প্রায় ভেজা সাদিয়া জাহান বলেন, ‘চাকরির কারণে মেলায় আসার সময় পাই না। আজ এলাম কয়েকটি বই কিনতে। কিন্তু এসেই দেখি বৃষ্টি। তবুও যাইনি। কারণ পরে আসতে পারব না। তাই বই কিনেই যাব।’

বিদ্যাপ্রকাশের বিক্রয়কর্মী কাউছার ইসলাম সজল বলেন, সন্ধ্যার দিকেই মূলত বই কেনার পাঠক আসেন। আজ ছুটির দিন ছিল। বৃষ্টিতে স্টলের তেমন ক্ষতি না হলেও বিক্রিতে ভাটা নামে।

বৃষ্টির পর মেলার বেশির ভাগ স্টল খুললেও বেশ কয়েকটি বন্ধ হয়ে যায়। লিটলম্যাগ চত্বরে কাদা-পানি জমে থাকতে দেখা যায়। এসব ডিঙিয়ে হলেও বৃষ্টির পর গাবতলায় আসেন পাঠক-দর্শনার্থী। তবে বৃষ্টিতে মেলা বেচাকেনা ব্যাহত হলেও চোখে পড়ে বিপুলসংখ্যক হকার। কেউ খাবার বিক্রি করছেন বা কেউবা ফুল।  

নতুন বই
গতকাল মেলায় নতুন বই এসেছে ১৪৪টি। এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো অবসর প্রকাশনা সংস্থা থেকে গোলাম মুরশিদের ‘আত্মকথা ইতিকথা’, সৌম্য প্রকাশনী থেকে পীযূষ সিকদারের ‘অসীম শূন্যে হাঁটি’, সময় প্রকাশন থেকে মুহাম্মদ জাফর ইকবালের ‘অ্যাডভেঞ্চার মেঘবতী’, কিডস বুকস থেকে লিটন মোস্তাফিজের ‘অপ্রত্যাশিত মহাকাশযাত্রা’, সুবর্ণ প্রকাশনী থেকে বুলবুল হাসানের বায়োফিকশন ‘অন্তহীন বিতর্কযাত্রা’।

মূল মঞ্চের আয়োজন 
বিকেল ৪টায় বইমেলার মূলমঞ্চে অনুষ্ঠিত হয় ‘কায়কোবাদের সাহিত্যে শ্মশানের চিত্রাবলি’ শীর্ষক আলোচনা অনুষ্ঠান। প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন ইমরান কামাল। আলোচনায় অংশ নেন হাবিব আর রহমান। সভাপতিত্ব করেন আবু দায়েন। ইমরান কামাল বলেন, কায়কোবাদ স্বশিক্ষিত মানুষ হিসেবেই নিজেকে গড়ে তুলেছিলেন। কবি হিসেবে কায়কোবাদের আবির্ভাব তখন, যখন বাংলার সাহিত্যধারায় কাহিনিকাব্যের প্রভাব ক্রমশ ক্ষীণ হয়ে আসতে শুরু করেছে। কবি হিসেবে কায়কোবাদ নিজেকে চিহ্নিত করেছিলেন ‘পুরাতন’ পথের পথিক হিসেবেই।

হাবিব আর রহমান বলেন, কবি কায়কোবাদের মধ্যে খুব অল্প বয়সেই স্বদেশ চেতনা জাগ্রত হয়েছিল। তিনি কেবল কাহিনিভিত্তিক কাব্যেরই কবি নন, গীতিকাব্যেরও কবি। 
‘লেখক বলছি’ মঞ্চে নিজেদের নতুন বই নিয়ে আলোচনা করেন কবি আমিরুল মোমেনীন মানিক। সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে কবিতা আবৃত্তি করেন কবি মালেক মুস্তাকিম, কবি ড.

শাহনাজ পারভীন, কবি মোশাররফ হোসেন খান ও কবি মমতাজ রহমান। 

 

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: বইম ল বই ক ন ট র পর

এছাড়াও পড়ুন:

২১ কর্মকর্তাকে সাময়িক বরখাস্ত করলো বিএসইসি

গত ৫ মার্চ চেয়ারম্যান ও কমিশনারদের অবরুদ্ধ করে হেনস্তা করার অভিযোগে নিজ সংস্থার ২১ কর্মকর্তাকে সাময়িক বরখাস্ত করেছে শেয়ার বাজার নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটি এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি)। একইসঙ্গে এ ঘটনায় দুইজন কর্মকর্তাকে কারণ দর্শানোর নোটিশ দেওয়া হয়েছে।

মঙ্গলবার বিএসইসির জরুরি কমিশন সভায় এ কর্মকর্তাদের সাময়িক বরখাস্ত করার সিদ্ধান্ত হয়। আজ বুধবার সকালে কাজে যোগ দেওয়ার পর সাময়িক দরখাস্তের আদেশ হাতে পেয়েছেন তারা।

বিএসইসির সংশ্লিষ্ট সূত্র এ তথ্য নিশ্চিত করেছে।

সাময়িক বরখাস্ত কর্মকর্তাদের মধ্যে রয়েছেন- বিএসইসির নির্বাহী পরিচালক রেজাউল করিম (৫৪), পরিচালক আবু রায়হান মো. মোহতাছিন বিল্লা (৫১), অতিরিক্ত পরিচালক নজরুল ইসলাম (৫০), যুগ্মপরিচালক রাশেদুল ইসলাম (৪৮), উপপরিচালক বনী ইয়ামিন (৪৫), উপপরিচালক আল ইসলাম (৩৮), উপপরিচালক শহিদুল ইসলাম (৪২), উপপরিচালক তৌহিদুল ইসলাম (৩২), সহকারী পরিচালক জনি হোসেন (৩১), সহকারী পরিচালক রায়হান কবীর (৩০), সহকারী পরিচালক সাজ্জাদ হোসেন, সহকারী পরিচালক আবদুল বাতেন (৩২), লাইব্রেরিয়ান মো. সেলিম রেজা বাপ্পী (৩১) এবং ব্যক্তিগত কর্মকর্তা আবু ইউসুফকে (২৯)।

মামলার আসামিদের বাইরে আরো যে ৬ জনকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে, তারা হলেন- পরিচালক আবুল হাসান, পরিচালক ফখরুল ইসলাম মজুমদার, অতিরিক্ত পরিচালক মিরাজ উস সুন্নাহ, উপ-পরিচালক নানু ভূঁইয়া, সরকারি পরিচালক আমিনুর রহমান খান এবং সহকারী পরিচালক তরিকুল ইসলাম।

যে দুই কর্মকর্তাকে কারণ দর্শানোর নোটিশ দেয়া হয়েছে, তারা হলেন- মাকসুদা মিলা, সহকারী পরিচালক (রেজিস্ট্রেশন) এবং কাউসার পাশা বৃষ্টি, ব্যক্তিগত কর্মকর্তা।

বরখাস্তের আদেশে হিসেবে গত ৫ মার্চ শেয়ারবাজার তদন্ত কমিটির চারটি প্রতিবেদনের বিষয় সিদ্ধান্ত গ্রহণের সময় বৈঠককালে কমিশনের অনুমতি ছাড়াই সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা জোরপূর্বক প্রবেশ করে চেয়ারম্যান ও কমিশনারদের হেনস্তা এবং ভীতিকর পরিস্থিতি সৃষ্টি করেছেন বলে অভিযোগ আনা হয়েছে।

সাময়িক বরখাস্ত মিরাজ উস সুন্নাহর বিরুদ্ধে জোরপূর্বক কমিশন সভায় ঢুকে চেয়ারম্যান ও কমিশনারদের অভিযোগ আনা হলেও ওই সভায় চেয়ারম্যান ও কমিশনারদের সঙ্গে আগে থেকেই উপস্থিত ছিলেন।

এ ঘটনায় আগেই (গত ৬ মার্চ) ১৬ জনের বিরুদ্ধে বিএসইসি চেয়ারম্যানের গানম্যান মো. আশিকুর রহমান বাদী হয়ে শেরে বাংলা নগর থানায় মামলাটি করেছিলেন। এ মামলায় চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট কোর্ট থেকে জামিনে আছেন তারা।

মামলার ১৬ আসামির মধ্যে নির্বাহী পরিচালক সাইফুর রহমানকে এরই মধ্যে বাধ্যতামূলক অবসর দেওয়া হয়েছে। আরেকজন নির্বাহী পরিচালক মাহবুবুল আলম স্বেচ্ছায় অবসরে যাওয়ার আবেদন করেছেন।

ওই মামলার আসামিদের বাইরে আরো ছয়জনকে ঘটনার সঙ্গে সরাসরি সম্পৃক্ত থাকার অভিযোগ এনে বরখাস্ত করা হয়েছে।

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • ছয় কোটি শ্রমিক রাষ্ট্রীয় সুরক্ষার বাইরে
  • ৩ কর্মকর্তার অবসর ও বরখাস্তের আদেশ আদালতে বহাল
  • ২১ কর্মকর্তাকে সাময়িক বরখাস্ত করলো বিএসইসি
  • বাবার মরদেহ দুই বছর লুকিয়ে রাখেন সন্তান