দীর্ঘ অপেক্ষার পর চালু হলো জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের অথরাইজড ইকোনমিক অপারেটর সিস্টেম।

আমদানি-রপ্তানি ব্যবসাকে আরো সহজ ও ঝুঁকিমুক্ত করার লক্ষ্যে রবিবার (২৩ ফেব্রুয়ারি) জাতীয় রাজস্ব বোর্ড ব্যবসায়ীদের দীর্ঘ প্রতীক্ষার অবসান ঘটিয়ে ‘অথরাইজড ইকোনমকি অপারটের’ সিস্টেমটির উদ্বোধন করেছে।

এই সিস্টেমের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন বাংলাদেশ ইনভেস্টমেন্ট ডেভেলপমেন্ট অথরিটির (বিডা) চেয়ারম্যান চৌধুরী আশিক মাহমুদ বিন হারুন।

প্রধান অতিথি লাইসেন্সপ্রাপ্ত ৯টি প্রতিষ্ঠানকে AEO ক্রেস্ট বিতরণ করেন। অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন এনবিআর চেয়ারম্যান আবদুর রহমান খান। বিশেষ অতিথি ছিলেন ইউনিলিভার বাংলাদেশের চেয়ারম্যান জাভেদ আখতার।

উক্ত উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য রাখেন জনাব কাজী মোস্তাফিজুর রহমান, সদস্য (কাস্টমস নিরীক্ষা, আধুনিকায়ন ও আন্তর্জাতিক বাণিজ্য), জাতীয় রাজস্ব বোর্ড, ঢাকা। AEO সনদপ্রাপ্ত প্রতিষ্ঠানের পক্ষে বক্তব্য রাখেন রূপালী হক চৌধুরী, ম্যানেজিং ডিরেক্টর, বার্জার পেইন্টস বাংলাদেশ লিমিটেড এবং প্রাক্তন প্রেসিডেন্ট, ফেডারেশন অব ইন্টারন্যাশনাল চেম্বারস অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্টিজ এবং মোহাম্মাদ মেসবাউদ্দিন, পরিচালক, ফেয়ার ইলেক্ট্রোনিক্স লিমিটেড।

উন্নয়ন অংশিদারদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন বাংলাদেশে এডিবির কান্ট্রি ডিরেক্টর হোয়ে ইউন জিয়ং এবং মিচেল জো পার, চিফ অব পার্টি, বাংলাদেশ ট্রেড ফেসিলিটেশন প্রজেক্ট।

এনবিআর চেয়ারম্যান আবদুর রহমান খান বলেন, “আমাদের সিস্টেমে কিছু লোক সব ক্ষেত্রে কমপ্লায়েন্স মানার চেষ্টা করে, আবার কিছু লোক সব জায়গাতেই ফাঁকি দেয়। এটা চলতে পারে না। এ কারণে ভালো প্রতিষ্ঠানের জন্য এইও সুবিধা দেওয়া হয়েছে। ফলে তারা বিশেষ সুবিধা পাবে। ফলে আমরা এখন এইও তথা কমপ্লায়েন্স অর্জনের প্রতিযোগিতা দেখতে চাই।”

আবদুর রহমান খান বলেন, “দেশের মোংলা ও পানগাঁও বন্দর দিয়ে অনেক বেশি পণ্য আমদানি হয় না। খোঁজ নিয়ে জানা গেল, এই দুই বন্দরে পণ্যের চাপ কম থাকায় এখানে সব পরীক্ষা-নিরীক্ষা করা হয়, ভুল-ত্রুটি বেশি বেশি বের করা হয় (কাস্টমস কর্মকর্তারা)। অন্যদিকে, চট্টগ্রাম বন্দরে পণ্যের চাপ বেশি থাকে। ফলে অনেক পণ্য যথাযথ পরীক্ষা-নিরীক্ষা ছাড়া বের হয়ে যায়। এ কারণে অনেকে মোংলা বা পানগাঁওয়ের পরিবর্তে চট্টগ্রাম বন্দর দিয়ে পণ্য আনতে উৎসাহী হয়।”

আবদুর রহমান খান বলেন, “এইও চালুর ফলে পর্যায়ক্রমে চট্টগ্রাম বন্দরে পণ্যের চাপ কমে আসবে। তখন পরীক্ষা-নিরীক্ষা করা আরো সহজ হবে। সমান সুবিধা পেলে মোংলা ও পানগাঁও বন্দরও কম ব্যবহৃত অবস্থায় থাকবে না।”

বিডার নির্বাহী চেয়ারম্যান চৌধুরী আশিক মাহমুদ বিন হারুন বলেন, “এইও পুরোপুরি চালু হলে এনবিআর ও ব্যবসায়ী সম্প্রদায় উভয়ের ক্ষেত্রেই চাপ কমবে। সরকারের অন্যান্য সংস্থাও এইও প্রকল্প থেকে অভিজ্ঞতা নিতে পারে।”

ঢাকা/হাসনাত/সাইফ

.

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর আবদ র রহম ন খ ন ন বল ন

এছাড়াও পড়ুন:

কাশ্মীর ওয়ার্ল্ড ফিল্ম ফেস্টিভ্যালে ‘নয়া মানুষ’

নদীমাতৃক বাংলাদেশের প্রান্তিক চরের মানুষের জীবনযাপন, মানবিকতা ও ধর্মীয় সহাবস্থানের চিত্র নিয়ে নির্মিত চলচ্চিত্র ‘নয়া মানুষ’। প্রশংসিত এই চলচ্চিত্র জায়গা করে নিয়েছে ‘কাশ্মীর ওয়ার্ল্ড ফিল্ম ফেস্টিভ্যাল’-এর পঞ্চম আসরে। ভারতের জম্মু ও কাশ্মীরের শ্রীনগরে আজ থেকে শুরু হওয়া এই উৎসবে অংশ নিচ্ছে বাংলাদেশের এই আলোচিত চলচ্চিত্রটি। 

৭ দিনব্যাপী এ উৎসবে মিসর, জার্মানি, সংযুক্ত আরব আমিরাত, ইরান ও ভারতের নির্বাচিত চলচ্চিত্রের সঙ্গে প্রদর্শিত হবে ‘নয়া মানুষ’, যা বাংলাদেশের একমাত্র প্রতিনিধি হিসেবে অংশ নিচ্ছে উৎসবে। 

আরো পড়ুন:

দুই গায়িকার পাল্টাপাল্টি অভিযোগ, দ্বন্দ্ব চরমে

সমালোচনা নিয়ে মুখ খুললেন ভাবনা

২০২৪ সালের ৬ ডিসেম্বর মুক্তি পাওয়া ‘নয়া মানুষ’ দর্শক ও সমালোচকদের কাছ থেকে প্রশংসা কুড়ায়। আ. মা. ম. হাসানুজ্জমানের লেখা ‘বেদনার বালুচরে’ উপন্যাস অবলম্বনে চলচ্চিত্রটির সংলাপ ও চিত্রনাট্য লিখেন মাসুম রেজা। 

চলচ্চিত্রটিতে অভিনয় করেছেন রওনক হাসান, মৌসুমী হামিদ, আশীষ খন্দকার, ঝুনা চৌধুরী, শিখা কর্মকার, নিলুফার ওয়াহিদ, বদরুদ্দোজা, মাহিন রহমান, নাজমুল হোসেন, স্মরণ সাহা, সানজানা মেহরান ও শিশুশিল্পী ঊষশী। 

উৎসবে অংশগ্রহণ প্রসঙ্গে গল্পকার ও অভিনেতা আ. মা. ম. হাসানুজ্জমান বলেন, “আমি যখন গল্পটি লিখি, তখন এত কিছু ভাবিনি। কিন্তু চলচ্চিত্রটি দর্শক দেখার পর যে ভালোবাসা পাচ্ছি, তা সত্যিই অকল্পনীয়। ‘নয়া মানুষ’ ধর্মীয় উন্মাদনার বিরুদ্ধে সচেতনতা তৈরি করছে, শান্তির বার্তা দিচ্ছে, ধর্মের প্রকৃত দর্শন তুলে ধরছে—এটাই সবচেয়ে বড় প্রাপ্তি।” 

চলচ্চিত্রটির নির্মাতা সোহেল রানা বয়াতি বলেন, “আমার প্রথম পূর্ণদৈর্ঘ্য চলচ্চিত্র ‘নয়া মানুষ’ বিভিন্ন আন্তর্জাতিক উৎসবে অংশ নিচ্ছে—এটা আমার জন্য গর্বের বিষয়। কাশ্মীর ফেস্টিভ্যালে বাংলাদেশের একমাত্র প্রতিনিধি হিসেবে ‘নয়া মানুষ’ অংশ নিচ্ছে, যা দেশের চলচ্চিত্রের জন্যও একটি বড় সাফল্য।” 

চাঁদপুরের দুর্গম কানুদীর চরে চিত্রগ্রহণ করা হয়েছে চলচ্চিত্রটির। চিত্রগ্রহণ পরিচালনা করেছেন কমল চন্দ্র দাস। সিনেমাটির সংগীতে কণ্ঠ দিয়েছেন বাউল শফি মণ্ডল, চন্দনা মজুমদার, বেলাল খান, অনিমেষ রয়, মাসা ইসলাম ও খাইরুল ওয়াসী। সংগীত পরিচালনা করেছেন ইমন চৌধুরী, মুশফিক লিটু ও শোভন রয়। 

মানবতার বার্তা, ধর্মীয় সহনশীলতা ও জীবনবোধের অনন্য মেলবন্ধন নিয়ে ‘নয়া মানুষ’ এবার বাংলাদেশের হয়ে আন্তর্জাতিক মঞ্চে পৌঁছে দিচ্ছে শান্তি ও সহমর্মিতার বার্তা।

ঢাকা/রাহাত/শান্ত

সম্পর্কিত নিবন্ধ