অভিযানের পরপরই ফের ফুটপাতে বসেন হকার
Published: 23rd, February 2025 GMT
‘অফিস থেকে ফেরার পথে ফুটপাত ধরে বাসায় ফিরি। কিন্তু পৌরবাজারের পুরো এলাকার ফুটপাত ব্যবসায়ীদের দখলে।’ গতকাল রোববার দুপুরে ক্ষোভের সুরে কথাগুলো বলছিলেন একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তা আমান উল্লাহ। তিনি নারায়ণগঞ্জের আড়াইহাজার পৌর এলাকার বাসিন্দা। তাঁর মতো হাজারো মানুষকে প্রতিদিন এই
সড়কের পাশের ফুটপাত দিয়ে চলার সময় দুর্ভোগ পোহাতে হয়।
আমান উল্লাহ বলছিলেন, হকার ও ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীরা ফুটপাতেই ব্যবসা চালিয়ে যাচ্ছেন। এতে হাঁটার জায়গাও থাকে না। বছরের পর বছর এই ভোগান্তি চলছে। কিন্তু সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের স্থায়ী কোনো উদ্যোগ চোখে পড়ে না।
পৌরবাজারের সামনের ফুটপাতটি পথচারীদের জন্য তৈরি করা হয়েছিল, না-কি হকারদের জন্য– তা বোঝাই মুশকিল। ভ্রাম্যমাণ ও অস্থায়ী হকারদের সাজানো দোকানে পথচারীদের ভোগান্তির শেষ নেই। যদিও পৌর প্রশাসক বলছেন, ফুটপাত দখলমুক্ত রাখতে তাদের নিয়মিত অভিযান অব্যাহত আছে।
আড়াইহাজার পৌরসভার সূত্র জানায়, রমজান সামনে রেখে যানজট নিরসনে ফুটপাত ও সড়ক থেকে হকার উচ্ছেদে গত বৃহস্পতিবার অভিযান পরিচালনা করে উপজেলা প্রশাসন। পৌর প্রশাসকের দায়িত্বে থাকা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) সাজ্জাত হোসেনের নেতৃত্বে এদিন অর্ধশতাধিক হকারকে উচ্ছেদ করা হয়। তাদের একদিনের মধ্যে সরে যাওয়ার জন্য সময় বেঁধে দেয় প্রশাসন।
এর আগে ফুটপাতে হকার বসতে নিষেধ করে মাইকিং করা হয়েছিল। কিন্তু সেই নির্দেশনা না মানায় এ অভিযান চালানো হয়। অভিযান শেষ করে যাওয়ার পরপরই ফুটপাত ও সড়ক আবারও চলে যায় হকারদের দখলে। রোববার দুপুরে দেখা গেছে, নতুন করে আড়াইহাজার উপজেলার কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার এলাকা থেকে ডাকবাংলো পর্যন্ত প্রায় আধা কিলোমিটার এলাকাজুড়ে অর্ধশতাধিক দোকান বসেছে। এতে পথচারীদের চলাচল করাই কঠিন হয়ে পড়ে।
একটি বেসরকারি উচ্চবিদ্যালয়ের শিক্ষক রেজাউল রাব্বি বলেন, ‘দেখছেন, কীভাবে যেতে হচ্ছে। ফুটপাতে আমাদের চলাচল করা খুবই কঠিন। হকার-ব্যবসায়ী থেকে শুরু করে ক্রেতাদের যে ভিড়, এর মধ্যে হাঁটা সত্যিই কঠিন। একজন পথচারী হিসেবে চাই, অবশ্যই ফুটপাত দখলমুক্ত করা হোক।’
রাবেয়া আক্তার নামের এক নারী বলেন, ‘ফুটপাত দিয়ে হাঁটার সময় অনেক মানুষের সঙ্গে ধাক্কা লাগে। আবার কেউ কেউ ইচ্ছা করেই ধাক্কা দেয়। এতে খুবই বিব্রত হই। বিশেষ করে ফুটপাত ব্যবহারে নারীদের বিড়ম্বনা খুব বেশি।’
ফুটপাতে অবস্থান নেওয়া একাধিক হকার ও ব্যবসায়ীর সঙ্গে কথা হয়। পৌরবাজারের সামনে ফল বিক্রি করে সংসার চালান আব্দুর রশিদ। তিনি বলেন, ফুটপাত থেকে তুলে দিয়েছিল। আবার পেটের দায়েই ফুটপাতে এসে বসেছেন।
একই কথা আরেক ফল ব্যবসায়ী জোবায়ের হোসেন ও মুসা মিয়ার। তাদের ভাষ্য, সরকার কোথাও ব্যবসা করার আলাদা ব্যবস্থা করে দিলে তারা ফুটপাতে বসতেন না। ফুটপাতে বসলে মানুষের চলাফেরায় কষ্ট হয়, তা তারাও বুঝেন। কিন্তু তারা যাবেন কোথায়?
ফুটপাত দখলমুক্ত রাখতে নিয়মিত অভিযান চলছে বলে জানান ইউএনও সাজ্জাত হোসেন। তিনি বলেন, আড়াইহাজার পৌরবাজারের ফুটপাত ও রাস্তা দখল হওয়ায় যানজট লেগেই থাকে। এতে জনসাধারণের চলাচলে অসুবিধা দেখা দেয়। প্রশাসনের পক্ষ থেকে ফুটপাত দখলদার হকার ও ব্যবসায়ীদের সচেতন করা হয়েছে। কেউ নতুন করে দখল করলে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: ব যবস য় পথচ র ত দখল
এছাড়াও পড়ুন:
জামায়াতের পর এবার সমাবেশে অংশ নিতে বিশেষ ট্রেন ভাড়া ছাত্রদলের
জামায়াতে ইসলামীর পর এবার বিশেষ ট্রেন ভাড়া করেছে জাতীয়তাবাদী ছাত্রদল। ঢাকায় কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে ৩ আগস্ট ছাত্র সমাবেশে অংশ নিতে প্রায় ১০ লাখ টাকার বিনিময়ে চট্টগ্রাম ছাত্রদল ২০ বগির এই বিশেষ ট্রেন ভাড়া করেছে।
জুলাই-আগস্টের গণ-অভ্যুত্থানের বর্ষপূর্তি উপলক্ষে মাসব্যাপী কর্মসূচির অংশ হিসেবে ৩ আগস্ট ছাত্র সমাবেশ করবে ছাত্রদল।
এই কর্মসূচিতে অংশ নিতে চট্টগ্রাম নগর ছাত্রদলের পক্ষ থেকে ২০ বগির একটি বিশেষ ট্রেনের জন্য আবেদন করা হয়। ছাত্রদলের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে গত বৃহস্পতিবার বিশেষ ট্রেন বরাদ্দ রেলওয়ে। আগামী রোববার সকাল সোয়া ৭টায় চট্টগ্রাম স্টেশন থেকে এই ট্রেন ছেড়ে যাবে। আর ঢাকায় পৌঁছাবে বেলা সোয়া ১টায়। এই ট্রেন সন্ধ্যা সাতটায় আবার ঢাকা থেকে চট্টগ্রামের উদ্দেশে ছেড়ে আসবে।
রেলওয়ে সূত্র জানায়, ২০ বগির ট্রেনটিতে ১ হাজার ১২৬টি আসন রয়েছে। বিশেষ ট্রেন পরিচালনার জন্য রেলওয়ের চট্টগ্রাম, ঢাকা বিভাগসহ সংশ্লিষ্ট দপ্তরকে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।
রেলওয়ের বিভাগীয় বাণিজ্যিক কর্মকর্তা তৌষিয়া আহমেদ প্রথম আলোকে বলেন, ছাত্রদলের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে রেল ভবনের অনুমোদন সাপেক্ষে বিশেষ ট্রেন বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। এই কারণে নিয়মিত ট্রেন চলাচলে কোনো সমস্যা হবে না।
চট্টগ্রাম নগর ছাত্রদলের যুগ্ম আহ্বায়ক (দপ্তরের দায়িত্বপ্রাপ্ত) সাব্বির আহমেদ প্রথম আলোকে বলেন, এই ট্রেনে চট্টগ্রাম নগর, উত্তর ও দক্ষিণ জেলার প্রায় দেড় হাজার নেতা-কর্মী যাবেন। সবাই একসঙ্গে যেতে চাওয়ায় ট্রেন ভাড়া করেছেন। বাসে হলে তা সম্ভব ছিল না।
এর আগে গত ১৯ জুলাই রাজধানীর সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে জাতীয় সমাবেশ করেছিল জামায়াতে ইসলামী। সমাবেশে নেতা-কর্মীদের যাতায়াতের জন্য ময়মনসিংহ, সিরাজগঞ্জ, রাজশাহী ও চট্টগ্রাম থেকে চার জোড়া বিশেষ ট্রেন ভাড়া করে দলটি। এই চার ট্রেন ভাড়া করতে দলটিকে গুনতে হয়েছে প্রায় ৩২ লাখ টাকা।
জামায়াতের ট্রেন ভাড়া করা নিয়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে আলোচনা-সমালোচনার মধ্যে এ বিষয়ে একটি বিজ্ঞপ্তি দিয়ে রেলপথ মন্ত্রণালয় জানায়, বিশেষ ট্রেন পরিচালনায় স্বাভাবিক নিয়মের কোনো ব্যত্যয় ঘটেনি।